নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলমানদের মধ্যে আমি সবচেয়ে নিকৃষ্ট

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৩৯

দুরন্ত সাহসী এক সাহাবী। অত্যন্ত মেধাবী ও অসাধারণ জ্ঞানী। নাম হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা)। তবে স্বভাবে ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও দিনহীন। হযরত জাবাল (রা) অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তাঁর চলায়, কথাবার্তায় বাহুল্য বলতে কিছু ছিল না। জাঁকজমক ও চাকচিক্য তিনি মোটেও পছন্দ করতেন না। কোন রকমে চলতে পারলেই তিনি খুশি হতেন।



একদিনের এক ঘটনা

শাম দেশের ফাহলে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। রোমান খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য এগিয়ে এলো। এখন বসে তো আর থাকা যায় না। তাই মুসলিম বাহিনীও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিলো। মুসলমানদের ত্বরিত প্রস্তুতির খবর শুনে রোমানরা ঘাবড়ে গেল। রোমানরা ভাবল, মুসলমানদের সাথে এখনই যুদ্ধ করা সমীচীন হবে না। তাই রোমান সেনাপতি সন্ধি ও সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে এলো।

মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন হযরত আবু উবাইদা (রা)। অত্যন্ত দক্ষ ও বীর সেনাপতি হিসেবে তিনি সবার কাছে পরিচিত। সুনিপুণ যুদ্ধ বিশারদ হিসেবেও আবু উবাইদার নাম সর্বত্র আলোচিত হতো।

আর হযরত মুয়াজ? তিনিও ছিলেন দক্ষ সেনানায়ক। তবে একজন পারদর্শী কূটনীতিক ছিলেন তিনি। জ্ঞান, বুদ্ধি ও পরিকল্পনা রচনায় তাঁর সুনাম ছিল সর্বজনবিদিত।



তাই সেনাপতি আবু উবাইদা (রা) রোমানদের সাথে আলোচনার জন্য হযরত মুয়াজের নাম ঠিক করলেন। মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা) সময়মত রোমান সেনাছাউনিতে গিয়ে হাজির হলেন। দুঃসাহসী মুয়াজ (রাঃ) বীরদর্পে সেনা ছাউনিতে পা রাখলেন। তাঁবুর জাঁকজমক ও চাকচিক্য দেখে তিনি খানিকটা বিস্মিত হলেন। তাঁবুতে বিছানো হয়েছে সোনালি কারুকাজ করা গালিচা। দেখে মনে হলো, এটা যেন এক বাদশাহী বালাখানা। একজন পদস্থ রোমান সৈনিক হযরত মুয়াজকে নিয়ে একটি অনিন্দ্য সুন্দর আসনে বসালো।



তবে এসব বিলাসি হযরত মুয়াজের মোটেও পছন্দ হলো না। তাই তাঁর চোখে-মুখে বিরক্তির ভাব ফুটে উঠলো। তিনি বললেন,

: দেখুন ভাই, আমি এসব রাজকীয় শয্যা পছন্দ করি না। কারণ, দরিদ্র মানুষকে শোষণ করেই এমন দামি আসন বানানো হয়েছে। একথা বলেই তিনি মাটির ওপর বসে পড়লেন।

হযরত মুয়াজের অবস্থা দেখে খ্রিষ্টানরা তো হতবাক। তারা বলল,

: আপনি এক মহান ব্যক্তি। আপনি দেশের নামিদামি লোক। চারিদিকে আপনার যথেষ্ট সুনাম। অনেকেই আপনাকে সম্মান করে। আমরাও আপনাকে অসম্ভব সম্মান করি। তাই সম্মানজনক স্থানেই আমরা আপনাকে বসাতে চাই। অথচ আপনি তা পরিহার করলেন?

রোমান সৈন্যের কথা শুনে হযরত মুয়াজ (রা) মুচকি হাসলেন। তারপর তিনি বললেন,



: শোন সেনারা! তোমরা আমাকে অনেক বড় বলে জানলেও আমি কিন্তু মোটেও তা নই। আমি অতি সাধারণ ও নগণ্য একজন মানুষ মাত্র। অত সম্মান ও চাকচিক্য আমার প্রয়োজন নেই। আর তাই মাটিতে বসতেও আমার অসুবিধা নেই।



হযরত মুয়াজের কথা শুনে খ্রিষ্টানরা তো হতবাক। তারা বলল,

: কী অবাক কথা বলছেন আপনি! আপনি তো অনেক বড় মাপের মানুষ। আপনি মোটেও সাধারণ ব্যক্তি নন। তাই মাটিতে বসা আপনাকে মানায় না। মাটিতে তো বসবে দাসেরা।



খ্রিষ্টানদের কথায় মুয়াজ (রাঃ) আরেকবার হাসলেন। তিনি মনে মনে বললেন, তোমরা জান না, এ মুয়াজই আল্লাহ একজন দাস। আর এই দাসের কোনো বিলাসিতা নেই। এবার হযরত মুয়াজ (রা) দৃঢ়তার সাথে বললেন,



: হ্যাঁ ভাই, তোমরা ঠিকই বলেছ। মাটিতে বসা দাসশ্রেণীর লোকদেরই কাজ। সমাজে ওরা ছোট, তাই ওরা মাটিতে বসে। আমিও আল্লাহর এক দাস। তাই মাটিতে বসতে পারায় আমি ধন্য হয়েছি।



মুয়াজের মুখে নিজেকে দাস বলায় খ্রিষ্টানরা আরেকবার হতবাক হলো। তাই তারা অবাক বিস্ময়ে মুয়াজের মুখের দিকে অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে রইল। তাদের বিস্ময়ের ঘোর কাটে না। মুয়াজের প্রতি তাদের কৌতূহল আরো বেড়ে গেল।



: আপনি যদি দাসই হোন, তা হলে আপনার চেয়েও মর্যাদাবান ব্যক্তি কি আপনাদের মধ্যে আরো কেউ আছে? -খ্রিষ্টানদের একজন জিজ্ঞেস করল।

: কী বলছ তোমরা? আমি মর্যাদাবান? কে বলল তোমাদের? অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন করলেন হযরত মুয়াজ।



: মুসলমানদের মধ্যে আমি সবচেয়ে নিকৃষ্ট। আমার মতো অধম আর কেউ নেই। মুয়াজ আবারো জানালেন।



এবার খ্রিষ্টানদের বিস্ময় আরো একধাপ বেড়ে গেল। মুয়াজের কথাবার্তা শুনে তারা বেশ ভাবনায় পড়ে গেল। মুসলমানদের শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে তারা চিন্তিত হলো। মুয়াজের আচরণ ও উদারতা তাদের মনকে নাড়া দিলো। তারা আরো ভাবনায় পড়ল মুসলমানদের সাহস ও বীরত্ব নিয়ে। ফলে রোমানদের মনে অজানা এক ভয়ের উদ্রেক হলো। তারা ভাবল, এই মুয়াজই যদি একজন সাধারণ মানুষ হোন, তাহলে মুসলমানদের না জানি আরো কত অসাধারণ মানুষ আছেন! এমন অসাধারণ ও খোদাভীরু মুসলিম বাহিনীর সাথে লড়াই করা মানে তো সাক্ষাৎ মৃত্যু। এদের সাথে যুদ্ধে জয়লাভের চিন্তা করাও বোকামি। তাই রোমানরা মুয়াজের সাথে সন্ধিস্থাপন করাকে শ্রেয়তম কাজ বলে মনে করল। ফলে ভয়ানক যুদ্ধের আশঙ্কা কেটে গেল।





মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৫০

উড়োজাহাজ বলেছেন: কো থা সে মু স ল মা ন ?

২| ০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩

নিজাম বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সেরকম হওয়ার তৌফিক দান করুন।

৩| ০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

মুদ্‌দাকির বলেছেন: "এমন অসাধারণ ও খোদাভীরু মুসলিম বাহিনীর সাথে লড়াই করা মানে তো সাক্ষাৎ মৃত্যু। এদের সাথে যুদ্ধে জয়লাভের চিন্তা করাও বোকামি। "

না এমন মুসলমান আর আছে আর না কোন খ্রীস্টান আজ এই ভাবে চিন্তা করবে ????

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.