নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
প্রত্যেক উপন্যাস আসলে সত্তাময়। উপন্যাস সৃষ্টি মানে একটা সত্ত্বা সৃষ্টি করা। সেই সত্তাটি হবে স্বতন্ত্র। নতুন এক জীবনের আজ্ঞাবহ। জ্ঞানই হল উপন্যাসের একমাত্র নৈতিকতা। এ জ্ঞান মর্ত্যের জ্ঞান নয় মোটেও, এ জ্ঞান হল মানুষের মননের জ্ঞান। একজন লেখক- শুধুমাত্র একজন লেখকই নন, সামাজিক পরিবর্তনের সে একজন বিশেষ প্রতিনিধি। আমাদের শিক্ষকেরা প্রায়ই বলে থাকেন, অমুক জাতিকে জানতে হলে অমুক উপন্যাসটি পড়ো। একটি পার্টিকুলার উপন্যাস কখনই একটি জাতির সার্বিক চিত্র উঠিয়ে আনতে পারে না। লেখালেখিটা একজন লেখকের কাছে বিশ্বাসের মতো। লিখতে লিখতে একজন লেখক তার ‘সত্য’কে আবিষ্কার করেন। পড়তে পড়তে একজন পাঠকও তাই করেন।
রবীন্দ্রনাথ যদি ভাষা দিয়ে থাকেন, মাইকেল মধুসূদন দিয়েছেন ঢং বা কাঠামো। তারাশঙ্কর ও মানিক দিয়েছেন বিষয়বস্তু। বিভূতিভূষণ আমাদের বোধকে আরও গভীর করেছেন। ব্যক্তিকে চিনিয়েছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শহীদুল জহির, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ও শওকত আলী আমাদেরকে ইতিহাসে ফিরিয়েছেন। হাসান আজিজুল হক গভীর থেকে আমাদের জীবনের প্রতিটা বাঁককে স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। সেলিনা হোসেন আপন অনুভূতি দিয়ে আমাদের নারী সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে এনেছেন এবং হুমায়ূন আহমেদ আমাদের দিয়েছেন- এক আকাশ স্বচ্ছ আনন্দ।
আঙ্কেল টম'স কেবিন উপন্যাসটিতে 'আঙ্কেল টম' নামক এক কষ্টসহিষ্ণু নিগ্রো ক্রীতদাসের কথা বলা হয়েছে। যিনি ছিলেন অত্যান্ত দয়ালু এবং কর্তব্যনিষ্ঠ এক ব্যাক্তি যিনি তার সাদা মালিকের খুব বিশ্বস্তও ছিলেন। আঙ্কেল টমকে বিক্রি করে দেয়া হয় ক্রীতদাস ব্যাবসায়িদের কাছে। মিসিসিপির স্রোত বেয়ে বহু দূরে নিয়ে যাওয়া হয় আঙ্কেল টমকে। সেখানে St. Clare নামক এক ব্যাক্তি তাকে কিনে নেন। তার ছোট্ট মেয়ে ইভার সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায় আঙ্কেল টমের। ...আঙ্কেল টম ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, এই জিনিসটা Simon কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। এজন্য সে তাকে প্রচণ্ডরকম মারধর করতো, সাথে অন্যদেরকেও। অন্যান্য ক্রীতদাসদেরকে মারের হাত থেকে বাঁচাতে আঙ্কেল টম, বাইবেল পড়া বন্ধ করে দেন।
শেষ পর্যন্ত টমকে হত্যা করে সাইমন। কিন্তু মৃত্যুর সময় টম তাকে বলেঃ তোমাকে ধন্যবাদ লেগ্রি তুমি আমাকে স্বর্গের দুয়ার খুলে দিয়েছ। টমের সহ্য ক্ষমতা সাইমনকে পরাজয়ের গ্লানি উপহার দেয়। একেই বোধয় বলেছিলেন কার্ল মার্কস যে, ধর্ম ছিল আফিমের মত শোষিত মানুষের কাছে।
১৩ ভাইবোনের মধ্যে সপ্তম ছিলেন হ্যারিয়েট। মাত্র ৫ বছর বয়সে মাকে হারানো স্টাউই ভাষা এবং গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২১ বছর বয়সে তিনি ওহাইওয়ের সিনসিনাটিতে যান নিজের বাবাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য, যিনি সেখানকার 'লেন থিওলজিক্যাল সেমিনারি'-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন।হ্যারিয়েট বিচার স্টাউই। ১৮১১ সালের ১৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের লিচফিল্ডে জন্ম নেওয়া এ সুলেখিকা নিজের লেখনী আর উপস্থিত গুণে ছিলেন সবার থেকে আলাদা। হ্যারিয়েট এবং তার স্বামী দুজনই ছিলেন সে সময়কার সমাজে চলে আসা দাস প্রথার কট্টরবিরোধী। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তারা অনেক দাসকে মুক্ত করে আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজেদের বাড়িতে। সমগ্র জীবনে ২০টিরও বেশি বই লেখেন হ্যারিয়েট। আংকেল টমস কেবিন ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য বইগুলো হল_ 'আ কী টু আংকেল টমস কেবিন', 'মার্ক মেরিডেন', 'ড্রেড, আ টেল অব দ্য গ্রেট ডিসমাল সোয়াম্প', 'দ্য মিনিসটারস উইং', 'ওল্ড টাউন ফোকস' প্রভৃতি। মহান এ লেখিকা ১৮৯৬ সালের ১ জুলাই পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নেন।
বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৫২ সালে। প্রথম বছর বইটির ৩০০,০০০ কপি যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয় এবং এক মিলিয়ন কপি বিক্রি হয় গ্রেট ব্রিটেনে। ১৮৫৫ সালে তিন বছর পর উপন্যাসটি আবার প্রকাশিত হবার পর এটাকে "সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস" ঘোষণা করা হয়েছিলো। উপন্যাসটি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে অনেক নাটক, সিনেমা। আফ্রো-আমেরিকান সমাজে সে সময় চলতে থাকা জঘন্য দাস প্রথার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে এ উপন্যাসে। ‘হ্যারিয়েট’ এই সংবেদনশীল উপন্যাসটির মাধ্যমে ক্রীতদাস প্রথার বাস্তব চিত্রটি তুলে ধরেছেন এবং বোঝাতে চেয়েছেন, মানুষের প্রতি মানুষের প্রকৃত ভালবাসায় রয়েছে এমন এক শক্তি যা, দাসত্বের মতো ধ্বংসাত্মক যেকোনো শক্তিকে পরাস্ত করতে পারে।
বর্ণ বৈষম্য, দাসপ্রথা নিয়ে পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত লেখকরাই লিখেছে। টনি মরিসন , আলেক্স হ্যালী, নাদিন গর্দিমার, ইত্যাদি। ধর্মযাজক পিতার কন্যা হ্যারিয়েট কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। ধর্মে অবিচল আস্থা এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে নির্যাতিত কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে। নির্যাতিত মানুষের এমন মানবিক চিত্র বিশ্বসাহিত্যে খুবই বিরল।
২| ১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:২৭
সুমাইয়া আলো বলেছেন: সুন্দর বর্ণণায় আঙ্কেল টম সম্পর্কে জানলাম
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:২৭
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আসলেই উপন্যাস লেখকের মননশীলতার বহিঃপ্রকাশ ।। জীবনের
প্রতিটি অধ্যায় জয় করে লেখক ফুটিয়ে তুলে উপন্যাসের বিষয় বস্তু । যা প্রত্যক উপন্যাসিকের জন্য বিশাল প্রতিভা ।
ধন্যবাদ পোস্টে ।।