নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি কারণে হতে পারে ডায়েবেটিস

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১:১৮

ডায়াবেটিস সম্বন্ধে সঠিক জানলে আমরা এ রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি ও পূর্ণ জীবন উপভোগ করতে পারি। গত এক যুগ ধরে নবজাতক থেকে শুরু করে ২০ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ডায়াবেটিসের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্বে ২০২৫ সালে ডায়েবেটিস রোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৩০ কোটি। শতকরা ৯০ ভাগ ডায়েবেটিস রোগীই ইনস্যুলিন অনির্ভরশীল। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে মোট ডায়েবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। বর্তমানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগির সংখ্যা ৮৫ লাখেরও বেশি। ডায়েবেটিস কিন্তু একটি ব্যাধির নাম নয়। একটি অনেকগুল ব্যাধির সমষ্টি। কাঠে ঘুণ ধরলে যেমন এর স্থায়িত্ব নষ্ট হয়ে যায়, তেমনি ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তাড়াতাড়ি শরীর ভেঙ্গে পড়ে। আমাদের হার্ট, কিডনী, চোখ, দাঁত, নার্ভ সিষ্টেম-এ গরুত্বপূর্ণ অংগগুলো সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস হতে পারে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে।



কজন ডায়াবেটিক রোগীর অন্যদের চেয়ে হূদেরাগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি, স্ট্রোক বা পক্ষাঘাত হওয়ার ঝুঁকি ছয় গুণ , কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ, অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ২৫ গুণ এবং পায়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে পা হারানোর আশঙ্কা ২০ গুণ বেশি। এসব ঝুঁকি, আশঙ্কা ও সম্ভাবনা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয় একজন ডায়াবেটিক রোগীকে। তবে এসব ঝুঁকির অনেক কিছুই তিনি প্রতিরোধ করতে পারেন, যদি রোগ সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকে। যাঁরা ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিক রোগী, তাঁরা যদি ইনসুলিন নিতে ভূলে যান বা কম ইনসুলিন নেন, পরিমানের অতিরিক্ত খাবার খান এবং দৈহিক কোন পরিশ্রম না করেণ তবে রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিক কোমা হতে পারে। “রোগ বালাইতো আছে দুনিয়ায়, ভাল থাকার আছে যে উপায়।” জীবন থাকলে রোগ থাকবে, আর রোগ থেকে বেঁচে থাকার উপায় জানা থাকলে রোগ প্রতিরোধ করা খুব কঠিন নয়। কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ অনেক সহজ। যেমন ডায়াবেটিস রোগ।



ডায়াবেটিস হলে যে রক্তে সুগার এর মাত্রা বেড়ে যায় এটা বোধহয় সবারই জানা যদিও রক্তের সুগার এর মধ্যে শুধু গ্লুকোজ (Glucose) এর মাত্রাই এ রোগে বেশী পাওয়া যায়। গ্লুকোজ হলো আমাদের দেহের প্রায় সকল কোষের শক্তির উৎস। ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের ডায়াবেটিসজনিত অসুখগুলো কম হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি শ্রেষ্ঠ পথ্য। আমাদের শরীরে অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস নামের একটি অঙ্গ থাকে। এই অঙ্গের প্রান্তীয় অংশে বিটা সেল নামের কিছু কোষ থাকে। এই বিটা সেল থেকে ইনসুলিন হরমোন তৈরী হয়। অর্থাৎ শরীরের প্রয়োজনীয় ইনসুলিন আমাদের শরীরের ভেতরেই উৎপন্ন হয়। ধরা হয়ে থাকে যে, একজন স্বাভাবিক ওজনের মানুষের শরীরে প্রতি ঘন্টায় ১ ইউনিট করে ২৪ ঘন্টায় ২৪ ইউনিট ইনসুলিন উৎপাদন হয় এবং দৈনিক ৩ বেলা খাদ্য গ্রহণের পর প্রতিবেলা গড়ে ৮ ইউনিট করে ২৪ ইউনিট সহ মোট ৪৮ ইউনিট ইনসুলিন উৎপাদন হয়। ইনসুলিনের কাজ হল রক্তের গ্লুকোজকে শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া। ইনসুলিনের উৎপাদন কমে গেলে অথবা এর কার্যকারীতা হ্রাস পেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় এবং কোষের ভিতরের গ্লুকোজের পরিমান কমে যায়।



ডায়াবেটিস রোগীরা যদি বেহিসেবী মধু খান, তবে তা তাদের জন্য বিষ পানের তুল্য হবে। মধুর মতো পরিশোধিত শর্করা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিষেধ। সাধারণত ডায়াবেটিস রোগের জন্য বংশগত ও পরিবেশের প্রভাব দুটোই দায়ী। বয়স ৩০ এর উপর, যাদের উচ্চতার অনুপাতে ওজন বেশী, যাদের মেদ-ভুঁড়ি অতিরিক্ত, যারা কায়িক পরিশ্রম করেন না বা কম করেন, খাদ্য গ্রহণের মাত্রা যাদের বেশী, বংশগত কারন, কোন কোন দুরারোগ্য ব্যধী যেমন থাইরয়েডের রোগ, প্যানক্রিয়াসের রোগ ইত্যাদি, কোন কোন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধের কারণে, অধিক সন্তান জন্মদানকারী মা (সিজারে বা স্বাভাবিক উভয় ক্ষেত্রেই), যাদের এক বা একাধিক মেজর অপারেশন হয়েছে, যারা মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান বা এলকোহল পান করেন, যাদের পেটের বেড়ের মাপ নিতম্বের বেড়ের মাপের চেয়ে বেশী, যাদের রক্তের কোলেস্টেরল (ট্রাইগ্লিসারাইড) অনেক বেশী, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তি, অপুষ্টি জনিত কারণ ইত্যাদি। এইসব ক্ষেত্রে বছরে অন্ততঃ দুইবার রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপ করা উচিৎ।



প্রচলিত ভুল ধারণা : তিতা খেলে ডায়াবেটিস সারে! এটা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে যে, ডায়াবেটিস হলে করলা বা তিতাজাতীয় খাবার বেশি করে খান, উপকার হবে। অনেকেই খুব আয়োজন করে নিমপাতার বড়ি, করলার রস, কিংবা ভর্তা খান। আসলেই কি তিতার সঙ্গে ডায়াবেটিসের কোনো সম্পর্ক আছে? বিষয়টির আসলে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা কেউই ডায়াবেটিসের সঙ্গে তিতা খাবারের কোনো যোগসূত্র পাননি। দৈনিক দুই বেলা আধা ঘন্টা করে দ্রুত হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। খালি পেটে এবং খালি পায়ে হাঁটবেন না। হাঁটার গতি হতে হবে দ্রুত, যাতে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। অতিরিক্ত ও অসময়ের ঘুম ত্যাগ করতে হবে। মোটকথা উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন যতটুকু হওয়া উচিৎ তার থেকে বেশী মেদ-ভুঁড়ি বা ওজন থাকলে তা কমিয়ে সমান করতে হবে। বিশ্বের সর্বত্রই কিডনি ফেইলিওরের অন্যতম কারন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস! শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত ডায়াবেটিস রোগী কিডনি রোগ বা নেফ্রপ্যাথিতে আক্রান্ত হতে পারেন এবং এর ব্যায়বহুল চিকিত্সা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয় !



খ্যাদ্যাভাস:

১. ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্যাভাস এমনভাবে গড়ে তোলা দরকার যাতে শরীরের ওজন কাম্য সীমার উপরে বা নীচে না যায়।

২. খাদ্য তালিকায় ভাত, রুটি ইত্যাদির পরিমান কমিয়ে পরিবর্তে শাকসব্জী বাড়িয়ে দিতে হবে; আঁশযুক্ত সাক শবজী প্রচুর পরিমানে খাওয়া যাবে।

৩. মিষ্টি জাতীয় খাবার (কেক, পেস্তি, জ্যাম, জেলি, মিষ্টি, ঘনীভূত দুধ, মিষ্টি বিস্কুট, সফট ড্রিক, চায়ে চিনি ইত্যাদি) খাওয়া যাবেনা।

৪. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে। ঘি, মাখন, চর্বি, মাংস ইত্যাদি কম খেতে হবে।

৫. যথা সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সকল ধরণের দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত থাকতে হবে।

৬. ধূমপান, মদ পান এবং হোটেলের খাবার পরিপূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৩:১১

কালা'চান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । সংগ্রহ করে রাখলাম ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৩:২৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা একরকম ডায়াবেটিক ফ্যামিলিই বলা যায়। ৯ভাই-বোনের ভিতর ৫জনই এই রোগে আক্রান্ত। এমনকি দু'টো ভাগনী পর্যন্ত। সবার আগে বোধহয় আমিই আক্রান্ত হয়েছিলাম তাও কুয়েত আসার ৫বছর পর। তখন আসলেও খাওয়া-দাওয়ার বাছ-বিচার ছিল না। এখনো নেই তবে কোল্ড ড্রিংকস,কলা,খেজুর,যেকোন ধরনের প্যাকেটজাত যুস,মিষ্টি-চকলেট প্রায় বাদ। সাথে নিয়মিত দু'বেলা দু'টো ৫মিলির ট্যাবলেট। পরিমান ৭/৮এর মাঝেই থাকে।
এতো বিস্তারিত লিখলাম একারনেই যে কেউ এই সচেতনতামূলক লেখাটি পড়বেন, তারা উল্লেখিত বিষয়ে সতর্ক থাকবেন, এই আশায়। ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

ইমরান আশফাক বলেছেন: ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিচ্ছি, এই জুনে বাইপাশ অপারেশন করালাম। এখন প্রত্যেকদিন সকালে একঘন্টা জোরে জোরে হাটি ঘাম ঝরিয়ে, হাটতে যাওয়ার আগে গরম পানির সাথে লেবুর রস গুলিয়ে খালি পেটে খেয়ে নিই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.