নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সেলিম আল দীন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী নাট্যকার ও গবেষক। জন্মেছিলেন ১৯৪৯ সালের ১৮ই আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে৷ মফিজউদ্দিন আহমেদ ও ফিরোজা খাতুনের তৃতীয় সন্তান তিনি৷ ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে নাটক এর উপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন সেলিম আল দীন। সেলিম আল দীনের বাবা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। সেই সূত্রে ঘুরেছেন বহু জায়গা। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি ছিল তাঁর চরম ঝোঁক। লেখক হিসাবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে, কবি আহসান হাবিব সম্পাদিত দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার মাধ্যমে। আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের নিয়ে লেখা তাঁর বাংলা প্রবন্ধ নিগ্রো সাহিত্য ছাপা হয় ওই পত্রিকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেলিম আল দীন, যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। ১৯৭৪ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। একেবারে অল্প বয়স থেকেই তাঁর দুরন্তপনা ছিল চোখে পড়ার মত৷ সবাইকে চমকে দিতে পছন্দ করতেন তিনি৷ দিন-রাতের কোন বালাই ছিল না৷ ভয় দেখাতে কোনো দ্বিধা করতেন না তিনি৷ প্রচন্ড দুরন্তপনার পাশাপাশি চলত তাঁর পড়ালেখাও৷ ছেলেবেলার বন্ধুরা এখনও তাঁর চঞ্চলতার সেসব কথা বলে যেসবের মধ্যে একই সঙ্গে একজন সৃষ্টিশীল মানুষের সুপ্ত প্রতিভা ছিল৷ পরের অনুকরণ করে কখনও নিজস্বতা অর্জন করা যায় না৷ খুব জোরের সঙ্গে বারবার বলেছেন, ‘অন্যের বসন কখনও নিজের হয় না৷ হয় না সেটা নিজের ভূষণ৷’
যেদিন ঢাকায় ল্যাব এইড হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মারা গেলেন তিনি৷ সারা দেশের নাট্যপ্রিয় মানুষকে, অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী আর প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের চোখের জলে ভাসিয়ে বিদায় নিলেন বাংলা নাটকের অবিসংবাদিত পুরুষ সেলিম আল দীন৷ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার পর তিনি ১৯৮৬ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাটক ও নাট্যতত্ত্ব’ বিভাগ৷ তিনি মনে করতেন, একজন লেখককে বাঁচায় তাঁর নিজস্ব সৌন্দর্যদর্শন, তাঁর নিজের এসথেটিঙ্৷ যার সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হয় দেশীয় ঐতিহ্যের শিল্পধারনা ও প্রেরণা৷ বাংলা একাডেমী তাঁর কয়েকটি বই প্রকাশ করে৷ আমাদের মহানবী (সা.) এর প্রতি ছিল অগাধ আস্থা ও ভালোবাসা।
গান লিখতেন আশির দশকের মাঝমাঝি সময় থেকে৷ নাটকের গান তো ছিলই৷ পাশাপাশি আরও অনেক গান লিখেছিলেন৷ তিনি গানকে বলতেন, কথাসুর৷ ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট একটা গানের দল৷ নাম দিয়েছিলেন, ‘কহনকথা’৷ সেলিম আল দীন প্রেরণা পেয়েছেন হোমার, ফেরদৌসী, গ্যেটে আর রবীন্দ্রনাথের মতো কবিদের কাছ থেকে৷ তাঁদের কাছ থেকে বারবার ফিরে গেছেন একান্ত বাধ্যগত শিষ্যের মতো৷ সেলিম আল দীনের নাটক মানেই মার্গীয় ভাষারীতির প্রয়োগ এবং সঙ্গীতের অসাধারণ ব্যবহার।
সেলিম আল দীন এক সম্মোহনের নাম। তিনি যে কোনো মানুষকে খুব সহজেই সম্মোহিত করতে পারতেন। তাঁর সম্মোহনী শক্তির গুণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের আমগাছের পাদদেশে বসা দৃষ্টিহীন সিগারেট বিক্রেতা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের শত শত কর্মী তাঁকে অন্তরে স্থান দিয়েছিলেন গভীর ভক্তিতে ও প্রেমে।
নজরুল অনেক বড় সাহিত্য প্রতিভা, নজরুলকে অসম্মান করলে তোর নিজেকেই অসম্মান করা হবে। তিনি শেক্সপিয়ারের চেয়েও ফরাসি মলিয়েরকে মনে করতেন বড় নাট্যকার। তিনি বলতেন, ইংরেজি সাম্রাজ্যবাদের ভাষা হওয়াতে শেক্সপিয়ার বেশি ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী কিন্তু সেই তুলনায় মলিয়ের ছড়াতে পারেনি, মলিয়ের শেক্সপিয়ারের চেয়েও বড়।
আরেক দিন তিনি ট্র্যাজেডি নাটক সম্পর্কে বললেন, বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম ট্র্যাজেডি হলো সোহরাব-রুস্তমের ট্র্যাজেডি, এটি ইডিপাসের ট্র্যাজেডিকেও ছাড়িয়ে গেছে।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ২:১১
পংবাড়ী বলেছেন:
যাক, এবার বাংলাদেশ; বাংলাদেশের এক নাট্যকারের কথা, ভালো!
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সেলিম আলদিন আসলেই তিনি একজন অসাধারন ব্যাক্তিত্ত।।