নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমার নাম গোলাম কিবরিয়া। ১৯৭১ সালে আমার বয়স ছিল ২৩ বছর। তখন আমি একেবারে টগবগে জুয়ান। আমার বাড়ি যশোরের নয়া পাড়ায়। যুদ্ধের আগেই বাবা-মা মারা যায়। দু'টা বোন ছিল বিয়ে দিয়েছি। তারা দুই জন'ই ইন্ডিয়া চলে গেছে। যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমি পড়লাম ভয়াবহ বিপদে। তখন আমার মনে হয়েছিল যুদ্ধে পাকিস্থানের জয় হবে। মুক্তিবাহিনিরা কিছুতেই পারবে না। তাই আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে রাজাকারের খাতায় নাম লেখাই। সেই সময় গুলোতে ভালো ইনকাম করেছি। বেতন পেতাম। ভালো খাওয়া দাওয়া। লুটের মালামালের ভাগও পেতাম। নানান বয়সী নারীদের ভোগ করতে পারতাম। তবে, আগে পাকিস্তানী স্যাররা ভোগ করতো- পরে আমরা ভোগ করতাম। তবে হিন্দু মেয়েদের আমরাই আগে ভোগ করতাম। আমার কাজ ছিল গ্রামে গ্রামে ঘুরে অল্প বয়সী মেয়েদের খুঁজে বের করা। তাদের ধরে নিয়ে আসা।
আমি অতি বুদ্ধিমান। তাই গন্ডগোলের সময় নিজের অঞ্চল ছেড়ে অন্য অঞ্চলে গিয়ে রাজাকার বাহিনিতে যোগ দেই। যদি কোনো কারনে পাকিস্তান যুদ্ধে হেরে যায় তাহলে আমি আমার অঞ্চলে ফিরে যাবো। গিয়ে বলব- অমুক অঞ্চলে যুদ্ধ করেছি। হলেও তাই মুক্তিবাহিনিরা যুদ্ধে জিতে গেল। যুদ্ধের পর আমি নিজ গ্রামে ফিরে গেলাম। মরে পরে থাকা এক পাকিস্তানীর পিস্তল সাথে করে নিয়ে আসি। আমার গ্রামবাসীকে বললাম, বোয়ালখালি বাজারে যুদ্ধ করেছি। এক পাকিস্তানী আর্মিকে তো মেরে তার পিস্তলটা নিয়ে নিলাম। পিস্তলটা বের করে গ্রামবাসীকে দেখালাম। সবাই আমাকে স্যলুট দিয়ে গ্রহন করলো। তারা আমাকে নিয়ে অহংকার করে। অনেক ছেলে মেয়ে আমার কাছে আসে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে। আমার বুদ্ধি বেশি হওয়াতে খুব দ্রুত মুক্তিযুদ্ধের সনদ পেলাম। এখন তো আমার সুবিধা আর সুবিধা। সরকার থেকে আমাকে তেল-চাল-ডাল থেকে শুরু করে নগদ টাকাও দেয়। হা হা হা.... পত্রিকা আর টিভি চ্যানেলওয়ালাদের কাছে নানান কাহিনি বানিয়ে অনেকবার সাক্ষাৎকার দিয়েছি।
গ্রামের মানূষ আমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাহবা দিতে লাগল। সুযোগ পেলেই গ্রামের মানুষদের বাশ দেই। মাস্টার সাহেবের মেয়ে বিলকিস বানুরে বিয়ে করলাম। কিন্তু তার বাচ্চা হয় না। দিলাম তালাক। পরে পাশের গ্রামের কুদ্দুস বেপারির মেয়েকে বিয়ে করলাম। বিয়ের এক বছর পর আমার একটা পুত্র সন্তান হলো। পোলার নাম রাখলাম মুরাদ আলী। মুরাদের বয়স এই বৈশাখে ত্রিশ হলো। মুরাদকে আমি অনেক ভালোবাসি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার ছেলে অনেক সুবিধা পায়। কোটা আছে সুবিধা। কিন্তু মুরাদ এই কোটা সুবিধা নিয়ে একটা সরকারি চাকরি যোগাড় করতে পারল না। গাধা পোলা। বিবিএ কেমনে পাশ করলো কে জানে! অনলাইনে চাকরির নিবন্ধন করতে পারে না। নীলক্ষেত গিয়েও টাকা দিয়ে অনলাইন এ ফরম পূরণ করে। কোটা সুবিধার কারনে আরও দুই বছর সুযোগ আছে। আমি বলেছি বাবা মুরাদ- তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। তুমি কোনো রকমে শুধু চাকরির ইন্টারভিউ'র দাওয়াত পাও তারপর বাকিটা আমি দেখুমনে। যত টাকা পয়সা লাগে আমি দিমু। কিন্তু গত পাঁচ বছরে মুরাদ কম করে হলেও সরকারি চাকরির জন্য অসংখ্য বার চেষ্টা করেছে। বারবার ব্যর্থ হয়েছে।
দেশ স্বধীন হওয়ার এত বছর পরও সরকার আবার নতুন করে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করতে শুরু করেছে। যেহেতু আমি মুক্তিযোদ্ধা (যদিও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা)। আমার গ্রামে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে সঠিক মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করতে। হা হা হা---। সরকার থেকে টাকাও দিচ্ছে ভালোই। আমি আমার ইচ্ছা মতোন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করছি। একজনকে মুক্তিযোদ্ধা বানাতে আমি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিচ্ছি। আসল মুক্তিযোদ্ধারা এসে পায়ে ধরে। কান্দে। আমার তাদের দিকে ফিরেও তাকাই না। আমার কথা হলো যারা টাকা দিবে তারাই মুক্তিযোদ্ধা হবে। ব্যস। আমার টাকার দরকার আছে- ছেলে আই ফোন চাইছে।
১৯৮০ সালে আমি ঢাকা চলে আসি। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারনে বড় একটা চাকরি পেয়ে যাই। ২৫ বছর সেখানে চাকরি করি। বেতন এর টাকা ছাড়াও অবৈধ্য ভাবে বিপুল টাকা ইনকাম করি। ঢাকা শহরের নানান এলাকায় বিভিন্ন নারীর কাছে আমার যাতায়াত আছে। তাদেরকে ভোগ করার পর দুইহাতে তাদের টাকা দেই। শুধু মাত্র আমার বুদ্ধির কারনে এই স্বাধীন দেশে রাজার হালে থাকতে পারছি।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০০
রুমি৯৯ বলেছেন: থিমটা ভালো৷ এটাই বর্তমান দেশের বহুলাংশের প্রতিচ্ছবি৷
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০১
চাঁদগাজী বলেছেন:
তাজুদ্দিন সাহেব ও শেখ সাহেবের বেকুবীর জন্য ভয়ংকর সমস্যার সৃস্টি হয়েছে।
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০৭
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:
রাজাকারদের জন্যে এই গানটি থাকলো-
৫| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১:০২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এমন কতশত গোলাম যে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে!! ভাল ম্যাসেজ।।
৬| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১:৪৫
চৌধুরী ফয়সল বলেছেন: আজ থেকে ১৫০ বছর পরেও মুক্তি যুদ্ধার জন্ম হবে। চাকরির ক্ষেত্রে কোটার রীতি বাদ না দিলে মেধাবীরা সামনে আসতে পারবে না এবং দেশেরও উন্নতি সাধিত হবেনা
৭| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ৩:০৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আপনের গল্প মিললো না।
মুক্তিযোদ্ধারা তো ২৭ বছর রিক্সা চালাইয়া ভিক্কা কইরা খাইছে। মাত্র কয়েক বছর থেকে ভাতা পাইতেছে।
আর একটা আলবদর-রাজাকার দেখাইতে পারবেন না যে কোটিপতি না।
রাজাকারদের জন্য ভাতা আনতে রাবেতা বানাইয়া ডোনেশান অল্প অল্প মাইরা কাশেম নিজেই হাজার কোটি বানায়ফেলছিল....
৮| ০১ লা মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩২
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: গল্পটার সত্যমিথ্যা জানিনা। তবে এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে এমনটা বিশ্বাস করি। আমাদের জাতির দুর্ভাগ্য সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করতে পারেনি। তাই তো এখনও অনেক মুক্তিযোদ্ধার কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগী বীর সন্তানদের বদনাম হয়!
বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা তালিকা হালনাগাদেও অনেক প্রশ্ন উঠেছে। বুঝিনা কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল।
আপনার পোষ্ট পড়ে ভালো লাগলো। সুন্দরভাবে বুঝাতে পেরেছেন গল্পে।
শুভকামনা জানবেন সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৪৭
অপ্সরা বলেছেন: এত বুদ্ধি!!!!!!!!!!!