নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাস্তায় পাওয়া ডায়েরী থেকে- ৩৯

০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২৪


একদিন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে, রাস্তায় এই মৃত ফড়িং টি পাই। বাসায় এসে ফড়িংটিকে বাঁচাতে অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু বাঁচল না।

সময় দুপুর বারোটা।
বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেট এসে দাঁড়িয়ে আছি। যাবো মিরপুর-১০। পকেট একেবারে শূন্য। দুপুরবেলা রোদের মধ্যে হেঁটে মিরপুর যেতে ইচ্ছা করছে না। ইচ্ছা করছে গাড়িতে এসি ছেড়ে আরাম করে গান শুনতে শুনতে যাই অথবা পত্রিকা পড়া যেতে পারে। বিদেশে কি সুন্দর চাওয়া মাত্র লিফট পাওয়া যায়। কি করবো...কি করবো ভাবছি, ঠিক তখনই একটা সাদা রঙের গাড়ি এসে আমার সামনে থামল। গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক নেমে বললেন- এই ছেলে তোমার নাম কি- আজমল উল্লাহ? চারিদিকে গাড়ি-বাসের বিকট শব্দ, প্রচন্ড রোদের তাপ। আমি ঘামছি। আমি ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললাম- এই যে আপনার নাম কি- আহমদ ইবনে রফিক হাইয়ান? ভদ্রলোক চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন না- আমার নাম রফিক চৌধুরী। আমি একটু হাসি দিয়ে বললাম- আমার নাম- বাবুই।

বেলা দুইটা।
আমি দাঁড়িয়ে আছি সংসদ ভবনের সামনে। গ্রাম থেকে নতুন শহরে আসা লোকদের মতন হা করে তাকিয়ে আছি সংসদ ভবনের দিকে। এমন সময় দুইজন পুলিশ এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল- এখানে কি করছেন? আমি বললাম- এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খাবো, ভাবছি সংসদ ভবনে কি পানির কল আছে! ওসি সাহেব বললেন- তোর নাম কি? কী করা হয়? আমি বললাম- আমার নাম বাবুই। সাংবাদিকতা করি। ছবি তুলি। ওসি বলল, কোন পত্রিকায়? আমি বললাম- বিশেষ কোনো পত্রিকা নেই। ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা। যেখানে সুযোগ পাই টুকটাক কাজ করি। গত সপ্তাহ যুগান্তর পত্রিকায় আমার তোলা ছবি দিয়ে দু'টা লীড নিউজ হয়েছে- হয়তো আপনার চোখে পড়েছে। পুরান ঢাকার সমস্যা নিয়ে। ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে বললেন- আপনাকে আমার সাথে থানায় যেতে হবে। আমি পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়লাম।

থানায় যাওয়ার দুই ঘন্টা পর পুলিশ আমাকে বলল- আমরা পত্রিকা অফিসে খোঁজ নিয়েছি- বাবুই নামে কোনো ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক নেই। ওসি সাহেবের হুমুকে একজন আমাকে ঠাটিয়ে এক চড মারলো। পাঁচ কেজি ওজনের চড়ে আমি ছিটকে পড়লাম। উঠে দাঁড়াতেই- ওসি সাহেব বললেন- এইবার বল তোর আসল ধান্ধা কি? এরপর বেশ কিছু নোংরা কথা- যা বাংলা ভাষায় আমার পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। রাত এগারোটায় ডিউটি অফিসার এসে আমাকে ছেড়ে দিলেন। থানা থেকে বের হয়ে আমি হাঁটছি। আমার ভালো নাম রাজীব নূর খান। পত্রিকাতে এই নামেই আমি কাজ করি। হিমি আমাকে আদর করে বাবুই বলে ডাকে। ইদানিং কেউ যদি আমার নাম জিজ্ঞেস করে- আমি ছোট্র বাচ্চাদের মতন বলি- আমার নাম বাবুই। হাঁটতে হাঁটতে আমি আবার সংসদ ভবনের সামনে এসে দাঁড়াই। অনেক ক্ষুধা পেয়েছে। গলা শুকিয়ে কাঠ। সংসদ ভবনের দিকে তাকিয়ে মনে হলো- রাতের বেলা'ই সংসদভবন দেখতে বেশী সুন্দর লাগে।

রাত দুইটায় বাসায় ফিরলাম- বিষন্ন মন এবং ক্লান্ত শরীর নিয়ে।
বাসায় ফিরে অনেক সময় আরাম করে গোছল করলাম। পেট ভরে ভাত খেলাম- রুই মাছ, কলমি শাক আর ডাল দিয়ে। ব্যালকনিতে গিয়ে বসলাম। এখন আমি হিমির কথা ভাববো। অনেকদিন হিমির সাথে দেখা হয় না। আমি ইচ্ছা করেই অনেকদিন পরপর হিমির সাথে দেখা করি। বুদ্ধিমান'রা জানে প্রিয় মানুষদের সাথে রোজ রোজ দেখা করা ঠিক নয়। রাত তিনটায় হিমির বাসায় ফোন দিলাম। ফোন ধরলেন হিমির বাবা।
আমি বললাম- তেজগাঁ থানা?
হিমির বাবা বললেন- হারামজাদা, তেজগাঁ থানা তোমার ইয়ে দিয়ে ডুকিয়ে দিবো।
আমি বললাম- হিমিকে ফোন দেন- জরুরী কথা আছে।
হিমির বাবা চিৎকার করে বললেন- তুই কে? আমি নরম স্বরে বললাম- আমি আপনার মেয়ের জামাই।
হিমির বাবা বললেন- ফোন রাখ শুয়োর। আমি বললাম- আমার নাম বাবুই।

বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির একটা অলৌকিক ক্ষমতা আছে। প্রতিটা মানুষের মন আদ্রতায় ভরিয়ে দেয়। একজন রিকশাওয়ালা আনন্দে গান গেয়ে উঠে। এত নাম থাকতে হিমি আমাকে কেন বাবুই নামে ডাকে? আজিব! বর্ষা কালে আকাশের তারা গুলো কম জ্বল জ্বল করে কিন্তু অনেকক্ষন বৃষ্টি হওয়ার পর আকাশ যখন পরিস্কার হয়ে যায়- তখন আবার ঝকমক। আকাশের সবচেয়ে জ্বলজ্বল করা তারাটির নাম হচ্ছে হিমি। হিমির কাছে প্রতিদিন একটা করে চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে। খুব আয়োজন করে চিঠি লিখতে বসি। কলম হাতে নিয়ে বসে থাকি- কী লিখব ভেবে পাই না। আমি চিঠিতে লিখলাম- হিমি আমার খুব ইচ্ছা করে, জোছনা রাতে সমুদ্রের পাড়ে তোমাকে নিয়ে হাঁটি।সেদিন তোমাকে অবশ্যই নীল শাড়ি পড়তে হবে। দুই হাত ভরতি থাকবে লাল-নীল কাঁচের চুড়ি, কপালে একটা বড় নীল টিপ। বাতাসে তোমার মাথার চুল উড়ে এসে আমার গায়ে পড়বে। তোমার শাড়ির আঁচল বাতাসে পতাকার মতন উড়বে।

অনেকদিন আগে একটি গল্প পড়েছিলাম, গল্পটি অনেকটা এই রকমঃ
রাশিয়ার এক শহরে বাস করতো আকসেনভ নামের এক যুবক। পেশায় ছিল ব্যবসায়ী, আর ছিল দু খানা দোকান ও বসত ভিটা। ছোটবেলা থেকে নেশা করলেও এখন সে পুরাপুরি ভালো, মাঝে মাঝে কেবল ভদকা খেয়ে নেশা করে। গ্রীষ্মের এক সকালে ব্যবসার কাজে শহরে যাওয়ার জন্য বের হয় যুবক। স্ত্রী তাকে বলে যে ,আমি খুব একটা খারাপ স্বপ্ন দেখেছি তুমি আজ শহরে যেওনা। সে উপেক্ষা করে শহরে যায় এবং রাস্তার মাঝে পরিচয় হয় এক ব্যবসায়ীর সাথে। দু’ জনেই রাতে এক সরাই খানাতে থাকে।
পরদিন সকাল বেলা আকসেনভ সরাই খানার সব লেনদেন চুকে দিয়ে বের হয়। প্রায় মাইল পঁচিশ যাবার পর সে আরেকটা সরাই খানাতে দাঁড়িয়ে পড়ে ঘোড়া গুলোকে কিছু খাইয়ে নেবার জন্য। কিছুক্ষণ পর একজন অফিসার এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে। সে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিলেও মূল ঘটনা বুঝে উঠতে পারেনা। অফিসার আকসেনভকে বলে যে, যে লোকটির সাথে আপনি রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন সে খুন হয়েছে। আর আমি একজন পুলিশ অফিসার। আপনার পোটলা তল্লাসী করব। যেই বলা সেই কাজ। আকসেনভের ব্যাগ তল্লাসী করে একটা রক্ত মাখা ছোরা পাওয়া গেল। ছোরাতে কেন রক্ত লেগে আছে জিজ্ঞেস করলে আকসেনভ কোন উত্তর দিতে পারেনা। সে শুধু বলে আমি কিছু জানিনা। আমি খুন করিনি। ....

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

এই মেঘ এই রোদ্দুর বলেছেন: ্লিখে যান অবিরত

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১০ নম্বরে যেতে হলে সংসদ ভবনের সামনে কেন?

তোমার শাড়ির আঁচল বাতাসে পতাকার মতন উড়বে।
উপমাটা ভালো লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.