নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
কোনো ভণিতা না করে সরাসরি মুল কথা বলি।
আমি থাকি খুলনা। রুপসা ব্রীজের কাছে। চাকরি করি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বেতন মন্দ নয়। লেখা পড়া শেষ করেই চাকরিটা পেয়ে গেলাম। আমার অফিসে সবচেয়ে কম বয়স আমার। তবুও সবাই আমাকে আপনি করে বলে। আমার বাবা মা নেই। ছোটবেলায়'ই তারা মারা যান।
অপ্রত্যাশিত এক আনন্দের ব্যাপার ঘটলো! পর-পর তিনদিন অফিস ছুটি। ঈদের ছুটি ছাড়া তিনদিন ছুটি সহজে পাওয়া যায় না। এই তিনদিন ছুটির সাথে আবার যোগ হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি। একদম সোনায় সোহাগা। ভাবলাম ছুটিটা কাজে লাগাই। চারদিন ইচ্ছে মতো সারা ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াবো। ঢাকা শহরের তেজগাঁ'তে আমার বন্ধু রবিন থাকে। রবিনের বাসায় থাকব। অবশ্য রবিন আমাকে সময় দিতে পারবে না। তার অফিস দুই'শ কোটি টাকার একটা কাজ পেয়েছে। ভয়াবহ ব্যস্ত সময় পার করছে রবিনের অফিসের লোকজন। আমাকে একাই ঘুরে বেড়াতে হবে। আমার একা একাই ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে।
ট্রেনে করে ঢাকা পৌঁছে গেলাম। জার্নি করার কারনে রাতে বেশ ভালো ঘুম হলো। খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেল। রবিনের বাসার সামনেই হাতিরঝিল। হাতিরঝিলের খুব নাম শুনেছি, সেখানে হাঁটতে বের হলাম। এবং পুলিশের কাছে ধরা খেলাম। পুলিশ আমার কলার ধরে গাড়িতে তুলে নিল। আমার কোনো কথাই শুনলো না। বরং আমাকে একটা তিন কেজি ওজনের থাপ্পড় দিল। আমার মোবাইলটা কেড়ে নিল। আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার মাথা একটুও কাজ করছে না। ঢাকা এসে দেখি ভয়াবহ বিপদে পড়লাম!
পুলিশের গাড়ি আমাকে নিয়ে ঘুরছে। রাস্তা থেকে আরও কয়েকজনকে ধরলো। পুলিশ তাদের নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে বেশ কিছু টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিল। আমার সাথে টাকা নেই। আমি হাঁটতে বের হয়েছি। আমার ম্যানিব্যাগ রবিনের বাসায়। একজন পুলিশ আমার সাথে দেনদরবার করতে চেষ্টা করছে। তার কথা হাজার পাঁচেক টাকা দিলে, সে ওসি সাহেবকে বলে আমাকে ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবে। কি অদ্ভুত ব্যাপার! পুলিশের নিষ্ঠুরতায় আমি বাকরুদ্ধ।
হঠাত ওসি সাহেবের মোবাইলে ফোন আসে। ওসি সাহেবের মুখ শুকিয়ে গেল। সে মনে হলো সে বেশ ভয় পেয়েছে। ওসি সাহেব শুধু বলল, গুলশানের এক বাসায় এক্ষুনি যেতে হবে। এক্ষুনি। ভোরবেলা রাস্তায় কোনো জ্যাম নেই। খুব অল্প সময়েই আমরা গুলশান চলে এলাম। আমি সহ মোট পাঁচ জন। পাঁচ তলার ফ্ল্যাটে উঠে ভয়াবহ এক দৃশ্য দেখলাম। আমি তো প্রচন্ড ভয় পেয়েছিই। কিন্তু আমার মনে হলো আমার চেয়ে বেশি ভয় পেয়েছে পুলিশ গুলো। পুলিশের লোকনজন যে এত ভীতু আমার ধারনা ছিল না। অবশ্য দৃশটাও খুব সুখকর না।
একটি সতের আঠারো মেয়ে ফাঁসি দিয়েছে। ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। মেয়েটির বাবা মা এবং বড় বোন চিৎকার করে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে। এই কান্না সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। যাই হোক, এখানে পুলিশের ভূমিকা দেখে আমি প্রচন্ড অবাক হলাম। চারজন পুলিশ'ই পাশের ঘরে চুপ করে বসে আছে। ওসি সাহেব খুব ব্যস্ততার ভাব দেখিয়ে কাকে যেন মোবাইলে ফোন করে ফিসফিস করে কথা বলছেন। আমি কি করব বুঝতে পারছি না। এখন আমি এখান থেকে পালিয়ে যেতে পারি। ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মুখে পুলিশ গুলো আমার কথা ভুলেই গেছে।
বেশ কিছুক্ষন পর পুলিশ গুলো নড়েচড়ে উঠলো। তারা বলল লাশ নামাতে হবে। কিন্তু কোনো পুলিশ'ই লাশ নামাতে রাজী নয়। কেমন এক ধরনের ভৌতিক অবস্থা। ওসি সাহেব ফোন করে দুইজন মহিলা পুলিশ আনলেন। মহিলা পুলিশও লাশ ধরার ব্যাপারে কোনো রকম আগ্রহ দেখালো না। ওসি সাহেব আমাকে বললেন, তুমি লাশটি নিচে নামাও। এবং লাশটি মনোযোগ সহকারে দেখো। দেখে বিস্তারিত বলো- মহিলা পুলিশ দু'জন সব লিখে নিবে। একজন মানুষ হিসেবে এতটুকু সহযোগিতা কি তোমার কাছে আশা করা যায় না?
অনেক কষ্টে আমি একজন মহিলা পুলিশের সহযোগিতায় লাশটি নিচে নামাতে সক্ষম হই। লাশ নয় যেন পাথর। শুনেছি- ফাঁসিতে মৃত্যু হলে চোখ বেড়িয়ে যায়, জিবহা বের হয়ে যায়। কান-নাক দিয়ে রক্ত পড়ে ইত্যাদি ইত্যাদি। সেসব কিছুই দেখলাম না। শান্ত একটি মেয়ের মুখ। পবিত্র একটি মুখ। মনে হয় ফাঁসিতে ঝুলার আগে মেয়েটি নামাজ পড়েছিল। খুব সুন্দর করে স্কার্ফ পরা। মেয়েটি প্রায় চব্বিশ ঘন্টা আগে ফাঁসিতে ঝুলেছে। কারন দুই পায়ে রক্ত জমে গেছে। চামড়া ফেটে টুপটুপ করে রক্ত পড়ছে। মেঝে রক্তে ভেসে গেছে। বালতি ভরে পানি এনে রক্ত আমাকেই পরিস্কার করতে হলো। গলার গিটটা খুলতে খুব বেগ পেতে হলো।
মহিলা পুলিশটি আমাকে বলল, আপনি মেয়েটিকে নগ্ন করে সারা শরীর ভালো করে দেখেন। কোথাও কোনো খামচি, কামড় বা কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা। দেখে দেখে আমাকে বলুন। আমি সব লিখে নিচ্ছি। যদিও এই কাজ আমার করার কথা কিন্তু আমি প্রেগনেন্ট। চার মাস চলছে। পোস্টমোরটেম এর আগে এইসব প্রাথমিক কাজ আমাদের'ই করতে হয়। আমি বারবার ভাবছি এই মেয়েটির বয়সী আমার একটি বোন আছে। গত বছর তার বিয়ে হয়েছে। সে এখন স্বামীর সাথে কানাডা আছে। যাই হোক, হঠাত করে আমার খুব কান্না পেল। বুকের মধ্যে চাপ চাপ কষ্ট অনুভব করছি। যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
আজ এখানেই শেষ করছি।
দ্বিতীয় পর্বটা আগামীকাল দিব। চোখ রাখুন। তবে একটা কথা বলে রাখি, মেয়েটির সারা গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। আঘাত গুলো দেখলেই বুঝা যায় অসংখ্য পুরুষ দিনের পর দিন মেয়েটিকে শারীরিক অত্যাচার করেছে। একটি চিঠি মেয়েটির কোমরে খুঁজে রেখেছিল। খুব সুন্দর ঝরঝরে হাতের লেখা। পুরো চিঠিটি এক নিঃশ্বাসে পড়লাম আমি।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ২য় পর্ব আগামীকাল।
২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৮
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
হুম....
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু হুম ???
৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৫
তারেক ফাহিম বলেছেন: ঘটনার সত্যতা এবং মন্তব্য তাহলে পরের পর্বেই পাবো?
সর্বশেষে তাহলে আপনাকে দিয়েই সনাক্ত করানো হলো মেয়েটির আঘাতের চিহ্ন!!!!!!!
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: ঘটনা বেশ জটিল।
আগামীকাল রহস্যের সমাধান হবে। এবং জট খুলবে।
৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশের পুলিশ পাকিস্তান আমল থেকে হাজার গুণে ভয়ংকর
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু ভয়ঙ্কর না। নিষ্ঠুর এবং বদ। বিরাট বদ।
৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫১
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
আপনি ভাল গল্প লেখেন। হরর কিছুই মনে হল। হুম...
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ব্যাপারটা আরও বেশি ভয়ংকর। ভালো লিখতে পারি না বলে ভয়টা ফুটিয়ে তুলতে পারি না।
৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: যত্ন করে শেষ করবে। হঠাৎ শেষ করে দিবে না। গুরুর প্রভাব আছে তবে ভালো নিজের মতন লিখেছো এটা সে ভাবেই রেখো।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১২
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপা।
৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ভালো লেগেছে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭
টারজান০০০০৭ বলেছেন: গল্প না সত্যি ?
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সত্যি।
৯| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৩
রাকিবুল হাসান অনিক বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: পরের পর্ব আর লিখব না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঝরঝরে বর্ণনায় ভাল লাগল....
তারপর???