নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
বাংলাদেশের একটি গ্রামের রাস্তা।
গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। স্বাধীনতার এত বছর পরও গ্রামের সঠিক উন্নয়ন হয়নি আজও। গ্রামের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা লুটেপুটে খাওয়া হয়েছে। সারা বাংলাদেশে গ্রামের লক্ষ লক্ষ রাস্তা এখনও কাঁচা। বৃষ্টির দিনে সেসব রাস্তায় হাঁটা যায় না। প্যাক কাঁদায় ভরে যায় পুরো রাস্তা। পা দিলে পা ডেবে যায়। এত পরিমান কাঁদা হয় যে শুকাতেও একমাস লাগে। কাঁচা মাল ভ্যানে করে বাজারে নেওয়া সম্ভব হয় না। মাথায় করে নিতে হয়। কি পরিমান কষ্ট তারা করে একবার গ্রামে গিয়ে দেখে আসুন নিজের চোখে। শুধু বড় বড় কথা বললে হবে না- 'দেশ উন্নয়নের মহা সড়কে'। গ্রামে ২৪ ঘন্টায় ১৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আবার অনেক গ্রামে বিদ্যুৎ ই নাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- প্রতিটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়া হবে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ করে বিদ্যুৎ নাই।
এই আধুনিক যুগে এসেও এবং স্বাধীনতার এত বছর পরও ছেলে মেয়েদের বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে স্কুলে যেতে হয়।
আমি গত কয়েক বছরে প্রায় ২৫১ টা গ্রাম ঘুরেছি। নিজের চোখে দেখেছি গ্রামের মানূষের দূঃখদুর্দশা। শহরের মানূষেরা ভাবতেই পারবে না তাদের কি পরিমান সীমাহীন কষ্ট। কথার কথা বলছি, উদাহরন স্বরুপ মনে করুন বগুড়া অঞ্চলটির কথা। দেখবেন বগুড়া শহরটি বেশ সুন্দর। চার পাশেই কোথাও কাঁচা রাস্তা নেই। কিন্তু আপনি যখন কোনো গ্রামে যাবেন- তখন দেখবেন- কাঁচা রাস্তা কাকে বলে। এমপি গন শহরটা একটু ভালো রাখতে চেষ্টা করেন। এই অবস্থা শুধু বগুড়ার না, সমগ্র দেশের একই অবস্থা। শহরটা মোটামোটি ভালো। কিন্তু গ্রামের মানুষের সমস্যার শেষ নেই।
গ্রামের লোকজন এমপি'র কাছেই যেতে পারে না। একবার এমপি হওয়ার পর পারতপক্ষে একজন এমপি গ্রামে খুব কম যান। এমনও এমপি আছেন- তার আসনের সব গ্রাম তিনি নিজে একবারও যাননি। গ্রামের লোকজন তাকে শুধু পোস্টারে দেখেছেন। জেলাপরিষদ, মেম্বার বা চেয়ারম্যান তারা তাদের কাজ যথাযথভাবে পালন করছেন না। গ্রামের মানুষ তাদের কাছে গেলে কোনো সহযোগিতা পায় না। বিদ্যুতের জন্য, পাকা রাস্তার জন্য গ্রামের মানুষ পয়সাওয়ালা লোকদের পেছনে দিনের পর দিন ঘুরে কিন্তু ফলাফল শূন্য। এমপিদের নিজ নিজ আসনে কমপক্ষে ১০০ বিঘা জমি আছে। কিভাবে সম্ভব?
কাঁচা রাস্তার কারনে পাট মাথায় করে বাজারে নিয়ে যেতে হয় বিক্রি করার জন্য। এই পাট'ই তার সারা বছরের সম্বল।
শহর যতই উন্নত হোক। বড় বড় বিল্ডিং থাক। অসংখ্য শপিংমল থাক। ওভার ব্রীজ থাক। কোনো লাভ নেই যতক্ষন পর্যন্ত গ্রামের উন্নয়ন না হবে ততক্ষন পর্যন্ত দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। রবীন্দ্রনাথও গ্রামের উন্নয়ন এর কথা বারবার বলেছেন। আমি নিজের চোখে দেখি নাই- তবুও একটা কথা নিশ্চিত বলতে পারি- বাংলাদেশের সমস্ত গ্রামে যতগুলো এমপি আছে তাদের বাড়ির রাস্তা পাকা। পাকা না হলে তারা গাড়ি নিয়ে যাবে কি করে? অন্যদিকে গ্রামের সাধারন মানুষ চলাফেরা করার জন্য পাকা রাস্তা পায় না। শুধু মাত্র পাকা রাস্তা হলেই একটা গ্রাম অনেকখানি উন্নয় হয়ে যায়। স্কুলের ছেলে মেয়েরা এখনও বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে স্কুলে যায়। একজন এমপি কি পারেন না বাঁশের সাঁকো ফেলে দিয়ে একটা ব্রিজ করে দিতে?
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দু'টা কথা বলি। আমার গ্রাম খুব ভালো লাগে। গ্রামের পরিবেশ ভালো লাগে। বাংলাদেশের গ্রাম গুলো ঘুরে দেখার জন্য এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে গিয়েছি। নিজের চোখে দেখেছি- কাঁচা রাস্তা। পা দেয়া মাত্র হাঁটু পর্যন্ত ডেবে যায়। কোনো রিকশা বা ভ্যান যেতে পারে না। আমি কাঁচা রাস্তার ছবি তুলতে লাগলাম। তখন গ্রামের সব মানুষ ছুটে আমার কাছে এলো। তারা বলল- ''ভাই আপনি সাংবাদিক, আপনি আমাদের এই রাস্তাটা পাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ছেলে মেয়ে স্কুলে যেতে পারে না। বৃষ্টির দিনে যারা এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে তারা পিছলা খেয়ে হাত পা ভাঙ্গে। সেদিন একজন অসুস্থ রোগী কিন্তু তাকে আমরা হাসপাতালে নিতে পারি নাই। এই রাস্তায় কোনো রিকশা ভ্যান আসে না। শেষে সেই রোগী মারা যায়। এমপির কাছে গেলে- এমপি ধমক দেয়।
একটি গ্রামের চায়ের দোকান। বিদ্যুৎ নাই।
গ্রামের লোকজনের হতাশা দুঃখ কষ্ট আর যন্ত্রনাময় মুখ দেখে আমার খুব কষ্ট লাগল। আমার টাকা থাকলে আমি নিজেই তাদের রাস্তা পাকা করে দিতাম। গ্রামের সহজ সরল মানুষ গুলো কতটা অসহায়- নিজের চোখে না দেখলে আমি বিশ্বাস করতাম না। তারা আমাকে বারবার শুধু রাস্তাটা পাকা করার অনুরোধ জানিয়েছে। আমি খুব ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম, তারা টাকা চাচ্ছে না। চাকরি চাচ্ছে না। শুধু তাদের আকুল আবেদন কাঁচা রাস্তাটা যেন পাকা হয়। তাহলে তারা চাষবাস করে তাদের কাঁচা মাল সুন্দরভাবে বাজারে নিয়ে যেতে পারবে। ছেলে মেয়ে গুলো শান্তিতে স্কুলে যেতে পারবে। যদি প্রাইমারী স্কুল গুলোর অবস্থা খুব করুন। প্রতিটা প্রাইমারী স্কুল মেরামর করা খুব দরকার হয়ে পরেছে।
প্রাইমারী স্কুলের পাশের একটি দোকান। একটি দোকান থেকেই তাদের আর্থিক অবস্থা বুঝা যায়।
অর্থমন্ত্রী তো লম্বা বাজেট পেশ করেন। কাঁচা রাস্তা পাকা করার জন্য অনেক বরাদ্দ থাকে। তবু কাঁচা রাস্তা পাকা হয় না কেন? অথবা এভাবেও বলা যেতে পারে- ১০০ কাঁচা রাস্তা করার বিল পাশ হলো। সেখানে ৫০ টা কাঁচা রাস্তা পাকা হয়। তাহলে যে ৫০ টা কাঁচা রাস্তা পাকা হলো সেই টাকা গুলো কোথায় যায়? সরকার কি অডিট করে না? আমার হিসাব মতে, স্বাধীনতার পর ভিবিন্ন সরকার কাঁচা রাস্তা পাকা করার জন্য যে পরিমান বরাদ্দ দিয়েছে- সে মোতাবেক যদি কাজ হলো তাহলে সত্যি সত্যি গ্রামে একটাও কাঁচা রাস্তা থাকতো না। এজন্য আমাদের দরকার সৎ লোক। গ্রামের কাঁচা রাস্তা উন্নয়নের জন্য প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে এমপি। এমপিরা চোর না হলে- দ্রুত গ্রামের উন্নয় সম্ভব।
দূর থেকে দেখলে গ্রাম গুলো সুন্দর'ই লাগে। কিন্তু কাছে গেলে বুঝা যায়।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: হয়তো নিরাপত্তার একটা ব্যাপার আছে। সেই জন্যই যাওয়া হয় না।
শেখ হাসিনা কি যাবে? তার মন্ত্রীরাই তো ঠিক মতো যায় না।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯
মলাসইলমুইনা বলেছেন: আপনার সুন্দর লেখাটা এতদিন পরে এসেও পড়তে হলো বলে খুবই খারাপ লাগলো | ক্ষমতাবান মানুষেরাতো গ্রামে থাকে না | তাই এমন হয়, আরো হবেও | আমার কিন্তু নিম্ন আয় থেকে মধ্য আয়ের দেশ হয়েছি | আরো ভালোও করবো নিশ্চই কিন্তু গ্রামের পরিবর্তন হবে কি না কে জানে |অনেক ধন্যবাদ নিন সুন্দর আর দরকারি লেখার জন্য |
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: দেখুন, এই লেখার কোনো পাঠক নেই। মাত্র ২৭ বার পঠিত !!!
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১
মলাসইলমুইনা বলেছেন: এটা ছেড়ে দেন যার যার পড়ার রুচি, ইচ্ছে,অভ্যেসের আর লেখার ভালো-মন্দ, প্রয়োজন এগুলো বিচারের ক্ষমতার উপর | কারো কারো হয়তো চোখ এড়িয়েও যেতে পারে এই সুন্দর লেখাটা |আমার কোনো কমপ্লেইন নেই এ'ব্যাপারে |
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আমার দেশটা প্রচিন্ড ভালোবাসি।
কিন্তু দেশের জন্য কিছুই করতে পারছি না।
৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: সামু মডারেটদের কে পোস্টটিকে স্টিক করার আহবান রইলো। রাজীব নূর এর এই মাধ্যমে গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত জনপদের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামন। :p
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালোবাসা নিরন্তর।
৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৮
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: কিচ্ছু বলার নেই।
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
গ্রামের জন্য বাজেটের টাকা দেয়া হচ্ছে আইয়ুব খানের আমল থেকে; শেখ হাসিনা জাতি সংঘে কম এসে গ্রামে গেলে মানুষ উনাকে মনে রাখতো বেশী।