নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাটির পুতুল

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৮



(কয়েকদিন আগে মোবারককে নিয়ে দুই পর্বের একটা গল্প লিখেছিলাম, আপনাদের মনে আছে? সেই মোবারকের কথাই বলব আজ।)

মোবারকের মনে শান্তি নেই। শুধু মনে না, ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। সারাক্ষণ বুকের মধ্যে এক আকাশ হাহাকার। তার ধারনা হিরণ দত্তকে হত্যা করে সে মহা ভুল করেছে। অবশ্য কুসুমকে হিরন হত্যা না করলে সে হিরন দত্তকে পানিতে চুবিয়ে মারতো না। ওই ঘটনার পর সে ফরিদপুর এক আত্মীয় বাড়িতে চলে গিয়েছিল। কিন্তু সে বাড়িতে তো আর সারা জীবন থাকা সম্ভব নয়। তাই একদিন তাকে ফিরে আসতে হলো। এসে বুঝলো কোনো ঝামেলা হয়নি। পুলিশ তার খোজ খবর করেনি। হিরণ দত্ত আর কুসুমের হত্যার সাথে কেউ তাকে জড়ায়নি। ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর ভয়টা একেবারেই কমে গেল কিন্তু মনটা কেমন পাগল-পাগল হয়ে রইল। নিজের ঘর-বাড়ি আর গ্রাম একটুও ভালো লাগছিল না। কেমন একটা অপরাধ বোধ সারাক্ষন তাড়া করে বেড়ায়।

হোসেন আলী তার বন্ধু মানূষ। নানান রকম ব্যবসা করে হোসেন আলী'র লোকসান হচ্ছে। ব্যবসায় সে এখন পর্যন্ত সফলতা পায়নি। অবশ্য তার পুঁজি খুব বেশি ছিল না। হোসেন আলী তার ব্যবসার জন্য প্রায়'ই লোহজং আর টঙ্গীবাড়ি যেত। তার মনে মনে ইচ্ছে সে লোহজং এ স্থায়ী বসবাস করবে। যদি কোনোভাবে দুই তিন শতাংশ জমি কিনতে পারে তাহলে তো কথাই নেই। সে ভেবে রেখেছে একটা কাঠের দোতলা বাড়ি বানাবে।

মোবারক হোসেন, হোসেন আলীকে খুব করে বলল- আমাকেও নিয়ে চলো লোহজং।
হোসেন আলী বলল- তুই গিয়ে কি করবি?
যা হোক কিছু একটা করবো। শুনেছি লোহজং এলাকায় কাজের অভাব নেই।
মোবারক হোসেনের মন খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার ধারনা নতুন জায়গায় গেলে, কাজকর্ম কিছু জুটে যাবেই, তখন মাথার পাগল ভাবটা নিঃশেষ হবে।

খাল পাড়ে বসে হোসেন আলী আর মোবারক বেশ কয়েকদিন খুব মিটিং করলো। তাদের মিটিং এ কাজের কাজ কিছুই হলো না। কারন দুইজনের মাথায় বুদ্ধি কম।তাদের শুধু ছিল স্বপ্ন। তবে হোসেন আলী কাঠের ব্যবসা কিছুটা বুঝতো। আর মোবারকের ধারনা লোহজং গিয়ে সারারাত পদ্মা নদীতে মাছ ধরবে। সেখানে নদীতে মাছ আর মাছ। শুধু জাল ফেললেই হলো। মোবারক কিছু টাকা যোগাড় করে হোসেন আলীকে তাগাদা দিতে শুরু করলো। একেবারে খালি হাতে তো অচেনা জায়গায় যাওয়া যায় না। প্রথম-প্রথম হোসেন আলী খুব উৎসাহ দেখালেও শেষে সে লোহজং যাবে না বলে সিদ্দান্ত নিয়েই ফেলল। এই কথা শুনে মোবারক হোসেন যেন আকাশ থেকে পড়লো, যাবি না ক্যান? অসুবিধা কি?
হোসেন আলী বলল- একটা বাঁধা আছে, একজন যেতে দিচ্ছে না।
মোবারক বলল- কিসের বাঁধা? কে জেতে দিচ্ছে না? খুলে বল।
হোসেন আলী বলল- রেবতি নামে একজন সাথে আমার ভাব হয়েছে। ঠিক করেছি তাকে আমি বিয়ে করবো। বিয়ের আগেই তার সাথে আমি সব করে ফেলেছি। এখন বিয়ে না করে উপায় নেই। রেবতি'র বাবা বলেছে আমাকে ব্যবসার জন্য অনেক টাকা দিবে।
এইসব কথা শুনে মোবারক খুব হতাশ হয়ে পড়লো। কয়েক দিনের মধ্যে হোসেন আলী রেবতিকে বিয়েই করে ফেলল। এবং মোবারকের সাথে তার দূরত্ব বেড়ে গেল।

মোবারকের অস্থিরতা দিনদিন বেড়েই চলেছে। অস্থিরতা কাটানোর জন্য সে কয়েকজন বন্ধুর সাথে টঙ্গীবাড়ি পৌষ মেলায় গেল। কামার গাঁও থেকে মাইল বিশেক রাস্তা। মেলায় গিয়ে বন্ধুরা সবাই তাস দিয়ে জুয়া খেলতে বসে গেল। টঙ্গীবাড়ির পৌষ মেলায় সব সময় জুয়ার আসর বসেই। মোবারকের টাকা নেই, তাছাড়া জুয়া খেলতে তার ভালো লাগে না। সে মেলায় একাএকা ঘুরে বেড়াতে লাগল।

এবার মেলাটা খুব জমেছে। মেলার চারপাশ ঘুরে সে খুব আনন্দ পাচ্ছে। সে মনে করে- তার দেখার চোখ অন্য সবার চেয়ে আলাদা। কি নেই মেলায়? জামা কাপড়, খেলনাপাতি, পাঁপড় ভাজা, নাগরদোলা। সবই সে মন ভরে দেখছে। দেখার জিনিসের তো দুনিয়াতে অভাব নেই। নানান রকম জিনিসে ভরা দোকান গুলো দেখতে-দেখতে সে একটি মাটি দিয়ে বানানো নানান রকম পুতুলের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালো। সে নিজেও মাটি দিয়ে সুন্দর সুন্দর পুতুল তৈরি করতে পারে। মোবারকের মধ্যে শিল্পবোধ প্রবল। এই জন্য সে হাতের কাজের মূল্য বুঝে। সে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুতুলের দোকানের মালিকের সাথে ভাব জমিয়ে ফেলল। তবে সে কসম খেয়ে বলতে পারে, দোকানের মালিকের সাথে যে একটা কিশোরী মেয়ে আছে, তার দিকে সে দুই বারের বেশি ফিরে তাকায়নি।

সে মাটির পুতুলের দোকানের মালিককে নানান কথার পর বলল- আমি কিছু করতে চাই কিন্তু সুযোগ পাচ্ছি না। তাদের দুইজনের কথার মধ্যে বেশ ভালোই পুতুল বিক্রি হচ্ছিল। কিশোরী মেয়েটাই পুতুল বিক্রি করে টাকা গুনে নিচ্ছে। মেয়েটার বয়স আর কত হবে- পনের ষোল হয়তো। তবে মেয়েটার চেহারা দারুন মায়াকাড়া। চুলের বেনি দু'টো বেশ লম্বা। পুতুলের দোকানদার মেয়েটিকে দেখিয়ে বলল- এটা আমার ছোট মেয়ে। যেখানেই যাই মেয়েটাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাই। তা বাপু তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তুমি আমার সাথেই থাকো।
এই কথা শুনে মোবারক মহা খুশি। সন্ধ্যায় মেয়েটি দোকানে হ্যাজাক জ্বালালো। হ্যাজাকের আলোতে মেয়েটি মনে হলো- বেহেশতের হুর। মোবারক মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলল। মেয়েটিও বারবার মোবারকের দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে। মোবারকের বুকের মধ্যে যেন কেমন-কেমন করছে!

পুতুলের দোকানের মালিকের নাম- আব্বাস তালুকদার। তিনি মোবারককে বললেন, মেলায় আরও তিন দিন আছি, তুমি এসো। গল্পটল্প করা যাবে। মেলা থেকে বের হয়ে মোবারকের শুরু মেয়েটির ছবি চোখে ভাসছে। মেয়েটির চোখ, ঠোট আর হাসি। পরের দিন সে আবার মেলায় গেল। সেদিন মেলায় খুব বেশি ভিড়। দোকানে মেয়েটি একা। মাটির পুতুল দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। মেয়েটি একা সামাল দিতে পারছে না। বেশ কয়েকজন বখাটে পুতুল কেনার উছিলায় মেয়েটাকে বিরক্ত করছে। মোবারক হোসেন দেখতে বেশ, তার সাহসও বেশ। বেশ শক্ত সমর্থ। সে মেয়েটার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো, তখন বখাটেরা কোথায় যেন চলে গেল। মেয়েটা খুব মন খারাপ করে মোবারককে বলল- ছেলে গুলো চোখের সামনেই বেশ কিছু পুতুল চুরি করে নিয়ে গেল। দাম দিল না। মোবারক বলল- আমি এসে গেছি এখন আর কেউ দাম না দিয়ে পুতুল নিতে পারবে না। মেয়েটি হেসে বলল, ভাগ্যিস আপনি এসেছেন। তা না হলে এতক্ষনে সব লুটপাট হয়ে যেত। মেয়েটাকে দিনের আলোতে খুব মন দিয়ে দেখল মোবারক। কি ফরসা, চোখ দু'টাও ভারি সুন্দর আর কন্ঠটা এত মিষ্টি!

মোবারক পুতুল বিক্রি করছে আর মেয়েটি টাকার হিসাব রাখছে। মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে কথাও হচ্ছে।
মোবারক বলল- তুমি বুঝি সব সময় বাবার সাথে থাকো?
মেয়েটি বলল- না, মাঝে মাঝে। মা যেতে দিতে চায় না। বড় হচ্ছি তো। বাবার একজন কর্মচারী আছে। এবার তার অসুখ করেছে বলে, আসেনি।
মেয়েটা একেবারে সহজ সরল। নানান কথা বলে যাচ্ছিল। মোবারক মন ভরে শুনছে।
বাড়িতে তোমার কে কে আছে?
মেয়েটি বলল- দাদা-দাদী, মা-বাবা আর এক বোন।

মেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষন আগে আব্বাস তালুকদার ফিরলেন। বললেন, এই যে মোবারক! তুমি এসেছো, বেশ ভালো করেছো। তোমার সাথে একটু জরুরী কথা আছে। এদিকে আসো। কথাটা একটু আড়ালে বলতে চাই। একটু দূরে গিয়ে আব্বাস তালুকদার কোনো ভনিতা না করে বললেন- আমার বয়স হয়েছে, এখন আর আগের মতোন খাটতে পারি না। তুমি যদি চাও তো আমার ব্যবসাটা তোমাকে দিয়ে দিতে রাজী আছি। তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ব্যবসাটা খারাপ নয়। পরিশ্রম করতে পারলে পয়সা আছে।
মোবারক বলল- ভেবে দেখি।
আব্বাস তালুকদার কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলল- আর ভাবাভাবির দরকার নাই। আসো একটা বন্দোবস্ত করেই ফেলি।
মোবারক বলল- কি রকম বন্দোবস্ত?
আব্বাস তালুকদার বলল- মেয়ে আমার ফেলনা নয়। আমার বড় মেয়ে- ললিতা। সে বাড়ি আছে। তার নামে এককানি জমি আছে। আর আমার সাথে আছে ছোট মেয়ে- লাইজু। আমার ছোট সংসার। খেয়েপড়ে ভালোই আছি। আমি চাই আমার বড় মেয়েকে তুমি বিয়ে করো। আমার বড় মেয়ে, ছোট মেয়ের চেয়ে দ্বিগুন সুন্দরী। যদি বিয়ে করতে রাজী থাকো তাহলে এই ব্যবসা তোমাকে দিয়ে দিব।
মোবারক মনে মনে ভাবতে শুরু করলো। বিয়ে, ব্যাপারটা একেবারে মন্দ নয়।
আব্বাস তালুকদার বলল, ভেবে-ভেবে আর সময় নষ্ট করো না। আমি আগামীকাল সকালেই তোমার বাড়ি গিয়ে তোমার বাবা-মার সাথে কথা বলে বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করে আসবো।

শেষমেষ তাদের বিয়েটা হয়েই গেল।
ললিতা দেখতে বেশ। বিয়ের রাতেই ললিতা কঠিন গলায় বলল- মদ, গাঁজা আর মেয়ে মানুষের দষ নেই তো?
মোবারক বলল- থাকলে কি, তোমার বাপ বিয়ে দিত?
ললিতা বলল- বাবা সহজ সরল মানুষ, সে কি তোমার সব খবর নিয়েছে?
মোবারক বলল- যদি মদ গাঁজা আর মেয়ে মানূষের নেশা থাকে তো কি করবে?
ললিতা বলল- নেশা করা আর মেয়েবাজ লোক আমার দুই চক্ষের বিষ। নেশা করলে বাপের বাড়ি চলে যাব।
মোবারক বলল- আমি তোমাকে এত ভালোবাসবো, যে তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না। নো, নেভার।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫

প্রামানিক বলেছেন: মোবারকের দাম্পত্য জীবন ভালো হলেই ভালো।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: ওদের জন্য দোয়া করবেন।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৪

ওমেরা বলেছেন: ভালই তো সুন্দর লাগল ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ ওমেরা।

৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাদি মোবারক !!
মোবারক আর ললিতার দাম্পত্য
জীবন সুখের হোক।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশির ভাগ দাম্পত্য জীবনই সুখের হয় না।

৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৬

কামরুননাহার কলি বলেছেন: সুখি হোক তাদের জীবন।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: খুব ভাল লাগলো রাজীব ভাই সামনের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ।

১৩ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৮

আটলান্টিক বলেছেন: দারুণ শক খাইছি।ভাবছিলাম ছোট মেয়েটার সাথে বিয়ে হবে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ্মানূষের ভাগ্যটা বড় অদ্ভুত।

৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখক বলেছেন: কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশির ভাগ দাম্পত্য জীবনই সুখের হয় না।

সুখের বিষয় সেই বেশীর দলে আপনি নেই !
আপনার দম্পত্য জীবনে আছে সুখের সুশীতল বাতাস তা অনুমান করছি।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২০

রাজীব নুর বলেছেন: শুধু আমি একা ভালো থাকলে হবে না।
আমার আসে পাশের সবার ভালো থাকতে হবে। তাহলেই আমি বেশি ভালো থাকবো।

৮| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: মন খারাপ কেন ভাই ...!

মোবারকের গল্প ভালো লিখেছেন।

৯| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ নয়ন ভাই।
নানান চিন্তা ভাবনায় মন ভালো নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.