নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মানুষ পৃখিবীতে আসে একা। আবার যখন চলে যায় তখনো একা। যৌবনে চারপাশে মানুষের ভিড় থাকে। কর্মব্যস্ত হয়ে যায় মানুষ। কিন্তু বৃদ্ধ বয়েসে মানুষ এতো একাবোধ করে যে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। চারপাশে সবকিছু থাকতেও সে যেনো একা কোনো নির্জন দ্বীপের অধিবাসী। বৃদ্ধ বয়স বড় নিঃসঙ্গ জীবন। এই সময় সব থাকতেও কিছু থাকে না। মনে হয় গতিশীল পৃথিবীতে একমাত্র তিনিই বেমানান। মানুষ সঙ্গ প্রিয়। কিন্ত মৃত্যু সবার জীবনে আসবে। মানুষ মরে গেলেও স্মৃতি রেখে যায়। শশীভূষনের আজ সময় কাটে শুধু ডায়েরী লিখে। বুড়ো বয়সে শুধু কথা বলতে ইচ্ছা করে। কিন্তু বুড়োদের কথা কেউ শুনতে চায় না। কোটি কোটি কথা জমা হয়ে আছে। ডায়েরীটা লেখা শেষ তিনি তার মেয়ে অলকার কাছে ডায়েরীটা পাঠাবেন।
একটি দেশ ভেঙে তিনটি দেশ। সন্ত্রাস, দারিদ্র, রাজনৈতিক ওলট পালট, দুর্নীতি কি... নেই! ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস- ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ! এক হিসেবে ধর্ম তো আফিম। হিন্দু ও মুসলমান কোনকালেই মিলেমিশে থাকেনি। দেশভাগের জন্য দায়ী সংকীর্ণ ধর্মীয় আবেগ আর সাম্প্রদায়িকতা। দেশ ভাগের পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে জন্মেছে সীমানা বিরোধ ও পারস্পরিক অবিশ্বাস। অন্তত দশ লাখ মানুষ নিজের জন্ম স্থান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়া মানুষের আজও মনে হয় কেন হল দেশভাগ ? দেশভাগের ইতিহাস পালটানো যাবে না, কিন্তু ঘৃণার এই দেয়ালটা ভাঙা যাবে তো? ব্রিটিশ আসার আগে হিন্দু মুসলিম তো একই দেশে ছিল পাশাপাশি । জিন্নার দেশপ্রীতি অথবা দেশপ্রেমের উদাহরণ কেউ দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। এই ভৌগোলিক বিভাজন কোটি-কোটি মানুষকে শুধু ভিটেমাটি ত্যাগেই বাধ্য করেনি, প্রাণ কেড়েছে, নিঃস্ব করেছে এবং অভিবাসী দেশে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেছে। আর বিভাজনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো পাঞ্জাব আর বাংলা। দেশভাগের পরবর্তী নয় মাসের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি হিন্দু, শিখ ও মুসলমান জীবন বাঁচানোর জন্যে তাদের পিতৃভিটের মায়া ছেড়ে নিরাপদ স্থানের উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছে। যারা জেদি মাছির মতো ভিটেমাটি আঁকড়ে থেকেছে, তারা পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে। ধন-সম্পদ-ক্ষমতা দিয়ে মানুষকে মূল্যায়ন করলে চলবে না। মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে তাঁর মূল্যবোধ দিয়ে। তাই মূল্যবোধ বজায় রাখতে হবে।
দেশভাগের সময় কিন্তু কোনো হিন্দু বাধা দেয় নি বরং গান্ধীজি বাধা দিয়েছিলেন বলে নাথুরাম গডসে তাকে গুলি করেছিলেন। এর থেকে কি প্রমান হয় ? হিন্দুদেরও দেশভাগে মৌন সম্মতি ছিল। তাই নয় কি ? ভাগ তো হলো, কিন্তু তাতে জাতি সমস্যার সমাধান হলো কি? হলো না। রাশিয়ায় বিপ্লব হয়েছে, চীনে বিপ্লব হয়েছে, ভারতবর্ষে কেন হলো না? তার একটা কারণ রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার। ওই ব্যবহারে দেশভাগ সম্ভব হয়েছে। দেশভাগে লাভ যে হয়নি, তা নয়। হয়েছে। তবে সেটা সুবিধাভোগীদের, মেহনতিদের ভাগ্যে বাঞ্চনাই সত্য হয়ে রয়েছে। এপারে যেমন, ওপারেও তেমনই। ব্যক্তিগত যন্ত্রণার সঙ্গে সঙ্গে দেশভাগের প্রভাব পড়েছিলো উপমহাদেশের বিভক্ত মানবমণ্ডলীর মানসে, রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং জীবন সংগ্রামে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে। দেড় কোটি মানুষ হেঁটে দেশান্তরিত হয়। এর মধ্যে হিন্দু ও শিখরা ভারতে আর মুসলিমরা পাকিস্তানে চলে যায়। ভারতবর্ষ তো কখনোই এক জাতির দেশ ছিল না, ছিল বহু জাতির দেশ; আর সে জাতীয়তার ভিত্তি ধর্ম নয়, ভাষা। মানুষ যেখানে জন্মায় এবং বড় হয় তার মনটা সেখানেই থাকে।
দেশভাগের চূড়ান্ত ঘোষণায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট অ্যাটলি এবং ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড লুইস মাউন্টব্যাটেন একবারও পাকিস্তানের নাম মুখে নেননি। দেশভাগে পূর্ব ভারতের উদ্বাস্তু বাঙালিদের কথা কিছু বলা হয়, কিন্তু উদ্বাস্তু বিহারিদের কথা বলা হয় না। দেশভাগ নিয়ে উপমহাদেশের মানুষের ভাবনা আজও চলমান। কেন দেশভাগ হলো, কিভাবে হলো- এ নিয়ে আলোচনা, বিতর্কের শেষ নেই। কোন মানুষের জীবনেই তার রাজনৈতিক দর্শন স্থিতিশীল না। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তা বিবর্তিত হতে থাকে। এই বিবর্তনের মূলে থাকে অর্জিত জ্ঞানের সাথে বাস্তবতার পার্থক্য। দেশভাগ ইংরেজদের কৌশল নাকি তত্কালীন নেতাদের লোভের ফল—এই বিতর্ক কি কোনো দিন শেষ হবে না? জন্য দায়ী কে? কংগ্রেস বলবে দায়ী হচ্ছে মুসলিম লীগ, মুসলিম লীগ দোষ চাপাবে কংগ্রেসের কাঁধে। পারস্পরিক এই দোষারোপের ভেতর সত্য যে নেই তা অবশ্যই নয়; দায়ী দুই পক্ষই, কম আর বেশি। উভয়েই ছিল অনমনীয়, ফলে ভাগ না হলে গৃহযুদ্ধ বেধে যাবে—এমন আশঙ্কা অমূলক ছিল না। কিন্তু মূল অপরাধ গান্ধী যাকে তৃতীয় পক্ষ বলতেন সেই ব্রিটিশেরই, অন্য কারো নয়। আসল ঘটনাটা তারাই ঘটিয়েছে, ‘জাতীয়তাবাদী’ দুই পক্ষকে এমনভাবে ক্রমাগত উসকানি দিয়েছে যে ওই দুই পক্ষ পরস্পরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে এবং দেশভাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
দেশভাগের পর থেকেই মানূষ অস্থির সময় পার করছে। কেউ কারোর সাথে মিল হয়ে থাকতে চায় না। সব কিছুর পেছনে স্বার্থ খোঁজা মানুষের স্বভাব হয়ে গেছে। আসলে দেশভাগ হলো বাঙালির আদি পাপ। এই পাপ আমাদের যেকোনও উপায়ে মোচন করতে হবে। সম্পর্ক সবসময় বর্তমানের ওপর নির্ভর করে। অতীতের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। ইতিহাস বহমান নদীর মতো। গতি কখন কোথায় নিয়ে যাবে, কেউ জানে না।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: এই বদ গুলো দেশ ভাগ করছে।
তাদের জন্য বহু জায়গায় দাঙ্গা হয়েছে।
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ‘জাতীয়তাবাদী’ দুই পক্ষকে এমনভাবে ক্রমাগত উসকানি দিয়েছে যে ওই দুই পক্ষ পরস্পরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে এবং দেশভাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ঠিক বলেছেন।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: মানূষ যখন ভুল করে, তখন বুঝতে পারে না।
এটাই মানূষের নিয়তি।
৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৬
বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট।
৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৬
বিজন রয় বলেছেন: ন্যাকামো পোস্ট না দিয়ে এই রকম পোস্ট দিবেন।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী ধন্যবাদ।
৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৯
আমার আব্বা বলেছেন: ভাল লেগেছে
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
রাজনৈতিক উপলব্ধি, ভাল উপলব্ধি
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: এই লেখাটা লিখতে খুব বেশি বেগ পেতে হচ্ছে।
৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১২
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ঐতিহাসিক...
আপনি সুন্দর পোষ্ট দিয়েছেন।
উপকৃত হলাম।
ধন্যবাদ।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫২
শুভ_ঢাকা বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। লেখার প্রতি মুগ্ধতা রইলো।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩২
সোহানী বলেছেন: ছবিটা খুব চেনা লাগছে, ব্যাখ্যা দিবেন কি?