নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫০



উড়ে গেলো কুয়াশায়, — কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো।
তাহারি পাখার হাওয়া প্রদীপ নিভায়ে গেলো বুঝি?
অন্ধকার হাৎড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুঁজি;
যখন জ্বালিব আলো কার মুখ দেখা যাবে বলিতে কি পারো?


রাত তিনটা দশ।
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। ওয়াশ রুমে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি প্রচন্ড ধাক্কা খেলাম। কারন আমার স্ত্রী তিন বছর আগে মারা গেছে। ভয় পেয়ে আমি দৌড়ে ঘরে চলে এলাম। সব গুলো বাতি অন করলাম। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল বের করে ঢক ঢক করে খেলাম। আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। মাথা কাজ করছে না। নিজেকে নিজে বারবার বলছি- শাহেদ শান্ত হও। শান্ত হও শাহেদ। তুমি কিছু দেখনি। আর যদি কিছু দেখেও থাকো, ভুল দেখেছো। তুমি এখন আবার ওয়াশ রুমে যাও, দেখবে কেউ নেই। তোমার হ্যালুসিনেশন হচ্ছে। শাহেদ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে আবার ওয়াশ রুমে গেল। ঠিক আগের জাগায় নীলা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই তো সে চোখ তুলে তাকালো। সেই চিরচেনা, কি সুন্দর, শান্ত স্নিগ্ধ মায়াময় একটি মুখ।

শাহেদ আবার দৌড়ে বেলকনিতে এসে সিগারেট ধরালো। তিন বছর আগে শাহেদের স্ত্রী নীলা ক্যান্সারে মারা যায়। দীর্ঘ সাত মাস গলায় ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে নীলা পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। শাহেদ চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য করেনি। জায়গা জমি বেঁচে সে তার স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছে। কিন্তু নীলা ক্যানসারের সাথে জয়ী হতে পারেনি। নীলা মারা যায় শাহেদের কোলে মাথা রেখে। সেদিন ছিল রবি বার। সকাল নয়টা। নীলার শরীরটা অন্যদিনের তুলনায় বেশ ভালো ছিল। শাহেদ নীলার মাথার চুল আচড়ে দিল, কপালে টিপ পড়িয়ে দিল। দুইজন মিলে চা খেল। নীলা শাহেদের কোলে মাথা রেখে অনেক গল্প করলো। শাহেদ শুধু বলেছিল, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, অনেক। একসময় নীলা গভীর ঘুমে ডুবে গেল। সেটাই তার শেষ ঘুম ছিল। সে ঘুম আর ভাঙ্গেনি।

আকাশ ফরসা হতে শুরু করেছে। ভোরের আকাশ দেখা দারুন একটা ব্যাপার। কিন্তু আজ শাহেদ ভোর হওয়া দেখছে না। তার চোখে মুখে এক আকাশ ভয়, শংসয় আর দ্বিধা। শাহেদে হঠাৎ লক্ষ্য করলো নীলা তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে। ভোরের প্রথম আলোতে তাকে দেবী স্বরসতীর মতোন লাগছে।
নীলা বলল, তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো? তুমি তো আমাকে খুব ভালোবাসতে, ভালোবাসার মানূষকে ভয় পেতে হয় না।
শাহেদের ইচ্ছা করলো নীলাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন কাঁদতে। নিশ্চয় নীলা এরকম কিছু আশা করছে না।
শাহেদ বলল, এটা কি করে সম্ভব? আমি তোমাকে নিজের হাতে কবর দিয়েছি। তিনটা বছর পার হয়ে গেছে। এখন তুমি আমার পাশে!
নীলা বলল, তুমি কি আমাকে চলে যেতে বলছো?
না তুমি যাবে না। তোমাকে ছাড়া তিনটা বছর আমার খুব কষ্ট হয়েছে।
এই জন্যই তো আমি তোমার কাছে এলাম। তবে, শোনো আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। আমার কথা কাউকে বলতে পারবে না।

নীলাকে বাসায় রেখে শাহেদ অফিসে এলো। তার আজ অফিসে যাওয়ার মোটেও ইচ্ছা ছিল না, নীলা'ই জোর করে পাঠালো। শাহেদ আধুনিক একজন মানুষ। সে বিজ্ঞানের ছাত্র। কোনো কুসংস্কারে তার বিশ্বাস নেই। সারা জীবন সে কোনো রকম যুক্তিহীন কিছু বিশ্বাস করেনি। আজ মৃত নীলা তার ঘরে! এটা কোনো কিছুতেই সম্ভব না। অবশ্যই এটা তার অবচেতন মনের কল্পনা। কিন্তু সমস্যা হলো নীলাকে সে একা দেখছে না। সকালে হকার পত্রিকা দিতে এসে নীলাকে দেখেছে। নীলার হাতে পত্রিকা দিয়ে গেছে। শাহেদ কি সাইকিয়াট্রিষ্টের কাছে যাবে? গেলে সাইকিয়াট্রিস্ট হয়তো বলবেন, শাহেদ সাহেব এটা আপনার অবচেতন মনের কল্পনা। আপনি দীর্ঘদিন ধরে একা আছেন। আপনার মন আপনার প্রিয় মানুষকে তৈরি করে নিয়েছে। শাহেদ যদি বলেও পত্রিকা দিতে এসে হকারও দেখেছে আমার মৃত স্ত্রীকে। তখন মনোবিজ্ঞানী হয়তো বলবেন, আসলে হকারের কাছ থেকে পত্রিকা আপনি নিয়েছেন। কিন্তু আপনার মনে হচ্ছে পত্রিকা নিয়েছে আপনার মৃতা স্ত্রী।

শাহেদ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল, বাকি জীবন সে এই নীলার সাথেই কাটিয়ে দিবে। সে সাইকিয়াট্রিষ্টের কাছে যাবে না। সে একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। সাইকোলজির উপর তার অনেক পড়াশোনা আছে। তার নিজের দেখা এবং নিজের অনুভূতিকে সে অবহেলা করতে পারে না। সবচেয়ে বড় কথা জগতে অনেক অলৌকিক ব্যাপার ঘটে। যার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।
আগে অফিস ছুটির পর সে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরতো রাত এগারোটার পর। এখন সে বাসায় ফিরে সন্ধ্যায়। দ্রুত বাসায় ফেরার জন্য সে এক ধরনের টান অনুভব করে। সে জানে নীলা তার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
গতকালের কথা, ঝুম বৃষ্টির মধ্যে শাহেদ কাক ভেজা হয়ে বাসায় ফিরলো।
নীলা বলল, বৃষ্টিতে ভিজে আসার কি দরকার ছিল। বৃষ্টি কমলে তারপর আসতে। যদি জ্বর আসে!
শাহেদ পকেট থেকে একমুঠো বৃষ্টিতে ভেজা বেলী ফুল বের করে নীলার হাতে দিল।

তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ র'বে না আর, র'বে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখনঃ
সেই মুখ আর আমি র'বো সেই স্বপ্নের ভিতরে।


(দ্বিতীয় পর্ব আগামীকাল)

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: প্রথম

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: চা খাবেন??

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আমি খুব খুশি হবো, যদি নীলা সত্যি সত্যি মরে ভুত হয়ে যায় তবে। B-)
ভাইয়া আরেকটা গল্প লিখেছি click পড়ে কৃতার্থ করবেন।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই। এখনই।

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: রাজীব ভাই, চমৎকার রুমান্টিক গল্প। মীলা মেয়েটিকে বেশ মনে ধরেছে। আর নীলার প্রতিকী ছবিটা চমৎকার। বড়ই সুন্দরী তিনি!! তবে নীল সাড়ী পরা হলে আরো বেশী মানাতো।

ছবিটা @মন্ডল ভাইকে উৎসর্গ করলাম!!!

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: না রোমান্টিক গল্প না।
আসলে ছবির মেয়েটার নাম নীলা, আবার আমার গল্পের মেয়েটির নামও নীলা। গল্পের এই মেয়েটির সাথে বাস্তবে এই মেয়েটির ভীষন মিল। তাই এই ছবিটি ব্যবহার করেছি।

৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৩১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ছবিটা @মন্ডল ভাইকে উৎসর্গ করলাম!!!

সহমত

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ঘটনা কি? ছবি----------মন্ডল।

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখার প্রথম প্যারাগ্রাফে গল্পের নায়ক নিজে কথা বলছেন (আমি ); ২য় প্যারায় এসে লেখক লিখছেন, কেমন যেন মিল হচ্ছে না।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী ঠিক ধরেছেন।
গুলিয়ে ফেলেছি মনে হয়।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০০

মুচি বলেছেন: খুব ভালো লাগলো....। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা থাকছে। "সংশয়" বানানটা বোধহয় এমন হবে। :``>>

অপ্রাসঙ্গিকঃ বন্ধুর ক্রাশের ছবি দিয়ে আকর্ষণ বাড়িয়েছেন আরকি। :-P

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: বানান ভুল করাটা আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগে। তবুও কিভাবে কিভাবে যেন বানান ভুল হয়ে যায়।
কার বন্ধুর ক্রাশের ছবি?? বুঝিয়ে বলুন তো।

৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: চা খেয়েছি, কফি হবে?? :)

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: কফির ব্যবস্থা তো নাই।

৮| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২১

মুচি বলেছেন: নীলা মেয়েটার কিছুদিন পূর্বে একটা মুভি করেছিল, যেটা দেখে আমার খুব কাছের এক বন্ধু কিঞ্চিৎ ক্রাশ খেয়েছিল আর কি। B-)
বানান ভুল হয়েই যায়। ব্যস্ত জীবন। কতদিন বাংলা লিখি না !!!

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: নীলা মেয়েটা অনেক সুন্দর। অনেক।
সহজ সরল একটা মেয়ে। নীলা নিয়ে আমি একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম।

৯| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪২

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: মন্ডল ভাই বিদেশ চলে যাবেন, ব্লগে নিয়মিত আসতে পারবেন না মনে হয়।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ও ----
কোন দেশে যাবেন? কেন যাবেন?? লেখা পড়া করতে?

১০| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০০

পবন সরকার বলেছেন: চাঁদগাজী যা বলছে তার সাথে একমত।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
এবং দ্বিতীয় পর্ব আর লিখব না।

১১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৪:২৮

এম এ কাশেম বলেছেন: শুরুটা চমৎকার,
তবে একটা কি যেন খটকা লাগছে,
নিজকে দিয়ে শুরু করে আবার শাহেদ এলো কি ভাবে।

শেষের অপেক্ষায়......

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী। ঠিক বলছেন।

১২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ভয়াবহ তো।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: খুব ভয়াবহ না।

১৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

কাছের-মানুষ বলেছেন: দারুন লিখেছেন।
শুধু প্রথম প্যারা আমি আর দ্বিতীয় প্যারায় শাহেদ, এখানে গন্ডগোল, একটু চেঞ্জ করে দেন।
লেখার সাহিত্যমান অনেক ভাল।বাক্য এবং শব্দ চয়ন অনেক ভাল হয়েছে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.