নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই সমাজ- ৫

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২২



আমার বন্ধু সেন্টু সকালে বাসা থেকে বের হয়, সারাদিন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যার পর ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে। বন্ধুর চাকরী নেই। অথচ এই কথাটা সে কাউকে বলে না। এমনকি তার স্ত্রীকেও বলে না। বিয়ে করেছে মাত্র পাঁচ মাস হলো। এই সমাজ শিক্ষিত বেকারদের ভালো চোখে দেখে না। চাকরি না পাওয়াটা দোষের কিছু না। কিন্তু একজন বেকারকে উঠতে-বসতে শুনতে হয় পরিবার, আত্মীয় ও সমাজের কটু কথা, সইতে হয় নানান গঞ্জনা। সেন্টু ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মালোশিয়া গিয়েছিল। মালোশিয়া থেকে ফিজি গিয়েছিল। বিয়ের আগে সৌদি আরবও গিয়েছিল। কিন্তু কিছুই হলো না। এখন বেকার দিন কাটাচ্ছে। আমরা একই কলেজে লেখাপড়া করেছি। সেদিন দুপুরবেলা বাংলামটরে সেন্টির সাথে। আমি জোর করে তাকে বাসায় নিয়ে আসি। বড় মায়া হয় সেন্টির জন্য। খুব ভালো ছেলে। খুব আড্ডাবাজ আর প্রানবন্ত।

এই সমাজে যে নারী দেখতে সুন্দর না তার বিয়ে হয় না। বিশেষ করে যার গায়ের রঙ কালো, উচ্চতা কম এবং মোটা। সেই নারীর খুব ভোগান্তি হয় পদে পদে। আমার এক কাজিন ইংরেজীতে মাস্টার্স করেছে। কিন্তু তার বিয়ে হয় না। এদিকে বয়স হুহু করে বেড়েই চলেছে। বিয়ের জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটক এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে বলা হয়েছে। কমপক্ষে দুই শ' ছেলে আমার কাজিনকে দেখে গেছে। শেষমেষ কেউ আর যোগাযোগ করে না। এমনকি যে ছেলের মাথায় টাক পরে গেছে, চাকরীও খুব একটা ভালো করে না, অনেক বয়স হয়েছে- এরকম ছেলেও মেয়ে দেখতে এসে চা নাস্তা খেয়ে চলে যায়। তাদের আর কোনো খোজ পাওয়া যায় না। মাস্টার্স পাশ করেও আমার কাজিন পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে গেল। মহল্লার মানুষও আজে বাজে কথা বলে। পাড়ার দোকানদারেরাও কেমন করে যেন তাকায়। যাই হোক, ছত্রিশ বছরে এসে আমার কাজিনের বিয়ে হলো। এখন দুই বাচ্চা তার। খু ভালো আছে।

আমার বন্ধু বাবলু। খুব ভালো ছেলে। জগন্নাথ থেকে বাংলায় মাস্টার্স করেছে। খুব সুন্দর করে কথা বলে। দেখতে বেশ। একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে। বাবলুর বিয়ে হয় না। শিক্ষিত ছেলে, ভালো চাকরী করে অথচ বিয়ে হয় না। বিয়ে হয় না কারন বাবলু'র মাথায় টাক। অল্প বয়সেই টাক পড়েছে। অল্প বয়সে টাক হয়ে যাওয়া লোকের দুঃখের শেষ নেই। টাক মাথার পুরুষদের নারীরা পছন্দ করে না। বাবলুর জন্য অসংখ্য মেয়ে দেখলাম। বাবলু পছন্দ করে কিন্তু মেয়ে গুলো বাবলুকে পছন্দ করে না। অল্প বয়সে টাক হওয়া অনেক বড় সমস্যা। অনেককে দেখেছি, টাক পড়তে শুরু করেছে, পরে যদি মেয়ে না পাওয়া যায়, তাই আগে ভাগেই বিয়ে করে ফেলে। যাই হোক, বাবলুর মাথা পুরোপুরি টাক হবার আগেই, বাবলু বিয়ে করতে পেরেছে। এখন তার দু'টা সন্তান। গতমাসে বাবলুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম গাজীপুর। সে চাকরী করে দোতলা একটা বাড়ি করতে পেরেছে।

আমার এক ফুপু। অল্প বয়স অথচ তিনি বিধবা হলেন। তাকে নিয়ে বিরাট বিপদে পড়লাম। তার ছোট ছোট দুই সন্তান। আমার ফুপু দেখতে দারুন সুন্দরী। এই সমাজ অল্প বয়সী বিধবাদের অপবাদ দেওয়ার জন্য পা বাড়িয়েই থাকে। কত রকম কটু কথা যে বলে। যুগ যুগ ধরেই এরকম চলে আসছে। আধুনিক যুগ হলেও মানুষের মন মানসিকতা আধুনিক হয়নি। যে নারীর বিয়ে হয়েছে, কিন্তু বাচ্চা হয় না- তার কষ্টের শেষ নেই। এই সমাজ তাদের যেন মেনেই নিতে পারে না। আমার সাবেক অফিসের ম্যানেজারের বিয়ে হয়েছে সাত বছর হয়েছে। অথচ তাদের কোনো বাচ্চা হয় না। তাদের মহল্লার মানুষের নানান আকথা, কুকথা তাদের শুনতে হয়। এমনকি পরিবারের লোকজনও তাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরন করে। স্ত্রীলোকটি কাঁদে। আজমী শরীরফ পর্যন্ত গিয়েছে। পীর-ফকির, ডাক্তার সব কিছুই করেছে। কিন্তু বাচ্চা হয় না। বাচ্চা না হওয়া লক্ষ লক্ষ নারীর সীমাহীন কষ্ট। কত যে অপমান সইতে হয় তাদের। বিয়ের পর নারী বা পুরুষ, কেউই নিঃসন্তান থাকতে চায় না। বিয়ের পর থেকেই সবাই তাড়া দেয়, বাচ্চা নাও। বাচ্চা নাও।

আমার ফুপুর মেয়ে। নাম মিলি। বয়স হয়ে গেছে তার আটত্রিশ। একটা ব্যাংকে চাকরী করে। লাখ টাকার উপরে সেলারি পায়। মিলি কেন আজও বিয়ে করলো না, এই নিয়ে পাড়ার মানূষের চিন্তার শেষ নেই। যে মেয়ের বয়স একটু বেশি হয়ে গেলেও বিয়ে হয় না, সেসব নারীর হয়ে ওঠে সমাজের চক্ষুশূল। তাদের নিয়ে সমাজে ছড়িয়ে যায় নানান অকথা-কুকথা। অতি আপনজনরাও ছড়াতে থাকে তাদের নামে কুৎসা। সব কিছু মিলিয়ে বলা যায়- এই সমাজের মানুষ গুলোর মন মানসিকতা অতি নিচু মানের। সমাজে নিচু মন মানসিকতার লোকদের অভাব নেই। যুগ যুগ ধরে তারা আছে। এবং থাকবে। তাদের কাজই হলা বলা। তাদের কথা এক কান দুয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিতে হবে। মনে রাখবেন, সমাজে দুষ্টলোকের অভাব নেই। দশ জনের মধ্যে আট জন'ই দুষ্টলোক।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৭

ইসিয়াক বলেছেন: ভালো ।জানা হলো অনেক কিছু ।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: যত কম জানা যায়, ততই ভালো।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫

ইসিয়াক বলেছেন: রাজীব ভাই ,
আমার মাথায় একটা ব্যবসায়িক আইডিয়া এসেছে। "ইউরেকা" "ইউরেকা" জাতীয় কিছু না অবশ্য । কমন ব্যবসা ।
আপনার পোষ্টের মধ্যেই আছে আইডিয়াটা । ....................।
আচ্ছা এখন বলবো না ।
ধাঁধাঁ ??????
বলেনতো ব্যবসাটা কি।
না পারলে ।উত্তরটা আগামীকাল ঠিক সকাল সাতটায় পাবেন ।হো হো হো ।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: অপেক্ষায় থাকলাম।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অত্যন্ত সত্য কথা।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমি সব সময় সত্য বলি। এজন্য আমি কারো কাছে ভালো না।

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


বেকার সমস্যা, ও মেয়ের বিয়ে না হওয়াটা সামাধানযোগ্য

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: কিভাবে??

৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ৮ জন না, ১০ জনের ৯ জনই দুষ্ট লোক...

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: ঠিক।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শাড়ী নিয়ে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের লেখাটি কি আপনি পড়েছেন? অসাধারণ একটা লেখা । আমি উনার রসবোধে মুগ্ধ। কিন্তু নারী সমাজ উনার লেখা নিয়ে কোন পোস্ট দিচ্ছে না। আফসোস।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: স্যারের লেখা নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড় হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.