নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্বীনের ক্ষমতা- ৪

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৬



আমার নানী বিরাট ব্যবসায়ী ছিলেন।
তার বাড়ি বিক্রমপুর হলেও উনি ব্যবসা করতেন কোলকাতা আর আসামে। পিতলের ব্যবসা ছিলো নানীর। পিতলের থালা, বাটি, গ্লাস সব তিনি তার কারখানায় বানাতেন। সেই সময় ধনী মানুষেরা পিতলের থালা বাটি ব্যবহার করতেন। নানী পিতলের ব্যবসায় খুব ভালো করে ফেললেন অল্প সময়ে। পিতলের ব্যবসার পাশাপাশি তিনি শাড়ি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলেন। শাড়ি কাপড়ের ব্যবসায়ও তিনি অল্প সময়ে খুব নাম করে ফেললেন। দেদারসে টাকা আসতে লাগলো। কিন্তু তাকে ইন্ডিয়া থেকে ফিরে আসতে হলো। ইন্ডিয়ার সরকার বাধ্য করলো দেশে ফিরে আসতে।

নানী ঢাকার ইসলামপুরে জমি রাখলেন।
ঢাকা গিলগাও এলাকায় জমি কিনলেন। দুই জায়গায় বাড়ি বানালেন। দশটা নতুন বেবিটেক্সি কিনলেন। ইন্ডিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে নানী ঢাকায় একাই পুরো ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে গেলেন। নানা, নানীকে কোনো রকম সহযোগিতা করেন নি। নানা থাকেন ফুটবল খেলা নিয়ে, চায়ের দোকানে আড্ডা নিয়ে। আর সারাদিন কানের কাছে রেডিও ধরে। তৎকালীন ভারত সরকারের কারনে ব্যবসা গুটিয়ে চলে আসতে নানীর খুব কষ্ট হয়েছে। ঢাকায় ব্যবসার পরিসর ছোট হয়ে গেল। নানীর কোনো ছেলে নাই। তার শুধু দুই মেয়ে। ইন্ডিয়া থেকে ফিরেই বড় মেয়ের বিয়ে দিলেন পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ীর সাথে।

শেষ বয়সে নানী ধর্মের দিকে ঝুঁকলেন।
ধর্মের দিকে ঝুঁকে নানীর ব্যবসা লাটে উঠলো। দশটা বেবিটেক্সি কে বা কারা নিয়ে গেল। পিতলের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল। কাপড়ের ব্যবসা নানা দেখাশোনার দায়িত্ব নিলো। এবং তিন মাসে ব্যবসা লস খেয়ে আরো ঋণ করতে হলো। নানীর সেদিকে নজর নেই। তিনি সারাদিন মাজারে মাজারে পড়ে থাকেন। নানী চুল আচড়ানো ছেড়ে দিলেন। চুলে বিকট জট লেগে গেলো। নানী নানান রকম মালা গলায় পড়ে থাকতেন। কাউকে কিচ্ছু না বলে আজমী শরীফ চলে যেতেন। মাসের পর মাস থাকতেন। আমার মা তখন অনেক ছোট। ইসলামের পুরের বাড়ি দখল করে নিলো আমাদের দূর সম্পর্কের মামা'রা।

নানী ছিলেন সহজ সরল মানুষ।
এই মানুষ ধর্মের জগতে প্রবেশ করে অনেকটা পাগল হয়ে গেলেন। আজমী শরীফ থেকে নানান রকম পীরবাবা নানীর কাছে আসতে লাগলেন। তাদের যাতায়াতের খরচ এবং থাকা খাওয়া সব নানীর। পীরবাবার পা ধুয়ে দিতেন আমার নানী। পীরবাবা যা বলেন নানী তাই করেন। নানী একটা ভ্যানগাড়ি কিনলেন। প্রতি সপ্তাহে দুইবার বাবুর্চি দিয়ে এক শ' জনের খিচুড়ী রান্না করে মিরপুর মাজারে নিয়ে যান। মাজারের পাগলের নিজ হাতে খাওয়ান। ব্যবসা বন্ধ। এবং জমানো টাকা শেষের দিকে। আছে শুধু গহনা। এই গহনাও যাদের কাছে রাখা হয়েছে, নানীর মৃত্যুর পর তারা অস্বীকার করেছে।

পীরবাবা বলেছেন, তিন তার পোষা দু'টা জ্বীন নানীকে দিয়েছেন।
বাস্তবে জ্বীনের কোনো কার্যকারিতা দেখা গেল না। এলাকার মানুষ নানীকে বোকা বানিয়ে টাকা এবং গহনা নিতে শুরু করলো। একজন এসে বলল, আজমী শরীফ গিয়েছিলাম। এই ফুল গুলো বালিশের নিচে রেখে ঘুমান। সকালে উঠে দেখবেন, ফুল গুলো তজবি আর জায়নামাজ হয়ে গেছে। এদিকে আজমী শরীফের পীর বাবা নানীকে বলে গিয়েছেন, উনি দু'টা জ্বীন নানীকে দেখাশোনা করার জন্য রেখে গেছেন। নানীর কোনো বিপদআপদ হবে না। এমন কি শরীর খারাপ হলেও জ্বীনরা দেখবে। নানীর শরীর খুব খারাপ হলো। কিন্তু নানী ডাক্তার দেখান না। নানীর বিশ্বাস পীরবাবার জ্বীনরা নানীকে সুস্থ করে তুলবে। বিনা চিকিৎসায় নানী মারা গেলেন।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২৩

ডেইলিবাংলাদেশ বলেছেন: ভাল লাগল । শুভ কামনা রইল ।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি শুভ কামনা চাই না।
এর চেয়ে ভালো বার্গার আর কোক খাওয়াতে পারেন।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

নিভৃতা বলেছেন: জ্বীন নিয়ে আপনার গল্পের ভাণ্ডার দেখি সমৃদ্ধ। :)
জ্বীনে ধরা নিয়ে আমিও একটা গল্প লিখেছিলাম।
কষ্ট হয় যখন দেখি শিক্ষিত মানুষরাও জ্বীনে ধরা, জ্বীনকে বশ করা ইত্যাদিতে বিশ্বাস করে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০২

রাজীব নুর বলেছেন: শিক্ষিত মানুষেরা কুসংস্কার বেশি পছন্দ করে।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অসাধারণ লেখা। ভালো লাগলো।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৬

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমি পড়েছি, সত্য হলে কিছু বলার নাই। :(

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

সাইন বোর্ড বলেছেন: জ্বীন নিয়ে যেভাবে নাড়া চাড়া শুরু করেছেন তাতে যেন আবার আপনার উপরই ভর না করে বসে ।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: আসুক জ্বীন। মাইর মাটিতে পড়বে না।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪৪

এম এ হানিফ বলেছেন: গল্প লেখার ধরন সুন্দর আপনার। অনেকেই লেখে অথচ লেখার ধরন নিয়ে ভাবে না। আপনি ভাবেন তাই হয়ত সুন্দর হয় লেখা। আবার জ্বীনের কারুকাজও হতে পারে। যাই লেখেন জ্বীন এসে ঠিকঠাক করে দেয়। হা হা হা---

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: এটা গল্প নয়। বাস্তব।

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৮

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: আপনার জ্বীনের গল্প/ঘটনাগুলো বেশ বৈচিত্রময়।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: গল্প নয়। বাস্তব।

৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:


মগজ হারানোর কাহিনী

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: নানী ধর্মের কারনে শেষ হয়ে গেল।

১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সহজ-সরল মানুষকে সুযোগ বুঝে সবাই ঠকায়।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

১১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৫৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার নানী ব্যবসায়ী ছিলেন,
ইন্ডিয়াতে পর্যন্ত ব্যবসা করেছিলেন, তিনি এতটা বোকা হবার কথা নয়!!

তিনি এভাবে অবুঝের মত সব কিছু খোয়ালেন ব্যাপারটা অদ্ভুত! আর একেই বলে মনে হয় ঝোপ বুঝে কোপ! জনগণও বুঝে গিয়েছিল কিভাবে ঠকাতে হবে!!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের ব্যাপারীরা নানীকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

১২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার নানীর জন্য খারাপ লাগছে ।

ধর্ম বিশ্বাস আর পীর ফকিরে বিশ্বাস এক কথা নয় ।

অনেকেই এই ভুলটা করেন ।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১১

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের সাথে কি পীর ফকিরের সম্পর্ক নাই?
পীর ফকির তো এই ধর্ম দিয়েই মানুষকে বোকা বানায়।

১৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩

সুপারডুপার বলেছেন:



পীর বাবা ও ওয়াজ মাহফিল বাবারা নিজেরা কোনো কিছুই হারাতে চায় না, কিন্তু ধর্মের জন্য অন্যকে সব কিছু হারাতে উৎসাহিত করে। আর এই ফাঁদে যারা পা দেয়, তাদের অবস্থা আপনার নানীর মত হয়।

গ্রামের বহু মানুষই নিজে খাবার পায় না , কিন্তু পীর বাবার জন্য তার না খাওয়া খাবার নিয়ে যায়। ভন্ড বাবার জন্য তার পালিত গরু ছাগল মুরগি সব বিলিয়ে দেয়। পীর বাবারাও সেগুলো খুশি মনে নেয়।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: সরকারের উচিত এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।

১৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭

সুপারডুপার বলেছেন: সরকারের উচিত গোপন ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া। প্রকাশ্য ব্যবস্থা নিলে এরা ধর্মভীরুদের ব্রেইন ওয়াশ করে, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলবে।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: রাইট।
একদম ঠিক কথা।
সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.