নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সময়ঃ মধ্য দুপুর।
মধ্য দুপুর সময়টা বড় অদ্ভুত! এই সময় নিজের ছায়াটাকেও খুঁজে পাওয়া যায় না। বুকের মধ্যে যেন কেমন করে! চারপাশে যা দেখা যায় সবই ভালো লাগে। প্রেসক্লাবের সামনে একলোক রাস্তার পাশে লেবুর সরবত বিক্রি করছে, দোয়েল চত্ত্বরের সামনে দেখলাম- মানুষজন পাগলের মতোন ডাবের পানি খাচ্ছে। গুলশান লিংক রোডের সামনে দেখলাম- পথচারীরা পাগলের মতো গেন্ডারির রস খাচ্ছে। বেশ কড়া রোদ উঠেছে। এইসব রাস্তার খাবার না খেয়েই বা কি করবে! গলা বুক শুকিয়ে যায় যে!
এই শহরে কেউ কেউ মধ্যদুপুরে একা হাটতে বের হয়।
রাস্তার পাশের দোকান থেকে চা খায়- কেক খায়। তারপর আবার হাটতে শুরু করে। সব জাগাতেই দুপুরবেলা মানুষের ভিড়টা একটু কম থাকে কিন্তু কোথাও জটলা দেখলে- এক আকাশ আগ্রহ নিয়ে লোকজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে। আবার খাপছাড়া ভাবে হাটে। আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ে।
এমন'ই এক সময়ে তেইশ বা পচিশ বছরের একটি ছেলে নিউ মার্কেটের ১ নম্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার কাধে ক্যামেরার ব্যাগ। মাথার চুল বড় বড়। মনে হয় অনেকদিন সেলুনে যায় না। ছেলেটা কোথায় যাবে বুঝতে পারছে না। তখন ছেলেটির সামনে দিয়ে একটা মেয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটিকে খুব রুপসী বলা যাবে না। শুধু চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া। সারা পিঠে একরাশ চুল ছড়ানো। ছাতা মেলে কি সুন্দর করেই না হেঁটে যাচ্ছে। এর আগে এত সুন্দর করে কোনো মেয়ে কি ছাতা মেলে হেঁটে গিয়েছে?
ছেলেটা মেয়েটিকে বলল- শুনুন।
মেয়েটি এক আকাশ অবাক দৃষ্টি নিয়ে ফিরে তাকালো।
ছেলেটি বলল- আচ্ছা, এখন, ক'টা বাজে বলেন তো?
মেয়েটি বলল, আমার হাতে ঘড়ি নেই, জানি না কয়টা বাজে।
ছেলেটি বলল- আহ হা আন্দাজে বলুন।
মেয়েটি বলল- আমার আন্দাজ ভালো না।
ছেলেটি বলল- আচ্ছা, মোবাইলে সময় দেখে বলুন।
মেয়েটি হেসে ফেলল তারপর বলল- আমার মোবাইল আজ ভুলে বাসায় রেখে এসেছি ।
মেয়েটি চলে যাচ্ছিল, ছেলেটি আবার ডেকে বলল- শুনুন আমাকে একটা বার্গার আর কোক খাওয়াবেন প্লীজ? খুব ক্ষুধা লাগছে। মেয়েটি ব্যাগ থেকে কিছু টাকা বের করে ছেলেটির দিকে বাড়িয়ে দিল। ছেলেটি হেসে বলল- আমি আপনার কাছে টাকা চাইনি- বলেছি বার্গার আর কোক খাওয়াবেন কিনা। মেয়েটি বলল- আচ্ছা, চলুন।
তারা বলাকা সিনেমা হলের পাশে একটি ফাস্টফুডের দোকানে গিয়ে বসল। বাইরে কি গরম! আর দোকানের ভেতরটা বরফের মতন ঠান্ডা! মুহূর্তের মধ্যে যেন সারা শরীরে একটা শান্তির পরশ ছুঁয়ে গেল। বেশীর ভাগ ফাস্টফুডের দোকানে ইংলীশ গান বাজে। কিন্তু এই দোকানটাতে বাজছে বাংলা গান। গানের সুর এবং কথা গুলো খুব সুন্দর। ''পথ ছাড়ো ওগো শ্যাম, কথা রাখো মোর- এমন করে তুমি আঁচল ধরো না, এখনি যে শেষ রাত হয়ে যাবে ভোর!'' (আহা, কি মিনতি!) মেয়েটি একটা বার্গার আর কোক ছেলেটির সামনে রেখে বলল খেয়ে নিন।
ছেলেটি বলল- আপনি কিছু খাবেন না?
মেয়েটি বলল- আমি বাসা থেকে খেয়ে বের হয়েছি।
ছেলেটি বার্গার খেতে খেতে বলল- দেখুন ওপাশের কোনার টেবিলটায় দু'টা ছেলে মেয়ে বসে আছে- তারা টেবিলের নীচে পা ঘষাঘষি খেলছে।
মেয়েটি বলল- চুপ করে খানতো। খাওয়ার সময় কথা বলতে হয় না।
ছেলেটি খাওয়া শেষ করে বলল- এখানে ভালো লাগছে না। চলুন খোলা আকাশের নীচে গিয়ে কোথাও বসি। তারা হাঁটতে হাঁটতে একটা পার্কে এসে বসল। ছেলেটি বলল- ঝালমুড়ি খাবেন অথবা রং চা? মেয়েটি বলল- না। ছেলেটি বিড়বিড় করে বলল- "আমি স্বপ্ন একেঁছি, তোমায় দেখেছি,/ নীল সেই স্বপ্নে তোমায় আমি ভালবেসেছি ।/ আমি কষ্ট ভুলেছি, মেঘ উড়িয়েছি।"
মেয়েটি বলল- আচ্ছা, আমি এখন যাই?
ছেলেটি গভীর গলায় বলল- না। এখন আপনি আমাকে একটা গান শুনাবেন।
মেয়েটি খুব সুন্দর করেই গুনগুন করে গাইল- "এই জাদুটা যদি সত্যি হয়ে যেত, তাহলে আমি তা শিখে নিতাম, প্রথমে আমি তাকেই জাদু করতাম। কামনার আঁখিতে আমাকে বেঁধে সে ধরা দেয় না, হৃদয়ে ঝড় তুলে ভালোবাসি-বাসি বলে, ভালোবাসে না। যদি পারতাম আমি জীবনের সবটুকু দিয়ে তবে ভেল্কিতে তার দৃষ্টিপাখিটা ধরতাম...."।
ছেলেটি মুগ্ধ হয়ে গান শুনল। এবং গানের খুব তারিফ করল।
মধ্যদুপুর সেই কখন পার হয়ে গেছে।
সূর্যের তেজ অনেকটা কমে গেছে। এখন চারিদিকে ঝলমলে শীতল বাতাস বইছে। বাতাসে মেয়েটির চুল আর ওড়না পতাকার মতন পত-পত করে উড়ছে। বাতাসে কখনও কখনও মেয়েটির চুল ছেলেটির গায়ে এসে পড়ছে।
কিছুক্ষন পর হয়তো সন্ধ্যা নেমে যাবে। ছেলেটি আর মেয়েটি একটা রিকশা করে কোথাও যাচ্ছে। হুড ফেলানো। ছেলেটি- মেয়েটিকে বলল- আচ্ছা, রিকশাতে উঠলেই ছেলেগুলো কেন মেয়েদের কোমরে হাত দিয়ে ধরে রাখে? কোমরে হাত দিয়ে না ধরলে কি মেয়ে গুলো রিকশা থেকে পড়ে যাবে?
মেয়েটি বলল- আমি জানি না, আপনার কি আমার কোমরে হাত রেখে বসতে ইচ্ছা করছে? তাছাড়া অনেক ছেলে তো রিকশায় মেয়েদের চুমুও দেয়!
ছেলেটি বলল- না, নো, নেভার। এইসব আমার ভালো লাগে না। কিন্তু তারপরও ছেলেটি মেয়েটির কোমড়ে হাত দিয়ে ধরে রাখল। হঠাৎ মনে হলো মেয়েটি যেন এক আকাশ লজ্জা পেলো।
মেয়েটি বলল- আমি বাসায় যাবো কখন?
ছেলেটি বলল- সন্ধ্যার পর। এখন আমরা সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাবো।
মেয়েটি ছোট করে বলল- আচ্ছা।
সন্ধ্যা প্রায় শেষ হতে চলল।
এই সময়টায় আকাশ থেকে খুব সুন্দর একটা আলো ভেসে আসে এই প্রাচীন পৃথিবীতে। তাই, সব কিছুই কেমন যেন মায়াময় লাগে! সংসদ ভবনের এই রাস্তাটায় সব সময় গাড়ি গুলো খুব জোড়ে চলে। যেন তাদের অনেক তাড়া আছে। ছেলেটি অবাক দৃষ্টিতে মেয়েটির ফুচকা খাওয়া দেখছে। মনে হয় না, এর আগে পৃথিবীতে কোনো মেয়ে কি এত সুন্দর করে কেউ ফুচকা খেয়েছে। মেয়েটি কথার ছলে যত বার হেসে উঠে, সেই হাসি যেন ছেলেটির বুকে এসে ধাক্কা দেয়। তারপর তারা আইসক্রীম খেলো। রাত আটটায় মেয়েটিকে বাসায় নামিয়ে দিল ছেলেটি। দু'জন দু'জনের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে হাতে হাত রেখে অনেক কথার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে বিদায় নিলো। বিদায়ের আগে মেয়েটি ছেলেটির ঠোঁটে ঠোট রাখল। এই তো ভালোবাসা! এমনই হয়! কিন্তু তারপর? ধরে নিই মেয়েটির নাম- নীলা আর ছেলেটির ফরহাদ।
কাহিনি এইখানেই শেষ না, আর একটু বাকি আছে।
নীলার বাবা তার মেয়ের জন্য পাঁচ কেজি হিমসাগর আম নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। নীলা আম খুব পছন্দ করে। নীলার বাবা হঠাৎ দেখতে পান একটা ছেলে হাসতে হাসতে রাস্তা পার হচ্ছে- ছেলেটির চোখে মুখে এক আকাশ আনন্দ! কাঁধে ক্যামেরার ব্যাগ, মাথার চুল বড়-বড়। ছেলেটিকে কেন জানি নীলার বাবার খুব আপন-আপন মনে হচ্ছে। ছেলেটি ডেকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন কিনা বুঝতে পারছেন না তিনি। হঠাৎ একটা পিক-আপ এসে ছেলেটি ধাক্কা দিয়ে ফেল চলে যায়। নীলার বাবা আম ফেলে দিয়ে দৌড়ে ছেলেটির কাছে গিয়ে চিৎকার করে বলছেন- ছেলেটিকে হাসপাতালে নিতে হবে। কেউ সাহায্য করুন। হেল্প, হেল্প। প্লীজ। ছেলেটির মাথা থেতলে গেছে। গলগল করে চারিদিকে রক্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ছেলেটার মুখে তখনও একটুকরো হাসি লেগে আছে। নীলার বাবা বুঝতে পারেন নি- ছেলেটি বেঁচে নেই।
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আষাঢ়ে গল্প।
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তবে বহু ঘটনা ঘটে। অথচ আপনি ভাবছেন আষাঢ়ে গল্প!!!
৩| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৬
চাঙ্কু বলেছেন: এইডা কোন কথা হল!! কি সুন্দর ভালোবাসা, আম, হিমসাগর, সন্ধ্যা - এই সব নিয়ে বল্লেন কিন্তু শেষ দিকে এই পিকআপটা আনার কি আনার দরকার ছিল! মাইনাস!
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১০
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তবে এরকমই হয়।
৪| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১৪
উম্মে সায়মা বলেছেন: আয় হায় কি থেকে কি হয়ে গেল! আর এমন করে বুঝি প্রথম দেখায় এমন অজানা অচেনা একজন মানুষের সাথে এতটা অন্তরঙ্গতা হয়!!
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম হয়। মাঝে মাঝে এরকম হয়। বিশ্বাস করুন।
৫| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ছেলেটার যায়গায় মেয়েটা হলে গল্পটা কিছুটা হলেও গ্রহন যোগ্যতা পেত।তার পরও চালিয়ে যান।
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
৬| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১৬
ডাকঘর সাহিত্য পত্রিকা বলেছেন: সব মিলে অসাধারণ
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।
৭| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
এই প্ললটা আগেও দিয়েছিলেন?
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী।
৮| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৫১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অসাধারণ লেখা ও ছবি
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৯| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১২
রিফাত হোসেন বলেছেন: ছবির লোভেই এই পোস্টে আসা।
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা হা----
১০| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৬
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: ভালোলাগা রইলো
২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ১২:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শুধু আষাঢ়ে নয় ভরা শ্রাবণের গল্প !!
পাঠকদের বলদ পাইছেন !! প্রথম দেখাতেই
মেয়ে আপনার ঠোটে ঠোট রাখবে। এটা গাজীসাব
মা্নলেও মানতে পারে,
তাদের মেরিকাতে এমনটি যদিও হয়
তবে বাংলাদেশে কভূ নয়
২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৩:০২
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশে যে কি কি হয় আপনার ধারনা নেই।
১২| ২৪ শে মে, ২০২০ সকাল ৮:৩৭
ইসিয়াক বলেছেন: ফারহাদ<বাজীব নূর
ঠোঁটে ঠোঁট রাখার খুব শখ না? দুষ্টু
২৪ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: না শখ নাই।
১৩| ২৪ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:৪৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: ভালই চলছিল। শেষের পরিণতি খুবই করুন।
২৪ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: শেষ পরিনতি সব সময় করুন হয়।
১৪| ২৪ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:০৩
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
ফরহাদের সাথে আমার কখনো দেখা হয়নি। তবে নীলা ও নীলার বাবার সাথে আমার পরিচয় আছে। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না, কিন্তু নীলা ও নীলার বাবাকে আজো দেখলে কেনো জানি মনে হয় তাদের জীবনে থেমে গেছে। ফরহাদ, নীলা ও নীলার বাবার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা।
২৪ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: নীলা কে আপনি কিভাবে চিনেন?
না না আপনি ভুল বলছেন। হয়তো অন্য কোনো নীলার কথা বলছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ৯:৫৭
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভালো লাগলো। ছবিটা দারুণ।