নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৩৭

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৪



আমার খালাতো ভাই সুমন।
এখন তিনি দিনাজপুর জেলা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক। খুব জনপ্রিয় শিক্ষক। গত সতের বছর ধরে তিনি দিনাজপুরে আছেন। শিক্ষক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি। সুমন ভাই বিয়ে করেছেন। এখন তার দুটা ছেলে। বউ বাচ্চা নিয়ে সুমন ভাই দিনাজপুরেই থাকেন। খুব ভালো আছেন। অসংখ্যা ছেলেমেয়ে তার কাছে পড়তে আসে। উনি মানা করলেও ছাত্রছাত্রীরা শুনে না। মাস শেষে কে তাকে টাকা দিলো, না দিলো তাতে তার কিছুই যায় আসে না। টাকা পয়সার হিসাব উনি কোনো দিনই করেন নি। সে তার ছাত্রছাত্রীদের মন দিয়ে পড়ায়। পড়িয়ে উনি আনন্দ পান। ছাত্রছাত্রীরা সুমন ভাইকে এত পছন্দ করে যে অন্য শিক্ষকেরা সুমন ভাইকে হিংসা করে। তাকে অন্য কোথাও ট্রান্সফার করে দিতেও অনেক চেষ্টা করেছেন। ব্যর্থ হয়েছেন

সুমন ভাই প্রচুর পড়ুয়া মানুষ।
সারাক্ষন পড়তো। খাওয়ার সময়ও তার হাতে বই থাকতো। সত্য কথা বলতে কি আমি তার কাছ থেকেই পড়তে শিখেছি। পড়ার আগ্রহ জন্মেছে। সুমন ভাই আমাকে শিখিয়েছেন- সমাজ, দেশ, সাহিত্য, ধর্ম, মানবতা আর রাজনীতি। সুমন ভাই পুরো নাস্তিক একজন মানুষ। এবং সে কেন নাস্তিক তা সে যুক্তি দিয়ে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয়। তবে সুমন ভাই নাস্তিক হলে কি হবে- প্রচন্ড হৃদয়বান এবং মানবিক একজন মানুষ। নাস্তিকেরাও যে হৃদয়বান আর মানবিক হয়- তা আমি সুমন ভাইকে দেখে শিখেছি। যাই হোক, সুমন ভাই বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড়। কমপক্ষে আঠারো বছর হবে। আমার মনে আছে, সুমন ভাই যখন জগন্নাথ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিচ্ছেন। সারাদিন রাত পড়তেন। কারেন্ট চলে গেলেও মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়তেন।

সুমন ভাই প্রশ্নের উত্তর মূখস্ত করতেন।
আমি তার পাশে চুপ করে বসে থাকতাম। বাইশ তেইশ পাতা ইংরেজি মূখস্ত করতেন। আমি তার পড়া ধরতাম। তিনি গড় গড় করে বলে যেতেন। একটা লাইনও ভুল হতো না। একটা শব্দও ভুল হতো না। আমি মুগ্ধ হয়ে যেতাম। এই সুমন ভাইয়ের সাথে আমার দীর্ঘদিন কেটেছে। আমি ছোট বলে আমাকে অবহেলা করতেন না। কঠিন সব বিষয় নিয়ে আমার সাথে আলাপ করতেন। সুমন ভাইয়ের চোখে খুব সমস্যা। উনি চশমা ছাড়া চোখে কিছুই দেখেন না। একসময় খুব দরিদ্র অবস্থা গিয়েছে সুমন ভাইয়ের। এখন তার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। স্কুল থেকে ছুটি পেলেই দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ান। সুমন ভাইকে আমার খুব ভালো লাগে। সুমন ভাই আর আমি একবার ভিক্ষুক সেজে রাস্তায় ভিক্ষা করেছিলাম।

সুমন ভাইয়ের সাথে এখন আমার দেখা সাক্ষাত হয় না।
আমি ঢাকা থাকি। সুমন ভাই থাকেন দিনাজপুর। মাঝে মাঝে সুমন ভাই ঢাকা এলেও আমার সাথে দেখা হয় না। গত পনের বছরে পনের বার দেখা হয় নাই। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে দিনাজপুর গিয়ে সুমন ভাইয়ের সাথে দেখা করে আসি। এর মধ্যে একবার আমি ট্রেনে করে দিনাজপুর গিয়েছিলাম কিন্তু দেখা হয় নাই। গত বছর একবার দেখা হলো- কমলাপুর রেলস্টেশনের কাছে। তার স্কুল ছুটি। তাই সুমন ভাই কোথাও বেড়াতে যাবেন তাই ট্রেনের টিকিট কাটতে এসেছেন। আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, কতদিন তোর সাথে দেখা হয় না। একসময় আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা বসে গল্প করতাম! সেই দিন গুলো আমি খুব মিস করি রে রাজীব।

গত বছর সুমন ভাইয়ের ছোট ছেলেটা হটাত খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে।
রক্ত যেন কি একটা সমস্যা। দেশের ডাক্তাররা ভালো চিকিৎসা করাতে পারলেন না। কিন্তু বুদ্ধি দিলেন চেন্নাই নিয়ে যাওয়ার জন্য। চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হলো। এক বছর চেন্নাই থাকতে হলো ছেলের চিকিতসার জন্য। সুমন ভাইয়ের স্কুল আছে তাই তিনি দেশে চলে এলেন। কিন্তু স্কুল ছুটি থাকলে সুমন ভাই চেন্নাই চলে যান। এই এক বছর তার স্ত্রী একাই চেন্নাই ছিলেন। ছেলেটা এখন সুস্থ। সুমন ভাইয়ের স্ত্রী মিলি চমৎকার মেয়ে। প্রানবন্ত হাসি খুশি। সুমন ভাইয়ের বিয়েতে আমি ছিলাম। তখন থেকেই মিলি ভাবির সাথে আমার খুব ভাব। মাঝে মাঝে ফেসবুকে মিলি ভাবির সাথে গল্প হয়।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২১

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সুমন ভাই আর আমি একবার ভিক্ষুক সেজে রাস্তায় ভিক্ষা করেছিলাম।
...................................................................................................
দারুন অভিজ্ঞতা! এখন কি আবার পারবেন ?

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: না এখন পারবো না।

২| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনারতো অনেক অভিজ্ঞতাই আছে।
তা চুরি করে ধোলাই খাবার কোন
অভিজ্ঞতা আছে আপনার ঝুলিতে?

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: !

৩| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শুভ কামনা রইলো।

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: সুমন ভাইয়ের জন্য?

৪| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৯:৫০

শোভন শামস বলেছেন: শুভ কামনা রইলো।

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১০

কল্পদ্রুম বলেছেন: বাদলের যেমন হিমু। আপনার তেমন সুমন ভাই।

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: আসলেই সুমন ভাইয়ের কাছ থেকে অনেক শিখেছি।

৬| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ কথা । ভালোবাসা রহিল

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:২০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আপনার একজন সুমন ভাই আছে,এই জন্য হিংসা হয়।এমন ভাই সবার হয় না।

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা----

৮| ২৭ শে মে, ২০২০ রাত ১২:১৯

ডার্ক ম্যান বলেছেন: রানূ ভাই সব বাস্তবতা।

২৭ শে মে, ২০২০ রাত ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: সেটাই।

৯| ২৭ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:৫০

ডাকঘর সাহিত্য পত্রিকা বলেছেন: ভালোলাগা একরাশ।

২৭ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

১০| ২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩

ইসিয়াক বলেছেন: ও

২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

১১| ২৮ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৬

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: আপনি নিজেও কারো কাছে এমনি সুমন ভাই হয়ে থাকুন। চমৎকার উপস্থাপনা।

২৮ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সাহাদাত ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.