নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ভদ্রলোকের বয়স প্রায় ৬০/৬৫ হবে।
গত আট দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি। মাঝে মাঝে তিনি কাউকে চিনতে পারেন না। বড় অসহায় অবস্থার মধ্যে আছেন ভদ্রলোক। হাসপাতালে একা তিনি বিছানায় পড়ে আছেন। তাকে দেখার মতো কেউ নেই। অথচ ভদ্রলোকের তিন সংসারে মোট ১৪টি ছেলেমেয়ে। ভদ্রলোকের ভাই বোন আছেন এগারো জন। এবং তাদের ছেলেমেয়ের সংখ্যা অনেক। এদের বেশীর ভাগের'ই বিয়ে সাদি হয়ে গেছে। তাদের ঘরেও সন্তান হয়ে গেছে। আমি ভদ্রলোকের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলের বন্ধু। আমার বন্ধু তার বাবাকে হাসপাতালে দেখতে যায় না। আমি প্রশ্ন করেছি, বন্ধু তুমি তোমার বাবাকে হাসপাতালে দেখতে যাচ্ছো না কেন? তোমার অন্য ভাই বোনেরাও যাচ্ছে না। আমার বাবা হাসপাতালে থাকলে আমি তো পাগল হয়ে যেতাম। সারাক্ষণ হাসপাতালে গিয়ে বসে থাকতাম।
আমি হাসপাতালে গেলাম ভদ্রলোককে দেখতে।
তিনি বিছানায় মরার মতোন পড়ে আছেন। যেন মৃত্যু লাশ। হঠাত আমার মোবাইলে ফোন বেজে উঠেছে। ভদ্রলোক বারবার বলছেন, হ্যালো হ্যালো। কে বলছেন? না চিনতে পারছি না। আমি বললাম, আংকেল আমার ফোন এসেছে। আমি ফোন ধরেছি। আংকেল চুপ হলেন। একটু পর আমাকে বললেন, আমাকে মাস্ক দাও। আমি বাইরে যাবো। আমি বললাম, বাইরে যাবেন কেন? ভদ্রলোক কেন বাইরে যাবেন তা কিছুতেই মনে করতে পারছেন না। তিনি তার চিন্তার ভুবনে চলে গেছেন। আমি চুপ করে বসে আছি। ভদ্রলোক আমাকে বললেন, ওরা আমাকে সিগারেট খেতে দেয় না। আমি বললাম, আংকেল আমি আপনার জন্য সিগারেট নিয়ে এসেছি। (আসলে আমি তার জন্য সিগারেট আনি নি। আমি সিগারেট খাই। তাই আমার পকেটে সিগারেট আছে)। ভদ্রলোক বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে আমার হাত থেকে সিগারেটের প্যাকেট নিলেন। বুঝা যাচ্ছে তিনি প্রচন্ড খুশি হয়েছেন।
ভদ্রলোক সিগারেট ধরালেন।
আমি বললাম, আংকেল বাথরুমে গিয়ে সিগারেট খান। যে কোনো সময় ডাক্তার, নার্স এসে পড়তে পারে। উনি আমার কথার পাত্তা দিলেন না। মনের সুখে সিগারেট টানতে থাকলেন। আমি বললাম, আংকেল আপনি আমাকে চিনতে পেরেছেন? আংকেল বললেন, অবশ্যই চিনতে পেরেছি। তুমি আমার ছেলের বন্ধু। বহু বার তোমাকে দেখেছি। অনেকবার তোমার সাথে আমার কথা হয়েছে। আমি বললাম, আপনার এত গুলো ছেলেমেয়ে কিন্তু কেন তারা আপনাকে দেখতে আসে না? আংকেল বললেন, আমার পাপের ফল। আমি বললাম, আপনার ভাই বোনেরাও তো আসে না। আংকেল বললেন, ওরা মাঝে মাঝে আসে। সবার'ই তো অফিস আদালত আছে। ঘরসংসার আছে। আমি বললাম, আংকেল আপনি তিনটা বিয়ে কেন করলেন? তৃতীয় বিয়েটা তো এই কিছুদিন আগে করেছে। সেখানে আপনার সাত বছরের দুটা ছেলেমেয়ে আছে। দুইটা বিয়ে করেছেন। ঠিক আছে। তিন নম্বর বিয়েটা কেন করতে গেলেন? আপনার ছেলে মেয়েদের কথা ভাবলেন না? তারা সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবে? তাছাড়া আপনার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন কি ভাববে? কি বলবে?
আমি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলাম।
পরের দিন বন্ধুর সাথে দেখা। বন্ধুকে বললাম, বন্ধু তুই কেন তোর বাবার সাথে দেখা করিস না? বন্ধু খুব সহজ ভাবে বলল, 'ভেতর থেকে বাবাকে দেখতে যাওয়ার তাগিদ পাই না'। লোকটা তার সন্তানদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন নি। শুধু নিজের সুখবিলাস নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন সারা জীবন। আমার বাবা যদি ভালোই হতো তাহলে আমি তাকে প্রতিদিন হাসপাতালে দেখতে যেতাম। আমি বললাম, তোর অন্য ভাইয়েরাও যায় না কেন? বন্ধু বলল, ওরাও বাবাকে দেখতে যাওয়ার কোনো কারন খুঁজে পায় না। কারন বাবা কখনও তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি। সে শুধু জন্মই দিয়েছে। কর্ম করে নি। আমি বললাম, একেবারেই কি কিছু করেন নি? বন্ধু বলল, করেছে। তবে সেটা পরিপূর্ন নয়। একজন বাবা'র যতটুকু দায়িত্ব থাকে উনি ততটুকু করেন নি। সবচেয়ে বড় কথা উনি বুড়ো বয়সে আরেকটা বিয়ে করেছেন। লজ্জায় মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারি না। সেখানে আবার দুই বাচ্চা। আমার নিজের বাচ্চা থেকেও ছোট।
ভদ্রলোক বেশি দিন বাচবেন না।
শরীরের অবস্থা তার খুব বেশি খারাপ। নানা রকম অসুখবিসুখ তাকে ধরেছে। ভদ্রলোকের তিন সংসারের মধ্যে প্রথম দুই সংখ্যারের ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেছে। তাদের বিয়েসাদিও হয়ে গেছে। কিন্তু তৃতীয় সংসারে ছোট ছোট দুই ছেলেমেয়ে। তাদের কি হবে? ভদ্রলোকের তো কোনো টাকা পয়সা বা সম্পদ নেই। তৃতীয় সংসার চলবে কেমন করে। বরং ভদ্রলোকের লাখ লাখ টাকা ঋণ আছে। আমি বুঝি না তৃতীয় বিয়ে যে মহিলাকে করলো, সেই মহিলা সব জেনে কেন তাকে বিয়ে করতে রাজী হলো?
যাই হোক, এখন ভদ্রলোককে তার প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষের ছেলেমেয়েরা রাখতে চায় না। ছেলে মেয়েদের কথা সে ভালো বাবা নয়। সে পিতা হিসেবে তার সঠিক দায়িত্ব পালন করে নি। ভদ্রলোকের ভাই বোনেরাও তাকে রাখতে রাজী না। তারা বলেন, তার এত গুলো সন্তান থাকতে আমরা কেন রাখবো? আর তৃতীয় রাখতে চায়। কিন্তু ভদ্রলোকের প্রতিদিন এক হাজার টাকার ওষুধ লাগে এই টাকা কে দিবে? মানুষের জীবন সুন্দর জীবন নয়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: পরিবারের লোক গুলো ততটা খারাপ না। ভদ্রলোক যৌবন বয়সে ছেলে মেয়েদের প্রতি দায়িত্ব ১০০% পালন করেন নি। বুড়ো বয়সে এসে ভদ্রলোক শিক্ষা পাচ্ছে।
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
আরাফাত৫২৯ বলেছেন: পাপের ফল এমন হয়। ভালো লিখেছেন।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: সত্য ঘটনা।
৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৭
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই ধরণের মানুষের শেষ জীবনটা এরকমই হয়। তারপরেও তার ছেলেমেয়ে নাতি নাতনিদের তাকে দেখতে যাওয়া উচিৎ ছিল। আপনি তাকে দেখতে গিয়ে ভালো করেছেন।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: দেখতে গিয়েছি। তাকে সিগারেটও খায়েছি।
৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৯
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: বাবা না হয় তার দায়িত্ব পালন করেন নি,কিন্তু ছেলেরাও তো তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। বাবা খারাপ ছিলেন বলে তো তারা তাদের কর্তব্য এড়িয়ে যেতে পারে না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে দীর্ঘদিনের রাগ ক্ষোভ জমে আজকের এই পরিস্থিতি হয়েছে।
৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
চারটা পর্যন্ত বিয়ে করা যায়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২
রাজীব নুর বলেছেন: প্রথম দুই সংসারে অভাব। তারপ আরেকটা সংসার। সেই সংসারেও অভাব। কোনো সংসারের অভাব সে মিটাতে পারনি। যদি তার একটা সংসার থাকতো তাহলে পরিস্থিতি আজকে এমন হতো না।
৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ভদ্রলোক একজন খাঁটি মুসলমান।ওনি মনে প্রানে বিশ্বাস করেন মুখ দিয়েছেন যিনি আহার দিবেন তিনি।আর বিয়ের ব্যাপারটা, ধিরে ধিরে সুন্নত পালনের দিকে যাওয়া,আরেকটা বিয়ে করে পরিপূণ করবেন।
আধুনিকতার ছোয়া লেগে এখন এসব কমে গেছে।আগে এসব ঘটনা অহরহ দেখা যেত। প্রতি গ্রামেই এমন ঘটনা ছিল।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: তার একটা সংসার থাকলে সে তার সংসারকে সবটুকু দিতে পারতেন।
৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: সাংঘাতিক ব্যাপার!
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী।
৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
কানিজ রিনা বলেছেন: হাহাহাহাহা, হুমায়ূন আহমেদের মত শিক্ষিত লোক ইসলামের ই জানতো না, কোন দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছে কিনা তা কেউ জানে না। অথচ বুড়ো বয়সে মেয়ের বয়সী মেয়ে বিয়ে করে। কিন্তু তিনি ঠিকই জানতেন চার বিয়ে করা জায়েজ আছে। অথচ দেখেন হুমায়ূন আহমেদ কোন ঘরের ছেলে মেয়েকে ঠিকমতো মানুষ করে রেখে যেতে পারেন নাই।
কেন যে লোকগুলোর বুড়ো বয়সে এসে মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটে শিক্ষিত হোক আর অশিক্ষিত হোক বুঝে আসেনা।
লেখক এর লেখক এর বুড়ো নায়ক মুখস্ত করে রেখেছিল ইসলামে চারটা বিয়ে জায়েজ, আগে পরে আরও কিছু
নিয়ম-শৃঙ্খলা আছে তারা না জেনে না পড়ে শুধু জানে ইসলামে চারটা বিয়ে করার অনুমতি আছে।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আপনি খুব কম জানেন।
৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৫
কলাবাগান১ বলেছেন: কার বাবার কথা লিখলেন সেটা আপনি না বললেও আপনার আগের লিখার সুত্র ধরে বুঝতে কোন অসুবিধা হয় নাই।
আপনি নিজেকে যে পরিমান বুদ্ধিমান বলে মনে করেন, আসলে আপনি সে পরিমান বুদ্ধিমান না....অন্য নাম দিলেও, অন্য মানুষ হয়ে যায় না যেমন শাহেদ জামাল
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: র্তক করবো না। পাঠকের অনেক কিছুই অনেক রকম ভাববার সুবিধা আছে।
১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
চারখানা বিবাহ হাদিস সম্মত।
ঠিক আছে। কোন দোষ নাই।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: উনি ধর্ম মেনে বিবাহ করেন নি।
১১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: লোভে পাপ ,পাপে মৃত্যু। অতিরিক্ত লোভ ভালো না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: অল্প কিছু দিন আমাদের আয়ু, ক্যান যে মানুষ এমন করে!
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভয়ংকর কাহিনী; পরিবারের লোকগুলোও অমানুষ।