নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৪৬

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:১২



আমার কাজিন হাসি আপা।
তিনি জীবনে অনেক সংগ্রাম করেছেন। অথচ জীবনে আনন্দ বলে তার কিছু ছিল না। একটা বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু স্বামীটা ভালো ছিলো না। বিয়ের পর জানতে পারেন তার স্বামী আগে বিয়ে করেছেন এবং সেই সংসারে তাদের অনেক গুলো বড় বড় ছেলেমেয়ে আছে। এদিকে তার একটা মেয়ে হয়ে গেছে। নিজে টিউশনি করে মেয়েকে বড় করেছেন। মেয়ে ছোট থাকতেই উনি চিৎকার করে বলতেন, আমার মেয়েকে আমি লন্ডনে পড়াবো, আমেরিকাতে পড়াবো। আমার মেয়েকে আমি বিজ্ঞানী বানাবো। ডাক্তার বানাবো। পাইলট বানাবো। এয়ার হোস্টেস বানাবো। বাবা মা'রা হয়তো এরকম করে বলেই থাকেন। অথচ সেই মেয়ে আজ কিছুই হতে পারে নি। অবশ্য সে লেখাপড়া শেষ করেছে। কোনো চাকরি পায়নি। এখন সে অনলাইনে ব্যবসা করে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি করে। আর তার মা ভয়াবহ ক্যান্সারের সাথে লড়ছে।

হাসি আপার মেয়েটা দেখতে সুন্দর না।
বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। অথচ বিয়ে হচ্ছে না। হাসি আপা খুব খুব চেষ্টা করেছেন। অসংখ্য মানুষকে বলে রেখেছেন। কিন্তু কেউ কিছু করতে পারে নি। আচ্ছা, মেয়েটার বিয়ে কেন হচ্ছে না? ল্যাংড়া মেয়েরও তো বিয়ে হয়। হাসি আপার মেয়েটা দেখতে সুন্দর না। অনেক মোটা, অনেক কালো, দাঁতের সেটিং সুন্দর না। মুখ ভর্তি ব্রন। গতকাল মেয়েটা আমাদের বাসায় এসেছিলো। মেয়েটাকে দেখে আমি খুব অবাক হলাম। মেয়েটার চোখ ট্যারা হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়েটার চোখ আগে ঠিক ছিলো। মেয়েটা ডাক্তার দেখাচ্ছে না। অবশ্য মেয়েটার মায়ের চোখ ট্যারা। যাই হোক, পাড়া প্রতিবেশী হাসি আপাকে সারাক্ষণ বলতেই থাকে- মেয়েটাকে বিয়ে দিচ্ছো না কেন? বিয়ে দাও, বিয়ে দাও। একদিন মেয়েটা রেগে গেলো। রেগে গিয়ে সে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলো। ''আমার বিয়ের জন্য আপনারা এত অস্থির কেন? কেন আমার অসুস্থ মা'টাকে মানসিক কষ্ট দিচ্ছেন। আমার বিয়ে নিয়ে যদি আপনাদের এতই চিন্তা থাকে তাহলে আপনারা আমাকে একটা ছেলে যোগাড় করে দিন''। সেটা যখন পারবেন না তবে দয়া করে চুপ থাকুন।

আমার এক চাচা মনসুর।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। নামাজ পড়তে পড়তে কপালে স্থায়ী দাগ বসিয়ে ফেলেছেন দুটা। অথচ সে বিরাট বদ লোক। এই চাচা একদিন চিৎকার করে বললেন, আমার ছেলেকে আমি আর্মি বানাবো, কর্নেল বানাবো। মেজর বানাবো। অথচ এই চাচা তার ছেলেকে কিছুই বানাতে পারেন নি। এখন সে গলির মোড়ে আড্ডা দেয়। আর বিড়ি ফুকে। ছেলে কর্নেল হওয়ার বদলে এখন সে বখাটে হয়েছে। আমার সাবেক অফিসে আমার একজন কলিগ ছিলেন। তার নাম হচ্ছে আপেল। আপেল ভাই বলতো, আমার ছেলেকে আমি ক্রিকেট প্লেয়ার বানাবো। সে জাতীয় দলে খেলবে। আমার নাম আপেল, আমি যা বলি তা করেই ছাড়ি। আপেল ভাই আসলেই অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ছেলে ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে পারেই নি। ছেলে দুইবার ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে আরেকবার পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা নিচ্ছে। বাপ মা তার সন্তানদের নিয়ে যা ভাবেন তার আর শেষমেষ হয় না।

আমার এক বন্ধু আছে, সালাউদ্দিন।
কিছু দিন আগে তার এক ছেলে হয়েছে। ছেলে নিয়ে তার অনেক অহংকার। সে তার ছেলেকে আরবী শিক্ষা দিবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সেখাবে। তার ছেলে কোরানে হাফেজ হবে। হেন হবে, তেন হবে। আমি বললাম, সব বাপ মা'ই চায় তার ছেলে ভাল হোক, ভাল মানুষ হোক, ডাক্তার হোক, ইঞ্জিনিয়ার হোক, আলেম হোক, বাপ মার মুখ উজ্জ্বল করবে। প্রতিটা বাপ মা'ই তাদের সন্তানদের নিয়ে অতি উচ্চ স্বপ্ন দেখে থাকেন। ফলাফলা কি হয়? ফলাফল হয় শূন্য। আজকে যারা দূর্নীতিবাজ, চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী, ধর্ষনকারী তারাও একসময় ছোট ছিল। ছোট থাকা অবস্থায় তাদের বাপ মা নিশ্চয়ই চায়নি তাদের ছেলেমেয়ে দূর্নীতি বাজ হোক, ধর্ষনকারী হোক। কিন্তু তারা ভালো না হয়ে মন্দ হয়েছে। কাজেই বন্ধু সালাউদ্দিন তোমার ছেলে বড় হয়ে যে দূর্নীতিবাজ বা ধর্ষনকারি হবে না তার নিশ্চয়তা কি? সালাউদ্দিন আমার উপর খুব রেগে গেল।

মানব জীবন আনন্দের কিছু না।
বিশেষ করে আমাদের মতো দরিদ্র দেশে যাদের জন্ম হয়। এই দেশে একটা শিশু জন্ম নিলে তার পদে পদে বেগ পেতে হবে। শিক্ষায় বেগ পেতে হবে, চিকিৎসায় বেগ পেতে হবে। শিশু যত বড়, তত দুঃখ দূর্দশা বাড়বে। অবশ্য যদি ওই শিশুর পিতা অনেক ধনী হয় তবে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। সমস্যা হল আমাদের দেশের বেশির ভাগ লকই দরিদ্র। আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশু বড় হয় অভাবে অভাবে। আমি নিজেও অভাবে অভাবে বড় হয়েছি। একটা শিশু পৃথিবীতে আনার আগে বাপ মায়ের এক শ' বার ভাবা উচিত। শুধু আবেগে শিশুর জন্ম দিলেই হবে না। জন্ম দেওয়া কঠিন কিছু না। জন্ম তো রিকশাচালক, সবজি বিক্রেতা, নাপিত, কামার, কুমার ইত্যাদি সবাই জন্ম দিতে পারে। যদি আপনার শিশু বড় হয়ে সমাজের বোঝা হয়- তাহলে দয়া করে এরকম শিশু জন্ম দিবেন না। দয়া করে ধর্ষনকারী আর দূর্নীতিবাজ জন্ম দিবেন না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৪৩

এম ডি মুসা বলেছেন: একসাথে অনেকগুলো গল্প প্রথম গল্প আসলে যার জীবন হতাশা দিয়ে শুরু তার সন্তানের কি হতাশা দিয়ে শেষ হয় পৃথিবীর এরকম নিষ্ঠুর নিয়মিত কষ্ট লাগে মানতে কষ্ট দেয় খারাপ লাগলো।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: মানব জীবন শুধু আনন্দের হয় না।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:০৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: হাসি আপার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা । আর মেয়েটার বিয়ে হোক তাড়াতাড়ি ।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী হ্যা।

৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:৫০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা আমার মতো অনেকের কাছেই আজন্ম পাপ।
এই দেশে জন্ম নিয়ে ভালো একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে পর্যন্ত পারিনি।
কিছু দিন পর মরে যাবো।
কবর দেয়ার জায়গাও পাবো বলে মনে হয় না।
অথচ এই দেশটাকে খুব ভালোবাসি।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: না মরে গেলে কবরের জায়গা পাবেন।

৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৫৫

ইসিয়াক বলেছেন: নিজেদের মনের ইচ্ছা বাচ্চাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সবচেয়ে বড় ভুল।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: একেবারে ভুল না। সামান্য ভুল।

৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
লেখক বলেছেন: না মরে গেলে কবরের জায়গা পাবেন।

মরার পরে তো আমি নিজেই জানতে পারব না ।

কোন বিখ্যাত কলামিস্ট বলেছিলেন, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:১১

রাজীব নুর বলেছেন: তা নাই।
করবের ব্যবস্থা আমি করে দিব।

৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:০৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: @মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, কবরের দরকার কি।দেহটা দান করে যাবেন, মরেও কিছু লোকের উপকার করে যাবেন।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.