নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আপনার প্রিয় বই কি?
এই প্রশ্নটা কেউ করলে অনেকেই বিপদে পড়ে যান। কারন অনেক গুলো তার প্রিয় বই আছে। কোনটা রেখে কোনটার নাম বলবে! ঠিক সেভাবেই আমার অনেক গুলো প্রিয় বই আছে। কিন্তু শুধু একটা প্রিয় বইয়ের নাম বলতে বলা হলে, আমি বলব- দত্তা। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বই। অসাধারণ একটা বই। বইটা যে আমি কতবার পরেছি তার হিসাব নেই। ১৯১৮ সালে 'দত্তা' রচনা করা হয়। আমি হলাম উপন্যাস প্রেমী। যেকোনো ধরনের উপন্যাস পড়তে ভালো লাগে। যারা এখনও 'দত্তা' পড়েন নি, তারা বিরাট ভুল করেছেন। বইটা পড়ার পর আপনার খুব বেশি আফসোস হবে। কেন বইটা আগে পড়েন নি বলে। তবে আগেই বলে রাখি এই উপন্যাস আপনাকে খুব যন্ত্রনা দিবে। গল্পের ট্র্যাজেডি সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রাচীন গ্রীক দার্শনীক অ্যারিষ্টটল বলেছিলেন- সাহিত্যে চরিত্র সৃষ্টি অপেক্ষা প্লটই মুখ্য।
'দত্তা' উপন্যাশের বিজয়াকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।
যদিও এই উপন্যাসের নায়ক নরেন্দ্র। নরেন এবং বিজয়া প্রধান দুই চরিত্র। নরেন বিলেত ফেরত ডাক্তার। 'দত্তা' মানে কি জানেন তো? দত্তা মানে- ''যে মন্দিরে ভক্তিভাবের কারনে স্বেচ্ছায় দেবতার সেবায় নিজেকে অর্পণ করতো তাদের দত্তা বলা হতো। এদেরকে দেবীর মর্যাদা দেয়া হতো''। লেখক শরৎচন্দ্রের লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয়, যখন আমি দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ি। স্কুলের পাঠ্যবইতে 'মহেশ' গল্প পড়ে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। শরতবাবু পরিচ্ছন্ন রুচি, সাবলীল ভাষা দিয়ে লেখক চিরকাল পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন। লেখক মানুষের হৃদয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতি, বিভিন্ন সম্পর্কের স্পর্শকাতর দিকসহ সবকিছু এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যেটা একদম হৃদয় স্পর্শ করে যেতে সক্ষম। তাই হৃদয় যেন কেমন করে ওঠে!
নিজের ও পরিবারের কথা বলতে গিয়ে শরৎচন্দ্র লিখেছিলেন-
''আমার শৈশব ও যৌবন দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। অর্থের অভাবেই আমার শিক্ষা লাভের সৌভাগ্য ঘটেনি'। তৎকালীন সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি, কুসংস্কার, ভন্ডামি ইত্যাদিকে তিনি তাঁর সাহিত্যে চিত্রিত করেছেন। সহজ সরল ভাষায় তিনি বিভিন্ন চরিত্রের দুঃখ-বেদনা, অভাব-অভিযোগ, মননশীলতার জটিল আবর্তে লেখক খুব সার্থকভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পরলোকগমন করেন। তাঁর রচনার আজও বর্তমান সমাজে প্রাসঙ্গিক। অবহেলিত নারী সমাজের প্রতি তিনি মমত্ববোধ এবং সহানুভূতি ব্যক্ত করেছেন। সমাজে অবহেলিত দারিদ্র কিছু না পাওয়া মানুষদের হয়ে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিজের লেখাতে।
উপন্যাসের কাহিনী এই রকমঃ
জগদীশ, বনমালী আর রাসবিহারী তিনবন্ধু। বনমালী বাবু গ্রামের বিশাল জমিদার। বনমালী বাবুর একমাত্র কন্যা 'বিজয়া'। বাপ মেয়েকে অগাধ স্বাধীতা দিয়ে বড় করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর শহর থেকে গ্রামে আসে বিজয়া, এখানে তার বাবার বাল্যবন্ধু রাসবিহারী বাবু তার অনুচ্চারিত অভিভাবক এবং তার ছেলে বিলাসবিহারীর সাথে বিজয়ার বিয়ে প্রায় ঠিক। এমন সময় নরেনের সাথে আলাপ হয় বিজয়ার। নরেন আলাভোলা ছেলে, কিন্তু স্টুপিড নয়; বিজয়া যে তাকে পছন্দ করে সেটা বিজয়া কারণে অকারণে তাকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু হয় নরেন বোঝে না, নয়তো উল্টা বোঝে।
বিজয়ার বাবার কাছে নরেনের বাবার অনেক ঋণ ছিলো। মৃত্যুর আগে সেই ঋণ শোধ করতে পারেন নি নরেনের বাবা। ফলে বসত ভিটে ছেড়ে দিতে হয় নরেনকে। সামগ্রিক বিচারে দত্তা একটি রোমান্টিক উপন্যাস। দত্তা উপন্যাসটি গ্রামীণ পরিবেশের কুটকৌশল, ষড়যন্ত্র এবং তার মধ্যেই নরেন ও বিজয়ার ভালোবাসা, অভিমান এবং শেষে নরেন এবং বিজয়ার বিবাহে উপন্যাসের পরিসমাপ্তি ঘটে।
'দত্তা' উপন্যাস নিয়ে সিনেমা হবে।
এ বছরের শুরুতে কোলকাতায় 'দত্তা' নিয়ে সিনেমার কাজ শুরু হয়েছিলো। মনে হয় এখন করোনার কারনে সিনেমার কাজ বন্ধ আছে। পরিচালক নির্মল চক্রবর্তী এবং এটাই তার প্রথম ছবি। ছবিতে বিজয়ার ভূমিকায় অভিনয় করবেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আর নরেনের ভূমিকায় অভিনয় করবেন জয় সেনগুপ্ত। এর আগেও ১৯৭৬ সালে পরিচালক অজয় কর, শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়ের লেখা 'দত্তা' গল্প অবলম্বনে সিনেমা তৈরি করেছিলেন।
'দত্তা' উপন্যাস থেকে কয়েক লাইনঃ
বেলা বাড়িতে লাগিল। কিন্তু যখনই মনে পড়ে সমস্ত কাজকর্মের মধ্যে কোথায় তাহার একটি চোখ এবং একটি কান সারাদিন পড়িয়া আছে, তখন নিজের কাছেই তাহার ভারী লজ্জা বোধ হয়। কিন্তু এ যে কিছুই নয়, এ যে শুধু সেই যন্ত্রটা দেখিবার কৌতূহল, একবার সেটা দেখা হইয়া গেলেই সমস্ত আগ্রহের নিবৃত্তি হইবে, আজ না হয় ত কাল হইবে— এমন করিয়াও আপনাকে আপনি অনেকবার বুঝাইল, কিন্তু কোন কাজেই লাগিল না; বরঞ্চ, বেলার সঙ্গে সঙ্গে উৎকণ্ঠা যেন রহিয়া রহিয়া আশঙ্কায় আত্মপ্রকাশ করিতে লাগিল।
পৌষের মধ্যাহ্নসূর্য ক্রমশঃ এক পাশে হেলিয়া পড়িল; আলোকের চেহারায় দিনান্তের সূচনা দেখিয়া বিজয়ার বুক দমিয়া গেল। কাল যে লোক চিরদিনের মত দেশ ছাড়িয়া চলিয়া যাইতেছে, আজ সে যদি এতদূরে আসিতে এতখানি সময় নষ্ট করিতে না পারে তাহাতে আশ্চর্য হইবার কি আছে! তাহার শেষ সম্বলটুকু যদি অপর কাহাকেও বেশি দামে বিক্রয় করিয়া চলিয়া গিয়া থাকে, তাহাকেই বা কি দোষ দিবে কে? তাহাদের শেষ কথাবার্তাগুলি সে বার বার তোলাপাড়া করিয়া নিরতিশয় অনুশোচনার সহিত মনে করিতে লাগিল যে মনের মধ্যে তাহার যাহাই থাক, মুখে সে এ সম্বন্ধে আগ্রহাতিশয্য একেবারেই প্রকাশ করে নাই।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমি লম্বা মানুষ।
২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:১০
চাঁদগাজী বলেছেন:
শরৎ বাবু কত বই লিখেছেন?
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: ত্রিশটা উপন্যাস লিখেছেন।
চারটা নাটক লিখেছেন।
বাইশ টা গল্প লিখেছেন।
বারোটা গল্প লিখেছেন।
৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:১৯
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পড়েছি নাকি পড়ি নাই সেটা এখন আর মনে নাই।তবে তার অনেক বই পড়েছি।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: জীবনে যারা দুঃখ কষ্ট বেশি পায় তারা ভালো লিখতে পারে।
৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:০২
জগতারন বলেছেন:
কত সুন্দর সাবলীলভাবে সংক্ষেপেই শরত বাবুর দত্তা উপন্যাস-এর
সারসংক্ষেপ লিখিল রাজিব নূর।
এই উপন্যাসটি আমি পড়েছিলাম ১৯৭৭ সালে, আমার ম্যাট্টিক পরীক্ষার পরে। এই উপন্যাসটির কাহিনী এখনও আমার মনে আছে। উপন্যাস 'দেবদাস' বা 'দত্তা'-এর এ রকম উৎকৃষ্টতর সাহিত্য পৃথিবীজুড়ে আছে কি না আমি জানি না। থাকলে বিরল। সেই সময়ে পরাধীন ভারতবাসীকে 'নোবেল' কমিটি দেখে না। রবি' ঠাকুরের মতো প্রচুর অর্থ খরচ করে দেশ বিদেশীদের সাথে ধরনা বা 'লবিং' করতে পারেন নাই শরত চন্দ্র চট্টপাধ্যায়। অথচ এ সমস্ত উৎকৃষ্ট সাহিত্য 'নোবেল কমিটি'দেরই খুজে বাহির করা দায়ীত্ব।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সৃতিশক্তি ভালো।
রবীন্দ্রনাথ ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি জমিদারের ঘরে জন্ম নিলেও তিনি জমিদার ছিলেন। টাকার জন্য তিনি দেশে বিদেশে বক্তৃতা দিয়ে বেড়িয়েছেন। টাকার জন্য ব্যবসা করেছিলেন। ব্যবসায় লস খেয়েছেন।
৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:২৭
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সিনেমা দেখবো --------
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: সিনেমার চেয়ে বই ভালো।
৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৭
এম ডি মুসা বলেছেন: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সব সময় শৈল্পিক ছিলেন ভালো লাগার মত
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: শক্তিশালী লেখক।
৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সুন্দর রিভিউ
ভালো লাগলো।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মুরুব্বী।
৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: রিভিউ এর আগে অংশটুকু চমৎকার লিখেছেন স্যার।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: অদরকারী বিষয় ভালো লিখতে পারি।
৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে আবার পড়তে মন চাইছে
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: পড়ে ফেলুন ক্ষতি হবে না।
১০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৩৮
রায়হান চৌঃ বলেছেন: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর "দত্তা, পথের দাবী", বলতে পারেন শ্রেষ্ট উপন্যাসের প্রথম সারিতে। অসাধারণ লিখা.....
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
১১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দত্তা আর মন্দিরের সেবা দাসী কি এক জিনিস? দত্তা নামের সার্থকতা প্রতিপন্ন করুন।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: হায় হায়---
বিপদে ফেললেন!
১২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:০০
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: তার মত মনের কথা ক জনে লিখতে পেরেছে?
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: অনেকেই পেরেছেন। রবীন্দ্রনাথ পেরেছেন। হুমায়ূন আহমেদ পেরেছেন।
১৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার রিভিউ।
১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া ইসিয়াক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:৫৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট।
ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করতে চাই না।