নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
তখন সুরভির সাথে আমার তুমুল প্রেম।
প্রতি সপ্তাহে দুই বার দেখা হতো আমাদের। ইচ্ছা থাকলেও- দেখা প্রতিদিন সম্ভব ছিলো না। সুরভির বাসা থেকে আমার বাসা অনেক দূর। মিরপুর থেকে খিলগা মোটামোটি অনেক দূর। রাস্তার জ্যাম তো আছেই। সিএনজি ভাড়া তিন শ' থেকে সাড়ে তিন শ' টাকা। তবে প্রতিদিন দেখা না হলেও ফোনে কথা হতো প্রত্যেক দিন। রাতের বেলাও অনেক কথা হতো। টানা দুই বছর শুধু কথা আর দেখা। ঢাকা শহরের সমস্ত অলি গলি আমাদের ঘুরা হয়ে গিয়েছিলো।
একদিন ভাবলাম, সুরভিকে আমাদের গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাবো।
সুরভিকে তো আর বাসে নিয়ে যেতে পারি না। আব্বাকে বললাম, আব্বা আমার একটা গাড়ি লাগবে সারাদিনের জন্য। তেল, গ্যাস যা-যা লাগে সেটা দিয়ে দিও। (তখন আব্বা গাড়ির ব্যবসা করে।) বললাম, বন্ধুবান্ধব নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবো। একটা মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছি এটা তো আরা বলা যায় না। চক্ষু লজ্জা বলে তো একটা বিষয় আছে। সকাল আট টায় আব্বা গাড়ি পাঠিয়ে দিলো।
আমি গাড়ি নিয়ে মিরপুর চলে গেলাম।
সুরভি দাঁড়িয়ে ছিলো সনি সিনেমা হলের সামনে। সুরভিকে তুলে নিলাম। চলে গেলাম গ্রামে। পদ্মার পাড়ে গেলাম। আশে পাশের কয়েকটা গ্রাম ঘুরলাম। অনেক ছবি তুললাম। মনে হলো যেন খুব দ্রুত দিনটি পার হয়ে গেলো। গ্রামে আমার এক চাচা তার পরিবার নিয়ে থাকেন। চাচী রান্না করলেন। দুপুরে খেলাম। বিকেলে চা নাস্তা খেয়ে সন্ধ্যার আগে আগে ঢাকা রওনা দিলাম।
একবার সুরভি আর আমি নোয়াখালি গিয়েছিলাম।
সুরভির বান্ধবীর বিয়েতে। তখনও আব্বা গাড়ি দিয়েছিলো। যাই হোক, সুরভির জন্য একটা ছেলে দেখা হলো। ছেলে আমেরিকা থেকে এসেছে। বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে যাবে। সুরভি তার বাবাকে আমার কথা বললো। তখন আমি একটা পত্রিকা অফিসে ফোটোসাংবাদিক হিসেবে চাকরি করি। আমার কথা জেনে সুরভির বাবা স্পষ্ট মানা করে দিলেন।
সুরভি বললো- আমাকে ভুলে যাও।
আগামীকাল আমাকে বাসায় দেখতে আসবে (কান্না)। আমার মনটা প্রচন্ড খারাপ হলো। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তখন আমার মনে হলো- আরে আমার তো একজন সুপারম্যান আছে। তাকে বললেই সে সব কিছু ঠিক করে দিবে। আমি সুপারম্যানকে সমস্ত ঘটনা বললাম। আমার সুপারম্যান বললেন, মন খারাপ করার কিছু নাই। আমি তো আছি। কোনো চিন্তা নেই। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সব ঠিকঠাক করে দিবো। আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিবে না!
আব্বা সুরভির বাবার সাথে দেখা করলো।
কথা বললো। এবং সুরভির বাবা বললেন, আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে আমি রাজী। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করেন। আব্বা বললো- আপনি তো এখনও আমার ছেলেকে দেখেন নি। একবার দেখেন, কথা বলেন। সুরভির বাবা বললেন- আপনাকে দেখেছি, আপনার সাথে কথা বলেছি। আর কিছুর দরকার নাই। বিয়ের তারিখ ঠিক হবার কয়েকদিন আগে আমি সুরভিদের বাসায় গেলাম। আব্বা আমার সাথে এক গাড়ি ফল দিয়ে দিলেন।
ঝামেলাহীন ভাবে আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।
আমার বিয়ের সমস্ত খরচ আব্বা একাই দিলো। আব্বা শুধু বলতো- আমার ছেলে। আমার ছেলের বিয়ে। খরচের চুড়ান্ত করবো। তোমরা দেখো- আমি কি কি করি। পুরো বাড়ি লাইটিং করা হলো। আব্বা, মা আর ভাবীকে সাথে নিয়ে সমস্ত কেনাকাটা করলো। আট শ' মানুষ দাওয়াত দেওয়া হলো। গ্রাম থেকে বাসে করে আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে আসা হলো। খুব ধূমধাম করে বিয়ে হলো। আব্বা নড়াচড়া না দিলে সুরভির সাথে আমার বিয়ে হতো না। সম্ভব ছিলো না। আব্বা সুরভিকে খুবই পছন্দ করতো। সুরভির হাতের এক কাপ চা খাওয়ার পর বলতো- এত সুন্দর চা এক কাপ খেলে পোষায় না। আরেক কাপ দাও। প্লীজ।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: আব্বার কাছে যা চাইতাম,,দিতেন। কখনও মানা করতো না।
এমন কি কখনও চাইতেও হতো না, চাওয়ার আগেই নিজ থেকে দিয়ে দিত।
২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বিয়ের অনুষ্ঠান যত সাধারন হয় ততই ভাল।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী, এখন আমার মনে হয় বিয়েতে বেশি খরচ করা বোকামো।
৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাবার কাজকর্ম মিশ্রিত পুরানো স্মৃতি সহজে ভুলে যাওয়া যাবে না।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমি অনেক কিছু ভুলে যাই, আবার আমি অনেক কিছু ভুলি না।
৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:২৮
অনল চৌধুরী বলেছেন: সুরভির সাথে পরিচয় হলো কিভাবে সেটা লেখেন।
আপনারা শান্তিনগরে এসেছেন কতো সালে?
আপনার বাবা এজন প্রকৃত দায়িত্বশীল পিতা, যেরকম সবাই পায় না।
অনেকে বাবা জিনিসটা কি সেটাই জীবনে কোনোদিন বোঝেনা।
সুরভির সাথে বিয়ে না হলে আপনার কি অবস্থা হতো?
দেবদাস হয়ে পার্বতীর কাছে থাকতেন না নেশাখোর হতেন-এটা নিয়ে একটা লেখেন।
আপনার বাবার আচরণ, আত্মবিশ্বাস এবং অভিজাত্যের কারণেই সুরভির বাবা তার সাথে বিয়ে দিতে রাজী হয়েছে, যেটা না হলে আপনি হয়তো সুস্থ-স্বাভাবিক থাকতেন না।
অথচ তারপরও আপনি এক লেখায় বাবাকে নিয়ে সবার সামনে বাজে কথা লিখেছেন !!!!
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: একদম বাংলা সিনেমা স্টাইলে সুরভির সাথে পরিচয়। সম্ভবত এই বিষয়টা লিখেছি। সামুতেই লিখেছি।
শান্তিনগর না। শান্তিনগরের পাশেই থাকি। এখানেই জন্ম। জন্মের পর থেকে এখানেই আছি।
আমি জানতাম, সুরভির সাথে আমার বিবাহ হবেই। এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম।
নেশা করা খারাপ। এটা আমি কখনও করতাম না।
আব্বা সব সময় জমিদার স্টাইলে চলেছেন। খাওয়াদাওয়া, পোষাক, দান। টাকা খরচ করতে জানতেন।
হ্যা আবার উপর আমার কিছু রাগ আছে। সেসব আমি লিখব।
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৬
রামিসা রোজা বলেছেন:
৪ নং প্রতিমন্তব্যে বলেছেন আপনার বাবার প্রতি কিছু রাগ
আছে এবং সেগুলো লিখবেন । দয়াকরে এ কাজটি আপনি
করবেন না। আমাদের সন্তানরা স্বার্থের কারণে স্বার্থপর হয়ে
যাই কিন্তু মা বাবার মত কেউ আমাদের ভালোবাসবে না ।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে। লিখব না।
ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:৩৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমি নিজে খুবই বুঝতে পারি উনি খুবই অসাধারণ এক জন মানুষ ছিলেন ।
আপনি উনার সাথে দূরত্ব বজায় রাখতেন ।
এটা আমার কাছে কখনোই ভালো লাগেনি।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে গত চার বছর খুব বেশি দূরত্ব ছিলো আব্বার সাথে।
৭| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৩৩
আমি সাজিদ বলেছেন: আপনার সুপারম্যানের জন্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধনবাদ। ভালো থাকুন।
৮| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চাঁদগাজী সাহেবের সুরে সুর মিলিয়ে বলি আপনি ভাগ্যবান মানুষ।
আপনার বাবাও তাই।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আজ আবার গ্রামে গিয়েছিলাম। আব্বার কবরটা দেখে এলাম।
৯| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২১
ইসিয়াক বলেছেন: শুভকামনা
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
১০| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩০
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: নাটকীয় কাহিনী।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: আসলেই নাটক সিনেমায় এরকম ঘটে।
১১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: 'আপনার মন খারাপ' সবার মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ আপনার পিতাকে সর্বোচ্চ প্রতিদান প্রদান করুন।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: না, মন খারাপ করে থাকা যাবে না।
১২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮
মেহবুবা বলেছেন: কত ভাগ্যবান আপনি এমন সুপারম্যান পেয়েছেন জীবনে।
ভবিষ্যতে এই লেখক জুনিয়র সুপারম্যান কে নিয়ে একজন সুরভি অথবা পরবর্তী প্রজন্ম এমনি করে লিখবে আশা করছি।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: সেটা হলে মন্দ হবে না।
১৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: রাজিব ভাই আপনি ভাগ্যবান একজন মানুষ এই জন্য যে আপনার বাবা একজন চমতকার মানুষ ছিলেন । আর আপনার বাবাও ভাগ্যবান এই জন্য যে তিনিও আপনার মত একজন পুত্র পেয়েছিলেন এবং শুক্রবারের মত একটি পবিত্র দিনে মৃত্যুবরণ করেছেন।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: না পুত্র হিসেবে আমি ব্যর্থ।
আব্বার জন্য কোনোদিন কিছু করতে পারি নি।
১৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫
অধীতি বলেছেন: সুখী পরিবার। বাবা মানুষটি বট গাছের মত একবার চলে গেলে চারিদিকে মরুভূমি। কোথাও ছায়া নেই।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: একদম ঠিক।
১৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৫২
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আপনি মা এর কথা কিছু বল্লেন না,
অথচ পরিবারে মার অবদান, ত্যাগ কোন অংশে
কম নয় ।
..........................................................................
পরিবারে শুধুমাত্র বাবা একমাত্র অবদান হতে পারে না ।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: মা ভালো আছেন।
১৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:০৬
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আংকেলের জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়া’লা তাকে জান্নাত দান করুন। আমিন।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি ভাগ্যবান মানুষ।