নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'সেদিন চৈত্রমাস\' বই রিভিউ

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৫



চুপচাপ এক জায়গায় বসে থাকার সুবিধা হচ্ছে-
মনে মনে অনেক গল্প তৈরি করা যায়। গল্পকে নানা দিকে নিয়ে যাওয়া যায়। শফিকুল করিম এখন রাস্তায় হাঁটার দৃশ্য কল্পনা করছে। নিশো মাঝখানে, তার দুই হাত বাবা-মা'কে ধরে রাখতে হচ্ছে। বাবা-মা দু'জনেই যেন তার ভালোবাসা সমানভাবে পায় এই বিষয়ে সে খুব হুশিয়ার। রিকশায় করে গেলে সে কিছুক্ষণ বসে মার কোলে। কিছুক্ষণ বাবার কোলে। ভালোবাসা ভাগাভাগির ব্যাপারে তার হিসাব পরিস্কার। (সেদিন চৈত্রমাস, হুমায়ূন আহমেদ, পৃষ্ঠাঃ বিশ।)

'সেদিন চৈত্রমাস' বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ফেব্রুয়ারী ২০০৫ সালে।
অনন্যা প্রকাশনী থেকে। বইটি ১২৬ পৃষ্ঠার। বইটির প্রচ্ছদ করেন- ধ্রুব এষ। বইটির মূল্য এক 'শ টাকা। লেখক বইটি উৎসর্গ পত্রে লিখেছেন- 'আমি লক্ষ্য করে দেখেছি অতি বুদ্ধিমান কেউ কখনো ভাল মানুষ হয় না। মারুফ তার ব্যতিক্রম। আচ্ছা তার সমস্যাটা কি'?

এ বইয়ের লেখক সম্পর্কে কিছু বলার প্রয়োজন মনে করছি না।
হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে সারা দেশের মানুষ সবই জানেন। হুমায়ূন আহমেদ তার অনেক বই এর নাম নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে। যেমনঃ 'ছায়াবীথি', 'অন্ধকারের গান', 'তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে', 'আমার আপন আঁধার', 'নিশীথিনী' ইত্যাদি। এই সমস্ত বইয়ের দারুন সব প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। হুমায়ূন আহমেদের মতন তার বই এর প্রচ্ছদ গুলোও সহজ সরল সুন্দর।

লেখক 'সেদিন চৈত্রমাস' লেখাটি শুরু করেছেন এভাবে-
'বাড়ির নাম আতর বাড়ি। ঢাকা শহরে অদ্ভুত অদ্ভুত নামের অনেক বাড়ি আছে। আতর-বাড়িকে কি সেই তালিকায় ফেলা যায়? গাছপালায় ঘেরা বিশাল দোতলা বাড়ি। চারিদিকে উঁচু পাঁচিল বলে দিচ্ছে বাড়ির মালিকের প্রচুর পয়সা। ধনবান ব্যক্তিদের বাড়ির পাঁচিল উঁচু হয়।...'
এ বইয়ের প্রধান চরিত্র হচ্ছে শফিকুল করিম। তার স্ত্রীর নাম মীরা। এবং তাদের বাচ্চার নাম নিশো। আরেকটি প্রধান চরিত্র হচ্ছে মবিনুর রহমান। তার বয়স সাতান্ন। তিনি কোট কোটি টাকার মালিক। হুট করে তার বিয়ে হয় এবং এই বিয়ে সাত ঘন্টা স্থায়ী হয়।
প্রধান চরিত্র শফিক চাকরী পেয়ে স্ত্রীকে খুশি করতে একটা ইলিশ মাছ নিয়ে বাসায় ফিরে। ২৯ পৃষ্ঠায় লেখক লিখেছেন- ' শফিক খুবই তৃপ্তি করে খাচ্ছে। এত দ্রুত খাচ্ছে যে মীরার ভয় ভয় করছে। ভাত কম পড়ে যাবে না তো? এখন সে যদি বলে, 'আরেক চামচ ভাত দাও- ঝোল দিয়ে খাবো।' তাহলে মীরা ভালো বিপদে পড়বে। হাঁড়িতে কোনো ভাত নেই। তার নিজের প্লেটে আছে। শফিক যে মানুষ মীরা যদি নিজের প্লেট থেকে ভাত তুলে দেয় সে খাবে না।

এ বইয়ের একটি মজার চরিত্র হচ্ছে শফিকের বাবা নান্দিনা স্কুলের এসিসটেন্ট হেড মাস্টার জয়নাল। জয়নাল সাহেব বিচিত্র এক কারনে পুরো ডিকশনারী মুখস্ত করে ফেলেছেন। অনেকে তাকে ডিকশনারী থেকে নানান শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করেছেন, তিনি সাথে সাথে উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় আছে- ' একরামুদ্দিন সাহেব গম্ভীর মুখে বললেন, 'Canter' শব্দের মানে বলুন। জয়নাল সাহেব নিচু গলায় বললেন, Canter হলো ঘোড়ার চলা। খুব দ্রুতও না আবার খুব হালকা চালেও না। মাঝামাঝি।

এ বইয়ে আরও চরিত্র আছে- মনোয়ারা বেগম।
উনি শফিকের মা। এবং জয়নাল সাহবের স্ত্রী। যে জয়নাল সাহেব ডিকশনারী মুখস্ত করে ফেলেছেন। লায়লা, লায়লার মেয়ে নীতু। ঘটনা ক্রমে সব চরিত্রের সাথে সব চরিত্রের যোগাযোগ আছে। বদমাশ চরিত্র হচ্ছে মঞ্জু মামা। লেখক ১০৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন- " মীরা লক্ষ্য করল মঞ্জু মামা এক-দৃষ্টিতে তার নাভির দিকে তাকিয়ে আছেন। মীরা ঠিক করে ফেলল সে বাথরুমে ঢুকে শাড়িটা আরেকটু নিচু করে পরবে। যাতে মঞ্জু মামা ভালোমতো নাভি দেখতে পারেন। মীরা তার কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াবে যাতে মঞ্জু মামা তার পেটে হাত রাখতে পারেন। তখন মীরা কষে একটা চড় লাগাবে। চড় খাবার পর মামার মুখের ভাব কেমন হয়- এটা মীরার অনেক দিনের দেখার শখ।'

এ বইয়ে হঠাত করে উঠে আসে লোকমান নামে একজন।
সে একসময় ভয়ংকর সন্ত্রাসী ছিল। এখন সরকারের কাছের লোক। এই লোকমান জোর করে নীতু নামের মেয়েটাকে বিয়ে করতে চায়। নীতু মেয়েটাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন ডিকশনারী জয়নাল। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হোন। কোটিপতি মবিনুর রহমান এক মুহূর্তেই এ সমস্যার সহজ সমাধান করে দেন। এই মবিনুর রহমান বড় হয় এতিমখানায়। তিনি জানেন না তার বাবা-মা কে! এতিমখানা থেকে সে অনেক কিছু শিখতে পায়। পরে এতিমখানার হুজুরের কাছ থেকে শেখা শাস্তি দেন তার এক কর্মচারীকে। শাস্তিটি হলো পঞ্চাশ হাজারবার কান ধরে উটবোস করা। লেখক ১১৯ পৃষ্ঠায় লিখেছেন- ''ততক্ষণে তার চোখে পড়ল বারান্দায় এক কোনায় বয়স্ক চশমা পরা এক লোক কানে ধরে উঠবোস করছে। লোকটার চোখে-মুখ লাল হয়ে গেছে। কপাল থেকে টপটপ করে ঘাম পড়ছে। জয়নাল সাহেব ভীত গলায় বললেন, ঐখানে কী হচ্ছে? শফিক বলল, শাস্তি দেয়া হচ্ছে। কাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে? ওনার নাম আমজাদ আলি। বড় সাহেব ওনাকে কানে ধরে পঞ্চাশ হাজার বার উঠবোস করতে বলেছেন।'

লেখক বইটি শেষ করেছেন এভাবে-
'লায়লা বললেন, সমস্যার সমাধান হয়েছে।
নীতু বলল, কে করল সমস্যার সমাধান। ডিকশনারি চাচা?
লায়লা জবাব দিলেন না। তিনি মুগ্ধ চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।
চৈত্র মাসের মেঘশূন্য আকাশের রোদ খুব কড়া হয়। সেই ঝাঁঝালো রোদ পড়েছে নীতুর গালে। গাল রোদে পুড়ে যাচ্ছে। কি সুন্দরই না দেখাচ্ছে রৌদ্রময়ীকে।

সব কিছু মিলিয়ে বইটা আহামরি কিছু না।
হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য বইয়ের মতই। কিছুটা ভালোবাসা আছে, টেনশন আছে, চমক আছে, পাওয়া না পাওয়া আছে, সুখ আছে দুঃখ আছে, কমেডি আছে, ছোট ছোট তথ্যে ভরপুর। পড়তে বিরক্ত লাগবে না। বরং আনন্দই লাগবে। আমি মনে করি, হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে- তার লেখা সহজ সরল, আপন-আপন, পড়তে একটুও বিরক্ত লাগে না।

(বিঃদ্রঃ একদম ফালতু রিভিউ হয়েছে। অতি অখাদ্য। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।)

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১১

এম এ হানিফ বলেছেন: ফালতু না, সুন্দর হয়েছে। ঠিক বলেছেন, হুমায়ুন আহমেদের লেখা পড়তে বিরক্ত লাগে না।




বইমেলায় আমার একটি উপন্যাস আসছে।
নামঃ আবছায়া
প্রকাশক- কাকলী প্রকাশনী
প্রচ্ছদ- ধ্রুব এষ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০০

রাজীব নুর বলেছেন: নামটা সুন্দর হয়েছে। আবছায়া।
অবশ্যই সংগ্রহ করবো।

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৬

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বাসায় বই পড়া ভুলেই গেছি এ অফিসে যতক্ষণ থাকাকালিন ব্লগে কিছু পড়ি আবার কাজের চাপ থাকলে ত কথায় নাই

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

রাজীব নুর বলেছেন: অফিসে ব্লগিং সাবধানে করবেন। সমস্যা হতে পারে।

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: পড়েছি কিনা মনে নাই । কোনো বই বাদ আছে মনে পড়ে না। কিন্তু পড়েও ভুলে যাই কাহিনী আবার পড়লে মনে পড়ে।

ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউর জন্য

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

রাজীব নুর বলেছেন: মনে হয় আপনি এই বইটা পড়েন নাই।

৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৫

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার বই রিভিউ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

রাজীব নুর বলেছেন: মিথ্যা কথা।

৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার ইদানিংকার লেখায় হুমায়ুনের বেশ ছাঁয়া পড়ে, যেমন- সেদিন একটা ঝামেলায় পড়েছিলাম, বিরাট ঝামেলা, গলির দোকানে চা খাচ্ছি....

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা আমি ইচ্ছা করেই আমার লেখায় হুমায়ূন আহমেদের ছোয়া আনি। এই কাজ আমি সচেতন ভাবে করি।

৬| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার লাগলো ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৭

রানার ব্লগ বলেছেন: শরৎচন্দ্র চট্রপাদ্ধ্যায় , হুমায়ুন আহমেদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই তিন জন আমাদের উপন্যাস পড়তে অনুপ্রানীত করেছেন ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এই বইটা আমি পড়েছি এবং আমার স্বভাব মতো কাহিনী সংক্ষেপ লিখে রেখেছি।
আপনার রিভিউ চমৎকার হয়েছে। তবে পড়ে আমি কাহিনীটি কিছুতেই মনে করতে পারলাম না।
পরে আমার লেখা কাহিনী সংক্ষেপ পড়ে গল্পটা মনে পরলো।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ভালো মানুষ। তাই সুন্দর মন্তব্য করেন।

৯| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




হূমায়ুন আহমেদের লেখা পড়তে পারা আমার জীবনের শ্রেষ্ট বই পড়ার মাঝে একটি।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: আসেন, আমার বুকে আসেন।

১০| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:


উনার লেখায় আমাদের সাধারণ মানুষদের জীবন বুঝা যায়?

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: উনার বইয়ে সাধারণ মানুষের কথা খুব সুন্দর ভাবে উঠে আসে।

১১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনুভূতির সুন্দর প্রকাশ আছে,মানুষকে অনুভূতি প্রবন হতে সাহায্য করে,চিন্তা করতে সাহায্য করে না।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের কি কি বই পড়েছেন আপনি?

১২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১০

ইসিয়াক বলেছেন:
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার বই রিভিউ।


লেখক বলেছেন: মিথ্যা কথা।


৥ আমাকে তো মিথ্যাবাদী বললেন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: না সেটা বুঝাই নাই।
কবিরা ভালো মানুষ হয়। ভালো মানুষ না হলে তারা কবিতা লিখতে পারতো না।

১৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৫

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আমার কাছে উনি অনেক উচ্চতে।
তার লেখা নিয়ে রিভিউ সুন্দর হয়েছে, কিন্তু একটা জায়গায় আপত্তি আমার..

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপত্তি টা ভুলে যান।

১৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সাধারণ বিষয়ই অসাধরণ হয়ে উঠতো ওনার লেখায়।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.