নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
শাহেদ জামালের মন মেজাজ প্রচন্ড খারাপ।
সে খুব সকালে বাসা থেকে বের হয়ে রমনা পার্কে চলে এসেছে। আজ সারাদিন সে রমনা পার্কেই থাকবে। চিন্তা নাই, পকেটে টাকা আছে। সেই টাকা দিয়ে দুপুরের খাবার আর চা সিগারেটের খরচ হয়ে যাবে। ঢাকা শহরের মধ্যে এই রমনা পার্কেই কিছু গাছপালা আছে। গাছপালা শাহেদ জামালকে শান্তি দেয়, আনন্দ দেয়। সবচেয়ে বড় কথা ঠান্ডা মাথায় নানান বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা যায়। জীবনের ভুল গুলো খুঁজে বের করা যায়। ভুল গুলো শুধরানোর পথ খুঁজে পাওয়া যায় নিরিবিলি পরিবেশে। কেউ বিরক্ত করার নেই। এখন তার কাজ করার সময়। অথচ সে হাত পা নিয়ে চুপ করে বসে আছে। এদিকে সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে।
বাংলা একাডেমিতে শাহেদ জামালের পরিচিত এক বড় ভাই আছেন।
সেই বড় ভাই কি শাহেদ জামালকে নির্বোধ মনে করেন? বড় ভাই শাহেদ জামালকে ফোন করে বললেন, শাহেদ যেন তার ক্যামেরাটা নিয়ে সকাল এগারোটার মধ্যে বাংলা একাডেমি গিয়ে তার সাথে দেখা করে। শাহেদ জামাল ঠিক সকাল এগারোটায় বাংলা একাডেমি যায়। বড় ভাই বললেন, তার কিছু ছবি তুলতে হবে। সেই ছবি গুলো বইয়ে লেখক পরিচিতিতে ব্যবহার করা হবে। এবং বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সাক্ষাৎকারে ব্যবহার করা হবে। এবং ছবির নীচে শাহেদ জামালের নাম থাকবে। শাহেদ জামাল বড় ভাইয়ে দু শ' ছবি তুলে দিলো নানান ভঙ্গিমায়। বড় ভাই তার সমস্ত জামা কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। বড় ভাই খুব গর্ব করে বলেছেন, শাহেদ আমি তোমাকে খুব পছন্দ করি। ইচ্ছা করলে আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফোটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুলাতে পারতাম। কিন্তু আমি তোমাকে সুযোগ দিতে চাই। সুযোগ কাজে লাগাও। হে হে---
পুরো বাংলা একাডেমির কোনা কানচিতে ছবি তোলা হলো।
এমন কি ছাদে, পুকুর পাড়, লাইব্রেরী- কোথাও বাদ নেই। শাহেদ জামাল টানা আড়াই ঘন্টা শুধু ছবি তুলে গেলো। ছবি তোলা শেষে বড় ভাই বললেন, শাহেদ তুমি চলে যাও। আজ আমার অনেক কাজ আছে। শাহেদ জামালকে এক কাপ চা-ও অফার করলেন না বড় ভাই। যাই হোক, শাহেদ জামালের ছবি গুলো নানান জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু কোথাও শাহেদ জামালের নাম দেওয়া হয়নি। এত টাকা দিয়ে ক্যামেরা কিনে, নিজের টাকা দিয়ে বাংলা একাডেমি গিয়ে, এত ছবি তুলে শাহেদ জামালের লাভ টা কি হলো? লোকজন কি শাহেদ জামালকে এরকম করে খাটাবে দিনের পর দিন? শাহেদ জামাল বুঝতে পেরেছে- বড় ভাইয়ের মন আসলে বড় না। এই বড় ভাই বিভিন্ন সময়ে শাহেদকে দিয়ে অসংখ্য ছবি তুলিয়েছে।
সেদিন আরেক বড় ভাই ফোন দিয়ে বললেন-
শাহেদ তোমার ক্যামেরা নিয়ে আমার অফিসে আসো। খুব জরুরী। দরকারী কাজ আছে। শাহেদ ভাবলো হয়তো কোনো অনুষ্ঠান। যাই কাজটা করে আসি। কিছু টাকা পাওয়া যাবে। বড় ভাই অনেক বড় কোম্পানিতে কাজ করেন। শাহেদ জামাল বড় ভাইয়ের অফিসে গেলো। বড় ভাই বললেন, তার কিছু ছবি তুলে দিতে হবে। পাত্রীপক্ষের কাছে ছবি পাঠাতে হবে। শাহেদ জামাল নানান ভঙ্গিমায় বড় ভাইয়ের ছবি তুলে দিলেন। দেশ শ' ছবি তুলে দিলো। বড় ভাই ছবি গুলো তার ল্যাপটপে নিয়ে নিলেন এবং শাহেদ জামালকে বললেন, অনেক ধন্যবাদ। এখন তুমি যাও আমার অনেক কাজ আছে। মানুষ কি শাহেদ জামালকে এভাবেই খাটাবে? বিনা পারিশ্রমিকে? আর কত দিন? কত বার? সেই বড় ভাই তার বিয়েতে শাহেদ জামালকে আসতে পর্যন্ত বলেন নি।
অনলাইন নিউজ পোর্টালের এক সম্পাদকের কথা।
সে শাহেদ জামালকে ফোন করে ডেকে নিলো। তেরো দিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করালো। অনেক গুলো সাক্ষাৎকারের ছবি তোলা হলো। সাক্ষাৎকার ভিডিও করা হলো। নিউজ পোর্টালের সম্পাদক সাহেদ জামালকে একটা টাকাও দিলো না। যাতায়াত ভাড়াও না। সম্পাদক বললেন, কাজ শিখেন। আমার নিউজ পোর্টালের জন্য ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি। সেই চ্যানেলের জন্য আপনি খাটেন। কাজ করেন। শিখেন। টাকা বড় কথা না। কাজটাই বড় কথা। তাছাড়া আমার নিউজ পোর্টাল এখন নতুন। এখন পরিশ্রম করেন। দুই বছর পর, প্রতিষ্ঠান দাড়িয়ে গেলে- প্রতিষ্ঠান আপনাকে মনে রাখবে। তখন আপনার সুবিধা অসুবিধা প্রতিষ্ঠান দেখবে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৯
মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটি...
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
শাহেদ জামাল রমনা পার্কের অংশ হয়ে যাচ্ছে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: সে তো ঢাকা ক্লাব বা রেডিসনে যেতে পারবে না।
৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩৪
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: শাহেদ জামালের ক্যমেরাটা পছন্দ হইসে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা তাই তো।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এবার নিজেই বড় ভাই হবার চেষ্টা করুন