নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ ছবি সুত্র
আমি যখন পাপ করি, তখন আমার খুব অপরাধবোধ হয়।
রাতে ঘুমাতে পারি না। তবুও পাপ করি। হা হা হা...। সবচেয়ে মজার ম্যাপার হলো- একটা পাপ করার পর- সেটা যখন লিখে ফেলি দারুন একটা আত্মতৃপ্তি হয়। আজ একটা অন্যরকম পাপের কথা বলব। যদিও প্রতিদিন এই রকম অসংখ্য পাপের ঘটনা ঘটছে - গোপনে। গভীর গোপনে। গভীর গোপন পাপটা আমিও করে ফেললাম- হায় আল্লাহ! আজ সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই একটা পুরোনো দিনের গান খুব মনে পড়ছে- 'পথ ছাড়ো ওগো শ্যাম, কথা রাখো মোর/ এমন করে তুমি আঁচল ধোরো না/ এখনি যে শেষ রাত হয়ে যাবে ভোর!' ইউটিউবে সার্চ দিয়ে গানটা কোথাও খুঁজে পেলাম না। তবে অন্য একটা গান খুঁজে পেলাম- 'অভিমানী ভালবাসা চায় যে হারাতে ঐ দূর অজানাতে/ তুমি আমি ভেসে যাব মেঘলা বাতাসে এই হাত রেখে হাতে'।
মেয়েটার নাম লাবনী (অবশ্যই ছদ্মনাম)।
আসল নাম দিয়ে কি ঝামেলায় পড়বো নাকি? আমার বন্ধুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে তার সাথে প্রথম দেখা এবং পরিচয়। পরের দিন বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা এবং তার দুইদিন পর বউ-ভাত অনুষ্ঠানে আবার দেখা। মজার ব্যাপার হলো পর-পর সাত দিন মেয়েটার সাথে আমার দেখা হয়। একদিন সন্ধ্যায় দেখা হয় KFC'তে। পরের দিন তখন বইমেলা চলছিল- বই মেলাতেও দেখা হয়। শ্রাবনী প্রকাশনীতে।তার হাতে হুমায়ূন আহমেদের 'তিথির নীল তোয়ালে' বইটা ছিল। একটা কথা বলে রাখি- আমার স্মৃতি শক্তি অনেক ভালো। অনেক তুচ্ছ ঘটনাও আমি ভুলি না। সব মনে থাকে আমার। সপ্ বার তার সাথে আমার দেখা হয় নিউ মার্কেটে। সেদিন রাত ৮ পর্যন্ত লাবনী আমার সাথে ছিল। ইচ্ছা করলে চুমু দিতে পারতাম কিন্তু দেইনি। শুধু হাতে হাত রেখেছিলাম। তাড়াহুড়ার কিছু নেই। আমি জানি আমার হাতে সময় আছে। দেরী হোক, যায়নি সময়।
এরপর লাবনী'র সাথে আমার নিয়মিত দেখা হয়।
মেয়েটা আমার সাথে দেখা করার জন্য অস্থির হয়ে থাকত। দেখা হলে সারাক্ষণ আমার হাত ধরে থাকত। আর রিকশায় বসলে কঠিন ভাবে হাত ধরে থাকত। যেন কেউ আমাকে কেড়ে নিয়ে যেতে না পারে। মেয়েটা আমার জন্য নানান খাবার রান্না করে নিয়ে আসত। মুখে তুলে খাইয়ে দিত। মিথ্যা বলব না- হাতের রান্না দারুন। লাবনী ইডেন কলেজ থেকে রাষ্টবিজ্ঞানে অনার্স শেষ করেছে। চাকরী করতে চেয়েছিল- তার পরিবার কঠিন গলায় মানা করে দিয়েছে। পরিবারের নিষেধ সে অগ্রাহ্য করতে পারেনি। দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেল আমাদের প্রেম জীবনের। এই দুই বছরে আমরা সারা ঢাকা শহর চষে বেড়ালাম। বেশ কয়েকবার ঢাকার বাইরেও বেড়াতে গেলাম। হাত ধরা ছাড়া আমাদের মধ্যে আর কিছুই হয়নি। তা-ও হাত ধরেছি বাধ্য হয়ে, লাবনী রাস্তা পার হতে পারে না। তখন আমি হাত ধরে পার করে দিলাম, নিশ্চয়ই এটা কোনো দোষের মধ্যে পরে না। তাছাড়া নোংরামী ব্যাপার টা আমার কখনই ভালো লাগে না। ইচ্ছা করলে, লাবনী'র সাথে আমি যা খুশি তাই-ই করতে পারতাম।
এইবার আমি আমার পাপের কাহিনীটা বলব-
হটাৎ একদিন আমি লাবনী'র খুব কাছাকাছি চলে আসি। সেদিন সারা বাড়িতে আমি আর লাবনী ছাড়া অন্য কেউ নেই। লাবনী আমাকে অনেক কিছু রান্না করে খাওয়ালো। আমিও খেলুম খুব মজা করে। বেশ কয়েকবার চা করে খাওয়ালো। তখন বিকেল আমার একট ঘুম ঘুম পেয়েছিল, আমি বিছানায় বসলাম। আমার পাশে লাবনী। লাবনী বলল- তুমি আরাম করে একটু ঘুমাও, আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। আমি বললাম, আচ্ছা। হঠাৎ লাবনী আমার ঠোঁটে একটা চুমু দিল। কি অদ্ভুত লাগল আমার! জীবনে প্রথম কোনো নারী আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল! আমি গভীর এক আকাশ আনন্দে অভিভুত হলাম। তারপর আমি পাগলের মতন লাবনীকে অনেক আদর করলাম, অনেকক্ষন আদর করলাম। এক আকাশ ভালো লাগায় মন এবং শরীর ভরে রইলো। লাবনী'র চোখে মুখে দেখতে পেলাম এক আকাশ আনন্দ। সেদিন আদরের পর আমরা অনেকক্ষন রিকশায় করে ঘুরে বেড়ালাম। রাতে দুইজন বাইরে খেলাম। তারপর আমি বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসি। আমি জানতাম না এটাই আমাদের শেষ দেখা।
লাবনীর সাথে আমার বিয়ে হয়নি।
আজ লাবনী কোথায় আছে আমি জানি না। মেয়েটাকে আমার অনেক মনে পড়ে। অফিসের কাজে পনের দিনের জন্য আমি ঢাকার বাইরে যাই, কিন্তু কাজ শেষ করতে সময় লাগল এক মাস। লাবনী আমাকে ফোন করে জানায়- তার পেটে বাচ্চা। তখন আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো ছিল না। বাবা- মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে লাবনীকে বিয়ে করাও সম্ভব ছিল না। আমি পড়ে গেলাম মহা সমুদ্রে। একদিকে বাবা মা অন্য দিকে লাবনী। আমি একটুও বুঝতে পারিনি- যে একদিন আদর করলেই বাচ্চা হতে পারে। এসব ব্যাপারে আমার একেবারেই ধারনা কম। লাবনীকে আমি কোনো পজেটিভ উত্তর দিতে পারিনি। বলেছিলাম- ডাক্তার দেখাও, ঝামেলা মিটিয়ে ফেলো। সে অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমি আছি অস্থিরতার মধ্যে। ঢাকা ফেরার পর দেখি মা আমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখে রেখেছেন। আমি বাপ মাকে কষ্ট দিতে পারি না। হাসি মুখে বিয়ে করে ফেললাম।
এরপর আমি আর লাবনী'র কোনো খোজ পাইনি।
তন্নতন্ন করে সারা ঢাকা শহর খুঁজে বেড়িয়েছি। সম্ভবত লাবনী অস্টেলিয়া চলে যায়। অনেক চেষ্টা করেও কোনো যোগাযো করতে পারিনি। আমার বাচ্চাটিকে সে পৃথিবীতে এনেছিল কিনা তা-ও জানি না। লাবনী বিয়ে করেছে কিনা তা ও জানি না। আমারা বাচ্চাটিকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে। এতদিনে বাচ্চাটির সাত বছর হওয়ার কথা। এই জন্য রাস্তায় ছোট ছোট বাচ্চা দেখলে বুকের মধ্যে যেন কেমন করে উঠে। বোকা মেয়েটা ভেবেছে- আমি মা'র পছন্দের মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেলেছি। হ্যা, আমি বিয়ে করেছি। তবে, আজও আমি লাবনী'র অপেক্ষায় আছি। আসলে ইচ্ছা করেই লাবনী আমার কাছ থেকে হারিয়ে যায়। লাবনী'র ধারনা ছিল, যদি আমি মাকে কষ্ট দিয়ে লাবনীকে বিয়ে করতাম তাহলে সংসার জীবনে কখনও সুখী হতাম না। লাবনী আমাকে সব সময় হাসি খুশি দেখতে চাইতো। মধ্যরাত্রে আমি আকাশের দিকে তাকাই- আর আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ে। তখন নিজেকে বলি- না, না তোমার কোনো কষ্ট নেই। চোখে সমস্যা তাই পানি পড়ছে। ভালো ডাক্তার দেখাও।
লাবনী ফিরে আসবে।
আমি জানি লাবনী ফিরে আসবে।
আমি অপেক্ষা করি-
অপেক্ষা করতে আমার ভালো লাগে।
দেরী হোক, যায়নি সময়।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৪
তারেক ফাহিম বলেছেন: পুরোটা পড়লাম।
লাভনীর জন্য খারাপ লাগছে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: সম্ভবত লাবনী ভালৈ আছে।
৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৪
মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: লাবনী ফিরে আসলে জানাবেন...
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ওখেই।
৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এটা একটি গল্প মাত্র
আপনার জীবনের কোন কাহিনী নয়।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: জীবনের কাহিনি গুলোই গল্প হয়।
৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০২
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আদর করলে বাচ্চা হয় এই প্রথম শুনলাম।ছোট ছোট বাচ্চাদের সবাই আদর করে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি বুঝবেন না। বুড়ো হয়ে গেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৪৩
নাসরীন খান বলেছেন: গল্পটা পড়ে লাবনীর জন্য মনটা খারাপ হয়ে গেল।আমি এক টানা পড়েছি।চমৎকার বুনন।