নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আজ অনেকদিন পর শাহেদ জামাল রমনা পার্কে এসেছে।
দীর্ঘদিন রমনা পার্ক বন্ধ ছিলো করোনার জন্য। এই বন্ধ থাকা অবস্থায় পার্কে বেশ কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ হয়েছে। হাঁটার রাস্তা গুলো নতুন করে ঢালাই করা হয়েছে। বাগান গুলো সুন্দর করে সাজিয়েছে। ভাঙ্গা বেঞ্চ গুলো মেরামত করা হয়েছে। শাহেদ মনে মনে বলল- ভালো। ভেরি গুড। শাহেদ তার সেই প্রিয় বেঞ্চে বসলো। মাথার উপরে ছাতার মতো এক বিশাল অশ্বথ গাছ। অশ্বথ তার সব ডাল পালা মেলে দিয়েছে বন্ধুর মতোন। গায়ে রোদ লাগে না। চারিদিকে বেশ মিষ্টি রোদ আর নানান পাখির কলতান। এরকম শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ শাহেদের ভালো লাগে।
শাহেদ জামালের মন আজ বড্ড খারাপ।
সে আজ বড় বিষন্ন। বড় হতাশ। বড় অস্থির। বড্ড যন্ত্রনাবিদ্ধ। তার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেছে। জীবনটা ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। অথচ জীবনটা এরকম হওয়ার কথা ছিলো না। তার অন্য ভাইদের জীবন সুন্দর। তার বন্ধুদের জীবন সুন্দর। গতকাল পাশের বাসার নাসিরের ছেলে আজ শাহেদের কাছে দিয়াশলাই চেয়েছে। অথচ এই ছেলেকে শাহেদ জামাল প্রায় জন্মাতে দেখেছে। একটা হাফ প্যান্ট পরতো। প্যান্টের জিপার ছিলো না। সেই ছেলে আজ সানগ্লাস পড়ে, ঠোটে সিগারেট নিয়ে বাইক নিয়ে শাহেদ জামালের সামনে এসে বলল- দিয়াশলাই আছে বড় ভাই? শাহেদ জামালের ইচ্ছা করলো ছেলেটাকে একটা বা হাত দিয়ে থাপ্পড় দিতে। কিন্তু দেয় নি। শাহেদ তার রাগ সামলে নিয়েছে। এযুগের পোলাপান বেয়াদব।
শাহেদ জামাল ব্যর্থ মানুষ।
জীবনে সে অনেক কিছু হতে চেয়েছিলো বলেই, সে জীবনে কিছুই হতে পারে নি। সে ডাক্তার হতে পারেনি। ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে নি। পাইলট হতে পারেনি। নাবিক হতে পারে নি। ব্যবসায়ী হতে পারেনি। সাংবাদিক হতে পারেনি। ফোটোগ্রাফার হতে পারে নি। শিক্ষক হতে পারে নি। অভিনেতা হতে পারে নি। নির্মাতা হতে পারে নি। বাংলায় একটা কথা আছে- অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়। শাহেদ জামালের এই অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। শাহেদ জামালের মাথায় বেশ কিছু সাদা চুল দেখা দিয়েছে। থুতনির কাছে বেশ কিছু দাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে। নদীর স্রোত আর বয়স থামিয়ে রাখা যায় না। অতীতের দিকে তাকালে তার কোঁনো সাফল্য চোখে পড়ে না। আগা গোড়া একজন ব্যর্থ মানুষ সে। নিজের উপর নিজের খুব রাগ হয় শাহেদ জামালের।
শাহেদ জামালের চিন্তা ভাবনা কি অতি নিম্ম!
তার সাথে কারোর সাথে মিলে না। কারো চিন্তা ভাবনা শাহেদ জামালের পছন্দ হয় না। আবার শাহেদ জামালের চিন্তা ভাবনা কারো পছন্দ হয় না। অথচ শাহেদ জামাল সারাটা জীবন নিরপেক্ষ থাকতে চেষ্টা করেছে। কালো কে কালো বলেছে। সাদাকে সাদা বলেছে। কারো সাথে অন্যায় করেনি। জুলুম করেনি। মিথ্যা বলেনি। কারো ক্ষতি করে নি। সহজ সরল মানুষ হিসেবে জীবন চলেছে তার। অথচ তার পরিবারের সদস্যরাও তাকে আজকাল আর পছন্দ করছে না। সে আজ সর্বত্র অবহেলিত। পরিবারের লোকজন পারিবারিক মিটিং করে তাকে ছাড়া। তার ছোট ভাই সেন্ট মার্টিন গিয়েছে অথচ সে জানেই না। তার মা রাজশাহী গিয়েছে, অথচ সে জানে না। তাকে কেউ বলেও যায় নি।
খুব শ্রীঘই শাহেদ জামাল একটা সিদ্ধান্ত নেবে।
সে সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে এই ঘরসংসার, এই সমাজ থেকে চলে যাবে। এই মনুষ্য সমাজ তার ভালো লাগছে না। তার দম বন্ধ হয়ে আসে। মানুষের মুখোশ দেখতে দেখতে আজ সে বড্ড ক্লান্ত। বিধ্বস্ত। সে নিরালায় চলে যাবে। সমুদ্রের কাছে একটা পাহাড়ে একটা কাঠের ঘর থাকবে। ঘর ভরতি থাকবে বই। সে দিন রাত বই পড়ে কাটিয়ে দেবে। একটা মাটির চুলা থাকবে। ক্ষুধা পেলে সামান্য ডাল চাল দিয়ে খিচুরী রান্না করে খেয়ে নিবে। পাহাড়ের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাবে। অনেক দেরী হয়ে গেছে আর না। এরকম একটা জীবনই শাহেদ জামাল স্বেছায় বেছে নিবে। দেরী হোক, যায় নি সময়।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: তখন আমার জন্ম হয়নি।
২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৫৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এলাকায় কোন কিছুই না করলে গুরত্ব পূর্ন হবেন কিভাবে।জনহিতকর কোন সংগঠন করলে বা সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকলে,অবশ্যই এলাকায় একটা গুরত্ব থাকতো।
শুধু ভাল মানুষ হিসাবে যেই গুরত্বটা আছে সেটা হলো কেউ আপনাকে খারাপ মানুষ ভাবে না,এর বেশি কিছু না।এটাও একটা ভাল দিক।অন্তত কান কাটা রমজান ভাবে না।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা শাহেদ জামালকে আমি আপনার কথা জানিয়ে দিবো।
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৩
মেহেদি_হাসান. বলেছেন: প্রায়ই দেখা যায় শাহেদ জামালের প্রচন্ড মন খারাপ আর সে রমনা পার্কে বসে থাকে।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: কারন সে বেকার ।।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
১৯৮১ সালে, প্রচন্ড গরমের সময়, আমি রমনা পার্কে খালি গায়ে, প্যান্ট পরে, একটা বেন্চে বসেছিলাম ঘন্টা'খানেক।