নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন ঝুনু

১৮ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪৫



সবাই জানে তালুকদার ভালো মানুষ।
গ্রামের সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে। ভালোবাসে। সে কোনো দিন কারো সাথে ঝগড়া করে নি। বরং গ্রামের মানুষ আর্থিক সমস্যায় পড়লে সে যতটুকু পারে সাহায্য সহযোগিতা করে। তার বাড়িটা অনেক সুন্দর। বেশ বড় একটা পুকুরও আছে। গোয়ালঘর আছে। রসুলপুর গ্রামে সবার আগে তার বাড়িতেই চাপকল বসে। এবং গ্রামের সবাই তার বাড়িতে এসেই পানি নিয়ে যায়। কোনো বাঁধা নিষেধ নেই। তালুকদার গ্রামের সবার খোঁজ খবর রাখেন। প্রতিদিন বিকেলে সে হাঁটতে বের হয়। গ্রামের সমস্যা নিয়ে সে চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে। চেয়ারম্যান তালুকদারের কথা মন দিয়ে শুনেন। মানেন। উত্তর দিকের রাস্তাটা পাকা করতে হবে। স্কুল মাঠে পানি জমে সেখানে বালু ফেলতে হবে। গ্রামে কোনো ডাক্তার নেই শহর থেকে একটা ডাক্তার আনতে হবে। তালিকদার ছিলেন স্কুল শিক্ষক। গত বছর তিনি অবসরে গিয়েছেন।

তালুকদার সাহেবের একমাত্র মেয়ে ঝুনু।
ঝুনুর বিয়ে হয়ে গেছে। তালুকদার সাহেব খুব ধুমধাম করে তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। সে আছে তার স্বামীর সাথে পাশের গ্রামে। ঝুনুর স্বামী ব্যবসা করে। কিসের ব্যবসা তা তিনি জানেন না। মাঝে মাঝে ঝুনু তার বাপের বাড়ি আসে। ইনিয়ে বিনিয়ে বাপ মাকে অনেক কথা শোনায়। এবং ফিরে যাওয়ার সময় কিছু না কিছু হাতে করে নিয়ে যায়। তালুকদার সাহেব প্রতিদিন সকালে রেডিও শুনেন। ঝুনু এসে একদিন রেডিওটা নিয়ে গেলো। এর আগের বার এসে পিতলের কলসটা নিয়ে গেলো। ঝুনুর চোখে যা ভালো লাগে, সে নিয়ে যায়। ফসল বিক্রির টাকা এসেও নিয়ে যায়। বুড়ো বাপ-মা কিভাবে চলবে সারা বছর সে হিসাব করে না। গ্রামের মানুষ জানে ঝুনু স্বার্থপর। মেয়েটা বাপের মতো হয় নাই। তালিকদার সাহেব ভেবে পাননা তার মেয়ের সমস্যা টা কি?

তাকুলদার সাহেব ভীষন অসুস্থ হলেন।
গ্রামের সবাই তাকে দেখতে এলো। শুধু এলো না তার একমাত্র কন্যা ঝুনু। সে খবর পাঠালো- তার শ্বশুর বাড়িতে অনুষ্ঠান সে আসতে পারবে না। তবে গরুটা যেন পাঠিয়ে দেয়। পায়েস রান্না হবে। খাটি দুধের দরকার আছে। ঝুনু জানিয়েছে বাপের অবস্থা যদি বেশী খারাপ হয়, তাহলে যেন একজন উকিল ডেকে বিষয়সম্পত্তি তার নামে লিখিয়ে দেয়। এই কথা শুনে ঝুনুর মা খুব রেগে গেলেন। বাপ অসুস্থ মেয়ে দেখতে আসে না, উপরন্ত সম্পত্তির চিন্তা। এ কেমন নির্দয় মেয়ে তিনি পেটে ধরেছেন! মেয়েটা প্রতিবার এসে ঘরের জিনিস নিতে নিতে ঘর প্রায় খালি করে ফেলেছে। তালুকদার সাহেবের স্ত্রী মনে মনে ভাবেন তিনি পাপ করেছেন, এই জন্য প্রভু তাকে এরকম মেয়ে দিয়েছে। প্রভু যেন এরকম স্বার্থপর আর লোভী মেয়ে কাউকে না দেয়।

একদিন ঝুনু তার বাপের বাড়ি আসে।
সে তার বাপের জন্য একটা গামছা নিয়ে আসে। সে গামছা তার বাপের হাতে দিয়ে বলে, তোমাদের জামাই শহরে গিয়েছিলো- অনেক শখ করে অনেক দাম দিয়ে তোমার জন্য এই গামছাটা কিনেছে। তোমরা তো জামাইকে কিছু দাও না। অথচ সে সারাক্ষণ তোমাদের কথা ভাবে। এই কথা শুনে ঝুনুর মা রেগে যায়- বলেন, গত মাসেই তো তুই এসে ফসল বিক্রির সব টাকা নিয়ে গেলি। এছাড়া যখনই আসিছ পিতলের থালা, বাটি, রেডিও থেকে শুরু হাতের কাছে যা পাস নিয়ে যাস। বিয়ের সময় তো তোকে কম দেওয়া হয় নাই। তোর লোভের শেষ নাই। দিন দিন তোর লোভ বেড়েই চলেছে। তালিকদার সাহেব তার স্ত্রীকে বললেন, থামো। আমাদের যা আছে সব তো আমার মেয়ের'ই। ওর যা ভালো লাগে নিয়ে যাবে। ওকে বাঁধা দিও না। ঝুনু বলল, মা তুমি কৃপণ, আবা ভালো।

ঝুনু বলল, বাবা তোমার জামাই ব্যবসা শুরু করেছে।
কিছু টাকা কম পড়েছে। সেই টাকা টা তুমি দিয়ে দাও। তালিকদার সাহেব বললেন, নগদ টাকা তো নাই মা। ঝুনু বলল, বাড়ি বিক্রি করে দাও। ঝুনুর মা বললেন, তাহলে আমরা থাকবও কোথায়? ঝুনু বলল, তোমরা দুইজন শহরে গিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবে। তালুকদার সাহেব বুঝে গেছেন- তার এই মেয়ে তাকে বাঁচতে দিবে না। কিছু দিন পর-পর এসে ঘ্যান ঘ্যান করবে। তিনি বাড়ি বিক্রি করে সমস্ত টাকা মেয়ের হাতে তুলে দিলেন। এবং গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে গেলেন। তার গায়ে শক্তি আছে। কোনো না কোনো জুটিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু আফসোস মেয়েটাকে আর দেখা হবে না। মেয়েটা এসে বলবে না, বাবা তুমি তো টিভি দেখো না। আমি টিভিটা নিয়ে গেলাম। আমাদের টিভি টায় সমস্যা করছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৭

জুল ভার্ন বলেছেন: গনি মিয়া একজন কৃষক ......... গল্পের ভিন্ন রুপ!

১৮ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: কৃষক গনি মিয়ার গল্প আমার জানা নাই।

২| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১০

জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা ক্লাস থ্রীতে পড়েছিলামঃ-গনি মিয়া একজন কৃষক । তাহার নিজের জমি নাই। অন্যের জমি চাষ করে সংসার চালায়। গনি মিয়ার ছেলে বয়ঃপ্রাপ্ত হলে গ্রেমের লোকেরা গনি মিয়াকে তার একমাত্র ছেলের বিয়ে ধুমধামের সাহে করিতে পরামর্শ দেয়। সেইমতো গনিমিয়া নিজের বশত বাড়ি বিক্রি করিয়া ধুমধাম করিয়া ছেলের বিবাহ দেয়। গ্রামবাসী পেটপুরে বিবাহভোজ খেয়ে চলিয়া যাইবার পর গনি মিয়ার বাড়ির নতুন মালিক হাজির হয়-ঘরের দখল নিতে- এই হইলো গল্পের বিশয়।

১৮ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার গল্পের থিম আর আপনান্র ক্লাস থ্রিতে পড়া গল্প সম্পূর্ণ আলাদা।

৩| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:১৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কয়েক বছর আগে চামেলিবাগে এক মেয়ে তার বাবা মাকে মেরে ফেললো।বাবা ছিল পুলিশ অফিসার ।
কিন্তু এমন স্বর্থপর দেখি নাই।যে কিনা ঘরের কলশি নিয়ে যায়।

১৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা পুলিশের কন্যা।
ঝুনু যা পায় তাই নিয়ে যেত।
এমন কখনও হয় নাই, বাপের বাড়ি এসেছে আর খালি হাতে ফিরেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.