নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
বই পড়া আমার প্রিয় শখ।
যদি আমাকে কেউ প্রশ্ন করে তুমি কি করতে বেশি পছন্দ কর? তাহলে আমি এক কথায় উত্তর দেব- বই পড়তে। সত্যিই কেন জানি বই পড়তে আমার বেশি ভালো লাগে। প্রত্যেক রাতেই আমি বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ি। এমন কিছু বই আছে, যেগুলো পড়লে মনের মধ্যে ‘দোল’-এর অনুভূতি একটু বেশি অনুভূত হয়। আর সেটা দোলায়মান থাকে বহুদিনের জন্য। পড়ার ক্ষেত্রে আমি সর্বভুক শ্রেণির পাঠক। যা পাই তাই পড়ি। আজ আমি আমার কয়েকটা প্রিয় বই এর কথা বলব-
১। 'দৃষ্টিপাত' লেখক-যাযাবর।
বইটি প্রকাশিত হওয়া মাত্রই বাঙালী শিক্ষিত সমাজে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছিল তা যেমন বিস্ময়কর তেমনি অভূতপূর্ব। 'দৃষ্টিপাত'-এ রাজনৈতিক আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে ইতিহাস, স্থাপত্য, সঙ্গীত, মনুষ্য চরিত্র নিয়ে নানান আলোচনা। নিরস ভাবে নয়, গল্প ও ঘটনার সহজ প্রবাহের সঙ্গেই সেগুলি এসেছে; করেছে বইটিকে তথ্য-সম্বৃদ্ধ। ১৯৫০ সালে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ বই হিসেবে 'দৃষ্টিপাত' নরসিংহ দাস পুরস্কারে সন্মানিত হয়।
২। 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র' লেখক- আলাউদ্দিন আল আজাদ।
১৯৬০ সালে পদক্ষেপ নামক এক পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় উপন্যাসটি প্রথম ছাপা হয়। শিল্পীর অপূর্ণতাবোধ, বেদনা এবং অশেষ সৌন্দর্য তৃষ্ণা এ উপন্যাসের প্রধানতম থিম। শিল্পীর মনের টানাপড়েন এবং নতুন ধরনের মূল্যবোধের কারণে ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ প্রসিদ্ধ হলেও এ উপন্যাসের অন্য উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে এর নায়ক পরিকল্পনা।
৩। 'কাবিলের বোন' ও 'উপমহাদেশ' লেখক- আল মাহমুদ।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বর্তমানে ভূরি ভূরি বই প্রকাশিত হতে দেখছি আমরা। বাজার থেকে এরকম দশটি বই তুলে নিয়ে পাঠ করলে দেখা যাবে, ইতিহাস ও বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে একরৈখিকভাবে আরোপ করা হচ্ছে লেখকের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত কোনো ধারণা। প্রত্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা কবি ও কথাশিল্পী আল মাহমুদ তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় জারিত হয়ে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস—‘কাবিলের বোন’ ও ‘উপমহাদেশ’। মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে উত্সারিত আল মাহমুদের এ দু’টি উপন্যাস বহুল আলোচিত, পঠিত ও নন্দিত হওয়ার পরও এগুলোর মর্যাদা এখনও চিহ্নিত হয়নি। ১৯৯৪ সালে আল মাহমুদের ‘কাবিলের বোন’ উপন্যাস প্রকাশ করার কারণে বাংলা একাডেমীর একুশে বইমেলায় বাংলা সাহিত্য পরিষদের স্টলে ভাংচুর করা হয় এবং বইতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
৪। 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' লেখক- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আমার চেতনার অনেকটা জুড়ে আছেন তিনি। দুঃখের মাঝে ধৈর্য, কষ্টের মাঝে হাসি, বিপদের মাঝে কঠিন মনোবল আর নীতির প্রশ্নে মাথা নিচু না করার মানসিকতা আমি তার জীবনীর মধ্যে পেয়েছি। তাকে জীবনের অন্যতম মহামানব ভাবতে পেরে আত্মতৃপ্তিটুকু পেয়েছি।
৫। 'লোটা কম্বল' লেখক- সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।
আমার পড়া একটি অম্ল-মধুর, হাস্য-রস মিশ্রিত মধ্যবিত্ত ঘরের বর্ণনা সম্বলিত চমৎকার উপন্যাস। দুই খন্ডের বই। প্রায় আটশ' পৃষ্ঠা জুড়ে এর কাহিনীর বিস্তার। বইয়ের নিজের ভাষায়, "ভেঙে যাওয়া যৌথ পরিবারের পটভূমিকায় দাঁড়িয়ে নিঃসঙ্গ এক পৌঢ়, হিমালয়ের মত যাঁর ব্যক্তিত্ব, অসম্ভব যাঁর আদর্শনিষ্ঠা, আপাত কঠোর যেন প্রুশীয়ান জেনারেল অথচ ভেতরে ভেতরে কুসুম কোমল। আর সেই মানুষটির একমাত্র মাতৃহারা যুবক সন্তান, মাঝে দুই পুরুষের ব্যবধান। পূর্বপুরুষ উত্তর পুরুষে সঞ্চারিত করতে চায় জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ আর মূল্যবোধ। মানুষের মত মানুষ করে তুলতে চায়। দুই পুরুষের মূল্যবোধ আর দৃষ্টিভঙ্গির ঠোকাঠুকির মধ্যে আর এক পুরুষ। তিনি বৃদ্ধ মাতামহ। আধ্যাত্মিকতার বাতিটি তুলে যিনি খুঁজে পেতে চান সেই চির-চাওয়া পরমপুরুষটিকে!"
৬। 'কড়ি দিয়ে কিনলাম' লেখক- বিমল মিত্র।
অসাধারণ একটি বই। প্রাক স্বাধীন ভারতের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাসের কাহিনী। দুই খন্ডের বিশাল উপন্যাসটি দেখে আমার মত অনেকেই ভয় পেতে পারে। তবে এই বইটি না পড়লে আমার বই পড়া জীবনটি অসম্পূর্ন থেকে যেত। কিছু বই আছে যা পড়লে কখনও ভুলা যায় না। কড়ি দিয়ে কিনলাম বইটি সে ধরনের একটি বই। এত বড় উপন্যাসটি পড়ার সময় একবারও আমার মনোযোগ ছুটে যায়নি। বিমল মিত্রের অসাধারন লেখনি পাঠকদের নিয়ে যাবে কাহিনীর গভীর থেকে গভীরে।
৭। 'ন হন্যতে' লেখক- মৈত্রেয়ী দেবী।
আমাকে অনেক কাঁদিয়েছেন মৈত্রেয়ী দেবী, আর বোধ করি আমার মতো অনেককেই অতি অনায়াসে সত্যের সামনে দাঁড়িয়ে আপন মনে নিজেকে বিশ্লেষণ করতে শিখিয়েছেন। এ উপন্যাসটি আমি লাইনকে লাইন মুখস্থ বলতে পারি। বাংলা ভাষায় এক তুলনাহীন উপন্যাস এটি।
৮। 'তিতাস একটি নদীর নাম' লেখক- অদ্বৈত মল্লবর্মণ।
এই একটি উপন্যাস লিখে লেখক খ্যাতি অর্জন করেন। এই উপন্যাসে গ্রামের দরিদ্র মালো শ্রেণীর লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন। পরবর্তীকালে এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
৯। 'ওদের জানিয়ে দাও' লেখক- শাহরিয়ার কবির।
এই বই সম্পর্কে লেখক বলেছেন, এটি কাল্পনিক উপন্যাস নয়। তার ভাষায়, ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে বসে লেখা। কেবল ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে। উপন্যাসটি ছোট আকারে ১৯৭৪ সালে বিচিত্রায় ছাপা হয়েছিল। পড়ে এটিকে খানিকটা বড় করা হয়েছে। শাহরিয়ার কবির এটি লিখেছিলেন ১৯৭৪ সালে।
১০। ‘পার্থিব’ ও 'দূরবীন' লেখক- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
অজস্র চরিত্র, নানান ঘটনাবলী, মানুষের জীবনের নানা টানাপোড়েন, উত্থানপতন, ঘাত-প্রতিঘাত ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি এখানে, এবং যেভাবে সবাইকে একজায়গায় জড়ো করে এক স্রোতে মিলিয়েছেন, সেটা এককথায় অতুলনীয়। পার্থিব উপন্যাসের প্রথম লাইন হচ্ছে- "বাদামতলায় রামজীবনের পাকা ঘর উঠছে ওই।" আর শেষ লাইন হচ্ছে- "এসো আমার সঙ্গে তুমিও কাঁদো, এসো কান্নায় একাকার হয়ে যাই। একাকার হয়ে যাই।" এই উপন্যাসে শহর গ্রাম মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে- কখনও লন্ডন-আমেরিকা। বুড়ো বিষ্ণুপদর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। এক মেয়ে নিখোঁজ। বড়ো ছেলে কৃষ্ণজীবন একজন সমাজ বিজ্ঞানী। মেজ ছেলে রামজীবন- একজন ডাকাত। আর কন্যা বীনাপানি-যাত্রাপালা অভিনয় করে এবং তার সাধু স্বামী নিমাই। অ্ন্য দিকে হেমাঙ্গ- হেমাঙ্গ খুব সৌ্খিন এক যুবক। রশ্মি রায়। হেমাঙ্গর চাচাতো বোন চারুশীলা। চয়ন- মৃগী রোগী। কিন্তু ছাত্রদের পড়ায় ভালো। ঝুমকি-, ঝুমকির বোন অনু- মনীশ, রিয়া এবং আরও অনেক চরিত্র।
দূরবীন উপন্যাসে তিনটি প্রজন্মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমজন পুর্ববঙ্গের জমিদার হেমকান্ত চৌধুরী, দ্বিতীয়জন ব্রিটিশ ভারতের বিপ্লবী এবং স্বাধীন ভারতের ডাকসাঁইটে রাজনীতিবিদ ও হেমকান্তর নয়নের মণি কৃষ্ণকান্ত চৌধুরী ও কৃষ্ণকান্তের বখে যাওয়া ছেলে ধ্রুব চৌধুরী; লোফার, হৃদয়হীন থেকে শুরু করে অনেক বিশেষনই তার সাথে যুক্ত করা যায়। উপন্যাসের ব্যাপ্তি অনেক বিশাল। তিনটি প্রজন্মের তিন ধরণের মানুষের কাহিনী বা জীবনাচরণ এখানে বিধৃত করা হয়েছে। এটি শুধু সাড়ে পাঁচশো পৃষ্ঠার একটি উপন্যাস নয়; মানুষের ভাব, প্রেম, পদস্খলন, সংগ্রাম, বিরহ, জীবন-জীবিকা, আনন্দ-বেদনার- সব কিছুর এক প্রতিচ্ছবি।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
২| ২১ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৫:৪৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ৫, ৭, ৮ ও ১০ পড়া আছে।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।
৩| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:৪৩
ইসিয়াক বলেছেন: ন হন্যতে বাদে অন্যগুলো পড়া আছে। এখন অসমাপ্ত আত্নজীবনী পড়ছি।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: একটা রিভিউ দিবেন।
৪| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:৫৫
ডাব্বা বলেছেন: মিস্টার ইসিয়াক, 'লা নূই বেঙ্গলি'টাও পড়ে নিবেন এর সাথে।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
৫| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:৫৬
ডাব্বা বলেছেন: ওদের জানিয়ে দাও - সাজেস্ট করেন?
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী হ্যা।
৬| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪২
ইসিয়াক বলেছেন: @ডাব্বা বলেছেন: মিস্টার ইসিয়াক, 'লা নূই বেঙ্গলি'টাও পড়ে নিবেন এর সাথে।
ধন্যবাদ
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: প্রচুর পড়তে হবে রে ভাই। পড়া ছাড়া গতি নাই।
৭| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৫৫
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এত বই না পড়ে বিজ্ঞানময় কোরান পড়ুন সবকিছু জানতে পারবেন।ফাও সোওয়াবও পাবেন।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: মানি না।
৮| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:১৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ৫ আর ৯ নম্বর ছাড়া সবগুলোই পড়েছি-সবগুলোই কালজয়ী।
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি বই পড়ুয়া মানুষ। আমি জানি।
৯| ২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
মহাগ্রন্থ আল কোরআন পড়ার পর বাকি কোন বই পড়ার প্রয়োজন নেই্
২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: আল কোরআন ইউ বলেছে, জ্ঞান অর্জন করো।
১০| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৩
পুকু বলেছেন: কেন জানিনা"তিতাস একটি নদীর নাম" আমার মনকে বেশী নাড়া দেয়।
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমারও।
১১| ২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৩:৩১
সোহানী বলেছেন: যাযাবর আমার মায়ের প্রিয় লেখক ছিলেন। উনার সব বই বাবার কালেকশানে ছিল। সেখান থেকেই পড়েছি। আপনার দেয়া ১০ (১১টি) এর মাঝে বঙ্গবন্ধুর লিখা বইটি ছাড়া সবই পড়েছি। সবগুলোই বাবার কালেকশান থেকে পড়া। বঙ্গবন্ধুর লিখা বইটি সংগহ করবো।
২২ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: পড়ে ফেলুন।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:৩৩
মার্শাল ইফতেখার আহমেদ বলেছেন: আপনার দশটি প্রিয় বইয়ের সাথে আমি একমত! কড়ি দিয়ে কিনলাম পড়া হয়নি! টুকে রাখলাম। যাযাবর টি ছিল পড়েছিলাম ছোটবেলায়, ভুলে গেছি আবার কিনে পড়বো! ওদের জানিয়ে দাও পড়িনি, পড়তে হবে। কাবিলের বোন ও পড়া হয়নি, কি আছে ওতে যে ভাঙচুর হয়েছিল! কোন বিতর্কিত বিষয়! মুক্তিযুদ্ধের সত্য আমার জানা আছে একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে, সেটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বাকী গুলো সব পড়া আছে, সংগ্রহে আছে এবং দারুন সব রচনা! পোস্ট টি খুব ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ।