নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুরভি আমাকে যে বই গুলো দিয়েছে

২২ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪



সুরভি জানে আমি বই পড়তে ভালোবাসি।
সুরভি আমাকে অনেক বই দিয়েছে। সেসব বই আমি পড়েছি। অনেকবার করে পড়েছি। এক বই দুই তিনবার করে পড়তে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমি একটা সিনেমাও ৫/৭ বার দেখি। এই পোষ্টে সুরভি আমাকে যে বই গুলো দিয়েছে, সেসব নিয়ে আলোচনা করবো। সুরভিদের বাসায়ও আমি অনেক বই দেখেছি। সেসব বই আমি নিয়ে আসবো। হাতের কাছে নানান ধরনের বই থাকা ভালো। মন চাইলেই পড়া যাবে। পড়ার চেয়ে আর জানার চেয়ে আনন্দ দুনিয়াতে আর কিছুতে নেই। কোরআন শরীফের প্রথম শব্দ হচ্ছে ইকরা। ইকরা মানে পড়ো। তাই আমঅরা পড়ে যাই। পড়তে ভালোবাসি।

১। 'নূরজাহান' লেখক- ইমদাদুল হক মিলন।
বিশাল ক্যানভাসের উপন্যাস ‘নূরজাহান’। হুমায়ুন আহমেদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদারসহ আরো প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিকদের মতে; ইমদাদুল হক মিলনের লেখা শ্রেষ্ঠ উপন্যাস এটি। শুধু তাই নয়, ‘নূরজাহান’ উপন্যাসটিকে ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক ‘আনন্দ বাজার’ বাংলা সাহিত্যের সাম্প্রতিক সময়ের শ্রেষ্ঠ রচনা বলে উল্লেখ করেছে। ‘নূরজাহান’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র নূরজাহান। এক উচ্ছল প্রাণবন্ত কিশোরী। বাবা দবির গাছি। আর মা হামিদা। অভাবের সংসারে তাদের একমাত্র আলো নূরজাহান। কিন্তু গ্রামের ফতোয়াবাজ ভন্ড মাওলানা মান্নানের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ করায় নূরজাহানের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। সমাজের ফতোয়াবাজ ও কালো মনের মানুষদের দেওয়া এই দুভোর্গের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতে থাকে নূরজাহানের দিনরাত্রি। ''নূরহাজান উপন্যাস নিয়ে সামুতে আমার একটা রিভিউ আছে।

২। 'শেষ বিকেলের মেয়ে' লেখক- জহির রায়হান।
উপন্যাসের কাহিনী এই রকম- কাসেদ মধ্যবয়সী এক যুবক। কেরানিগিরি তার পেশা। মা ছাড়াও তার ছোট্ট পরিবারে আছে নাহার। নাহার তার কেউই নয়। ছোট্টবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে কাসেদদের বাড়িতে তার আশ্রয় হয়েছে। কাসেদের মা এই মেয়েকে নিজের সন্তানের মত মায়া-মমতা দিয়েই বড় করেছেন। কাসেদের মত নাহারকে নিয়েও মায়ের সমান চিন্তা। ভালো দেখে একটা পাত্র জুটিয়ে নাহারকে বিয়ে দিবেন, মেয়েটি যেন তার চিরকালই সুখে থাকে। বেশিরভাগ সময় কেরানিগিরি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও কাসেদের ভিতরে আছে এক রোমান্টিক মন। মাঝেমধ্যে টুকটাক কবিতাও লেখে কাসেদ। অবসর পেলেই সে জীবিকার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে এক অন্যরকম রোমান্টিক ভাব সাগরে আত্মনিমগ্ন হয়। জাগিয়ে তোলে কল্পনার চিত্রপটে আঁকা তার মানসীর ছবি। মানসীর নাম জাহানারা।

৩। 'সাতকাহন' ও 'গর্ভধারিণী' লেখক- সমরেশ মজুমদার।
সাতকাহন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র দীপা সাহসী ও স্বতন্ত্র চরিত্রের অধিকারীনি এক নারী। যার নামের মধ্যেই নিহিত ছিলো অন্ধকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পুর্বাভাস। সাহস আর একাগ্রতা ছিলো বলেই নিজের নিষ্ঠুর অতীতকে মুছে ফেলে শুরু করেছিলো নতুন জীবন, জয় করেছিলো নিজের ভাগ্য, পড়াশুনা। কাছের মানুষ এমনকি নিজের মায়ের ঘৃণা, শত্রুতা, তাদের ভিতরকার বিভৎস লোভী চেহারাও দীপাকে পর্যুদস্ত করতে পারেনি। সে সময়ের কাঁধে মাথা ঠেকিয়েছে, কিন্তু ভেঙ্গে পড়েনি। কাছের মানুষ বলতে কেউই ছিলো না দীপার, দু-ফোঁটা চোখের জল ফেলার সময় কেউ কাঁধ বাড়িয়ে দেয়নি দীপার দিকে। সুযোগ ছিলো অনেক,চাইলেই তা হাত বাড়িয়ে নিতে পারতো দীপা। কিন্তু তা সে করেনি। সাধারনের মাঝেই দীপা অসাধারন। যার জীবনে এসে মিশেছে নানা নাটকীয়তা, আর এসব নাটকীয়তাকে ছাপিয়েই যার জীবন এগিয়ে গেছে সমান্তরালভাবে-সেই দীপা। দীপাবলি বন্দোপাধ্যায়।

'গর্ভধারিণী'র কাহিনী এই রকম- জয়িতা বড়লোক বাবা মার স্বেচ্ছাচারী আধুনিক মেয়ে। জয়িতার সাথে তথাকথিত নারী বা নারীত্বের সংজ্ঞা মিলে না। সে ছেলেদের পোশাক পড়ে, ধূমপান করে, ছেলেদের সাথেই মিশে। তাই এটাসেটা নিয়ে জয়িতার সাথে তার বাবা মার ঝামেলা লেগেই থাকে। কিন্তু এত কিছু সত্বেও জয়িতা অনেক পুরুষেরই স্বপ্নের নায়িকা। জয়িতা স্বপ্ন দেখে সমাজকে বদলে দেবার। তিন বন্ধুকে নিয়ে নেমে পড়ে যুদ্ধে, এভাবেই সে একসময় জড়িয়ে পড়ে রাজনীতির সাথে। সমাজপতিদের কৌশলের মারপ্যাঁচ, রাজনৈতিক গ্যাঁড়াকলে পড়ে জয়িতা শহর ছাড়তে বাধ্য হয়। তারপর ও থেমে থাকে না তার যুদ্ধ। গ্রামে গিয়েও নানান জটিলতায় পরতে হয় জয়িতাকে। জীবনের সহজ সরল অংক গুলো জটিল মারপ্যাঁচে হারাতে চায় জয়িতাকে ।

৪। 'তিথিডোর' লেখক- বুদ্ধদেব বসু।
সত্যেন, "তিথিডোর" উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র, সাধাসিধে রাজেন বাবুর কনিষ্ঠ কন্যা স্বাতীকে কবিগুরুর শেষযাত্রায় নিয়ে যেতেই ছুটে এসেছে জোড়াসাঁকো হতে টালিগঞ্জের স্বাতীদের বাড়িতে। অনবদ্য একটি মধ্যবিত্তের কাহিনী জুড়ে পাতায়-পাতায় চরিত্রদের সঙ্গে একাত্ম আঠা হয়েই বহুবার পঠিত এই বাইশে শ্রাবণের কবিগুরুর মহাপ্রয়াণের ক্ষণটি যতবার পড়েছি ততবারই অদেখা মুহূর্তটি আশ্চর্য জীবন্ত দৃশ্যমান যেন বা! উপন্যাসটি আমার ভীষন পছন্দের।

৫। 'দেশ বিদেশে' লেখক- সৈয়দ মুজতবা আলী।
"দেশে বিদেশে" মূলত একটি ভ্রমন কাহিনী নির্ভর রচনা। প্রকাশকাল – ১৯৪৮। সৈয়দ মুজতবা আলী’র লেখায় সাবলীল বর্ণনা থাকে, আর থাকে রসাত্মক উক্তি। তার লেখার প্রতিটি পরতে সূক্ষ্ম রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। উপযুক্ত শব্দচয়ন, প্রাঞ্জল ও রসাত্মক বর্ণনা এবং আফগানিস্থানে তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা ‘দেশে বিদেশে’ বইটি-কে পাঠকপ্রিয় করেছে। কিছুদূর এগোলেই বোঝা যায় মুজতবা’র লেখায় বাঙলার কালচার ও সাহিত্যের সাথে মিশে গিয়েছে ইউরোপীয় নানা দেশের কালচার এবং সাহিত্য, আর তাতে উপযুক্ত অনুপাতে যোগ হয়েছে অভারতীয় প্রাচ্যদেশীয় বিষয়ও। মুজতবা আলী আর শিবরাম চক্রবর্তী দুজনেই অসাধারণ রম্য লিখেছেন।

৬। 'পঞ্চম পুরুষ' লেখক- বাণি বসু।
যোগাযোগটাই নাটকীয়। সেই কবেকার কলেজ জীবনের কিছু পাত্র-পাত্রীর আবার কুড়ি বছর বাদে দেখা হবে মহারাষ্ট্রে। কলকাতা থেকে বক্তৃতার কাজে এসেছেন অধ্যাপক মহানাম। অজন্তার টানে এসেছে মহানামেরই এক পুরনো ছাত্রী এশা।... পড়ুন এবং তারপর দেখবেন মন প্রান আনন্দে ভরে উঠবে।

৭। 'মাধুকরী' লেখক- বুদ্ধদেব গুহ।
বইটির ছোটো একটি অংশ তুলে ধরছি, ”পৃথু ঘোষ চেয়েছিল, বড় বাঘের মতো বাচঁবে। বড় বাঘের যেমন হতে হয় না কারও উপর নির্ভরশীল না নারী, না সংসার, না গৃহ, না সমাজ সেভাবেই বাচঁবে সে, স্বরাট, স্বয়ম্ভর হয়ে। তার বন্ধু ছিল তথাকথিত সমাজের অপাংতেয়রা। পৃথু ঘোষ বিশ্বাস করত, এই পৃথিবীতে এক নতুন ধর্মের দিন সমাসন্ন। সে ধর্মে সমান মান-মর্যাদা এবং সুখ-স্বাধীনতা পাবে প্রতিটি নারী-পুরুষ।” মাধুকরী শুধু পৃথু ঘোষের বিচিত্র জীবঙ্কাহিনী নয়। “মাধুকরী” এই শতকের মানুষের জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আগামী প্রজন্মের মানুষের সার্থক ভাবে বেঁচে থাকার ঠিকানা। এই কারণেই এ উপন্যাস উৎসর্গ করা হয়েছে ‘একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের হাতে’।

৮। 'হাজার চুরাশির মা' লেখক- মহাশ্বেতা দেবী।
উপন্যাসটি একটি লাশের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত। মহাশ্বেতা দেবী একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলন কর্মী। তিনি ১৯২৬ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি সাঁওতালসহ অন্যান্য আদিবাসীদের ওপর কাজ এবং লেখার জন্য বিখ্যাত । তাঁর লেখা শতাধিক বইয়ের মধ্যে হাজার চুরাশির মা অন্যতম। নকশাল আন্দোলোনের উপর লেখা বই। এই বইয়ের কাহিনী নিয়ে সিনেমা করেছে কলকাতা ও বোম্বে।

৯। 'ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা' লেখক- শিবরাম চক্রবর্তী।
শুরুতেই শিবরাম বলে নিয়েছেন তাঁর শৈশব ছিল ঈশ্বর-পীড়িত। মা বাবা দুজনই অসাধারণ দুটি মানুষ কিন্তু তাঁর পরে বুঝতে পারি তাঁর Bohemian জীবনের বীজ ওই বাবার বৈরাগী পদ্ব্রাজক ভাব, আর মার নিরাসক্ত আত্মশক্তির মধ্যেই বোধ হয়। চাঁচোলের এক রাজ-পরিবারেই তাঁর জন্ম— সম্পর্কের কাকা ছিলেন রাজা, কিন্তু রাজ-জোটক ছিল না তাঁর কপালে। বাবা ছোট বেলায় সংসার-ত্যাগী সন্ন্যাসী হয়ে ছিলেন, পরে এসে বিয়ে করেন তাঁর মা-কে। দুজনই সাদাসিধে মানুষ, গন্য মান্য ছিলেন, কিন্তু মনে হয় কোনো উন্নাসিকতার মধ্যে ছিলেন না। মা-ই ছিলেন শিব্রামের গুরু, বন্ধু, সবই। তাঁর কাছেই তিনি যা কিছু সার শিখেছেন। তারপর তার সঙ্গে জরিয়ে নিয়েছেন জীবনের অভিজ্ঞতা। শিব্রামের ভাষায়, পেলেই পড়ি, পড়লেই পাই!

১০। 'শাপ মোচন' লেখক- ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়।
সুরভি বলল, একটা ঘটনা বলি- বাড়িতে পুরোনো কাগজের গাদা ছিল। কী মনে করে ঘাঁটতে গিয়ে একটি বই পেলাম। নাম শাপমোচন। লেখক ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়। এক দুই পাতা করে পড়তে লাগলাম। পড়া শেষে হাউমাউ করে কাঁদলাম। সেই থেকে বইয়ের জন্য মনটা কাঁদতে শুরু করল। এরপর যেখানে বই পাই, পড়ে ফেলি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: দুই পড়ুয়া একসাথে সংসার,সোনায় সোহাগা।ভাল ভাল বই,তা বিয়ের আগে কয়টা দিয়েছে আর পরে কয়টা।

২২ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: সুরভি নিউ মার্কেট/নীলক্ষেত গেলেই আমার জন্য বই নিয়ে আসে। সব সময়।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৫

অক্পটে বলেছেন: আমাকে একজন কড়ি দিয়ে কিনলাম, মাধুকরী, হলুদ বসন্ত ও কোয়েলের কাছে দিয়েছিল।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: বই গুলো এখনও আছে?

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪৮

ইসিয়াক বলেছেন: ৯ নম্বরটা বাদে সবগুলো পড়েছি এবং সংগ্রহে আছে।
শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা কেন জানি আমার ভালো লাগে না।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: শিবরাম আবার নতুন করে পড়া শুরু করেন। অবশ্যই ভালো লাগবে।

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: অভিযাত পছন্দ!

২৩ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

৫| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভাবীকে ব্লগিং করতে বলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.