নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
অনেককাল আগে-
এক রাজা তার প্রজাদের দুঃখ-কষ্ট এবং সমস্যা গুলো সমাধানের উদ্দ্যেশে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতেন। নিজ চোখে প্রজাদের সমস্যা গুলো দেখে দেখে সমাধান করে দিতেন। তিনি বেঁচে থাকতে তার প্রজাদের কষ্ট হবে এটা কেমন কথা! প্রজা না থাকলে তিনি কিসের রাজা? তাই আগে প্রজাদের ভালো মন্দ। ঠিক এই রকম করে একদিন ঈশ্বর মাটিতে নেমে এলেন মানুষের রুপ ধরে।
ঈশ্বর দাঁড়িয়ে আছেন সদরঘাট এলাকায়।
তিনি বুড়িগঙ্গা নদীর পানির গন্ধ পেয়ে অবাক। কোনো নদীর পানি যে এত কালো হতে পারে এবং এত বিচ্ছিরি গন্ধ ঈশ্বরের ধারনা ছিল না। এক কোনায় দাঁড়িয়ে ঈশ্বর তো বমিই করে দিলেন। অথচ কত শত লোকজন আশেপাশে। সবার মধ্যে ব্যস্ততা। তারা কি নাকে এই বাজে গন্ধ পাচ্ছে না? সদরঘাট থেকে হাঁটতে হাঁটতে ঈশ্বর চলে এলেন বাবুবাজার ব্রীজের কাছে। রাস্তাঘাট এত নোংরা, মানুষের এত ভীড় ঈশ্বর নিজের অজান্তেই বলে ফেললেন ছিঃ। রাস্তার পাশের চায়ের দোকান থেকে এক কাপ চা মুখে দিয়ে ঈশ্বর আর একবার বমি করলেন। চা বাজে হয়!
দিনে দুপুরে মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে ঈশ্বরকে ছিনতাইকারী ধরল। ঈশ্বর তো অবাক ! ছিনতাইকারীরা ঈশ্বরকে বলল- যা আছে সব ভদ্রভাবে দিয়ে দে। চিল্লাচিল্লি করলে টুকরো টুকরো করে ফেলবো। ঈশ্বর বললেন, আমার কাছে কিছু নেই। কিছু নেই কেন, বলে একজন ছিনতাইকারী ঈশ্বরকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল। ঈশ্বর পৃথিবীর মানুষের আচরনে প্রচন্ড অবাক! প্রচন্ড হতাশ। সৃষ্টির সেরা জীবের এ কি অবস্থা!
বিকেলে ঈশ্বর মন খারাপ করে রমনা পার্কের একটা বেঞ্চে বসে ছিলেন। চারদিকে কিছু তরুন তরুনী জোড়াজড়ি করে বসে আছে। এদের মধ্যে একজন তো এক মেয়ের জামার ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে। মেয়েটি কিছু বলছে না বরং ছেলেটির হাতের স্পর্শ উপভোগ করছে। ঈশ্বর বিড়বিড় করে বললেন- আজিব!! এদেরকে সকালে একবার, বিকেলে আরেকবার চাবুক দিয়ে পিটানো দরকার।
রাত ন'টায় প্রেসক্লাবের সামনে ঈশ্বর পড়লেন দুইজন নিশি কণ্যার হাতে। সস্তা লিপস্টিক ঠোঁটে চকচক করছে। নিশিকণ্যা দুইজন ঈশ্বরের সাথে রাত কাটাতে চায়। বিনিময়ে অল্প কিছু টাকা দিলেই হবে। তাদের টাকার খুব প্রয়োজন। ঈশ্বর তাদের নাম জিজ্ঞেস করতেই- মেয়ে দু'টি তাদের ছদ্মনাম বলল। দুইটা মেয়ের জন্য ঈশ্বরের খুব মায়া হলো। খুব। ঈশ্বর নিজেই মনে মনে বললেন- আহারে আহারে!
রাত দুই টায় ঈশ্বর গেলেন যাত্রাবাড়ী। যাত্রাবাড়ী গিয়ে ঈশ্বর অনেক অবাক হলেন। এত রাতেও এখানে অনেক জ্যাম। চারিদিকে ধূলোবালি উড়ছে। চারিদিকে এত বিকট সব গাড়ির হর্ন শুনে ঈশ্বর কানে হাত দিলেন। এই বিকট শব্দের মধ্যেই অনেক মানুষ ফুটপাতে শুয়ে আছেন। পাশেই ময়লার ডিপো। পৃথিবীর মানুষ এত কষ্টে আছেন তা ঈশ্বরের ধারনার বাইরে ছিল। আবারও ঈশ্বর রাস্তার ফুটপাতে বসে বমি করে দিলেন।
ঈশ্বর আরও কষ্ট পেলেন কাওরানবাজার এসে। এত মানুষ ফুটপাতের উপর শুয়ে আছে!! তাদের ঘরবাড়ি নেই? আর এই কাওরানবাজার এত বড় বড় বিল্ডিং ! ফুটপাতে শুয়ে থাকা মানুষের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা করলো- দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কানে ধরে কাওরান বাজার এলাকায় নিয়ে আসতে। প্রধানমন্ত্রী নিজের চোখে দেখুক। সে করে কি? দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে? এই তার উন্নয়নের নমুনা? পদ্মাসেতু, ফ্লাইওভার, রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল আর দুই লাখ নব্য ধনী!
ফার্মগেট ব্রীজের উপর এসে ঈশ্বরের মেজাজ চরম খারাপ হলো। দশ-পনের জন নানান বয়সের লোক মিলে একসাথে নেশা করছে। আর ব্রীজের নীচে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। চেকপোষ্ট বসিয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানি করছে। তাদের মানিব্যাগ তন্নতন্ন করে কি যেন খুজছে। ম্যানিব্যাগের ভেতর কি পিস্তল বা গ্রেনেড লুকিয়ে রাখা যায়? ঈশ্বর মনে মনে বললেন- যতসব বদমাশের দল। এই বঙ্গদেশে কেউ তাদের নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না।
ভোর হতে শুরু করেছে। ঈশ্বর মিরপুর রোডে হাঁটছেন। দেশ এবং দেশের মানুষ নিয়ে ঈশ্বর অনেক বিচলিত। সাত আসমানের উপর গিয়ে হয়তো তিনি দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নিবেন। সাধারন মানুষজন অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারে কিন্তু ঈশ্বর মানুষদের দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। অলৌকিকভাবে এদেশের জন্য অবশ্যই কিছু করা হবে- ঈশ্বর ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই প্রথম ঈশ্বরের মূখে হাসির আবেশ দেখা গেল। ঠিক তখন একটা ট্রাক ফুটপাতের উপর উঠে ঈশ্বরকে চাপা দিলো। সাথে সাথে ঈশ্বর মারা গেলেন। ভোরের দিকে মিরপুর রোড ফাঁকা থাকে। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে ট্রাক ড্রাইভার স্প্রীড বাড়িয়ে দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া জনাব।
২| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩২
মেরুভাল্লুক বলেছেন: খুবই কস্টও পেলাম। মানুষের এত কস্ট।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৬
স্থিতধী বলেছেন: ঈশ্বর কে এভাবে বেঘোরে মরবার দায় আপনার । আপনি ওনাকে বারিধারা,গুলশান, বনানী, ডি ও এইচ এস এসব এলাকায় না নিয়ে কিসব ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী, বুড়িগঙ্গা ফুড়িগঙ্গাতে নিয়ে নাজেহাল করেছেন। দুলাখ নব্য ধনীর উন্নয়ন উন্নতি কি আপনার কাছে উন্নয়ন মনে হয়না? আপনি আসলে উন্নয়নের শত্রু, তাই ঈশ্বর আরো উন্নয়ন করুক সেই সুযোগ ওনাকে না দিয়ে বরং আপনি ওনাকে ট্রাকের নিচে ফেলে দিয়েছেন।
বাই দা ওয়ে, ঈশ্বর কি জাতীয়তাবাদের সমর্থক?
২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: ঈশ্বর নিরপেক্ষ। তিনি কারো সমর্থক নন।
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
God remains in mind.
Anyway, God is always third person singular number!
২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: একদিন বুঝবেন।
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৩২
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: গল্পের রাজারাই রাতে ঘুরে বেড়ায়,বাস্তবে না।খলিফা ওমরকে মহান করার জন্য মুমিনরা এসব গল্প লেখে সাথে বুড়ির পথে কাটা বিছানোর গল্প।
ঈশ্বরের বুদ্ধিশুদ্ধি একটু কম তাই এই পরিনতি।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
৬| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৩৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
লেখক বলেছেন: একদিন বুঝবেন।
আপনি সম্ভবত আমার মন্তব্যটি বুঝতেই পারেননি।
২৭ শে মার্চ, ২০২১ রাত ২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: হতে পারে। তবে আপনিও আমার মন্তব্যটি বুঝতে পারেন নি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন।