নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছেলেটার নাম হারুন।
সবাই তাকে হারু হারু বলে ডাকে। হারু আমাদের এলাকায় থাকে। বাপ মার'র একমাত্র সন্তান। অবশ্য তার বাপ ফরিদপুরের এক মহিলাকে বিয়ে করে কোথায় যেন চলে এসেছে। তারপর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি। দীর্ঘ তেরো বছর পর জানা যায় হারুর বাপ মারা গেছে ক্যান্সারে। হারুর মা তেরো বছর আগে হারিয়ে যাওয়া স্বামীর কথা স্মরণ করে অনেক কান্নাকাটি করলো। তবে বাপের মৃত্যুর কথা শুনে হারু কাঁদে নি। হারুকে কখনও রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিতে দেখিনি। পড়াশোনা এবং তার মা- এদুটো জিনিস ছাড়া তার দুনিয়াতে আর কিছুই ছিলো না।
হারু জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী।
তার মাথা সামান্য বড় এবং বাঁকা। বাঁকা মাথা ডান পাশের কাধের সাথে মিশে আছে। এর মধ্যে আবার একটা পা খোড়া। হারু খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটে। হারুকে দেখলে খুব মায়া হয়। এলাকার সবাই হারুকে মায়া করে। আমিও করি। হারু লেখাপড়ায় খুব ভালো। হারু মা মানুষের বাসায় কাজ করে। সারা দিন সে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করে। এলাকার লোকজন হারুদের সাহায্য সহযোগিতা করে। হারু আমার সাথে প্রায়ই দেখা করতে আসতো। নানান রকম বিষয় নিয়ে গল্প করতো। বুদ্ধিমান ছেলে।
হারুর মা হারুকে বলেছে-
তোমার কাজ একটাই। তুমি শুধু লেখাপড়া করবে। যত টাকা লাগে আমি দিবো। হারু মায়ের দুঃখ বুঝেছে। সে খুব মন দিয়ে লেখাপড়া করছে। হারু ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্সে অনার্স পড়ছে। এতদিনে তার অনার্স শেষ হয়ে যেত। করোনা এসে সব গণ্ডগোল বাধিয়ে দিলো। হারু এবং তার মা আমার কাছে মাঝে মাঝে এসে বুদ্ধি পরামর্শ নিয়ে যেতো। এই করোনা কালে হারু আমার কাছ থেকে অনেক বইপত্র নিয়েছে। পড়ে আবার ফেরত দিয়ে গেছে।
হারুর স্বপ্ন দেখতে জানতো।
হারুর বিশ্বাস লেখাপড়া শেষ করেই ভালো একটা চাকরি পাবে। তখন সে তার মাকে আর মানুষের বাসায় কাজ করতে দিবে না। তার মা অসুস্থ অথচ কোনো ডাক্তার দেখায় না। কারন ছেলের লেখাপড়ার খরচ অনেক। বাসা ভাড়া আছে। খাওয়া দাওয়া আছে। আমার মা হারুর মাকে বছরে দুই তিন বার অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে। হারুর মা তার ছেলের লেখাপড়া নিয়ে আমার সাথে অনেক আলাপ আলোচনা করে। আমি বলতাম, আপনার ছেলে লেখাপড়ায় খুব ভালো।
গতকাল সন্ধ্যায় হারু মারা যায়।
তার কোনো অসুখ বিসুখ ছিলো না। সে বাথরুমে যায়। স্ট্রোক করে। এবং মরে যায়। তরুন একটা ছেলে। তেইশ, চব্বিশ বয়স হবে। হারুর মা শোক দেখে এলাবাসী খুব কষ্ট পায়। একজন মায়ের শোক, মাতম কি জিনিস গতকাল দেখেছি। তার একমাত্র সন্তান। একমাত্র অবলম্বন। হারুর মৃত্যু আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। যন্ত্রনা দিয়েছে। সারারাত বারবার হারুর কথা মনে পড়েছে। আমি হারুর মৃত মুখ দেখিনি। কবর দিতেও যাই নি।
২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: হারুর মা এখন টাকা দিয়ে কি করবে?
২| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৪
ইসিয়াক বলেছেন: সরকার প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেয়। তার জন্য সম্ভবত সমাজ কল্যাণ অফিসে কার্ড করতে হয়। অনেকেই এটা জানে না।
হারুর জন্য মন খারাপ লাগছে। আমি অনেক খেয়াল করে দেখেছি বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী বাচ্চারা অকালে মারা যায়।
২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: এত সহজ?
৩| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৩৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ঈশ্বর খুবই পাষাণ সম একটি জিনিস।
ঈশ্বরের বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই গর্দভের মতো।
২৬ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আজ আপনার মাথা গরম।
৪| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:৫৩
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ভাল একটি দুঃখ খের গল্প।সত্যি হলে মর্মান্তিক।
২৭ শে মার্চ, ২০২১ রাত ২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী স্যতি।
৫| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:০১
কলাবাগান১ বলেছেন: তন্ন তন্ন করে সব পত্রিকা খুজে দেখলাম...ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ফিজিস্ক অনার্সের ছাত্রের মৃত্যুর খবর খুজে পেলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কোন ছাত্র এর মৃত্যু হলে পত্রিকায় খবর উঠে...। সহপাঠি রা ফেসবুকে লিখে...।
একটা ছবি দিয়ে সন্দেহ এর অবকাশ ঘটাবেন
২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: মাই ডিয়ার সব খবর পত্রিকায় আসে না।
পত্রিকায় কোন খবর গুলো গুরুত্ব পায় তা আমি জানি। আমি দীর্ঘদিন পত্রিকা অফিসে চাকরি করেছি।
আপনি যদি সত্যিই আগ্রহ প্রকাশ করেন তাহলে আমি হারুর মায়ের নাম ঠিকানা আপনাকে দিতে পারি।
৬| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৫৭
কলাবাগান১ বলেছেন: আপনার কাছে ছবি চাইছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিস্কের অনার্সের ছাত্র এর মৃত্যুতে বিভাগ কোন শোক প্রকাশ করবে না তা তো হয় না। আপনার ছবি পেলে সেই ব্যবস্হা জানানোর অনুরোধ করব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিজিস্ক বিভাগ কে
২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপাতত করোনার মধ্যে সব বন্ধ।
তাছাড়া আমি মনে করি হারু যেহেতু মরেই গেছে, এখন আর এসব করে লাভ কি?
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:০৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেহের সমস্যা হয়তো তার ষ্ট্রোকের কারণ; ওর মা যেন সরকারী সাহায্য পায়, সেই দিকটা দেখুন।