নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের শাহেদ জামাল (সাতাশ)

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:১৩



আজকের পর্বঃ শাহেদ জামালের সাথে নীলার যেভাবে পরিচয় হলো।

সাত বছর আগের কথা।
শাহেদ জামাল ফুলার রোড ধরে হাঁটছিলো। তার পকেটে অল্প কিছু টাকা আছে। বেকারদের পকেটে সব সময় অল্প টাকাই থাকে। অবশ্য শাহেদ জামালকে পুরোপুরি বেকার বলা ঠিক না। সে দুটা টিউশনি করে। একটা জসিমউদ্দিন রোড, আরেকটা বাড্ডা। বাইরে কাজ না থাকলেও শাহেদ জামাল রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। কারন বেকার মানুষ বাসায় সারাদিন শুয়ে বসে থাকলে বাসার লোকজন চোখ ঘুরিয়ে তাকায়। কারো চোখ ঘুরানো শাহেদ জামালের ভালো লাগে না। এজন্য সে এই দুপুর রোদে রাস্তায় হাঁটছে একাএকা। ঢাকা শহরের রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে তার মন্দ লাগে না।

দুপুর দুইটা বাজে। কড়া রোদ উঠেছে।
তাল পাকা রোদ। এই গরমে শুধু তাল না আম-কাঠালও পেকে যায়। চারিদিকে কাঁচের মতোন স্বচ্ছ রোদ। শাহেদ জামালের শার্ট অনেকখানি ঘামে ভিজে গেছে। শাহেদ জামালের ইচ্ছা করছে একটা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকতে। রোদটা সহ্য হচ্ছে না। এক গ্লাস লেবুর শরবত হলে ভালো হতো। সুন্দর একটা আসমানী রঙ্গের শাড়ি পরা এবং কাঁচের চুরী পরা একটা কোমল হাত তাকে লেবুর শরবত এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে দিবে। লেবুর শরবতের গ্লাসে চারটা বরফ ভাসবে। না, শাহেদ জামালের এরকম কেউ নেই। তার পোড়া কপাল। ভার্সিটি লাইফে শাহেদ দেখেছে সবার গার্ল ফ্রেন্ড আছে। শুধু তার নাই। অবশ্য এজন্য আফসোস হয়নি কখনও।

নীলার মেজাজ আজ খুব খারাপ।
সে নীলক্ষেত এসেছিলো একটা বই কিনতে। বইটা কিনেছে এবং কিনে হারিয়ে ফেলেছে। সে এই রোদের মধ্যে হেঁটে হেঁটে ফুলার রোডের দিকে যাচ্ছে। শাড়ি পরে হাঁটতে তার কষ্ট হচ্ছে। ফুলার রোডে তার কোনো কাজ নেই। নীলার রাগ হলে সে এলোমেলো হাঁটে। হাটলে তার রাগ কমে। দুপুর বলেই রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা ফাঁকা। আরামে হাঁটা যাচ্ছে কিন্তু রোদে বেশ কষ্ট হচ্ছে। রোদটা যেন গায়ে তীরের মতো এসে বিঁধছে। নীলার কপাল ঘামে ভেজা। তবু সে শাড়ির আচল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে নিচ্ছে না। তার গলা শুকিয়ে কাঠ। এক গ্রাস ঠান্ডা পানি পেলে ভালো হতো। অন্যদিন ব্যাগে পানিত বোতল থাকে, আজ নেই।

এক লোক আখের রস বিক্রি করছে।
নীলা বলল, আমাকে এক গ্লাস আখের রস দাও। বরফ পরিস্কার তো? রস বিক্রেতা বলল, খুব পরিস্কার ম্যাডাম। নীলা বলল, গ্লাস ভালো করে ধুয়ে দিবে। বিক্রেতা বলল, অবশ্যই ম্যাডাম অবশ্যই। শাহেদ জামাল দেখলো একটা মেয়ে আখের রস খাচ্ছে। মেয়েটা বেশ সুন্দর। চোখে মুখে দারুন মায়া। চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। আসমানী রঙ্গের শাড়ি পরা। দুই হাত ভরতি কাঁচের চুড়ি। নীলা এক নিঃশ্বাসে সবটুকু রস খেয়ে নিলো। শাহেদ জামালের ধারনা এত সুন্দর করে দুনিয়ার কোনো মেয়ে আখের রস খেতে পারবে না। নীলা বিক্রেতাকে বলল, প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো। খুব তৃষ্ণা পেয়েছিলো। আরেক গ্লাস দিন।

নীলা আখের রসের গ্লাসটা শাহেদের দিকে এগিয়ে দিলো।
বলল, খেয়ে নিন। ভালো লাগবে। শাহেদ দেখলো, গ্লাসে চারটা বরফ ভাসছে। বিক্রেতা এক চিমটি লেবুর রসও দিয়ে দিয়েছে। শাহেদ এক চুমুকে পুরো গ্লাস খালি করে ফেলল। নীলা বলল, আপনাকে দেখে মায়া লাগলো। ঘেমে গেছেন। আমার গ্লাসের দিকে এক আকাশ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন। হয়তো আপনার কাছে টাকা নেই। শাহেদ জামাল হেসে ফেললো। সহজ সরল সুন্দর হাসি। হাসি দেখে নীলার মনে হলো- ছেলেটা সহজ সরল এবং ভালো। দুষ্টলোকদের হাসির মধ্যেও কুটিলতা ফুটে ওঠে। এই ছেলের হাসির মধ্যে কুটিলতা-জটিলতা ফুটে ওঠে নি। শাহেদ বলল, আমি আপনাকে আপনার বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারি? নীলা বলল, ওকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সরল বর্ননা,আর একটু হুমায়ুনী ধারা আনতে হবে যাতে আকর্ষণীয় হয়।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী চেষ্টা অব্যহত আছে।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শাহেদ জামালের পুরা নাম কি শাহেদ জামাল খান?

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: না।
শুধু শাহেদ জামাল। আসলে শাহেদ আমার বন্ধু। খুব ভালো বন্ধু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.