নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছিনতাই/ ছিনতাইকারী

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪২



১। আমি রমনা পার্ক থেকে বেরিয়েছি।
মৎসভবন দিয়ে হেঁটে শান্তিনগর আসবো। তখন সন্ধ্যা ঘনায়মান। রাস্তাটা বেশ ফাঁকা এবং অন্ধকার। কারন রাস্তায় লাইট নেই। এমন কি কোনো দোকানপাটও নেই। আমি অনেক বছর আগের কথা বলছি। যাই হোক, রাস্তা পার হয়েই দেখলাম- রিকশায় করে স্বামী-স্ত্রী যাচ্ছে। চারজন ছিনতাইকারী রিকশা থামিয়েছে। তাদের হাতে নানান রকম দেশীয় অস্ত্র। স্ত্রীলোকটি সমানে চিৎকার দিচ্ছে। কান্না করছে। স্বামী বেচারা ভয়ে থতমতো খেয়ে গেছে। রাস্তায় পথচারী বলতে আমি একা।
আমি আজন্ম ভীতু মানুষ। তবুও অসহায় স্ত্রী লোকটির কান্না দেখে খুব খারাপ লাগলো। খুব সাহস করে সামনে এগিয়ে গিয়ে ছিনতাইকারীদের বললাম, প্লীজ এরকম করবেন না। ওদের ছেড়ে দিন। এই কথা শেষ হওয়ার আগেই একজন ছিনতাই কারী আমাকে কুৎসিত একটা গালি দিয়েই তাঁর হাতে থাকা ছুরিটা দিয়ে আমাকে একটা কোপ দিলো। আমি কিছুটা দূরে সরে গেলাম, পুরোপুরি কোপ লাগলো না। তবু আমার ডান হাতের বাহুতে লেগে গেলো। সামান্য কেটে গেলো।

২। আব্বা আর আমি রিকশায়।
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বাসায় ফিরছি। কমলাপুর থেকে একটু সামনে আসতেই তিনজন ছিনতাইকারী আমাদের ঘিরে ধরলো। তখন রাত প্রায় ন'টা। এই রাস্তাটা সন্ধ্যার পর থেকেই সব সময় নিরিবিলি। এবং রাস্তার দুই পাশে ৬ নম্বর বাস পার্কিং করে রাখে। বাসের কারনে রাস্তা থেকে ফুটপাত পর্যন্ত দেখা যায় না। এতে বোধকরি, ছিনতাইকারীদের কিছুটা সুবিধা হয়। যাই হোক, আমাদের রিকশাওলা রিকশা থামিয়ে বিশ হাত দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো অসহায়ের মতোন। যার হাতে পিস্তল ছিলো সে বলল- হাউকাউ করে লাভ নাই। যা আছে ভদ্রভাবে দিয়ে দিন। আব্বা সব দিয়ে দিলো। সব মিলিয়ে এক মিনিটও লাগলো। ঘটনা ঘটে গেলো। এই রাস্তায় খুব ছিনতাই হয়। কিন্তু কখনও পুলিশ চেকপোষ্ট বসায় না।
কমলাপুরের এই রাস্তায় ঈদের আগের দিন সারারাত ছিনতাই হয়। কারন বহু লোক ট্রেনে করে ঢাকা ছাড়ে। নানান রকম দরিদ্র মানুষ, শ্রমিক এবং নানান শ্রেণী পেশার মানুষ এই পথ দিয়েই কমলাপুর যায়। ঈদের সময় বলে সাথে কিছু টাকা পয়সাও থাকে সবার সাথে। ছিনতাইকারীরা তা ভালো করেই জানে। একরাতেই প্রায় ৫০/৬০ টা ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে অতীতে এই রাস্তায় ঘটেছে।

৩। আমি বিজয়নগর থেকে বাসায় ফিরছি।
রিকশায় আমি একা। রাত আট টা বাজে। রাস্তায় বেশ গাড়ি, বাস আর রিকশা চলছে। কর্নফুলি মার্কেটের কাছে আসতেই আমার রিকশার দুই পাশ থেকে দুটো রিকশা আমাকে ঘিরে ধরলো। ছিনতাইকারী একটা পিস্তল বের করলো। আমার সাথে একটা দামী মোবাইল। এবং নগদ বিশ হাজার টাকা। আমি রিকশা থেকে নেমেই জীবন হাতে নিয়ে এক দৌড় দিলাম। বুদ্ধি করে আঁকা বাঁকা দৌড় দিলাম। যেন গুলি করলে আমার গায়ে গুলি না লাগে। প্রায় একমিনিট দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হয়ে এস এ পরিবহনের ভিতরে ঢুকে গেলাম। বুদ্ধির জোরে বেঁচে গেলাম। দৌড় না দিলে আমার টাকা আর মোবাইল যেত। সাহস করে দোড় দিয়ে দিলাম। আমার বিশ্বাস ছিলো ওরা গুলি করবে না। এতটা সাহস ওদের হবে না।

৪। আমি আর হাসি আপা রিকশায়।
হাসি আপা আমার খালাতো বোন। উনি একটা এনজিও'তে চাকরি করেন, সাভার। আমরা বাংলামটরের সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে খেয়ে বাসায় ফিরছি সিএনজি'তে করে। তখন সিএনজিতে দরজা ছিলো না। আমাদের সিএনজি রাজারবাগ মোড়ে আসতেই একটা প্রাইভেটকার থেকে এক লোক মাথা বের করে হাসি আপার গলা থেকে চেনটা টান দিয়ে মুহুর্তের মধ্যে নিয়ে গেলো। ঘটনা এত দ্রুত ঘটলো যে আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না। ঘটনা ঘটার পর হাসি আপা খুব হাসছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপা হাসছেন কেন? আপা বললেন, এটা সোনার চেন না। এমিটেশন। যদি এটা সোনার চেন হতো- তাহলে বিয়ে বাড়ি থেকে এই চেন গলায় পরে আসতাম না। ব্যাগে ভরে নিয়ে আসতাম। আমি কি এত বোকা নাকি!

# ছিনতাই হয়। চারিপাশে প্রচুর ছিনতাই হয়।
ছিনতাইকারীরা ছিনতাই এর ধরন বদলে ফেলেছে। দুনিয়া যেমন আধুনিক হয়েছে, ছিনতাইকারীরাও তাদের ছিনতাই এর ধরন বদলে ফেলেছে। তবে আমার দুঃখ লাগে ঢাকা শহরের যে জায়গা গুলোতে ছিনতাই হয় সেখানে পুলিশ কখনও কোনো চেকপোষ্ট বসায় না। অন্য জাগায় বসায়। আজিব! আর সাধারণ মানুষদের হয়রানি করে। মালিবাগ, মৌচাক এলাকায় প্রতিদিন ছোটছোট পোলাপান রিকশায় থাকা নারীদের কাছ থেকে গলার চেন, মোবাইল আর হাতে থাকা ব্যাগ নিয়ে মুহুর্তের মধ্যে ভেনিশ হয়ে যায়। রোজ এই ঘটনা ঘটছে। রোজ। ফার্মগেট, কাওরানবাজার, মিরপুর দশ নম্বর, মিরপুর এক নম্বর, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ি, গাবতলী, মহাখালি ইত্যাদি এলাকায় রোজ এরকম ঘটনা ঘটছেই। তাই সাবধান থাকতে হবে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:




করোনায় অনেক ফুটপাথ ব্যবসায়ী সব হারায়েছে, এখন ছিনতাই বেড়েছে?

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছুই বেড়েছে।
ঢাকায় শুধু বাড়ে। হাসপাতালে রোগী বাড়ে, মসজিদ-মাদ্রাসা বাড়ে, নব্যধনীদের সংখ্যা বাড়ে, দুষ্টলোকজন বাড়ে।

২| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: ৩ নং এসে আমার মন খিলখিল করে আমাকে হাসিয়েছে। সাহসীকতার জোরে আপনি বেচে গেছেন। পুরো কমলাপুর রেল স্টেশনটি নিরাপদ এবং পথশিশু মুক্ত করা দরকার।

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা খারাপ শহর। খারাপ শহরে খারাপ মানুষই বেশী থাকে।

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সেই ১৯৭৬ সাল থেকে ঢাকায় আছি
আজ পর্যন্ত কোন ছিনতাই কারীর পাল্লায়
পড়িনাই। তবে একবা ফকিরা পুলের কাছে
এক পকেটমার আমার হাতঘড়িটি হাপুস
করে দিয়ে ছিলো। আমি টেরই পেলামনা
কির করে এমন সুক্ষ্ম ভাবে কাজটি সম্পন্ন
করলো।

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২০

রাজীব নুর বলেছেন: হুম। আপনি ভাগ্যবান।

৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪

মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন:


হাসি আপা যেভাবে ছিনতাইকারীকে বোকা বানিয়ে দিলেন আমারও দারুণ হাসি পাচ্ছে। তবে হাসি আপা দারুণ বাঁচা বেঁচে গেছেন। ছিনতাইকারী যদি গলার চেইন টান না দিয়ে কানের দুল টান দিত তাহলে দুলের সাথে সাথে কানটা ও ফ্রী চলে যেত। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। আমার বড় আপার ও কাকিমার এরকমটি হয়ে ছিল।

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৫৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এজিবি কলোনির ডি টাইপের বাসায় ছিলাম বহুদিন।কতো যে ছিনতাই দেখেছি তার কোন হিসাব নেই।কলোনির ছেলেরাই করতো সাথে শাহজাহান পুরের কিছুছেলে থাকতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.