নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেদুইনদের কথা

২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:২৫



আমরা যারা এযুগে জন্মেছি, তারা ভাগ্যবান।
সত্যিই ভাগ্যবান। হিন্দু, মুসলিম, ক্রিস্টিয়ান- এই তিনটি ধর্ম এখন পৃথিবিতে চলছে। পৃথিবীর শেষ সময় কেমন হবে সেটাও একই রকম ভাবে লেখা আছে। শুধু মাত্র ভাষার পার্থক্য কিন্তু মূল বিষয় বস্তু একই। আল্লাহ, ভগবান এই পৃথিবিতে কখনো কোনো ধর্ম প্রচার করতে আসেনি। মনে করুন, আপনার সামনে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। সে হাতে হ্যান্ডমাইক নিয়ে নিজেকে স্প্রাইডারম্যান বলে দাবি করছে। এখন কি আপনি তার কথাটাই বিশ্বাস করে ফেলবেন নাকি তাকে বলবেন, 'ভাইজান একটু এক বিল্ডিং থেকে আরেক বিল্ডিং এ গিয়ে লাফালাফি করে দেখান। কোনটা আসমানী কিতাব তা খুঁজে বের করার প্রসেসটাও অনেকটা একইরকম। প্রত্যেকটা কিতাব পড়ে দেখবেন কোনটার কথা যৌক্তিক, কোনটার কথা সত্য, কোনটায় কোনো ভুল নেই। সিম্পল।

ইসলাম আবির্ভাব ও বিস্তারের কেন্দ্রভূমি হলো আরব তথা মধ্যপ্রাচ্য।
আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত শুষ্ক, মরুভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলপ্রধান এ দেশগুলো হলো ইরান, ইরাক, বাহরাইন, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, ওমান, ফিলিস্তিন, ইসরায়েল, কাতার, ইয়েমেন, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। সভ্যতার শুরু থেকে আজ অবধি বহমান বিশ্ব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই মধ্যপ্রাচ্য।

সাত শতক থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিমরা নতুন শক্তি হিসেবে বাইজেন্টাইন রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্য দখল করে। ১১ শতকে মধ্য এশিয়ার তুর্কিরা বর্তমান ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন জয় করলে মুসলিমদের কর্তৃত্ব শেষ হয়ে যায়। এ সময় মধ্যপ্রাচ্য দখলে নামে ইউরোপীয়রা। তাদের প্রিয় বস্তু ছিল তিনটি- মদ, নারী ও যুদ্ধ। গোত্রে গোত্রে, পরিবারে পরিবারে একবার যুদ্ধ বেধে গেলে কয়েক পুরুষ পর্যন্ত চলত। বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য অনেক সময় রক্তের স্রোত প্রবাহে আনন্দ লাভ করত। মানসিকভাবে জাহেলিয়াত যুগের আরবগণ লোভী মানুষের পূর্ণাঙ্গ উপমা ছিল। জাহেলী যুগের আরবরা বিশ্বাস করত যে, রক্ত ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে রক্তকে ধুয়ে সাফ করা যায় না।

ইসলাম পূর্ব আরবে নারীরা ছিল পুরুষের একান্ত বাধ্যগত দাসী।
সামাজিকভাবে ছিল না তাদের কোন মর্যাদা। সমাজে তাদের মতামত প্রদানের কোন সুযোগ প্রদান করা হত না। জাহেলিয়াতের ঘোর অমানিশায় নিমজ্জিত তৎকালীন আরব সমাজ। শহর গ্রাম সর্বত্রই জাহেলিয়াতের চিহৃ। আরব গোত্রপতি, ধনী সওদাগর ও সাধারণ লোকজন নিজেদের ব্যবসায় ও গৃহস্থ কাজে নিয়োগ করত দাস দাসীদের। এরা ছিল তাদের পণ্যসামগ্রী।
মুনিবগণ তাদের নিজ দায়িত্বে থাকা দাসীদের সাথে যৌন-কাজ করতে পারত যখন তখন। এতে কোন বিবাহের প্রয়োজন হত না। এই সূত্রে জন্মগত সন্তানাদিদেরকে মুনিবগণ প্রাথমিক জাহিলি যুগে চাইলে নিজেদের সন্তান হিসেবে রাখত, কখনো কেউ দাস দাসীদের সাথে বিক্রিও করে দিত। যে সব এলাকায় স্ত্রীদেরে ঘরে রেখে পুরুষেরা কিছুদিনের জন্য ফসলাদি ফলাতে অথবা যুদ্ধের উদ্দেশ্যে যারা বেরিয়ে যেত, সেখানে তাদের ঘরে অনেক সময় চলত প্রেমলীলা। তাদের ফেলে যাওয়া নারীদেরকে বলা হত, 'মুগাইইয়াবাত আলাইহিন্নাহ'। মদিনায় এটা বেশী হত। মদিনার নারীরা মক্কার চেয়ে অধিক স্বাধীনচেতা ছিল।

আরব বেদুইনরা রক্তপাত, খুন-খারাবি, লুটতরাজ ও দস্যুবৃত্তিতে এতটা অভ্যস্ত ছিল যে, পরস্পর গর্ব-অহংকার করার সময় তারা অন্যদের ধন-সম্পদ লুণ্ঠনকে তাদের অন্যতম গর্ব ও অহংকারের বিষয় বলে গণ্য করত। 'বেদুঈন' শব্দের অর্থ মরুভূমির মানুষ। বেদুঈন শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ 'বেদু' থেকে। বেদুঈনরা ছিলো মূলত প্যাগান বা প্রকৃতি পূজারি। প্রাচীন নানা ধর্মের ন্যায় তারা মূর্তিপূজা করতো। বেদুঈনদের খাদ্যতালিকা খুবই সাধারণ। বলতে গেলে খেজুরই তাদের সারা বছরের খাদ্য। এমনও সময় যায় যখন বেদুঈনরা সারা মাস শুধু খেজুর খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছে। তারা নিজেরা খেজুরের চাষ করে, খেজুর গুলো রোদে শুকিয়ে শীতকালে খাওয়ার জন্য সংরক্ষণ করা হয়। বেদুঈনরা বেশ কলহপ্রবণ বলে পরিচিত। মরুভূমির চরম প্রতিকূল পরিবেশ তাদের চিত্তকে সেভাবেই গড়ে তুলেছে। আগেকার দিনে এক গোত্র আরেক গোত্রকে আক্রমণ করতো পানীয় জলের উৎস, যেমন কুয়া বা জলাধারের দখল নিতে। এছাড়া পালিত পশুদের জন্য চারণভূমির দখল নিতেও যুদ্ধ হতো।

বেদুইনরা কখনো মন ও মাটির মায়ায় আবদ্ধ হয় না।
তারা জীবনধারণের জন্য যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় স্থান হতে স্থানান্তরে, এক চারণ ভূমি হতে আরেক চারণ ভূমিতে। বেদুইনরা খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ সাল থেকে যাযাবর বৃত্তি, কৃষিকাজ এবং কখনও কখনও সিরিয়ার প্রান্তরে মাছ ধরে জীবনযাপন করত। খ্রিস্টপূর্ব ৮৫০ সালের মধ্যে তারা একটি মিশ্রিত নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত করে।
দুষ্ট আরবীয়রা জীবিত উটের পিঠ থেকে মাংস কেটে নিতো এবং দুম্বার রান থেকে চর্বিযুক্ত মাংস কেটে কেটে কাবাব তৈরি করত। যুদ্ধে বন্দিনী গর্ভবতী নারীর পেট ফেঁড়ে সন্তান বের করে হত্যা করত। যুদ্ধে নিহত শত্রুর নাক, কান, গলা ইত্যাদি কেটে লাশকে বিকৃত করত। ন্যায়-অন্যায় বোধ লুপ্ত হয়ে যাওয়ায় সমাজে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে ব্যাভিচার। সামাজিক ও রাজনৈতিক এই অধঃপতন আরবদেরকে সারা বিশ্বের সবচাইতে অবহেলিত, অবজ্ঞাত, উপেক্ষিত ও ঘৃণ্য জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেছিল। এসব অবস্থা দেখে আল্লাহ আরবদের সঠিক পথে আনার জন্য মোহাম্মদকে দুনিয়াতে পাঠান। মোহাম্মদ আল্লাহকে নিরাশ করেন নি।

তৎকালীন আরব সমাজে নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছুই ছিল না।
হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, দাম্ভিকতা, অপচয়, মারামারি, লুটপাট, রাজহানী, ইত্যাদি অন্যায় অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজকে একেবারে কলুষিত করে ফেলেছিল। সমগ্র আরবে পূর্ণ অরাজকতা বিরাজমান ছিল যুগের পয় যুগ। সারা আরব দৌরাত্ম্য অসভ্যতার লীলা ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। ব্যাপকভাবে সর্বত্র অত্যাচার, অনাচার, ব্যভিচার, চুরি, ডাকাতি, আত্মকলহ, হত্যা, রক্তপাত ও প্রতিহত ভাবে চলতে থাকতো। হযরত আদম (আ.) হতে মুহাম্মদের নবুওয়াত প্রাপ্তি পর্যন্ত দীর্ঘ সময়কেই অন্ধকার যুগ বলা যেতে পারে। নবীজি এসে তাঁর মেধা, ভালোত্ব, মহত্ব, ভালো কথা, শাসন আর অলৌকিকতা দিয়ে পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে নিয়ে নেন। সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে দুষ্ট আরবদের লাইনে আনেন। নিয়মের মধ্যে আনেন। এজন্য নবীজিকে সীমাহীন পরিশ্রম করতে হয়েছে।

(তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.