নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেকনাফ

২১ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৩৯



একবার টেকনাফ গিয়েছিলাম।
কোনো কাজে না এমনি গিয়েছিলাম ঘুরে বেড়তে। ইচ্ছা ছিলো সাইকেলে করে টেকনাফ যাবো। শেষ মুহুর্তে সিদ্ধান্ত বদলেছি। টেকনাফের উদ্দ্যেশ্য আরামবাগ বাস কাউন্টারে বসে আছি আমি। বাস ছাড়বে রাত এগারোটায়। আমার বন্ধু আসবে রাব্বি। রাব্বি বাড্ডা থাকে। দুজন একসাথে যাবো। সব মিলিয়ে তিন দিন থাকবো টেকনাফ। কিন্তু শেষ মুহুর্তে আমার বন্ধু রাব্বি আর আসে নি। রাব্বির উপর আমার খুব রাগ লাগলো। শেষে আমি একাই গেলাম। একাএকা ঘুরে বেড়াতেও আমার খারাপ লাগে না। আমার অভ্যাস আছে। যখন যে অবস্থা, সেই অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে হয়।

যাই হোক, টেকনাফ গেলাম।
বাস থেকে নামলাম। জায়গাটার নাম সম্ভবত ইসলামবাগ হবে। সকালে হোটেলে নাস্তা খেলাম। টেকনাফে একটা মাজার আছে। সেই মাজারে অবশ্যই যাবো। মূলত সেই মাজার দেখতেই আমার টেকনাফ আসা। এলোমেলো ভাবে টেকনাফের পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে আমি ক্লান্ত। ভীষন ক্লান্ত। কারন প্রচুর রোদ উঠেছে। কড়া রোদ। চামড়া জ্বলছে। ঘড়িতে দেখলাম ৩৬ ডিগ্রী তাপমাত্রা। আমি ৩২ ডিগ্রী পর্যন্ত সহ্য করতে পারি। আমার গলা শুকিয়ে কাঠ। সাথে একটা পানির বোতল রাখা খুব দরকার ছিলো। আশেপাশে কোনো দোকান নেই যে একটা ঠান্ডা পানির বোতল কিনবো। এই মুহুর্তে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খুব দরকার আমার। তা না হলে এখন আমি মারা যাবো।

আশেপাশে কোনো বাড়ি ঘর দেখা যাচ্ছে না।
বাড়ি ঘর থাকলে এক গ্লাস পানি চেয়েই খেয়ে নিতাম। পানি চাইলে নিশ্চয়ই কেউ মানা করবে না। রাস্তাঘাট খালি, কেউ নেই আশেপাশে। এমন কি একটা কাকও নেই। আমি হাঁটছি। কোথায় যাচ্ছি- জানি না। আমার ভাগ্য ভালো- রাস্তায় শেষ মাথায় একটা মেয়েকে দেখতে পেলাম। মেয়েটাকে দেখে ভালো লাগলো। এখন নিশ্চয়ই এক গ্লাস পানি পাওয়া যাবে। পানির অভাবে মরতে হবে না। যাক বেঁচে গেলাম। মেয়েটা আমাকে দেখে অবাক। আমিও মেয়েটাকে দেখে অবাক। কারন আমরা দুজন দুজনকে চিনি। খুব ভালো করেই চিনি। ইচ্ছা করলো মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরি। মেয়েটার সাথে দেখা হবে এটা আমি কোনো দিনও ভাবি নাই। মেয়েটাকে দেখে আমার মনে হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান আমি।

মেয়েটার নাম সাদিয়া।
খুবই সুন্দর মেয়ে। আমরা একই স্কুলে পড়েছি। একই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এসএসসি পরীক্ষার পর সাদিয়াকে আর দেখিনি। বহু বছর পর টেকনাফে সাদিয়াকে দেখে আমি সাথে সাথে চিনে ফেলেছি। সাদিয়া বলল, তোমার অবস্থা তো খুব খারাপ। পুরো শার্ট ঘামে ভেজা! তাড়াতাড়ি বাসায় আসো। সাদিয়া পানি দিলো। আমি এক নিঃশ্বাসে আধা জগ পানি খেয়ে ফেলেলাম। সাদিয়া আর আমি মুখোমুখি বসা। মেয়েটা আগের চেয়েও বেশী সুন্দর হয়েছে। ক্লিউপেট্রার চেয়েও সাদিয়া বেশি সুন্দর। সাদিয়াকে দেখে মনে হলো- আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোনো পাপ তাকে স্পর্শ করেনি। সহজ সরল সুন্দর একটা মেয়ে। সাদিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে ম্যাজিকের মতো মন ভালো হয়ে যায়।

তিন দিনের জায়গায় সাত দিন থাকলাম।
সাদিয়া আমাকে পুরো টেকনাফ ঘুরে ঘুরে দেখালো। সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, ছেঁড়া দ্বীপ, তৈঙ্গা চূড়া, কালো রাজার সুড়ঙ্গ, মাথিনের কূপ আর টেকনাফ সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র সৈকতটা আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। সেদিন সাদিয়া নীল শাড়ি পড়েছিলো। কি যে সুন্দর লেগেছিলো সাদিয়াকে। তখন সুরভি'র সাথে আমার পরিচয় না থাকলে আমি সাদিয়ার হাতে পায়ে ধরে সাদিয়াকে বিয়ে করে ফেলতাম। সাদিয়া ডাক্তার। সরকারি ডাক্তার। সে তাঁর বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। এখনও সে বিয়ে করেনি। সাদিয়ার মা চিটাগাং থাকে। বাবা অনেক আগে মারা গেছে। সাদিয়ার কাছ থেকে টেকনাফ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।

ঈদের দিন সকালে সাদিয়া ফোন করেছিলো।
অনেক কথা হলো তাঁর সাথে। বললাম বিয়ে করো। আর কিছু দিন পর তো মাথার চুল সাদা হয়ে যাবে তোমার। সে বলল, মাথায় অলরেডি বেশ কয়েকটা সাদা চুল আছে। আমি অনুরোধ করে বললাম, সাদিয়া আর কত দিন একা একা থাকবে এবার বিয়ে করে ফেলো। সে বলল, তুমি বিয়ে না করলে আমি তোমাকে বিয়ে করতাম। এখন আর বিয়ে করার ইচ্ছা নাই। ইচ্ছাটাআ মরে গেছে। বয়সও নাই। একাই বেশ আছি। ভালো আছি। সুরভির সাথে সাদিয়ার কথা বলিয়ে দিলাম। সুরভি সাদিয়াকে বাসায় আসতে বলল। সাদিয়া কথা দিয়েছে- সে ঢাকায় এলে আমাদের বাসায় অবশ্যই আসবে। মিথ্যা বলব না, স্কুলে থাকতেই সাদিয়াকে আমার ভালো লাগতো।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:১০

রানার ব্লগ বলেছেন: কিলোপেট্রা মোটেও সুন্দুরী ছিলেন না তবে অসম্ভব বুদ্ধিমতী ছিলেন।

সাদিয়া ঢাকা আসলে তা কে পুরো ঢাকা ঘুরিয়ে দেখাবেন। রিটার্ন গিফট।

২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: সাদিয়া সারা জীবন ঢাকাতেই থেকেছে। গত তিন বছর ধরে সে চাকরির খাতিতে টেকনাফ পরে আছে।

২| ২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:১০

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:



একা ঘোরার অভ্যাস আমারো আছে। যখন বন্ধু বান্বব নিয়ে মেতে থাকতাম তখন ভাবতাম, একা হলে হয়তো দম বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন একাই ভালো লাগে, অবশ্য সম্পূর্ণ একা নয় সঙ্গি হিসেবে সিগারেট থাকে।
যাইহোক, শেষ লাইনের স্বীকারোক্তি কি শুধু ব্লগেই দিয়েছেন, নাকি সুরভী ভাবির কাছেও স্বীকারোক্তিটা দিয়েছেন?

২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: মনে মনে আমি সিগারেট ছাড়তে চেষ্টা করছি। পারছি না। প্রতিমাসে সিগারেটের পেছনে অনেক খরচ হচ্ছে।

কিছু কিছু কথা সুরভির কাছে খুব বুদ্ধি করে গোপন রাখি। বিয়ে করেন তখন বুঝবেন।

৩| ২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি আসলেই টেকনাফ গিয়েছিলেন?

২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা----
হ্যাঁ গিয়েছিলাম। আমি মিথ্যামিথ্যি লিখতে পারি না।

এবার আপনাকে একটা মজার কথা বলি- একটু আগে সাদিয়া আমাকে ফোন দিয়েছিলো। সে সামুতে আমার এই লেখা পড়েছে। লেখাপড়ে ফোন দিয়েছে।

৪| ২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: বেশ তো -সাদিয়ার সাথে কোন ছবি তুলেননি?? এটা আপনার মিস হবার কথা নয় :)

ক্লিউপেট্রা থেকে বেশি সুন্দরীকে দেখত ইচ্ছে করছে। এই মেয়ে কি আপনার জন্যই বিয়ে করেনি?

২১ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ ছবি তুলেছি। তাছাড়া স্কুল জীবনের কয়েকটা অনুষ্ঠানের ছবিও আছে।
সাদিয়ার ছবি সামুতে দেওয়া ঠিক হবে না।
সাদিয়া কেন বিয়ে করে নি, আমি জানি না। এখানে আমার কোনো ভূমিকা নেই।

৫| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:২৫

কামাল১৮ বলেছেন: আমি কোথাও বেড়ানোর জন্য বেড়াতে যাইনি,দরকারে গিয়েছি।বাসা থেকে হাটতে হাটতে রমনা পার্কে যেতাম এই পর্যন্ত।দরকারে অনেক যায়গায় গেছি।আমার কাছে এটাকে মনে হতো একটা অপচয়।

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: একেবারে অপচয় না। কিছুটা থেকে যায়।

৬| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, ছেঁড়া দ্বীপ, তৈঙ্গা চূড়া, কালো রাজার সুড়ঙ্গ, মাথিনের কূপ আর টেকনাফ সমুদ্র সৈকত।


শাহপরীর দ্বীপ চেষ্টা করে যেতে পারি নাই।
তৈঙ্গা চূড়ার কথা জানা নাই। একটু বিস্তারিত বলেন।
কালো রাজার সুড়ঙ্গ!! এটা মনে হয় কানা রাজার সুড়ঙ্গ হবে। কানা মানে অন্ধ বা এক চোখ নষ্ট।
টেকনাফ থেকে কানা রাজার সুড়ঙ্গ কি করে যেতে হয়?

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: সংরক্ষিত বন টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের সর্বোচ্চ চূড়া। এ চূড়াটি অত্যন্ত খাড়া ও টেকারদের জন্য আদর্শস্থানীয়। চূড়া থেকে বঙ্গোপসাগর, নাফ নদী, মায়ানমার সীমান্তের পাহাড়শ্রেণী এবং টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য এলাকার দৃশ্য অবলোকন করা যায়।
অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলাকা পরিদর্শনের সেরা সময়। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে পাহাড়ের গাছগাছিল মারা যাওয়ায় সব ফাঁকা হয়ে যায়। এছাড়াও ঝিরির জলধারা ক্ষীণ হয়ে যায়।

টেকনাফ থেকে উত্তর দিকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে এর অবস্থান।

৭| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৩৯

কামাল১৮ বলেছেন: আপনার টেকনাফ যাওয়া সফল।এমন ঘটনা কেন আমার জীবনে ঘটেনা।যাদের হারিয়েছি তাদের সাথে আর দেখা হলোনা।

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: যাদের হারিয়েছেন, তাদের দেখা পেতে চাইলে ফেসবুকে আসুন।

৮| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৪৯

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: অহেতুক ভেজাল কান্ধে নিচ্ছেন! হা হা হা

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: বুদ্ধি দিয়ে ছোটখাটো সমস্যার সমাধান অতি সহজেই করা যায়।

৯| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১:১৪

আমি রানা বলেছেন: টেকনাফ যাবো। আপনার বলা জায়গা গুলো নোট করে রেখেছি। আর নীলা এখন টেকনাফ চাকরী করে, আমাকে যেতে বলেছে।

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।

১০| ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:১০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আমি টেকনাফে গিয়ে থানার ভেতর গিয়ে মাথিনের কুপ দেখেছি প্রথমে।
তারপর অন্যসব।

২৩ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ওখেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.