নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আব্বাকে নিয়ে কিছু স্মৃতি

১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৫



১। আব্বা তার ভাই বোনদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন।
আব্বা তার ভাইবোনদের সব সময় খোজ খবর রেখেছেন। যার যা প্রয়োজন আজীবন দিয়ে গেছেন। আব্বার ভাই বোনের সংখ্যা অনেক। সব মিলিয়ে এগারো জন। আমার দুই চাচা বউ বাচ্চা নিয়ে গ্রামে থাকেন। তাঁরা কিছুই করেন না। আব্বা চাচাদের সংসার টানতেন। দাদা দাদীর খুব খেয়াল রাখতেন। একটা বিষয় আমার খুব ভালো লাগতো আমার চাচা ফুপুরা কখনও আব্বার অনুমতি ছাড়া কিছু করতো না। আব্বাকে খুব সম্মান, শ্রদ্ধা করতো। চাচা ফুপুরা কিছু করার আগে আব্বার পরামর্শ নিয়ে নিতো।

২। ১৬ ডিসেম্বর রাতের কথা।
তখন আমি অনেক ছোট। ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে টিএন্ডটি কলোনী মাঠে কর্নসাট হচ্ছিলো। আমি সেই কনসার্টে যাই। আব্বা রাতে বাসায় ফিরে দেখেন আমি বাসায় নাই। রাত তখন বারোটা। আব্বা জানেন না আমি কোথায় গান শুনতে গিয়েছি। কিভাবে কিভাবে যেন আব্বা আমাকে খুঁজে বের করে ফেললো! বলল, প্রচন্ড শীত! তোমার তো ঠান্ডা লেগে যাবে। চলো বাসায়। চলো। আমি বললাম, তুমি জানলে কি করে আমি এখানে। তাছাড়া বিশাল মাঠ। হাজার হাজার মানুষ। এত মানুষে মধ্যে আমাকে খুঁজে বের করলে কি করে? আব্বা বলল, বাপদের অনেক কিছু জানতে হয়। বুঝতে হয়।

৩। একবার আমি দাঁত ব্যথায় বিধ্বস্ত।
ঘরোয়া চিকিৎসায় কোনো উপকার পাই নি। গাল ফুলে আলু হয়ে আছে। রাতে আব্বা বাসায় এসে আমার অবস্থা দেখে অবাক! আব্বা বলল, চল ডাক্তারের কাছে যাই। মা বলল এখন বাজে রাত ১১ টা। এত রাতে ডাক্তারখানা খোলা পাবে না। আব্বা বলল, ছেলে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে, একটা কিছু তো করতে হবে। রাত ১১ টায় বের হলাম। নীচতলায় ফার্মেসী খোলা কিন্তু দোতলায় দাঁতের ডাক্তার নেই। আব্বা ফার্মেসী থেকে ডাক্তারের ঠিকানা নিয়ে নিলো। ডাক্তারের বাসায় গেলাম। তখন রাত বারোটা। ডাক্তার ঘুমাতে যাচ্ছিলেন। আব্বা বলল, আমার ছেলে দাঁত ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ব্যথা নাই করার ব্যবস্থা নিন।

৪। আমাকে নিয়ে আব্বার চিন্তা খুব বেশি ছিলো।
একবার আমাদের সমস্ত আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব মিলে সুন্দরবন গিয়েছিলাম। বিশাল এক তিনতলা লঞ্চ ভাড়া নিয়ে। বঙ্গোপসাগরে আমাদের লঞ্চ। প্রচন্ড শীত। এত শীত যে হাতের ও পায়ের আঙুল ঠান্ডার কারনে বাঁকা হয়ে যায়। টেনে সোজা করতে হয়- এমন অবস্থা! তখন মধ্যরাত। যে যার কেবিনে। কেউ লেপ গায়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে। কেউ তাস খেলছে। কেউ মদ্যপান করছে। আমার ঘুম আসছিলো না। আমি হাঁটতে বের হয়েছিলাম। তখন দেখলাম একটা কেবিনের দরজা খোলা। সেখানে গিয়ে দেখি তাঁরা মদ খাচ্ছে। আমাকে বলল, খাও। তাহলে শীত কম লাগবে। আমি মদ খেলাম। লঞ্চের ছাদে গেলাম। বঙ্গোপসাগরে দিকে তাকিয়ে আছি। আমার খুব ভালো লাগছিলো। হঠাত পা পিছলে পড়ে যাচ্ছিলাম সাগরে। ঠিক এমন সময় আব্বা এসে আমার হাত ধরে ফেলে।

৫। আব্বার হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিলো।
দেখলে মনে হবে কম্পিউটার কম্পজ। আব্বা সব সময় টিপটপ থাকতো। জামা জুতো, খাওয়াদাওয়া, হাতঘড়ি, গাড়ি, পারফিউম নিয়ে আব্বা খুব বিলাসিতা করতো। বাসায় পড়া লুঙ্গিটা পর্যন্ত দোকান থেকে আয়রন করে আনতো। আর আমার স্বভাব ছিলো এলোমেলো। অগোছালো। প্রায়ই আব্বা পকেট থেকে চিরুনি বের করে বলতো চুল আচড়ে নে। আব্বা কোনো দিন তার কোনো সমস্যার কথা আমাকে বলে নি। এমন কি তার শরীর খারাপ হলেও বলে নি। টাকা চাইলে কোনো দিন মানা করতো না। পাঁচ শ' টাকা চাইলে এক হাজার টাকা দিতো। আব্বা কেনাকাটা করলে কখনও কোনো কিছুর দাম জিজ্ঞেস করতো না। এই অভ্যাসটা আমার আছে। আমিও কেনাকাটা করার সময় দাম জিজ্ঞেস করিই না। শুধু বলি- ভালো জিনিসটা দাও।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বাবারা এরকমী হয় আমি কিছু বুঝতে পারছেন রাজীব দা আপনার মেয়েটাও দিনে দিনে বড় হচ্ছে
আপনার বাবার জন্যে অনেক দোয়া রইল-----------

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ কবি। ভালো থাকুন।

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার বাবার অল্প বয়েসের চেহারা সাথে সম্ভবতো আপনার চেহারার কিছু মিল ছিলো।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ আব্বার সাথে আমার চেহারার খুব মিল।
আবার আমার কন্যার সাথে আমার চেহারার খুব মিল।

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার বাবা পরিবার চালানোর মতো আয় করতে পেরেছিলেন; এখন কোটী পিতা কোনভাবে পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর মতো আয় করতে পারছেন না।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: আব্বা অনেক পরিশ্রম করতেন।

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫০

নাহল তরকারি বলেছেন: সুন্দর।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:



ব্লগার 'নাহল তরকারি' তরকারী মনে হয় বিয়ে করেছেন, কিন্তু চাকুরী নেই! শেখ হাসিনার ১৪ গোষ্ঠীর সবাই শুধু বিশাল বিশাল বেতনে চাকুরী করে।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ তাঁরা ভালো আছে। তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজনও ভালো আছে।

৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৬

জুল ভার্ন বলেছেন: বাবা মানেই এমন আবেগ.....

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ।

৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৩৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বাবারা এমনই হয়।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমারও আমার বাবার মতো হতে হবে।

৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৭

তোমার দখিনা হাওয়া বলেছেন: বাবার তোলনা
যেমন একদিকে দুনিয়া
আরেক দিকে বাবা তবু বাবার ওজন বেশি হবে

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী হ্যাঁ।

৯| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: বাবা যত ব্যস্ত থাকে না কেন উনার স্মরণে সবসময় আপনি ছিলেন সম্ভবত।


স্মৃতিচারন পাঠে ভালোলাগা।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০২

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১০| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪২

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: খুব দুঃখের ব্যাপার কি জানেন, বাবারা হারিয়ে গেলেই তাদের ভালবাসা বুঝা যায়। বেঁচে থাকতে উনারা ভালবাসা পান না। আপনার ক্ষেত্রে আমার ক্ষেত্রেও তাই হবে।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০২

রাজীব নুর বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন।

১১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬

এস সুলতানা বলেছেন: বাবারা এমনই হয়।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৩

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: বাবার স্মরনে সুন্দর লেখা

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.