নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৬৩

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৫১

ছবিঃ আমার তোলা।

আবু বকব এঁর বয়স ৩৬ হবে।
মুখে ভরতি দাঁড়ি। কথায় কথায় আল্লাহু আকবার। মাশাল্লা। আলহামদুল্লাহ বলে। আমাদের এলাকায় থাকে। বিয়ে করেছে। কিন্তু বউ এঁর সাথে আপাতত তার কোনো যোগাযোগ নাই। অবশ্য বিয়ের পর বউকে তার বাসায় আনতে পারেনি। আনি আনি করে করে আর আনা হয়নি। আসলে আবু বকর বেকার। সে থাকে তার বোনের সাথে। এমনকি তার বাপ মা-ও মেয়ের সাথে থাকে। বউকে কোনো খরচপাতি দিতে পারে না আবু বকর। সপ্তাহে দুই দিন গিয়ে বউ এঁর সাথে থাকতো। এভাবে দুই বছর চলল। তাদের একটা সন্তান হলো। আবু বকর এতটাই দরিদ্র যে সন্তানের কোনো খরচও দিতে পারে না। বরং বড় বড় কথা বলে। একদিন আবু বকরের বউ রাগ করে বলল, তোমার সাথে থাকা আমার আর সম্ভব না। তুমি ভয়াবহ বদ ও মিথ্যাবাদী।

আজ প্রায় এক বছর ধরে আবু বকর একা।
সে তার সন্তানকে পর্যন্ত দেখতে যেতে পারে না। আবু বকরের সাথে আমার রাস্তায় দেখা। আমি বললাম, কি হয়েছে আপনার? এমন শুকিয়ে গেছেন কেন? আবু বকর বলল- আমাকে কুফুরী করেছে। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এজন্য দিন দিন আমি শুকিয়ে যাচ্ছি। কালো হয়ে যাচ্ছি। রাতে ঘুমাতে পারি না। কিছু খেতে পারি না। আমি বললাম, আপনার অপরাধ কি? কেন আপনাকে শাস্তি দিচ্ছে? আবু বকর বলল- আমার বউটা ভালোই ছিলো। আসল বদমাশ হলো আমার শ্বাশুড়ি আর তার ছেলে। এই বেটিই আমাকে কুফুরী করেছে। বেটি আর তার ছেলে চায় না আমি আমার স্ত্রীর সাথে মিলেমিশে থাকি। আর আমার বউও গাধী। আবু বকর মন খারাপ করা গলায় বলল- আমার সন্তানকে পর্যন্ত দেখতে যেতে পারি না। খুব কষ্ট হয়।

কুফুরী কালাম সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না।
ধারনা করি- কাউকে যাদুটোনা করা, বান মারা এরকম কিছু হবে। এগুলো মুভিতে দেখেছি। এই যুগে এগুলো বিশ্বাস করার কিছু নেই। আমি আবু বকর কে বললাম- কুফুরী একটা ফালতু বিষয়। এগুলো বিশ্বাস করা ঠিক না। আপনি শুকিয়ে গেছেন কারন- আপনার স্ত্রী সন্তান আপনার কাছ থেকে দূরে। তাদের কথা খুব ভাবেন। রাতে ঠিক মতো ঘুমান না। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেন না। আবু বকর কিছুটা আমার উপর রেগে গেল। বলল- কুফুরী অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। কুফুরী বিশ্বাস না করলে ইমান থাকবে না। হয়তো কুফুরী সম্পর্কে আপনার কোনো ধারনা নেই। আমার নিজের দুইজন আত্মীয়কে কুফুরী করে মেরে ফেলা হয়েছে। নিজের চোখে দেখেছি। আমি বললাম, কুফু'রীই যদি এত পাওয়ার থাকে। আমাকে কুফুরী করে মেরে ফেলেন। সমস্যা নেই আমি সাদা কাগজে সাইন করে দিচ্ছি- আমার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী।

মানুষের মধ্যে কিছু বিশ্বাস গেঁথে যায়।
সে গুলো কিছুতেই আর বের করা যায় না। আমৃত্যু সে তার বিশ্বাস নিয়ে থাকে। আবু বকর কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষ। জন্ডিস হলে ডাক্তারের কাছে যায় না। এক মহিলার কাছে যায়। মহিলা দশ টাকা নেয়। সে মাথা ধুয়ে দেয়। মাথা থেকে পানির সাথে সব হলুদ বের হয়ে যায়। জন্ডিস ভালো হয়ে যায়। আমি ব্যাক্তিগতভাবে আবু বকরের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলাম। আমি আবু বকরের বউ এঁর সাথে দেখা করলাম। বললাম, ভাবী বকর ভাই তো খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। রাতে ঘুমান না। শুকিয়ে গেছেন। ভাবী বললেন, বকর ভন্ড। সে আমার জীবনটা নষ্ট করেছে। তার সম্পর্কে যা বলেছে, সব মিথ্যা বলেছে। বিয়ের পর থেকে একটা টাকা খরচ করেনি। বাচ্চার দুধ কেনার টাকা পর্যন্ত তার কাছে নেই। থাকবে কি করে সে তো কোনো কাজই করে না। কিন্তু বড় বড় কথা বলে- তার চাচা মন্ত্রী। তার মামা সচিব। তার খালু বিরাট ব্যবসায়ী। আসলে এগুলো মিথ্যা। মিথ্যা আমি পছন্দ করি না।

আমার ধারনা আবু বকর আর তার স্ত্রীর ঝামেলা মিটে যাবে।
বাঙ্গালী মেয়ে ঠিকই মেনে নিবে। মানিয়ে নিবে। সবচেয়ে বড় কথা আবু বকরের স্ত্রী স্বাবলম্বী। লেখাপড়া জানা মেয়ে। ভালো চাকরী করে। একজন আবু বকরকে চালিয়ে নেওয়া তার জন্য কঠিন কিছু না। আমার ধারনা আবু বকরের প্রধান সমস্যা তার ধর্ম। অতি ধার্মিক। সে ধার্মিকের ভান ধরে থাকে। কিন্তু সে মোটেও আসল ধার্মিক না। একবার তার স্ত্রী বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সে তার স্ত্রীকে হাসপাতালে না নিয়ে দোয়া পড়ে ফু দেয়। বলল, এই দোয়ার অনেক ক্ষমতা। তুমি সুস্থ হয়ে যাবে। বেচারি সুস্থ হয়নি। শেষে মেয়ের মা হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি, আবু বকর যদি তার ধর্ম থেকে বের হয়ে আসতে পারে এবং তার মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করে পারে-তাহলে তার জীবন সুন্দর হবে। আনন্দময় হবে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:১৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্পটি ভালো লিখেছেন। আপনার লেখার হাত ভালো।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: এটা গল্প নয়। বাস্তব গল্প।

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:১৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপনার লেখাকে গল্প মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে কাল্পনিক।

ইহা সত্য কাহিনী নাকি।

ভালো লিখেছেন

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ ইহা সত্য ঘটনা।

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:২১

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: কুফুরী কাজ করা ত খারাপ এক কাজ করা যাবে না

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: কুফুরী একটা ফালতু বিষয়। এগুলো কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষেরা জিইয়ে রেখেছে।

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৩০

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুভ ব্লগিং

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ ধন্যবাদ।

৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫০

সোবুজ বলেছেন: বাস্তবতা আছে।এমন হাজারো ঘটনা আছে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা রাইট।

৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩২

এপোলো বলেছেন: দেশে আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে জনমনে একটা ভুল ধারণা আছে। যেমন, সবাই মনে করে সাধারণ মানুষ অপরাধ করতেই পারে, কিন্তু পুলিশ অপরাধ করতে পারবে না। এই ধারণা থেকেই ওরা বলে, পুলিশ হয়ে কেমনে সে এই কাজ করতে পারলো? একইভাবে, স্কুলের মাস্টার হয়েও কিভাবে উপবৃত্তির টাকা মেরে দেয়? এই ভুল ধারণা থেকেই জনগণ কোনো একটা পেশার মানুষকে অপরাধের তুলনায় বেশি শাস্তি দিতে ইচ্ছুক। যেমন, ধর্ষণের শাস্তি যদি হয় মৃত্যুদণ্ড, মাদ্রাসার শিক্ষকের ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মানুষ ৫ বার মৃত্যুদণ্ড, সাথে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানায়। মানুষের এই ভুল ধারণা "আইন সবার জন্য সমান" আইডিয়ার সাথে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের আইনে দাড়িয়ালাদের জন্য আলাদা কোনো ধারা নাই, এইসব "ধারা" চায়ের দোকানে বসে আজাইরা গল্প করা লোকজনের সময় কাটানোর মাধ্যম।
যাহোক, আপনার গল্প ভালো হয়েছে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: চায়ের দোকানের আড্ডা একেবারে ফালতু নয়।

৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বিয়ে মানে বউয়ের সাথে থাকা এবং বাচচা পয়দা করা নয় । বিয়ে মানে হল দায়িত্ব ও কর্তব্যের সাথে সাথে সামাজিক দায়বন্ধনের সমষ্ঠিও ।

এখন কেউ যদি রোজগার ব্যতীত বিয়ে করে,দুই বছর বউকে বাপের বাড়ী রেখে দেয় এবং যেখানে নিজের বউয়ের প্রতি কোন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারেনা - সেখানে আবার বাচচা পয়দা কর , এ এক সমস্যার মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়ার মত। সেখানে তাকে কেউ কুফুরী করতে হবেনা।

সমস্যার বেড়াজালে পড়ে সে যে মারা যায়নি এই ভাগ্য , শুকিয়ে যাওয়া - কালো হওয়া কোন ব্যাপার ই না।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো মন্তব্য করেছহেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.