নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘোর অথবা মোহ

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:২৯



একদিন ভর সন্ধ্যা বেলায়-
বৃষ্টি কি আসবে? তখনও সূর্য পুরোপুরি ডুবে যায়নি। চারপাশ কেমন বিষন্ন রঙ্গে মেতেছে। এই বিষন্ন রঙ মানুষের বুকে হাহাকার তুলে দেয়। পাখিরা কেমন ছটফট করতে থাকে। দিশেহারা পাখিরা ছুটছে তাদের বাসায়। অন্য দিনের চেয়ে যেন আজ তাদের বড্ড বেশি তাড়া। সৃষ্টি জগতের সবার মধ্যে কেমন ছটফটানি ভাব! সন্ধ্যার সময়টা আসলে রহস্যময়। মানুষের মনকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। ভিতরে ভিতরে মানুষ আহত হয়ে যায়। এজন্য ধর্মীয় গ্রন্থে বলা হয়েছে, সূর্য ডুবে যাওয়ার পর বাইরে থেকো না। এমন'ই এক ক্ষনে শফিক ছুটতে থাকে। তুফানের মতো ছুটতে থাকে। সে নীলাঞ্জনাকে জড়িয়ে ধরবে। তার মনে হচ্ছে এরকম পরিবেশে নীলাঞ্জনাকে জড়িয়ে ধরতে না পারলে সে মরে যাবে। শফিক দিকভ্রান্ত পথিকের মতো ছুটছে।

মেয়েটার নাম নীলাঞ্জনা।
কিন্তু সবাই তাকে নীলা নামে ডাকে। একমাত্র শফিক মেয়েটাকে পুরো নামে ডাকতাম- নীলাঞ্জনা। মেয়েটা খুব খুশি হতো। এবং বলতো- শফিক তুমি সবার থেকে আলাদা। তাই তুমি আমাকে আমার পুরো নামে ডাকো। শফিক লেখাপড়ায় খুব ভালো। সব সময় প্রথম হয়েছে। এজন্য এলাকায় শফিকের বেশ নাম ডাক আছে। হয়তো শফিকের মধ্যে কিছুটা অহংকার ছিলো। যে অহংকার শফিকের চোখে ধরা পড়তো না। সেই স্কুল থেকে শফিক নীলাঞ্জনাকে চিনে, জানে। তাঁরা দুজন বেশ ভালো বন্ধুও বটে। এলাকার সবাই ধরে নিয়েছে- তাদের বিয়ে হবে। এজন্য নীলার দিকে অন্য কেউ এগোয়নি। নীলাঞ্জনার বাবা মায়ের মধ্যেও একটা গোপন ইচ্ছা ছিলো শফিকের সাথে কন্যা বিয়ে দেবার। এত বিলিয়ান্ট ছাত্র। দেখতেও বেশ।

শফিক যখন তখন নীলাঞ্জনাদের বাসায় আসতো।
কোনো বাঁধা নিষেধ ছিলো না পরিবারের পক্ষ থেকে। নীলাও মাঝে মাঝে শফিকদের বাসায় যেতো। ছোট্র মফস্বল শহর। সবাই সবাইকে চিনে, জানে, বুঝে। শফিক ভালো ছাত্র, তাই সকলে শফিক কে পছন্দ করতো। ভালোবাসতো। আমাদের সমাজে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক করা খুব'ই খারাপ কাজ। এটা পরিবার মেনে নেয় না। সমাজ মেনে নেয় না। মুরুব্বীরা বলেন, বিয়ের পরে যা খুশি করো। বিয়ের আগে কোনো রঙ ঢং নয়। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি সব বদলে দেয়। আপাত দৃষ্টিতে অনেক অন্যায় কাজকেও ভালো কাজ বলে মনে হয়। এটা আসলে যুবক যুবতীদের বয়সের দোষ। এই দোষের ফেরে পরে অনেক জীবন নষ্ট হয়। কচি বয়সটা যারা সামলে সুমলে চলতে পারে তাদের জীবনটা সুন্দর হয়।

নীলাঞ্জনা পড়তে বসেছে।
জানালার কাছে তার টেবিল। সে পড়া বাদ দিয়ে মুগ্ধ হয়ে আকাশ দেখছে। আর কিছুক্ষন পর অন্ধকার নামবে। চারপাশ কি মায়াময় লাগছে। কি যে সুন্দর লাগছে! পাখি গুলো কিচির মিচির করতে করতে গন্তব্যের দিকে ছুটছে। বাতাসে কেমন যেন একটা অচেনা জগতের মিষ্টি গন্ধ! সেই গন্ধে ঘোর লাগা অবস্থা। হাত পা কেমন যেন অবশ করে দেয়। প্রিয় মানুষকে দেখতে ইচ্ছা করে। প্রিয় মানুষের কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছা করে। ইচ্ছা করে মরে যেতে। নীলাঞ্জনা পড়া বাদ দিয়ে শফিকের কথা ভাবে। তাদের বিয়ে হবে। সুন্দর সংসার হবে। সংসারে নতুন শিশু আসবে। সেই শিশু একটু একটু করে বড় হবে। কত না সুন্দর হবে সেই সব দিন। প্রতিটা মেয়েই এরকম ভাবনা ভাবে। সহজ সরল সুন্দর ভাবনা। এই ভাবনায় কোনো পাপ থাকে না।

ভর সন্ধ্যায় আচমকা শফিক আসে নীলাঞ্জনার ঘরে।
এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নীলাঞ্জনাকে। ঠোঁটে ঠোঁট রাখে। নীলা কিছুতেই নিজেকে সরিয়ে নিতে পারে না। শফিক টেনে খুলে ফেলে নীলার শাড়ি। শফিক পাগলের মতো নীলাঞ্জনার গায়ে সুখ খুজতে থাকে। সুখ! দুই হাত দিয়ে বাঁধা দেয় নীলাঞ্জনা। বলে, আল্লাহর দোহাই লাগে এরকম করো না। এটা পাপ। মস্ত বড় পাপ। এটা ঠিক না। আমাদের বিয়েটা আগে হোক। শফিক কোনো কথাই শুনে না। সে হয়ে গেছে পাগলা ষাঁড়। দুমড়ে মুচড়ে নীলাঞ্জনাকে তছনছ করে দেয়। সব মিলিয়ে দশ পনের মিনিট। অথচ নীলাঞ্জনার কাছে মনে হচ্ছে অনন্ত সময়। শফিক এতটাই উন্মাদ হয়েছে যে ঘরের দরজাটা লাগাতে পর্যন্ত ভুলে গিয়েছে। ভাগ্যিস কেউ এসে পরেনি। একটা ফুলকে তছনছ করে দিয়ে শফিক ঘর থেকে পালিয়ে যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.