নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের ডায়েরী- ৯৫

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:২৩

ছবিঃ আমার তোলা।

ছোটবেলা আমি হুজুরের কাছে আরবী পড়তাম।
হুজুর বাসায় এসে আমাকে কায়দা পড়াতেন। হাদিয়া হিসাবে হুজুর পেতেন ১৫০ টাকা। সবাই হুজুরকে এক শ' টাকা দিতেন। কিন্তু আব্বা পঞ্চাশ টাকা বেশি দিতেন। প্রথম মাসেই আমি কায়দা শেষ করে ফেলি। দ্বিতীয় মাসে ধরি আমপারা। আমাদের এলাকায় মসজিদে তখন হুজুর কায়দা পড়াতো। কোনো টাকা পয়সা লাগতো না। মসজিদে অনেক ছেলেমেয়ে একসাথে পড়তো। হুজুরের হাতে থাকতো ঝালি বেত। বেত এবং হইচই আমার পছন্দ না। তাই আমি মসজিদে আরবী পড়তে যেতাম না। আজকাল ছোটবেলার কথা হুটহাট মনে পড়ে যায়। আবেগে আপ্লুত হই। বয়স যত বাড়ে ছোটবেলার কথা তত মনে পড়ে।

আমার কন্যাকে হুজুর পড়াতে আসে।
সপ্তাহে তিন দিন। হুজুরকে মাস শেষে তিন হাজার টাকা দেওয়া হলো। আমরা যেটাকে বেতন বলি, হুজুররা বলেন, হাদিয়া। হুজুর বললেন তিন হাজার টাকা অনেক কম। আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। যদি আপনাদের সমস্যা থাকে তাহলে চার হাজার দিন। তিন হাজার টাকা খুব বেশি কম। আমি বললাম, হুজুর আমি ছোটবেলায় হুজুরের কাছে পড়েছি মাত্র দেড় শ' টাকা দিয়ে। হুজুর বললেন, সেই দিন আর নেই ভাইসাহেব। হুজুরকে চার হাজার টাকা দিলাম। প্রতিদিন হুজুরকে খাবার দিতে হবে। প্রতিদিন। হুজুর চা খান না। হুজুরের পছন্দ কফি। মাঝে মাঝে আমি নিজের হাতে হুজুরকে কফি বানিয়ে খাওয়াই। একদিন হুজুরকে আমি বললাম, মাসে আপনি কত টাকা আয় করেন। হুজুর বললেন, ৫০ হাজারের কিছু কম। যদি দিন লম্বা হতো তাহলে বেশি ইনকাম করতে পারতাম।

কন্যা গেছে তার নানা বাড়ি।
বাসায় আমি একা। একা আমি থাকতে পারি না। ভালো লাগে না। কন্যা দশ দিন পর আসবে। এই দশ দিন আমাকে একা থাকতে হবে। আমার সমস্যা হলো রাতে আমি একা ঘুমাতে পারি না। ভয় পাই। মার ঘরে গিয়ে ঘুমাতে পারি। কিন্তু এখন আমি অনেক বড় হয়েছি। মা ভাববে ছেলে এত বড় হয়েও ভয় পায়। সেটা ভীষন লজ্জার হবে। সারারাত ঘরে বাতি জ্বালিয়ে রাখি। তবু ভয় করে। মনে হয় ঘরে আমার মৃত আত্মীয়স্বজন সব আছে। তাঁরা আমাকে নিতে এসেছে। ফযরের আযান পর্যন্ত ঘুম আসে না। ভোরের দিকে সামান্য ঘুম আসে। ভয়ের কারনে বই পড়ে আরাম পাই না। মুভি দেখে আরাম পাই না। আমি একজন আধুনিক ছেলে। কোনো প্রকার কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। অথচ রাত হলেই ভয় পাই। এই ভয়ের জন্ম কোথায় আমি জানি না।

সময় সন্ধ্যা সাত টা।
চায়ের দোকানে বসে আছি। দুই ছেলে আমার পাশে বসেছে। তাদের আলাপ শুনছি। তাদের বয়স ত্রিশ এর বেশি হবে না। এক ছেলে বলল, মৃত্যুর পর কবরে মারাত্মক আযাব হবে। সেই ভয়ে আমি অস্থির। ফেরেশতা অতি সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে, সেই প্রশ্নের জবাব কি দিতে পারবো? প্রশ্নটা হলো- তোমার রব কে? কবরের আযাব এরকম- দুই দিক থেকে মাটি চাপ দিবে। ছেলেটা খুবই চিন্তিত। কবরের আযাব নিয়ে। তার চেহারা কান্না কান্না। আমি বললাম, ছোট ভাই, কবরের আযাব থেকে মুক্তির একটা রাস্তা আছে। যদি জানতে চাও- তাহলে বলি। ছেলেটা বলল, বলেন। বলেন। তাড়াতাড়ি বলেন। আমি বললাম, তুমি মরে যাবার আগে বলে যাবে, তোমাকে যেন কবর না দেওয়া হয়। যেন পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় অথবা তোমাকে যেন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

আজ শুক্রবার।
এখন বিকেল পাঁচ টা বাজে। দুপুরে আজ সেই রকম খানাপিনা করলাম। হাঁসের মাংস ভূনা। সাথে খিচুড়ি। আমাদের এক আত্মীয় চারটা হাঁস গ্রাম থেকে এনে দিয়েছেন। সেই চারটা হাঁস ভূনা করা হয়েছে। খেতে চমৎকার হয়েছে। খিচুড়িটা দারুন হয়েছে। আমি খেয়াল করে দেখেছি খিচুড়িতে ডালের পরিমান টা বেশি দিলে খেতে মজা হয়। বেগুন ভাঁজা ছিলো। তিন রকমের আচার ছিলো। তিন প্লেট খেয়ে ফেলেছি। এখন হাঁসফাঁস লাগছে। বারবার ভাবি খাবার কম খাবো। কিন্তু খাওয়ার সময় ভুলে যাই। খেয়ে বিছানায় গেলাম। এবং সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলাম। এক ঘন্টা ঘুমালাম। ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা খেলাম। এখন শরীরটা ঝরঝরে লাগছে। রাতে একটা দাওয়াত ছিলো বড় ফুপির বাসায়। দাওয়াতে যাব না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:২২

সোবুজ বলেছেন: কিসের ভয় পান।ভূতের না অন্য কিছুর।
আমি নিজে অল্প কিছু দিন মসজিদে হুজুরের কাছে পড়েছি।স্কুলে আরবি ছিল সেখানে কিছু শিখেছি।এখন তার কিছুই মনে নাই।বাংলায় এখন সব কিছু হয়ে গেছে ।কষ্ট করে আর আরবি শিখার দরকার নাই।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: আরবী না জানলেও জীবনে চলার পথে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু বাংলা ইংরেজী না জানলে জীবনে পদে পদে ধাক্কা খেতে হয়।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২২

শোভন শামস বলেছেন: সুন্দর ও সরল কথন, জীবনের গল্প
লিখে জান।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.