নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
মিথ্যা বলা একটা রোগ।
মিথ্যা কথা সবাই বলে। ধনী থেকে গরীব, কেউ পিছিয়ে নেই। তবে, আমার ধারনা দরিদ্র শ্রেনির লোকজন সবচেয়ে বেশি মিথ্যা বলে। প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে। মিথ্যা দুই রকম হয়- সাদা মিথ্যা এবং কালো মিথ্যা। সাদা মিথ্যায় মানুষের ক্ষতি হয় না। বরং আনন্দ পাওয়া যায়। কালো মিথ্যায় মানুষের ক্ষতি হয়। যেমন আদালতে মিথ্যা বলে ভালো মানুষকে ফাসিয়ে দেওয়া হয়। মিথ্যার কারনে জেল খাটতে হয়। মিথ্যা বলে মানুষের চাকরী খেয়ে দেয়া হয়। চাকরীহীন মানুষ সমাজে অবহেলিত। আরেক ধরনের মিথ্যা আছে, সেটা শরীর জ্বালা ধরা মিথ্যা। আমার পরিচিত একটা ছেলে আছে- সে সম্পূর্ন বিনা কারনে বড় বড় মিথ্যা বলে। ধর্মে বলা হয়েছে, মিথ্যা ধ্বংস ডেকে আনে। কথাটা সত্য। ছেলেটা আজ ধ্বংসের শেষ সীমানায় চলে গেছে।
ছেলেটার নাম আবুল বাশার।
ভয়াবহ মিথ্যাবাদী। প্রয়োজন নেই তবু সে মিথ্যা বলতেই থাকে। দিনের পর দিন। আমার কাছে এসে সে বড় বড় মিথ্যা বলে। আমি তার মিথ্যা গুলো ধরে ফেলি। বুঝে ফেলি। কিন্তু চুপ থাকি। মনে মনে ভাবি, মিথ্যা বলে যদি সে শান্তি পায় পাক। আমার তো কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। তার মিথ্যার দুই একটা উদাহরন দেই। আবুল বাশার বলল, দক্ষিন কোরিয়া গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি মেয়ে গুলো খুব সুন্দর। খাটো কোনো মেয়ে নেই। এবং ওদের মাথার চুল লম্বা। এয়ারপোর্টে একটা মেয়েটা আমাকে কফি খেতে দিলো। আমি খুব ভালো করেই জানি সে কখনও দক্ষিন কোরিয়া যায় নি। তাহলে সে এই মিথ্যাটা কেন বলল? তাতে তার লাভটা কি হলো? বাশার আর একদিন বলল, আমার কাছের এক আত্মীয় মন্ত্রী। অথচ তার কোনো আত্মীয় মন্ত্রী নয়।
আবুল বাশার মিথ্যা বলে বিয়ে করেছে।
বিয়ের পর তার সমস্ত মিথ্যা একে একে ধরা পড়েছে। বিয়ের সময় সে বলেছে, সে বড় কোম্পানীতে চাকরী করে। অথচ সে কোনো কালেই চাকরী করে নাই। সে বলেছে, সে বলেছে, সে নিউজিল্যান্ড থেকে বিবিএ করেছে। সে কোনোদিন নিউজিল্যান্ড যায়নি। তার স্ত্রী সব সত্য জানার পর আবুল বাশারকে ত্যাগ করেছে। এখন আবুল বাশার সারাদিন রাত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। এমন কি তার আত্মীয়স্বজন পর্যন্ত তাকে ত্যাগ করেছে। এখন তার থাকার জায়গা নেই। তার মন্ত্রী আত্মীয় হয়। অথচ তাকে মন্ত্রী সাহেব কোনো চাকরী দেয়নি। তার মিথ্যার কারনে তাকে সবাই ত্যাগ করেছে। এই অধপতনের দিকে এসেও আবুল বাশার তার মিথ্যা বলা থামায়নি। ছোট খাটো দুই একটা মিথ্যা সোসাইটি এলাউ করে। কিন্তু বড় বড় মিথ্যা সোসাইটি এলাউ করে না।
আবুল বাশারের জন্য আমার মায়া হয়।
আজ সে ফকিরের চেয়ে বেশি অধম। থাকার জায়গা নেই, খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। পকেটে পয়সা নেই। সারাদিন পথে পথে ঘুরে। এখন তাকে যদি আমি কোনো কাজ পাইয়ে দেই। কিছুদিন পর সে মানুষকে বলে বেড়াবে- ফালতু কাজ দিয়েছে আমাকে। বেতন অল্প। পিয়নের কাজ দিয়েছে। এই চাকরী দিয়ে আমাকে অপমান করেছে। আমি এঁর প্রতিশোধ নিবো। আমি মন্ত্রী বাড়ির ছেলে। ইত্যাদি ইত্যাদি নানান কথা। আবুল বাশার কে কোনো কাজ দিতেও ভয় করে। এঁর চেয়ে ভালো সে পথে পথে ঘুরুক। মূলত এই ধরনের মানুষ থেকে দূরে থাকাই উত্তম। মিথ্যা তার রক্তের সাথে মীশে গেছে।
প্রয়োজন নেই, তবু মানুষ মিথ্যা বলে।
দিনের পর দিন মিথ্যা বলতে বলতে অভ্যাসে পরিনত হয়। মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে। মিথ্যা মানুষকে অধপতনের দিকে নিয়ে যায়। অধপতনের গোড়ায় বসেও মানুষ মিথ্যা বলে। তোমার মাথায় কেউ পিস্তল ঠেকায়নি, তবু কেন তোমাকে মিথ্যা বলতে হবে? তোমার অধপতনের জন্য তুমি নিজে দায়ী। সত্য বলা শিখো, অধপতন থেকে বাঁচো। মিথ্যা বলে বড় হওয়া যায় না। বরং তোমার হীনমন্যতা আরো স্পষ্ট প্রকাশ পায়। মানুষ বোকা না। প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বললেও মানুষ ধরে ফেলে। আর তুমি দিনের পর দিন মিথ্যা বলেই যাচ্ছো। তাতে ক্ষতি কারো কিছু হয়নি। ক্ষতি হয়েছে তোমার।
১১ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:০৫
সোবুজ বলেছেন: ধর্মে বলা না থাকলে তার এই সমস্যা হতো না।এই জন্য ধর্মই দায়ী। নয়তো সে মিথ্যা বলেও সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারতো।