নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
প্রিয় কন্যা আমার-
সেদিন তুমি হাঁটতে গিয়ে পড়ে গেছো। নাকে ব্যথা পেয়েছো। নাক দিয়ে রক্ত পড়েছে। এই প্রথম তুমি হাঁটতে গিয়ে বড় রকমের ব্যথা পেয়েছো। এর আগেও অনেকবার পড়ে গিয়েছো কিন্তু নাক দিয়ে রক্ত পড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা পাওনি। তোমার মা কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে যাবে এমন অবস্থা। ঘটনা কি হয়েছে খুলে বলি- তোমার জন্য একটা ডাব এনেছি। তোমার ছোট্র গ্লাসে করে তোমাকে ডাবের পানি খেতে দিয়েছি। আমি চেয়েছিলাম তোমাকে নিজ হাতে খাওয়াবো। কিন্তু তুমি চেয়েছো একাএকা খাবে। সেই সুযোগ তোমাকে দিলাম। তোমার হাত থেকে ডাবের পানি ফ্লোরে পড়েছে। সেই পানিতে তুমি পা পিছলে পড়ে গেছো। নাকে ব্যথা পেয়েছো। তুমি ব্যথা পেলে সেই ব্যথা আমার বুকে এসে লাগে। তুমি যতটুকু না ব্যথা পেয়েছো তারচেয়ে হাজার গুণ বেশি ব্যথা আমার লেগেছে।
প্রিয় কন্যা ফারাজা,
সেদিন তোমাকে আর পরীকে নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছিলাম। প্রথমে গেলাম কেএফসি'তে। ঘরের বাইরে গেলেই তুমি খুবই খুশি হও। আমি আর পরী চিকেন ফ্রাই আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেলাম। তুমি ছোট কেএফসি'তে তোমার জন্য কোনো খাবার নেই। তুমি এখন অনেক ছোট। ষোল মাসে এখনও পা রাখোনি। তারপর আমরা গেলাম একটা প্লে গ্রাউন্ডে। সেখানে বাচ্চাদের জন্য নানান রকম খেলার সরঞ্জাম আছে। সেখানে গিয়ে তুমি খুব খুশি। আরো অনেক বাচ্চা সেখানে ছিলো। কিন্তু তোমাকে কোনো রাইডে উঠাতে পারিনি। কারন দুই বছরের কম শিশুদের জন্য কোনো রাইড নেই। তবুও আমি সেখানকার লোকদের অনুরোধ করে তোমাকে প্রতিটা রাইডে উঠিয়েছি। তোমার ছবি তুলেছি। বড় হয়ে তুমি ছবি গুলো দেখবে। আরো কিছুক্ষন সেখানে থাকতাম। কিন্তু পরী ঘ্যানঘ্যান করছে তার নাকি অনেক হোম ওয়ার্ক বাকি আছে। অগত্যা বাসায় চলে আসতে হলো।
প্রিয় কন্যা ফারাজা তাবাসসুম-
একটা ছোট বাচ্চা মানুষ করা বিরাট দিকদারি। বাবা মায়ের অনেক কষ্ট করতে হয়। প্রতিটা মুহুর্ত বাচ্চার দিকে লক্ষ রাখতে হয়। সময় মতো খাওয়া, গোছল, ঘুম, পটি পরিস্কার করা। খাওয়া নিয়ে তুমি খুব ঝামেলা করো। এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগে তোমাকে খাওয়াতে। পুরো ঘর খিচুড়ি দিয়ে মাখামাখি করে ফেলো। আমাকে মাখাও। তোমার মাকে মাখাও। বিছানার চাদরে মাখাও। এলাহি কান্ড কারখানা। ইদানিং তুমি রাতে সহজে ঘুমাতে চাও না। রাত দুটা, তিনটা বেজে যায় কিন্তু তুমি ঘুমাও না। এদিকে তোমার মা ঘুমে চোখ মেলে তাকাতে পারছে না। বেচারি সারাটা দিন তোমাকে নিয়ে যুদ্ধ করে। রাতেও আরাম করে ঘুমাতে পারে না। তোমার জন্য তোমার মায়ের ঘুম, খাওয়া দাওয়া, গোছল, প্রায় হারাম হয়ে গেছে। বড় হয়ে তোমার মাকে কোনোদিন কষ্ট দিও না।
প্রিয় কন্যা আমার-
আমি আমার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- আমি ছোট বেলায় খাওয়া, ঘুম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিরক্ত করেছি কিনা। মা বলেছে, ছোটবেলায় আমি কোনো কিছু নিয়েই ঝামেলা করি নাই। চুপ করে খেয়েছি। সময় মতো ঘুমিয়ে গেছি। মাকে কোনো বিরক্ত করি নাই। অবশ্য তখন মোবাইল ছিলো না, ইন্টারনেট ছিলো না। টিভিতে অনেক গুলো চ্যানেল ছিলো না। ফেসবুক, টিকটক ছিলো না। বাসায় টিএন্ডটি ফোনও ছিলো না। ফারাজা, তুমি আমার মোবাইল ফোন নিয়ে এলোমেলো টিপাটিপি করো। ফোন কানের কাছে নিয়ে গিয়ে হ্যালো হ্যালো করো। তোমাকে রেখে আমি পাশের ঘরে গেলেই তুমি ডাকতেই থাকো- বাবা, বাবা, বাবা। আমি যে আরামে বসে একটু ল্যাপটপ চালাবো সেটাও পারি না। একটু পরপর তুমি ডাকো। একটু পর পর দৌড়ে তোমার কাছে যেতে হয়।
প্রিয় কন্যা ফারাজা-
আজ শবে বরাত। এটা তোমার জীবনের দ্বিতীয় শবে বরাত। আগামী শবে বরাতে তুমি তিন বছরে পা রাখবে। এবার ররমজানে তুমি আমাদের সাথে বসে ইফতারী করতে পারবে। গত বছর পারো নি। ভাঁজা পোড়া তো আর তুমি খাবে না। তোমাকে দেওয়া হবে ফল। তোমাকে খিচুড়ির সাথে দেশী মূরগী খাওয়ানো হচ্ছে। কোনো কোনোদিন রুই মাছ, শিং মাছ বা পাঙ্গাস মাছ দেওয়া হয়। আমি নিজে বেছে বেছে তোমার জন্য টাটকা সবজি কিনে নিয়ে আসি। মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, শিম, আলু। তোমার ওজন বাড়ছে না। এটা নিয়ে আমি ও তোমার মা খুবই চিন্তিত। খুব শ্রীঘই তোমাকে একজন ভালো ডাক্তার দেখাবো। গতকাল রাতে কি হয়েছে শোনো- রাত তখন তিনটা পঁয়তাল্লিশ। তুমি এবং তোমার মা গভীর ঘুমে। আমার চোখে ঘুম নেই। হঠাত জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি আকাশে মস্ত বড় একটা চাঁদ। সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে চাঁদের কিছু ছবি তুলে ফেললাম।
২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:০১
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ লিখব।
২| ২০ শে মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:০১
সোবুজ বলেছেন: এই সময়টা একটু বেশি দেখে শুনে রাখতে হবে।
২০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: একদম রাইট কথা বলেছেন।
৩| ১৭ ই জুন, ২০২২ ভোর ৬:৫০
খায়রুল আহসান বলেছেন: বরাবরের মত কন্যাকথন ভালো লেগেছে। + +
১৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১১:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিখেযান কন্যাদের নিয়ে
একদিন তা ইতিহাস হবে।