নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাখি আমার একলা পাখি

২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১২:৪৬

ছবিঃ আমার তোলা।

মিজু বেপারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, আজ সে গলায় ফাস নিবে।
ভর সন্ধ্যাবেলা সে বাড়ির পেছনে তেতুল গাছের সবচেয়ে উচু ঢালে উঠে বসেছে। সাথে করে দড়ি নিয়ে এসেছে। গায়ে ময়লা একটা গেঞ্জি আর লুঙ্গি। কাধে গামছা। দুই কানে দুটা বিড়ি গুজে রেখেছে। এখন মরার আগে একটা বিড়ি খাওয়া যাক। কিছুক্ষণ সময় পাওয়া যাবে। এই সময়টা একান্ত নিজের। চারিদিকে নীরব। গ্রামের সবাই গেছে শিব মেলায়। বেশ নিরিবিলি আরামছে মরা যাবে। বেচে থাকতে কত কি লাগে। বিরাট দিকদারি। মরে গেলে আর কিছুই লাগে না। শান্তি। তার বউ মালা একদম দজ্জাল মেয়েছেলে। জীবনটা তেজপাতা করে দিয়েছে। মরে গিয়ে তাকে বেশ শিক্ষা দেওয়া হবে।

মেয়েছেলের শরীরে শক্তি না থাকুক, কথায় ধার থাকে।
কথায় পুরুষ মানুষ কাত। মানুষের কথায় শক্তি থাকে, ধার থাকে, তেজ থাকে। তাই পিস্তলের গুলির চেয়ে মানুষের কথা বেশি শক্তিশালী। কথা দিয়ে মানুষকে ঘায়েল করা যায়। শিক্ষা দেওয়া যায়। সঠিক পথে আনা যায়। মালা মেলা থেকে ফিরে আসার আগেই ঝুলে পড়তে হবে। বেশি দেরী করা যাবে না। চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। মরার আগে জোছনা দেখার ইচ্ছা হলো মিজু বেপারির। অথচ আজ পুর্নিমা নয়। আফসোস! মরার আগে নেচে নেচে গানবাজনা করতে পারলে ভালো লাগতো। অবশ্য একাএকা গানবাজনা করে আনন্দ নাই। এই তেঁতুল গাছে ফাঁস নিয়ে এখন পর্যন্ত আট জন মারা গেছে। মিজু বেপারি মরলে নয় জন হবে।

শেষ সিগারেট ধরিয়ে মিজু তার দজ্জাল বউয়ের কথা ভাবলো।
মালা কথায় কথায় বলতো গলায় দড়ি দাও। আজ মিজু সত্যিই গলায় দড়ি দিচ্ছে। ঝুলে থাকা মিজুকে দেখে বউ মাগীর শিক্ষা হোক। এইবার মাটিতে গড়াগড়ি করে কান্না করুক। আছাড়ি পিছাড়ি করুক। তবে ছোট ছেলেটার জন্য মিজুর কষ্ট লাগছে। ছেলেটা বাপ অন্ত প্রান। বউয়ের জ্বালা যন্ত্রনা মুনিঋষিরা সহ্য করতে পারে না বলেই তাঁরা বিবাহের ঝামেলায় জড়ায় না। মিজু বেপারির ধারনা মানুষ জীবনে তিনবার বদলায়। প্রথম বার প্রেম ভালোবাসা করার সময় বদলায়। দ্বিতীয় বার বিয়ের পর বদলায়। আর তৃতীয় বার বদলায় সংসারে সন্তান আসার পর। এই যে মিজু আজ মরবে বউয়ের জ্বালায় তার একটুও খারাপ লাগছে না।

তেঁতুল গাছটা যদি কথা বলতে পারতো তাহলে বলতো-
জনাব মিজু মরলে তাড়াতাড়ি মরুন। এত দেরী করছেন কেন? আপনার যন্ত্রনায় আরাম করে ঘুমাতে পারছি না। এই তেঁতুল গাছে দুটা প্যাঁচা থাকে। তারাও বিরক্ত মিজুর উপর। বিড়ির গন্ধে তাদের কষ্ট হচ্ছে। মিজু তেঁতুল গাছে দড়ি বাধতে শুরু করলো। ঠিক তখন তার বিবেক বলে উঠলো। মিজু থামো। কি করছো? স্ত্রীর সাথে রাগ করে গলায় দড়ি নিচ্ছো? ছিঃ। গাধা কোথাকার! মালা কি কখনও তোমাকে ভালোবেসে গলা জড়িয়ে ধরেনি? তোমার প্রিয় খাবার গুলো রান্না করে তোমাকে খেতে দেয়নি? তোমার যখন অসুখ হয় সেবা যত্ন করেনি? মিজু ধমক দিলো তার বিবেক কে। বলল, এসব ভাবের কথা বলে লাভ নাই। আজ আমি মরবোই। কোনো শালা আমাকে থামাতে পারবে না। আমার জীবন। আমি যা খুশি করবো। কোনো শালার কথা শুনব না।

মিজু বেপারি ফাঁসির দড়ির দিকে তাকিয়ে আছে।
তার মনে হলো দড়ি বলছে- আর কত দেরী করবে? এবার ঝুলে পড়ো। দুই মিনিটের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে। কিছুক্ষন ছটফট করবে। তারপর একদম থেমে যাবে। মালা মাটিতে গড়াগড়ি করে কান্না করুক। ছেলেটা এতিম হোক। ঠিক এই সময় দুটা প্যাঁচা বিশ্রী ভাবে ডেকে উঠলো। যেন তাঁরা বলল, মিজু বাড়ি যাও। পাগলামো করো না। স্ত্রীজাতি একটু দিকদারি করবেই। এটা তাদের স্বভাব। কিছুটা মেনে নাও। কিছুটা ছাড় দাও। তাহলে দেখবে আর কোথাও কোনো সমস্যা থাকবে না। মিজু সিদ্ধান্ত বদলে নিলো। সে আপাতত মরবে না। আরো কিছুদিন বেঁচে থাকা যাক। আজ মরে গেলেতো আগামীকাল ভোর দেখা যাবে না। পাখির কিচিরমিচির শোনা যাবে না। সূর্যের প্রথম কিরন দেখা যাবে না। স্ত্রী বেশি দিকদারি করলে মরা যাবে। দড়ি তো কেনা আছেই।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:০৮

নূর আলম হিরণ বলেছেন: এই ভেবে মিজু গাছ থেকে নামলো, বাড়ি গিয়ে দেখলো মালা মেলা থেকে তার জন্য একটা গামছা আর লুঙ্গি কিনে আনছে। সেগুলো হাতে দিয়ে বললো যাও গোসল করে পড়ে আসো, কি গেছো গন্ধ বের হচ্ছে তোমর গাঁ থেকে! কোন দুঃখে যে তোমার কাছে আমায় বিয়ে দিলো!
:) :)

২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা-----

হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক এই রকমই।

২| ২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:১৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কপি পেষ্ট নয়তো!
এমন লিখতে লিখতে
একদিন হুমায়ূন আহমদ
হয়ে যাবেন। মাঝ রাতে
সুন্দর গল্পের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার গুরু ঠাক আছেন তো?
সাড়া শব্দ পাচ্ছি না।

২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: কপি পেস্ট ধরার জন্য লোক আছে। তাঁরা বলুক।

হুমায়ূন হতে পারবো না। তবে হুমায়ূন আহমেদের বই আমাকে আনন্দ দেয়।

হ্যাঁ ঠিক আছেন। তবে ব্যস্ত।

৩| ২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:২৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চেনা সুরে লেখা।
ভালো হয়েছে।

২৩ শে মে, ২০২২ রাত ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৪| ২৩ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:২৬

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ছবিটা সুন্দর হয়েছে।

২৩ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৩ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:১৭

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর একটা ছবি, সেই সাথে সুন্দর লেখা।

২৩ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.