নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ যুগান্তর।
আমার নাম শাহেদ। শাহেদ জামাল।
আজ আমি আপনাদের আমার প্রেমের গল্প বলব। সহজ সরল সুন্দর গল্প। স্বচ্ছ পবিত্র। সবে মাত্র কলেজে ভরতি হয়েছি। কয়েকদিন ক্লাশ হওয়ার পরই লম্বা ছুটি পেলাম ঈদ ও দূর্গা পুজার। আব্বা বললেন, চল গ্রাম থেকে ঘুরে আসি। তখন আমার দাদা দাদী গ্রামে থাকতেন। তাই আব্বা মাসে দুইবার গ্রামে যেতেন। আমাকেও সাথে নিতেন। গেলাম আব্বার সাথে গ্রামের বাড়ি। আমাদের গ্রামের বাড়িটা সুন্দর। বিশাল দোতলা কাঠের বাড়ি। অনেক গুলো ঘর। বেশির ভাগ ঘরই তালা মারা থাকে।। চাচারা ফুপুরা সবাই ঢাকা থাকেন। পাটাতন কাঠের বলেই হাটলেই শব্দ হতো। তখন গ্রামে বিদ্যুৎ ছিলো না। সারাদিন ভালোই লাগতো, রাত হলে আর ভালো লাগতো না। রাতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসতো।
আমি থাকতাম একা এক রুমে।
পায়ের কাছে একটা হারিকেন জ্বলতো সারারাত। দাদা দাদীর সাথে থাকার প্রশ্নই নাই। দাদা এমন জোরে জোরে নাক ডাকে। দাদী কি করে ঘুমায় কে জানে! দাদী বলতো- তোমার দাদার নাকডাকা না শুনলে আমার ঘুম আসে না। ঢং। আব্বার সাথেও ঘুমাতাম না। আব্বা শুধু জ্ঞান দেয়। বিরক্তিকর। যাইহোক, আমার তেমন একটা ভয়ডর নেই। সমস্যা হলো রাতে বাথরুমে যাওয়ার দরকার হলে বেকায়দায় পড়তাম। আমাদের বাথরুম অনেক দূরে। দোতলা থেকে নেমে উঠান পার হয়ে যেতে হয়। সেই সময় মূল বাড়ি থেকে টাট্রিখানা দূরে করা হতো। নানান রকম কথা ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে পড়তাম। ভোরবেলা কাঠের জানালা দিয়ে আলো ঘরে ঢুকতো। নানান রকম পাখির কিচির মিচির শব্দ! বেশ উপভোগ্য।
ভোরবেলা হাঁটতে বের হয়েছি।
সুন্দর সকাল। অতি মনোরম। পাখি ডাকছে। মিষ্টি বাতাস। এই বাতাস পদ্মানদীর বুক থেকে আসে। গ্রামের মাটির রাস্তা ধরে হাঁটছি। হঠাত দেখি একটা মেয়ে। বেশ সুন্দর। ছিমছাম। মাথায় দুটা বেনী করা। মেয়েটা মূরগীকে খাবার দিচ্ছে। মুখে বলছে 'আয় আয়, তই তই'। মূরগী গুলো মেয়েটার চারপাশে খুশিতে লাফাচ্ছে। অতি সাধারন দৃশ্য। কিন্তু আমার কাছে মনে হলো- পার্থিব কোনো দৃশ্য নয়। মেয়েটা বলল, কোন বাড়ি তোমাদের? আমি বললাম, খান বাড়ি? মেয়েটা সামান্য হাসলো। বলল- নওসা মিয়ার নাতী তুমি! আমি বললাম, হ্যাঁ। মেয়েটা বলল, আসো ঘরে আসো। চা খেয়ে যাও। আমি মেয়েটার বাড়ির ভিতর উঠান পার হয়ে বৈঠকখানা ঘরের বারান্দায় বসলাম। মেয়েটার বাবা মা এলো। কিছু কথা হলো।
দুপুরবেলা মেয়েটার সাথে আবার দেখা।
মেয়েটা পুকুরে স্নান করতে যাচ্ছে। আমাকে দেখে মিষ্টি করে হাসলো। আমি বললাম, তুমি এই পুকুরে গোছল করো। মেয়েটা বলল হ্যাঁ। আমি বললাম, আমি সাঁতার জানি না। জানলে এই পুকুরেই লাফালাফি করে গোছল করতাম। মেয়েটা বলল, আসো তোমাকে সাঁতার শিখিয়ে দেই। খুব সহজ। কঠিন কিছু না। আমি কোমর পর্যন্ত পুকুরে নেমে গেলাম। ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছি না। মাটি পিছলা। একসময় পা পিছলে পুকুরে ডুবে গেলাম। মুখ দিয়ে সমানে পানি ডুকছে। চোখে কিছুই দেখতে পারছি না। মনে হচ্ছে মরে যাবো। ঠিক এই সময় মেয়েটা আমাকে টেনে তুললো। ঠিক তখন আমি মনে মনে ঠিক করলাম বিয়ে করলে এই মেয়েটাকে বিয়ে করবো।
ভাগ্য মাঝে মাঝে সুপ্রসন্ন হয়ে যায়।
বিকেলে আমি স্কুল মাঠের দিকে যাচ্ছিলাম। মেয়েটার সাথে আবার দেখা হলো। বললাম, কোথায় যাচ্ছো? মেয়েটা বলল, নৌকা বাইতে। আমি বললাম, আমাকে সাথে নিবে? আলামিন বাজারের পাশের রাস্তা দিয়ে বিরাট এক খাল গিয়ে মিশেছে পদ্মানদীতে। সেই খালে ছোট্র একটা ডিঙ্গি নৌকা বাঁধা। আমরা ঊঠে বসলাম। মেয়েটা কি সুন্দর করে একবার ডানে, একবার বামে বৈঠা চালাচ্ছে। আর নৌকাটা তরতর করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েটাকে যত দেখছি, তত মুগ্ধ হচ্ছি! দস্যি মেয়ে! সব পারে। অথচ কোনো অহংকার নেই। শহরে থেকেও আমি কত কিছু পারি না। জানি না। মিথ্যা বলব না, আমার খুব ইচ্ছা করলো এই অতি মনোরম পরিবেশে মেয়েটাকে একটা চুমু দেই। সহজ সরল ইচ্ছা। আমার মনে কোনো পাপ নেই।
সাত দিন গ্রামে থাকলাম।
মেয়েটার নাম লায়লা। এই সাত দিন লায়লা আমাকে যথেষ্ঠ খাতির যত্ন করেছে। গাছ থেকে বেল পেরে ভরতা বানিয়ে খাইয়েছে। গরু কিভাবে বাচ্চা দেয় সেটা খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেছে। আমাকে মাছ ধরতে শিখিয়েছে। এমন কি লায়লা পুকুরে ডুব দিয়ে মাছ ধরেছে। যা দেখে আমি মুগ্ধ! তিন বার লায়লাদের বাড়িতে খেয়েছি। এর মধ্যে একদিন লায়লা নিজে রান্না করেছে। আমার মনে আছে লায়লা ইলিশ মাছ রান্না করেছিলো বেগুন দিয়ে। খুব স্বাদ হয়েছিলো। লতি রান্না করেছিলো- নদীর চিংড়ি মাছ দিয়ে। আর ডাল করেছিলো চালতা দিয়ে। সেইসব খাবারের স্বাদ আজও আমার মুখে লেগে আছে।
শহরে ফিরে এলাম।
দেড় মাস পর আব্বার সাথে আবার গ্রামে গেলাম। এবার আমি ঠিক করেছি লায়লাকে আমার ভালোবার কথা বলব। কোনো ভান বা ভনিতা করবো না। শুধু বলব- 'আমি তোমাকে ভালোবাসি। লেখাপড়াটা শেষ হলেই আমি তোমাকে বিয়ে করবো'। দাদা দাদীর সাথে আগে দেখা না করে দৌড়ে গেলাম লায়লাদের বাড়ি। অপ্রত্যাশিত একটা আঘাত পেলাম। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। বুকটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। চোখে পানি চলে এলো। লায়লার বিয়ে হয়ে গেছে। টঙ্গী বাড়ি থানার মিজমিজি গ্রামের চেয়ারম্যানের ছেলের সাথে। অপ্রত্যাশিত আঘাত আমাকে কাবু করে ফেলল। প্রচন্ড জ্বর হলো। জ্বর আর কমে না। শেষে আব্বা আমাকে ঢাকা এনে হাসপাতালে ভরতি করালো।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আঘাত সহ্য করা অনেক কষ্টের।
২| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৮
কামাল৮০ বলেছেন: হাজার যুবকের গল্পের একটি।সহজ ভাবে বলেছেন এই জন্য পড়ে ভালো লাগলো।আমি অনেক লেখাই পুরাটা পড়ি না।এটা একটা বাজে অভ্যাস।কি করে দুর হবে তাও জানি না।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২১
রাজীব নুর বলেছেন: বুদ্ধিমানদের পুরো লেখা পড়তে হয় না।
ভাত রান্না করতে গেলে হাড়ির সব চাল টিপে দেখতে হয় না।
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৮:৫৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার আমাদের শাহেদ জামাল সিরিজটা আমার পড়া হয় না।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি সাহেদ জামালকে পছন্দ করেন না।
৪| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:০৭
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: সুনডোরই মেয়েরা কারা তাদের আসলেই ভালোবাসে তাদের চিনতে পারেনা।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
৫| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৩:১৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নিজের কথা আর কতো সাহেদ জামালের
মুখ দিয়ে বলাবেন!
তবে গল্প সুন্দর হয়েছে
পড়ে আরাম পেলাম!
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদ জামাল আর আমি আলাদা।
৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৩:১৯
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: এরকম ঘোমটা দেয়া পিক কেন?
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: এমনি দিলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩২
সোনাগাজী বলেছেন:
আঘাত পাবার মতো ঘটনা