নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে লিলি।
এখন অনেক রাত। সারা শহর গভীর ঘুমে। শুধু রাস্তার কুকুর গুলো জেগে আছে। দুই একটা কুকুর মাঝে মাঝে ঘেউ ঘেউ করছে। পাশের বাসায় ছোট একটা বাচ্চা কাঁদছে। বাচ্চাটা প্রতিদিন একই সময় কেন কাঁদে? কে জানে! আজ খুব বেশী জোছনা। জোছনা মানুষকে বিমোহিত করে। কোমল শীতল বাতাস বইছে। অথচ সারাদিন বেশ গরম গেছে। দুটা এখনও বাজেনি। ঠিক রাত দুটায় লিলি ছাদে যাবে। এরকমই কথা হয়ে আছে। ছাদের ছোট ঘরে থাকে সুমন। সুমনকে ভালো লাগে লিলির। সহজ সরল একটা ছেলে। সুমন খুব হাতজোর করে বলেছে লিলিকে যেতে। একবার। শুধু একবার। লিলি কাউকে মানা করতে পারে না।
সুমন লিলিকে দেখে মুগ্ধ!
সে এসেছে। শেষ পর্যন্ত এসেছে। সুমন লিলির হাত ধরে ঘরের ভিতর আনলো। দরজায় ছিটকিনি দিলো। লিলি খাটের এক কোনায় বসলো। সুমন বলল, কেউ দেখেনি তো? লিলি দেখলো- সুমনের চোখে মুখে কেমন অস্থিরতা। মুখের মধ্যে স্পষ্ট ভয়ের ছাপ। লিলি বলল, আমাকে কেউ দেখেনি ছাদে আসতে। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। সুমন বলল, তুমি এসেছো, আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার কি যে খুশি লাগছে। খুশিতে আমার বুক ধড়ফড় করছে। দেখো স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। লিলি তুমি পানি খাবে? ঘরে লেবু নাই। থাকলে তোমাকে লেবুর শরবত বানিয়ে দিতাম। আমি বুঝতে পারিনি, তুমি সত্যি সত্যি আসবে।
লিলি একটা শাড়ি পরে এসেছে।
শাড়িটা সুন্দর। সাদার মধ্যে ছোট ছোট নীল নীল ফুল আঁকা। মাথা ভরতি এক আকাশ খোলা চুল। হাতাকাটা ব্লাউজ। চোখে কাজল দিয়েছে মোটা করেছে। কপালে টিপ। সুমন ঘামছে। তার মতো দরিদ্র লোকের ঘরে একটা মেয়ে বসে আছে রাজরানীর মতো। লিলি বলল, তুমি আমায় ডেকেছো কেন? সুমন বলল, আমি তোমার পাশে বসে তোমাকে দেখতে চাই। আজ পর্যন্ত আমি কোনো মেয়েকে এত কাছে বসি নাই। লিলি তুমি অনেক ভালো। সুমন ঘরের বাতি নিভিয়ে দিলো। বাইরের উথাল পাথাল জোছনা ঘরে ঢুকুক। তাঁরা যেন জোছনার আলোতে স্বপ্নের কোনো জগতে প্রবেশ করলো।
লিলি বলল, অন্ধকার আমার ভয় করে।
তাছাড়া অন্ধকারে তুমি আমাকে কিভাবে দেখবে? সুমন বলল, দেখো কি তীব্র জোছনা! আজ আমি চাঁদের আলোয় তোমাকে কবিতা পড়ে শোনাবো। নিজের লেখা কবিতা। লিলি বলল, আমি কবিতা-টবিতা বুঝি না। সুমন বলল, অবশ্যই বুঝবে। নিশ্চয়ই বুঝবে। সব মানুষই কবিতা বুঝে। মানুষের জন্যই তো কবিতা। জানো, আমার অনেক দিনের শখ কোনো মেয়েকে পাশে বসিয়ে কবিতা পড়ে শুনাবো। এজন্যই এত রাতে তোমাকে ডেকেছি। লিলি বলল, আমি বেশিক্ষন থাকতে পারবো না। সুমন বলল, না আমি তোমাকে বেশি সময় আটকে রাখবো না। তোমার বাবাআকে আমাই ভয় পাই।
সুমন বলল, তোমাকে বেশিক্ষন থাকতে হবে না।
মাত্র দুটা কবিতা তোমাকে শোনাবো। লিলি মন দিয়ে প্রথম কবিতাটা শুনল। কিছু বুঝলো, বেশির ভাগই বুঝলো না। কবিতা শেষ করে সুমন বলল, কেমন লাগল? লিলি সুমনের গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলল- খুব সুন্দর হয়েছে। সুমন বলল, আচমকা বলল, আমি কি তোমাকে একটা চুমু দিতে পারি? আর কিচ্ছু না শুধু একটা চুমু। মাত্র একবার। প্লীজ রাজকুমারী আমার তুমি রাগ করবে না। সুমন লিলির গলায় চুমু খেলো। তারপর বলল, তুমি রাগ করলে নাতো? আমি কি কোনো অন্যায় করলাম? এত রাতে তোমাকে আমার ঘরে নিয়ে এলাম। কেউ জেনে ফেললে বিরাট বিপদ হবে।
সুমন বলল, আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আরেকটা কবিতা শুনবে? এইসব কবিতা তোমাকে নিয়েই লিখেছি। লিলি সুমনকে একটা চুমু দিলো। সুমন বলল, খুব ভালো লাগলো। লিলি তোমার বাবাকে আমি ভয় পাই। সে ভীষন রাগি লোক। আমার খুব ইচ্ছা হয় তোমাকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাই। কিন্তু সেই উপায় নেই। আমি দরিদ্র লোক। ছোট একটা চাকরী করি। বেতনের টাকা বেশির ভাগই গ্রামে পাঠিয়ে দিতে হয়। আমার তিনটা ছোট বোন আছে। তিনজনই অবিবাহিত। তাদের কে বিয়ে না দিয়ে তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। দেশে আমাদের কোনো জমিজমা নেই। জমি তো দূরের কথা নিজেদের বাড়ি পর্যন্ত নেই।
লিলি বলল, আমাকে তোমার বিয়ের করার দরকার নেই।
তুমি শুধু আমাকে নিয়ে কবিতা লিখো। আর মাঝে মাঝে আমাকে কবিতা পড়িয়ে শুনিয়ে। তাতেই আমি খুশি থাকবো। এখন আরেকটা কবিতা শুনাও। সুমন বলল, এর আগে আমার কাছে কেউ এরকম করে কবিতা শুনতে চায়নি। লিলি এখন যদি আমি তোমাকে আরেকটা চুমু খাই, তুমি রাগ করবে? এতটুকু দয়া করো। প্লীজ। অনুমতি দাও। আমি জোর করবো না। নারীদের উপর জোর করা অন্যায়। তাঁরা বিশাল হৃদয়ের অধিকারী। চাইলেই তাঁরা দেয়। লিলি হাসছে। লিলির শাড়ির আচল অনেকখানি সরে গেছে। সুমন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। সেখানে হাত রাখার সাহস সুমনের নেই। সে দেখেই মুগ্ধ।
সুমন বলল, আমার জীবনে কোনো আনন্দ নেই।
সারাদিন কাজ করি। রাতে বাসায় ফিরে কবিতা লিখি। কবিতা লিখে আমি আনন্দ পাই। বেশ কয়েকটা পত্রিকায় কবিতা পাঠিয়েছি- তাঁরা কেউ আমার কবিতা ছাপায় না। তবু কবিতা লিখতে আমার ভালো লাগে। আজ আমার জীবন ধন্য হলো। আমি তোমাকে আমার লেখা কবিতা শোনাতে পেরেছি। লিলি তুমি আমার জীবন ধন্য করে দিলে। এখন থেকে তুমি সময় পেলেই আমার কাছে আসবে। আমার পাশে বসবে। আমি তোমাকে কবিতা শুনাবো। কোনো বিরক্ত করবো না। দরকার হলে চুমুও চাইবো না। তবে তুমি যদি নিজে ইচ্ছা করে দিতে চাও তো দিতে পারো। আমি মানা করবো না।
২| ২২ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ২:০৩
কামাল৮০ বলেছেন: অনেক দিন পর গল্প লিখলেন।মন খারাপ?মন খারাপ করে লাভ নাই।
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:৪৭
শেরজা তপন বলেছেন: এধরনের গল্প আপনি ভালই লিখেন- কবিদের এইসব কাব্যিক প্রেমের রেশ কেটে যেতে সময় লাগে না( বিপরিত লিঙ্গের কথা বলছি)।
~একবার একটা মেয়ে কবিকে নিয়ে লিখবেন? এটা অনুরোধ
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ছবিটা সুন্দর হয়েছে।
৫| ২২ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:০১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বাঙলী মেয়েরা এখনও কবিতাপ্রেমী?
৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৪:৫৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার ওস্তাদ সোনাগাজী সাহেবের খবর কি? তিনি কি ইচ্ছাকৃতভাবে আসছেন না!
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: সামু তাকে বারবার অপমান অবহেলা করেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:৪৬
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: হোকনা দুইটা লঙ কিস। একটা টাইট হাগ।
চমৎকার লাগলো।