নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার সাঁতার শেখার গল্প

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৫



ছোটবেলার কথা। থাকি শহরে। সাঁতার জানি না।
একদিন আব্বা বললেন, বাংলাদেশে হলো নদীর দেশ। এই দেশে অনেক নদী। অথচ আমার ছেলে সাঁতার জানে না। মনে মনে ভাবলাম। এবার সাঁতার টা শিখে ফেলব। আব্বা খুশি হবে। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। স্কুল বন্ধ। পুরো ডিসেম্বর মাস হাতে আছে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। এবার সাঁতার শিখেই গ্রাম থেকে ফিরবো। সাঁতার না জানার কারনে আব্বা আম্মা আমাকে নদী পথে কোথাও যেতে দেয় না। বই পড়ে সাঁতার শেখা যায় না, এটা আমি জানি। সাঁতার শেখার জন্য পানিতে নামতে হবে- এতটুকু আমি বুঝি। সাঁতার শেখা খুব কঠিন কিছু না।

গ্রামে গেলাম। আমাদের নিজেদের একটা পুকুর আছে।
গ্রামের অনেক পোলাপান এই পুকুরে এসে দাপাদাপি করে। সাঁতার কেটে ছোট ছোট পোলাপান পুকুরের এক মাথা থেকে আরেক মাথায় চলে যায়। আমি দূর থেকে তাকিয়ে দেখি। বড় ভালো লাগে। তবে আমার ধারনা আমাদের পুকুরে একটা মস্ত বড় সাপ আছে। একবার আমি নিজের চোখেই দেখেছি- বড় একটা সাপ একেবেকে পুকুরে নেমে যাচ্ছে। আমি ভাই সাপ খুব বেশী ভয় পাই। কাজেই পুকুরে সাঁতার শেখাটা সঠিক কাজ হবে না। যদি সাপটা আমাকে কামড়ে দেয়। একমাত্র সাপের ভয়ের কারনে আমার গ্রামে আসতে ইচ্ছা করে না।

আমি স্নান করি ছোট গোছল খানায়। কল ছাড়লেই বড় বালতি ভরে যায়।
সাবান মাখি, চুলে শ্যাম্পু দেই। পাঁচ ছয় মিনিটে গোছল শেষ। গ্রামে গিয়ে মনে হলো- পুকুরে সাঁতার শিখবো না। পুকুরের পানিতে অনেক লোক গোছল করে। বউ ঝি'রা হাড়ি পাতিল ধোয়। তাছাড়া একটা বড় সাপ তো আমি নিজের চোখেই দেখেছি। আমাকে সাঁতার শিখতে হবে নদীতে। আমার বন্ধু রবিন সে নদীতে সাঁতার শিখেছে। রবিন মিথ্যাবাদী। ওর কথা বিশ্বাস করা ঠিক হবে না। হয়তো সে সাঁতার জানেই না। অথচ বলে সে সাঁতার কাটতে পারে। সত্যজিতের 'সোনার কেল্লা' বইটা রবিন আমার কাছ থেকে চুরী করেছে। ও মনে করেছে- সেটা আমি জানি না।

আমাদের বাড়ি থেকে ১৫ মিনিট হেঁটে গেলেই পদ্মানদী।
আমি একটা গামছা কাঁধে নিয়ে হাঁটা দিলাম। বিশাল নদী। দেখলেই মন ভাল হয়ে যায়। নদীতে কেউ গোছল করছে। কেউ কাপড় ধুয়ে নিচ্ছে। একজনকে দেখলাম গরুকে গোছল করিয়ে দিচ্ছে। আমি শার্ট প্যান্ট খুলে গামছা পড়ে নিলাম। ভয়ে ভয়ে নদীতে নামলাম। ঠান্ডা পানি। বুক পর্যন্ত পানিতে নামলাম। এবং ডুবে গেলাম। নদীর পানি মুখ দিয়ে পেটে ঢুকে গেলো। কেউ একজন আমাকে টেনে তুললো। গামছা পরা ছিলাম, সেই গামছা কোথায় হারিয়ে গেলো আমি জানি না। ন্যাংটা অবস্থায় আমাকে বাড়ি নিয়ে আশা হলো। আমার নুনু নিশ্চয়ই সকলে দেখে ফেলেছে!

আমাকে কোলে করে বাড়িতে দিয়ে গেলো।
দাদী খুবই রাগ করলো। বলল, গাধা পুলা। আমাকে বললেই তো আমি সাঁতার শেখার ব্যবস্থা করে দেই। তোকে কে বলেছে নদীতে নামতে। আব্বা দাদীকে বলল, আমার ছেলেকে গাধা বলবা না। যাইহোক, পরের দিন ঠিক করলাম পুকুরেই সাঁতার শিখে নেবো। হাটু পর্যন্ত পুকুরে নামলাম। দেখি আমার পা ঢেবে যাচ্ছে। পুকুরের মাটি নরম। আমি কিছুতেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না। ডুবে গেলাম। পুকুরের পানি দিয়ে পেট ফুলে গেলো। এক মেয়েকে আমাকে টেনে তুললো। মেয়েটা সুন্দর। ঢাকা ফিরে এলাম। সাঁতার শেখা আর হলো না। আসলে এক জীবনে মানুষ সব শিখতে পারে না। ভাগ্য বলেও একটা কথা আছে।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাঁতার শেখার নিয়ম হল পুকুরের মাঝখানে একটা বাঁশ গাড়তে হবে। তারপর সেই বাঁশ ধরার জন্য শিক্ষার্থীকে ঘাট থেকে আল্লাহর নাম নিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। তারপর বাকিটা আল্লাহ ভরসা। অতি দ্রুত সাঁতার শেখার এইটাই শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:১০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আল্লাহর উপর ভরসা করি না।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৩

চারাগাছ বলেছেন:
তখন আপনার খৎনা হয়েছিল?

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী। হয়েছিলো।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:২১

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: ভরা পদ্মায় সাঁতার কেটেছি, ভাবলে এখন ভয় লাগে।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: চেষ্টা করলে আবার পারবেন।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৫০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমি সাঁতার শিখেছি আমাদের পুকুরে , সেজচাচার কাছে।
এরআগে গাছে শিকড় ধরে জোরে জোরে পা ছুড়তাম পানিতে। একদিন সেজচাচা পেটের নিচে হাত আমাকে হাত পা ছুড়তে বললেন। আমি হাত পা ছুড়ছি আর সেজচাচা পেটের নিচে হাত দিয়ে ধীরে ধীরে সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন। কখন যে হাত ছেড়ে দিয়েছে টেরই পায়নি। হটাৎ দেখি সাঁতার শিখে গেছি।

একদিন সব গল্প বলবো।
যাইহোক গামছা পড়ে পানিতে নামা ঠিক হয়নি।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আমি চেয়েছিলাম নিজে নিজে একা একা সাঁতার শিখতে।

ভুলে জামা কাপড় নেই নি। আবার পনের মিনিট হেঁটে বাড়ি ফিরবো। তাই গামছা দিয়ে ইজ্জত বাঁচাতে চেয়েছিলাম।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫

নতুন বলেছেন: আপনি বাইসাইকেল চালাতে পারেন?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা পারি।
সাইকেল চালিয়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরে বেড়িয়েছি।

৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৩

সোনাগাজী বলেছেন:




ছবির পুকুরের পানি পরিস্কার? বছরের কোন সময়ে তোলা ছবি?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: ছবিটা ফরিদপুরের একটা গ্রাম।
কোন সময় সেটা মনে নাই।

৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:২০

কামাল১৮ বলেছেন: সাঁতার যে কবে জানতাম না সেটাই মনে নাই।মা লাঠি দিয়ে পানিতে আঘাত করতো আর বলতো, ওঠে আয় সন্ধ্যা হয়ে গেছে খাওয়ার নাম নাই ,সঁতার কাটলে পেট ভরবে।
আপনার সাঁতার শেখার ঘটনা দুঃখের এবং মজার।এক সময় আমাদের পরিচিত একজন (তার নাম মোশারফ)স্টেডিয়ামে সাঁতার শিখাতো।এখন মনে হয় বন্ধ হয়ে গেছে।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: স্টেডিয়ামে সাঁতার শেখার ব্যবস্থা এখনও আছে। সেখানে বাচ্চারা সাঁতার শিখে।

৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:২৯

কামাল১৮ বলেছেন: এখানে ভাগ্য আবার কোথাথেকে প্রবেশ করলো।ভাগ্য কি আসে আর যায়।এর পরে যখন আসবে আর ছাড়বেন না।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: ভাগ্য বলে কিছু নেই। যা কিছু আছে সেটা অর্জন করে নিতে হয়।
আমি কথার কথা হিসেবে ভাগ্যের কথা বলেছি।

৯| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৩৬

বিটপি বলেছেন: আমি সাঁতার শিখেছি সুইমিং পুলে, ইন্সট্রাকটরের অধীনে। বেশ সুন্দর করে স্টেপ বাই স্টেপ শিখিয়েছিল।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: গ্র্বেট।

১০| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫০

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: ছবিটা ফরিদপুরের একটা গ্রাম।


কোন এলাকার গ্রাম এটা। আমিও তো ফরিদপুরী। B-))

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ বেশ।
এটা সালতা গ্রাম।
আমি ফরিদপুরের প্রতিটা গ্রাম ঘুরেছি।

১১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:০৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



গুলিস্তান বায়তুল মোকারম ঢাকা স্টেডিয়ামের পাশে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সুইমিং পুল আছে, সেখানে দক্ষ কোচ আছেন। সাতার শিখিয়ে দেবেন সময় লাগবে তিন থেকে সাত দিন। প্রতিদিন খরচ খুব সম্ভব ২৫০-৩০০ টাকা।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ জানি।
কিন্তু এখন আর সাঁতার শেখার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।

১২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:২৯

অনামিকাসুলতানা বলেছেন: সাঁতার শেখার ঘটনা পড়ে না হেসে পারলাম না।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ। গুড। এটাই চেয়েছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.