নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মানুষের জীবনে রসিকতার দরকার আছে।
আনন্দ, বিনোদনের দরকার আছে। নইলে জীবন রসহীন হয়ে যাবে। আনন্দ বিনোদন নিতে হবে- বই থেকে, মুভি দেখে এবং হাদীস থেকে। আমাদের নবীজিও রসিকতা করতেন। একটা উদাহরণ দিচ্ছি। একবার এক বৃদ্ধা মহিলা, নবীজিকে জিজ্ঞাসা করেছিল- 'আমি বুড়ী হয়ে গেছি। আমি কি জান্নাতে যেতে পারবো'? প্রশ্ন শুনে নবীজি উত্তর দিলেন- 'না, কোন বৃদ্ধ জান্নাতে যাবে না'। এই কথাটা শুনে, সেই বৃদ্ধা দুঃখ নিয়ে চলে যাচ্ছিলো। সেটা দেখে আল্লাহর রাসুল তাকে ডাক দিয়ে বললেন- 'শোন, জান্নাতে কেউ বুড়ো থাকবে না। জান্নাতে সবাই চীর-যৌবন প্রাপ্ত হবে। কেউই বুড়ো হবে না। এমন কথা শুনে, বুড়ী খুশি হয়ে চলে গেল। নবীজির রসিকতাটা ধরতে পেরেছেন? কি সুন্দর রসিকতা দেখলেন!
আমি একজন রসিক মানুষ। আমি প্রচুর রসিকতা করি।
আমাদের চাঁদগাজীও দারুন রসিক মানুষ। যাইহোক, আমাদের এলাকায় এক ভাবী আছেন। একসময় ভাবীরা দারুন গরীব ছিলেন। যার সাথে বিয়ে হলো সেই বেচারাও গরীব। এমনকি ভাবী গরীব ঘরের মেয়ে। ভাবির স্বামী বিয়ের পরও লেখাপড়া চালিয়ে গেলেন। এবং নিজ চেষ্টায় একটা ভাল চাকরী পেয়ে গেলেন। সেই চাকরীতে প্রমোশন পেয়ে পেয়ে এখন তাঁরা বিরাট ধনী। এখন ভাবীর হাতে অনেক টাকা। ভাবী দুই হাতে টাকা খরচ করেন। প্রতিদিন সে শপিং এ যায়। এলোমেলো হাবিজাবি অনেক কিছু কিনে আনেন। তার স্বামী কিছু বলেন না। কারন একসময় তাঁরা অনেক দরিদ্র ছিলো। এখন অবস্থা ফিরেছে। ভাবী স্বামীর ক্রেডিট কার্ড নিয়ে শপিং এ যান। ইচ্ছা মতো কেনাকাটা করতেই থাকেন। ভাবী গরুর মাংস রান্না করলেই আমাকে ফোন দেন।
কয়েক বছর ধরে ভাবী ধার্মিক হয়ে গেছেন।
হিজাব ধরেছেন। বোরকা ধরেছেন। এখন ভাবীর কাছে কেউ টাকা চাইলে- ভাবী তাকে টাকা দিয়ে দেন। অনেকেই তার কাছ থেকে মিথ্যা বলে টাকা নেয়। অমুকের বাচ্চা হবে- টাকা লাগবে। ভাবী দিয়ে দেয়। ওমুক অসুস্থ চিকিৎসা করাবে কিন্তু টাকা নেই। ভাবী টাকা দিয়ে দেয়। একদিন আমি ভাবীকে বললাম, আপনি যে টাকা চাইলেই দিয়ে দিচ্ছেন। এরা তো মিথ্যা বলে আপনার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। আপনাকে বোকা বানাচ্ছে। তখন ভাবী বলল, এটা আমার সমস্যা না। এটা ওদের সমস্যা। আমি যে নিয়তে দিয়েছি সেটা ঠিকই আল্লাহ কবুল করবেন। আর ওদের বিচার আল্লাহ করবেন। আমি বললাম, ভাবী আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিন। আমি যা খুশি তাই করবো। আল্লাহ আমার বিচার করবেন। ভাবী বললেন, রাজীব এই দুনিয়া কিছুই না। দুই দিনের দুনিয়া। পরকালটাই আসল। পরকালের কথা ভাবী।
আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা চলছে।
ধর্মের বিষয়ে মানুষ একদম কাঁত হয়ে যায়। মদের নেশার চেয়ে ধর্মের নেশা ডেঞ্জারাস। আমার নানীর কথা বলি- আমার নানী বিরাট ব্যবসায়ী ছিলেন। বিক্রমপুর এবং ভারতের আসামের গোহাটিতে নানীর ব্যবসা ছিলো। নানী পিতলের থালা বাসন হাড়ি পাতিল ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করতেন। টানা ত্রিশ বছর ব্যবসা করে নানী অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেলেন। খুব পরিশ্রম করতে পারতেন নানী। আসামে বাড়ি করেছেন, বিক্রমপুরে বাড়ি করেছেন, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া ধুপখোলা মাঠের কাছে বাড়ি করেছেন। যাইহোক, একসময় আমার নানী এক সাধু বাবার খপ্পরে পড়লেন। এরপর পাঁচ বছরের মধ্যে নানীর ব্যবসা শেষ হলো। জমানো টাকা পয়সা সব শেষ হলো। ব্যবসা উঠে গেলো। নানী হয়ে গেলেন প্রায় পথের ফকির।
নানী ব্যবসা বাদ দিয়ে মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়াতেন।
আজমী শরীফ গিয়ে মাসের পর মাস থাকতেন। চুল আচড়ানো বাদ দিয়েছেন। চুলে দেখা দিলো জট। দূরদূরান্ত থেকে নানান রকম পীর ফকির আসতেন বাসায়। নানীকে তজবি, জায়নামাজ, তাবিজ ইত্যাদি হাবিজাবি দিয়ে যেতেন, বিনিময়ে টাকা পয়সা নিয়ে যেতেন। ঘরে টাকা না থাকলে নানী গহনা দিয়ে দিতেন। একদিন নানী অসুস্থ হয়ে পড়লেন। কিন্তু সে ডাক্তার দেখাবেন না। কারন তার পীর বাবা মানা করেছেন ডাক্তার দেখাতে। সেই পীর জ্বীনের মারফত নানীর চিকিৎসা করছেন। ফলাফল রোগে শোকে ভূগে নানীর মৃত্যু। এবং নানীর মৃত্যুর পর দেখা গেলো তার কোনো সম্পদ নেই। ধর্মের পেছনে ছুটে, ধনী থেকে আমার নানী দরিদ্র হয়ে মারা যান।
আমাদের দেশে কোনো কালেই পীর ফকিরের অভাব নেই।
এখন তো ঢাকা শহরের অনেক ফ্লাটে জিকির হয়। বছরে দুই তিনবার উৎসব হয়। বিরাট খানা দানা হয়। সমগ্র বাংলাদেশে কত শত বাবা যে আছে তার হিসাব নাই। আর এদের মুরিদের শেষ নেই। আমি নিজে এরকম কিছু বাবার বাসার অনুষ্টানে গিয়েছি। নিজের চোখে দেখে দেখেছি- তবলা, হারমোনিয়াম নিয়ে গান বাজনা হচ্ছে। বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ তালে তালে মাথা দোলাচ্ছে। পীর বাবা উঁচু আসনে বসে আছেন। পীর বাবার পেট বিশাল। গলায় মালা। মাথায় নেপালি টুপি। হাতে সব গুলো আঙ্গুলে পাথর বসানো আংটি। অনেকে এসে বাবার পায়ে চুমু দিচ্ছে। কেউ কেউ হাতে টাকা গুজে দিচ্ছে। পীর বাবা বই লিখেছেন। সেই বই ভক্তরা কিনে নিচ্ছে। তার দরবারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ভিডিও করা হয়েছে। সেই ভিডিও করা অনুষ্ঠানের সিডি লোকজন আগ্রহ নিয়ে কিনছে।
ধর্ম বদলাতে বদলাতে একদম কোরআন হাদিসের বাইরে চলে গেছে।
আসল ধর্ম হারিয়ে গেছে। বলা হয় আল্লাহকে পেতে হলে আগে নবীকে পেতে হবে। নবীকে পাওয়া সহজ নয়। এই সমস্ত পীর বাবারা নবীকে পাইয়ে দিবেন। এজন্য পীরের মুরিদ হতে হবে। পীরের উপর সম্পূর্ন ভক্তি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। পীর বাবার কথায় উঠতে হবে, বসতে হবে। বড়ই কামিলদার পীর। তার অনেক ক্ষমতা। কারো বাচ্চা না হলে সমস্যা নাই। বাবায় পেটে হাত বুলিয়ে দিলেই বাচ্চা হয়ে যায়। ছেলেমেয়ে লেখাপড়ায় ভাল না। কোনো সমস্যা নাই। পীর বাবা ফু দিয়ে দিবেন। এখন চোখ বন্ধ করে ছেলেমেয়ে জিপিএ- ফাইভ পেয়ে যাচ্ছে। কেউ হারিয়ে গেলে পীর বাবা চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারে। এরকম বহু গল্প দিয়ে ভরা প্রতিটা পীর বাবাদের জীবন। পীর বাবা মারা গেলে, সে তার পাওয়ার তার ছেলেকে দিয়ে যান। বংশ পরম্পরায় চলছে পীরালি ব্যবসা।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: আছে। কামাল১৮।
আপনি রসিকতা বুঝেনে না। সিরিয়াস হয়ে যান।
২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:০১
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ভারত এবং বাংলাদেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী পীর, ফকিরের পিছনে দৌঁড়ায়। মানুষকে সচেতন করতে না পারলে এসব পীর, ফকিরদের দৌঁড়াত্ব কমবে না।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: পীরের দুনিয়াতে মানুষ কি যে মজা পায় বুঝি না।
৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:০২
কামাল১৮ বলেছেন: আমি বিনোদনের জন্য ওয়াজ শুনি।ওয়াজে চরম বিনোদন থাকে।ইদানিং জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন কাজি ইব্রাহিম।বের হয়েই চরম বিনোদন দিলেন।জেলে তিনি শয়তানকে কোরান শিক্ষা দিতেন।আব্বাসীর কথা শুনলে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: খেয়াল করে দেখবেন ধার্মিকদের সকল কর্মকান্ডই বিনোদনে ভরা।
৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
পীর ব্যবসা পশ্চিমারা শিখতে পারলো না।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: ওরা পরিশ্রম করে ইনকাম করতে চায়।
ধার্মিকেরা মানুষকে ঠকিয়ে ধনী হতে চায়।
৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫১
অনামিকাসুলতানা বলেছেন: এই যুগে এসে ও মানুষের কি হাস্যকর কাণ্ড কারখানা। ব্যাপক বিনোদন।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই গুলো ছাগল শ্রেনী। নির্বোধ শ্রেনী।
৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩০
রেজাউল৭৬ বলেছেন:
আদ্যোপান্ত পাঠ করিলাম। জনস্বার্থে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলিয়া ধরিয়া একটি ধন্যবাদযোগ্য কাজ করিয়াছেন।
রচনার পরতে পরতে আপনার মেধা, উন্নত রুচি ও মননশীলতার দ্যুতি বিচ্ছুরিত হইতেছে। কালোত্তীর্ণ রচনা হিসাবে ইহা নিশ্চিতই বিদগ্ধজনের হৃদয়ে স্থায়ী হইবে। সন্দেহ নাই এইরূপ রচনাই হইবে অনাগত প্রজন্মের নিকট সকল অনুপ্রেরণার উৎস।
আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করিতেছি।
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:২৪
মৌন পাঠক বলেছেন: আমার দেখা অনেকে এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৭:৫০
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: পীর আমেরিকায় হাজার হাজার আছে, আছে সব দেশেই। তারা কেউ যীশুর উপর ভর করে, কেউ নবীজির ওপর। আবার কেউ কেউ নতুন তত্ব নিয়ে হাজির হয়। এরকমই এক পীর আলোড়ন তোলা রজনিশ।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
একজন পীর আমার দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আপনি আর চাঁদগাজী (সোনাগাজী) ছাড়া সামুতে আর কোনো রসিক ব্লগার কি আছেন?