নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
নীলাকে হত্যা করা হয়েছে।
নীলার বয়স তেইশ। সে লালমাটিয়া কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স পড়ছে। সে তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তাম। তার মা নেই। ক্যান্সারে মারা গেছে। তখন নীলা মাত্র ইউনিভার্সিটিতে ভরতি হয়েছে। নীলা ধনী বাবার কন্যা। সমস্ত বিষয় সম্পত্তি নীলার নামে। যেহেতু নীলার বিয়ে হয়নি, তাই সমস্ত মানুষ মনে করে নীলার যার সাথে প্রেম ছিলো সে-ই তাকে হত্যা করেছে। যদি নীলা বিবাহিতা হতো তাহলে প্রথম সন্দেহ করা হতো তার স্বামীকে। এটাই বঙ্গ দেশের নিয়ম। অনেকে বলাবলি করছে নীলাকে খুন করার আগে রেপ করা হয়েছে। যে কোনো নারী ঘঠিত বিষয়ে লোকজন রেপ শব্দটা জুড়ে দিতে পছন্দ করে। বাঙ্গালীদের মানসিকতা অতি কুৎসিত।
নীলার প্রেমিকের নাম শাহেদ জামাল।
শাহেদ অত্যন্ত ভদ্র একটা ছেলে। মানবিক মানুষ। ভালো মানুষ। পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করলেও একবার জেরা করেছে। কিন্তু তাকে প্রতিদিন থানায় একবার গিয়ে হাজিরা দিতে হচ্ছে। শাহেদের মন মানসিকতা ভালো নেই। সে তার সবটুকু ভালোত্ব দিয়ে নীলাকে ভালোবাসতো। শাহেদ এখন জিগাতলায় একটা মেসে থাকে। অথচ এই শহরে তাদের নিজের বাড়ি আছে। কিন্তু বাড়িতে তার সম্মান নেই। সে বেকার। তার ভাই বোনেরা এবং মা তাকে নিয়ে উপহাস করে। বাইরের মানুষের উপহাস সহ্য করা যায় কিন্তু নিজ পরিবারের সদস্যদে উপহাস সহ্য করা যায় না। তাই সে এখন মেসে থাকে। শাহেদ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
নীলা মৃত্যুর পর দেখা গেলো-
নীলা তার সমস্ত সম্পত্তি শাহেদের নামে দিয়ে গেছে। এখন শাহেদ অনেক টাকার মালিক। কোনোদিনই টাকা পয়সার উপর শাহেদ জামালের কোনো প্রকার লোভ ছিলো না। সে নীলাকে ভালোবাসে। সহজ সরল স্বচ্ছ ও পবিত্র ভালোবাসা। এই ভালোবাসার পেছনে কোনো লোভ ছিলো না, স্বার্থ ছিলো না।। পুলিশ যেভাবে তার পেছনে লেগেছে, মনে হচ্ছে তাকে ফাঁসিতে না ঝুলিয়ে ছাড়বে না। শাহেদ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে আমি নীলাকে ভালোবাসি। তাকে আমি কেন খুন করবো? পুলিশ এ কথা মানতে নারাজ। পুলিশ বলছে, শাহেদ জোর করে নীলাকে দিয়ে তার সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়েছে। সম্পত্তি পেয়ে শাহেদ নীলাকে হত্যা করেছে। এই সমাজের পুলিশরা মিথ্যা মামলা সাজাতে ওস্তাদ। তাঁরা দিনকে রাত করে দিতে পারে।
যে রাতে নীলার মৃত্যু হলো-
সে রাতে শাহেদ গিয়েছিলো নীলার বাসায়। সেদিন বাসায় একটা অনুষ্ঠান ছিলো। শাহেদ জানতো না তাদের বাসায় অনুষ্ঠান। শাহেদ গিয়েছিলো নীলার বাবার সাথে দাবা খেলতে। সে প্রায়ই যেতো দাবা খেলতে। অনুষ্ঠানে দেখা গেলো অনেকের হাতেই মদের গ্লাস। শাহেদ মদ খায় না। সে নীলাকে বলল, আজ আমি চলি। নীলা বলল- নো নেভার। পার্টি না শেষ হওয়া পর্যন্ত যেতে পারবে না। রাতে খেয়ে তাঁরা পর যাবে। নীলা শাহেদের হাতে একটা গ্লাস তুলে দিলো। বলল, এটা ওয়াইন, খাও। নেশা হবে না। এই দেখো আমিও খাচ্ছি। এই রকম পার্টি গুলো শাহেদের পছন্দ না। সে কোনার একটা টেবিলে চুপচাপ বসে আছে। নীলাকে দেখছে। নীলা একটা নীল শাড়ি পড়েছে। নীলা যখন অন্য কোনো পুরুষের সাথে কথা বলে, তখন শাহেদের ইচ্ছা করে সেই পুরুষকে খুন করতে।
সেদিন শাহেদ রাত দশটায় পার্টি থেকে চলে আসে।
ওয়াইনে কিছু মেশানো ছিলো কিনা কে জানে! রাতে তার ঘুম ভালো হয়। সকালে পুলিশ তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুললো। নীলাকে খুন করা হয়েছে- একথা শুনে সে ভীষন আঘাত পায়। এই অপ্র্যতাশিত আঘাতে শাহেদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। এই হচ্ছে নীলা হত্যার বৃতান্ত। গতকাল রাতে শাহেদকে গ্রেফতার হয়। তাকে আনা হয় মিন্টু রোডের গোয়েন্দা অফিসে। সারারাত তাকে একটা নোংরা ঘরে বন্ধী করে রাখা হয়। পানি পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি। ঘরে প্রচুর মশা। আলো বাতাস নেই। ভয়ানক দূর্গন্ধ। এ পর্যন্ত শাহেদ দুবার বমি করেছে। তার মাথ কাজ করছে না। এরকম পরিবেশে সে কখনও থাকেনি। তবে বইয়ে এরকম ঘটনা সে অনেক পড়েছে। আজ যদি শাহেদের বাবা বেঁচে থাকতো, তাহলে শাহেদকে এভাবে নোংরা ঘরে শুয়ে থাকতে হতো না।
সকাল ক'টা বাজে শাহেদ জানে না।
তাকে অন্য একটা ঘরে নেওয়া হয়েছে। এই ঘরটা কিছু পরিস্কার। কোনো বাজে গন্ধ নেই। তবে এই ঘরে কোনো জানালা নেই। তার সামনে দুজন দুজন বলশালী লোক বসে আছে। তাদের চোখে মুখে কোনো মায়া-দয়া নেই। তাঁরা বলল, যা প্রশ্ন করবো তার স্পষ্ট জবাব দেবেন। এই প্রশ্নের উপর নির্ভর করবে আপনার ভবিষ্যৎ। শাহেদ বলল, এর আগে একবার আমাকে জেরা করা হয়েছে। আমি যা জানি, যেটুকু জানি- সব বলেছি। এর বাইরে নতুন কিছু বলার আমার নেই। এই কথা শুনে সামনে বসা থাকা দুজন লোকই অত্যন্ত রেগে গেলো। তাদে একজন হুকুম করলো এই শালারা আগে পিটা। ইছা মতো মার। শাহেদ বলল, এটা আইন নয়। তাঁরা আরো রেগে গেলো। পরবর্তী আধা ঘণ্টা তাঁরা শাহেদ কে মারলো। রক্তাত্ব করলো। আর বলল, দেখি তোর কোন বাপ এখন তোকে বাঁচায়। আরো কিছু খারাপ গালাগালি করলো। যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
শাহেদ কুন্ডুলি পাকিয়ে শুয়ে আছে।
রক্তে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর। তার ঠোঁট কেটেছে। ডান হাতের দুটা আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে। নাক দিয়ে সমানে রক্ত পড়েই যাচ্ছে। গলা দিয়ে চি চি শব্দ বের হচ্ছে। এরকম মার সে তার জীবনে খায়নি। অবাক ব্যাপার হচ্ছে এত মার খেয়েও শাহেদ অজ্ঞান হয়ে যায়নি। প্রথম প্রথম তার খুব ব্যথা লেগেছে। এরপর তার কোনো ব্যথা বোধ হয়নি। শাহেদের মনে হচ্ছে- এখন কেউ যদি তাকে এক জগ ঠান্ডা পানি তো সে পুরো জগ পানি খেয়ে ফেলতো এবং তাতেই সে উঠে বসতে পারতো। অনেকখানি শক্তি পেতো। হঠাত শাহেদ কেমন একটা তন্দ্রার মধ্যে চলে গেলো। তার কাছে মনে হলো- নীলা সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে স্বচ্ছ কাঁচের জগে পানি। ঠান্ডা পানি। শাহেদ একটা হাত উঁচু করতে চাইলো কিন্তু পারলো না। তার ঘুম পাচ্ছে। হাত উঁচু করার মতো শক্তি শাহেদের নেই। নীলা বলল, স্যরি। আমি তোমাকে ভীষন বিপদে ফেলে দিলাম। তোমার কোনো ভয় নেই। আমি তোমাকে বাঁচাবো। আমি তোমার সাথে আছি।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: না আর কিছু আসবে না। লেখা এখানেই শেষ।
২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: গল্প ভালো হয়েছে।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
মওদুদ মান্নান বলেছেন: দারুণ লিখেছেন।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া জনাব।
৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সোনাগাজী বলেছেন:
ইহা কি উপন্যাসের অংশ?
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ সঠিক।
একটা উপন্যাস লিখেছি। সেটার অংশ বিশেষ পোষ্ট আকারে দলাম।
৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
কামাল১৮ বলেছেন: আমাদের দেশের পুলিশের হাতে পরলে ভালো মানুষ খারাপ হয়ে যায়।মানবিক দেশের পুলিশের হাতে পরলে খারাপ মানুষ ভালো হয়ে যায়।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ছাত্রলীগের মতো আমাদের দেশের পুলিশও ভয়ঙ্কর।
৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৫৩
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: ভালোই জমছে, একটু খটকা লাগছে বেকার শাহেদ মেসে থাকার টাকা পাবে কোথায়! তাঁর নিজের বাড়িটা কি ভাড়া দেয়া?
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি শাহেদের আগে রপর্ব মিস করেছেন। তাই বিষয়টা আপনার খটকা লেগেছে।
৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৩
অধীতি বলেছেন: শাহেদ নামটা প্রাসঙ্গিক, উপন্যাসটা পড়ার লোভ জাগলো।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখিত ব্রো।
উপন্যাস হিসেবে এটা প্রকাশ হবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩২
নতুন বলেছেন: ভালো হয়েছে, সামনে আরো টুইস্ট আসবে আশা করি।