নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের শাহেদ জামাল- (পঞ্চান্ন)

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৩১



প্রচন্ড গরম। একটা বাসে উঠেছি। যাবো মহাখালি।
বাসে সিট পাইনি। কোনো দিনও পাই না। যাইহোক, রাস্তায় জ্যাম। বাসের হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে আছি। আমার মতো আরো অনেকে বাসের হেন্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকের শরীর ঘামে ভেজা। বিকট কটু গন্ধ পাচ্ছি। এদিকে গরম, কটু গন্ধ, রাস্তায় জ্যাম- সব মিলিয়ে করুণ অবস্থা। যতই কষ্ট হোক আমাকে মহাখালি যেতেই হবে। একজন ফোন করে আসতে বলেছেন। তিনি আমাকে চাকরী দিবেন। আগামীকাল থেকে জয়েন। একটা চাকরী হলে জীবনটাই বদলে যাবে। আমি শাহেদ জামাল তখন ইন করে প্যান্ট পরবো। পালিস করা জুতো পরবো।

রাস্তায় জ্যাম দেখে বাস থেকে নেমে গেলাম।
মনে হলে বাসের চেয়ে আমি হেঁটেই আরো আগে যেতে পারবো। চান্দি ফাটা রোদ উঠেছে। রোদের মধ্যে হাঁটা শুরু করলাম। মুহুর্তের মধ্যে ঘেমে একাকার অবস্থা। গলা শুকিয়ে কাঠ। মনে হচ্ছে এক বালতি পানি খেয়ে ফেলতে পারবো ঈই মুহুর্তে। পকেটে মাত্র চল্লিশ টাকা আছে। বাসায় ফিরতে ২০ টাকা ভাড়া লাগবে। আমি বিশ টাকা দিয়ে একটা পানির বোতল কিনে ফেললাম। এক নিঃশ্বাসে সবটুকু পানি খেয়ে ফেললাম। ইচ্ছা করছে আরেক বোতল পানি খাই। সেই সাথে একটা কেক। আমার পাশেই একজন বসে কেক খাচ্ছে। কাউকে কিছু খেতে দেখলেই আমার সেটা খেতে ইচ্ছা করে।

মহাখালি গেলাম সেই ভাইয়ের অফিসে।
ভাই বললেন, ঈদের পর আসো। আমি বললাম, ধন্যবাদ ভাই। আর ছয় দিন পর ঈদ। ভাই বললেন, রমজান মাস না হলে তোমাকে চা খাওয়াতে পারতাম। আমি বললাম, আপনি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, তার তুলনা হয় না। আচ্ছ ভাই ঈদের কয়দিন পর আসবো? আপনি তো আবার নেপাল যাবেন শুনলাম। ভাই বললেন, এজন্যই তো তোমাকে ঈদের পর আসতে বললাম। কোরবানীর ঈদের পর। আমি হাসি মুখে ভাইয়ের দিকে তাকালাম। ভাই আমার হাসিমুখের দিকে না তাকিয়ে তার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আমি অফিস থেকে বের হলাম।

এখন বাজে দুপুর দুইটা। পকেটে আছে বিশ টাকা।
ঠান্ডা পানি আর একটা সিগারেটের জন্য প্রানটা আকুপাকু করছে। এখন বিশ টাকা খরচ করে ফেললে মেসে ফিরতে হবে হেঁটে হেঁটে। হাঁটা কোনো সমস্যা না। আমি অনেক হাঁটতে পারি। একবার উত্তরা থেকে হেঁটে মগবাজার এসেছিলাম। এক দোকান থেকে একটা বিস্কুট আর একটা সিগারেট খেলাম। বিশ টাকা শেষ। শেষে ড্রামে রাখা পানি খেলাম। কলের পানি। ফিল্টার পানি না। পেট খারাপ না হলেই হলো। অথচ মন চাচ্ছে ঠান্ডা পানি। মনকে বললাম, মন রে ছাই খা, ছাই খা। বিসমিল্লাহ্‌ বলে দিলাম হাঁটা। বড়জোর দুই ঘন্টা একটানা হাঁটলেই আমি মেসে ফিরে যেতে পারবো।

আজকের দিনটা একটা বিশেষ দিন।
তাই রাস্তায় একজন রিকশা চালককে বললাম, ভাই সাহেব আমার একটা ছবি তুলে দিন প্লীজ। রিকশা চালক আগ্ররহ নিয়ে এই ছবিটা তুলে দিলেন। রিকশাচালকই দেখিয়ে দিয়েছেন এভাবে দাঁড়াতে। এই ছবিটা আমার কাছে একটা ইতিহাস হয়ে থাক। আমি কারো উপর রাগ করি না। কাউকে অভিশাপ দেই না। আমি মানুষকে ভালোবাসি। হোক সে রিকশা চালক অথবা যে ভাই আমাকে এই রোদের মধ্যে চাকরির কথা বলে ডেকে এনে ফেরত পাঠালেন। এবার তো মনে হয় ঈদে গ্রামে যেতে পারবো না। অথচ বাবা মা আশা করে বসে আছেন। সব হচ্ছে নিয়তি। আল্লাহপাক যা লিখে রেখেছেন তাই হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৫

অধীতি বলেছেন: স্নাতক শেষ করার পরে অধিকাংশই মোটামুটি শাহেদ জামাল হয়ে যায়।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:২০

রাজীব নুর বলেছেন: রাইট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.