নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোজিনা

০১ লা মে, ২০২৩ রাত ১২:২০



ছবিটা দেখুন। ভালো করে দেখুন।
যদিও অতি সাধারন একটা ছবি। মেয়েটার নাম রোজিনা। বয়স ১৩। মিন্টু রোডের ফুটপাতে থাকে এক বুড়ির সাথে। মেয়েটার দুনিয়াতে কেউ নেই। বাবা-মা, ভাইবোন কেউ নেই। রোজিনা রমনা পার্কে ফুল বিক্রি করে। গোলাপ ফুল। একটা গোলাপ দশ টাকা। ছবিটা আরো মন দিয়ে দেখুন। রোজিনা চুলে একটা গোলাপ খুঁজে রেখেছে। এই গোলাপটা আমি রোজিনাকে দিয়েছি। গোলাপটা তার কাছ থেকেই কিনেছি। এবং আমি তাকেই গোলাপটা দিয়েছি। মেয়েটা ভীষন খুশি হয়েছে। বলল, প্রতিদিন গোলাপ বিক্রি করি কিন্তু কোনোদিন একটা গোলাপ খোঁপায় দেই না।

আমি নিয়মিত রমনা পার্কে যাই।
সারাদিন বসে পত্রিকা পড়ি। পার্কের প্রতিটা সিকিউরিটি গার্ড আমাকে খুব ভালো করে চিনে। ভাসমান হকাররা আমাকে চিনেন। আমার চাকরী চলে গেছে। আমি বাসার কাউকে জানাইনি। তাই সকালে রমনা পার্কে এসে বসে থাকি। বিকেলে বাসায় চলে যাই। বাসার সকলে মনে করে অফিস থেকে ফিরেছি। ঢাকা শহরে একমাত্র রমনা পার্কেই গাছপালা কিছু দেখা যায়। পাখির ডাক শোনা যায়। স্বচ্ছ পরিস্কার বাতাস উপভোগ করা যায়। আমি এই পার্কের প্রতিটা গাছে এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করেছি। সারাদিন রমনা পার্কে বসে থাকতে খারাপ লাগে না। আমি গাছপালা ভালোবাসি।

যাইহোক, রোজিনার ঘটনায় ফিরে আসি।
প্রতিদিন রোজিনার সাথে আমার দেখা হয়। মেয়েটা আমাকে ভাইয়া বলে ডাকে। আমি ঠিক করেছি, নতুন একটা চাকরী পেলে- প্রথম মাসের সেলারি পাওয়ার পর রোজিনাকে নিয়ে বড় একটা রেস্টুরেন্টে যাবো। তাকে তার পছন্দের খাবার গুলো খাওয়াবো। এরপর তাকে নিয়ে যাবো মার্কেটে। রোজিনা যে জামা পছন্দ করবে তাকে সেই জামাটা কিনে দিবো। আমার ইচ্ছা রোজিনা পার্কে ফুল বিক্রি না করুণ। পার্কে মন্দ লোকের অভাব নেই। তাঁরা রোজিনাকে খারাপ ইঙ্গিত দিয়েছে। আমি রোজিনাকে বাঁচাবো। যে করেই হোক বাঁচাবো। মেয়েটার জীবন আমি নষ্ট হতে দিবো না।

আমার কোনো বোন নেই।
রোজিনাকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাবো। তাকে স্কুলে ভরতি করিয়ে দিবো। রোজিনা ফুল ভালোবাসে। তাই তাকে ছাদে একটা ফুলের বাগান করে দিবো। রোজিনাকে একটা উন্নত জীবন দেওয়া উচিৎ। কেন মেয়েটা এভাবে এত অল্প বয়সে পার্কে ফুল বিক্রি করবে? মন্দ লোকেরা রোজিনাকে কুৎসিত ইঙ্গিত করে। আমি এই মেয়েটাকে বাঁচাবো। আমি চেষ্টা করবো মেয়েটা যেন একটা উন্নত জীবন পায়। মেয়েটা যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। নিজেকে যেন প্রতিষ্ঠত করতে পারে। আমি সেই পথ দেখাবো রোজিনাকে। অন্তত যদি একজন মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে পারি- তাহলে মরেও শান্তি পাবো।

রোজিনা কেমন তার একটা উদাহরণ দেই।
একদিন রমনা পার্কে বসে আছি। পকেট খালি। এক কাপ চা আর একটা সিগারেট খাবো সেই উপায় নেই। বাসা থেকে সকালের নাস্তাও করে আসিনি। ক্ষুধায় বেশ কষ্ট হচ্ছে। আমি ভদ্র লোকের ছেলে, না খেয়ে মরে গেলেও তো- কারো কাছে তো হাত পাততে পারি না। সময় তখন দুপুর দুটা। তখন রোজিনা আমার কাছে এলো। আমার হাতে এক প্যাকেট খাবার দিলো। প্যাকেট খুলে দেখি ডিম খিচুড়ি। তৃপ্তি করে আমি ডিম খিচুড়ি খেলাম। দারুন স্বাদ। মনে হলো এত ভালো খিচুড়ি জীবনে খাইনি। এরপর রোজিনা আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে একটা বেনসন সিগারেট দিলো। বলল, এখন দুপুর তাই চা দিলাম না। বিকেলে চা পাবেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০২৩ সকাল ৭:০৩

কামাল১৮ বলেছেন: কাউকে খুশি করতে পারলে নিজেরও ভালো লাগে।

০১ লা মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আসল কথা হচ্ছে- অন্যের কিছুতেই নিহিত আছে নিজের খুশি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.