নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সফিক ও মীরার দীর্ঘদিনের প্রেম।
সেই ইউনিভার্সিটতে পড়ার সময় তাদের পরিচয় ও প্রেম। শফিক ও মীরা দুজনই মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। লেখাপড়া শেষ করে তাঁরা দুজনই ভালো চাকরী পেয়ে যায়। একসময় তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। দুই পরিবারই তাদের প্রেম মেনে নেয়। তাদের বিয়ে হয়। বিয়েটা বেশ ধুমধাম করেই হয়। ঘটনা চক্রে আমি এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলাম। যাহোক, বিয়ের পর দুজনই আনন্দময় জীবনযাপন করছে। মীরা চাকরী করছে এটা নিয়ে সংসারে কোনো অশান্তি হয়নি। বরং সফিক চায় মীরা চাকরী করুক। সফিক বলে- লেখাপড়া শিখেছে, তাহলে চাকরী করবে না কেন? ছুটির দিনে দুজনে বেড়াতে যায়। সব মিলিয়ে সুখী ও ঝামেলাবিহীন একটি পরিবার। হাসিখুশি ও ঝামেলাবিহীন একটা পরিবারকে নিজ চোখে দেখার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে।
একসময় মীরা গর্ভবতী হয়।
তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলেটা দেখতে ভীষন সুন্দর। বাচ্চাটাকে যে দেখে সে-ই কোলে নিয়ে আদর করতে চায়। সংসারে নতুন সদস্য এসেছে। তাকে দেখাশোনা করতে হবে। এজন্য একটা কাজের মেয়ে রাখা হয়। কাজের মেয়েকে সফিক মীরা যথেষ্ঠ খাতির যত্ন করে। তাকে নিয়ে একসাথে ভাত খায়। মাস শেষে তাকে অনেক টাকা বেতন দেয়। এছাড়া মেয়েটার যা যা লাগে সব এনে দেয়। কাজের মেয়েটা বেশ সুখে আছে। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে কোনো কিছুর অভাব নেই। মেয়েটার কাজ হচ্ছে- সারাদিন সফিক ও মীরার ছেলেটাকে রাখা। তাকে খাওয়ানো। গোছল করানো। সফিক মীরা তাঁরা দুজনই কাজের মেয়েটার সাথে সুন্দর আচরণ করে। এরকম আচরন কাজের মেয়েটা কোনোদিন কারো কাছ থেকে পায়নি।
কাজের মেয়েটার নাম জবা।
জবা গ্রাম থেকে এসেছে। শহরে এসে সে খুব ভালো আছে। ভালো খাওয়া দাওয়া। সাবান, শ্যাম্পু, তেল, কসমেটিক্স ইত্যাদি কোনো কিছুর অভাব নেই। তাছাড়া সারাদিন ইউটিউবে নাচ-গান, নাটক-সিনেমা দেখা যায়। জবা বাচ্চাটাকে ঘুম পাড়িয়ে নাটক দেখে, সিনেমা দেখে। সফিক আর মীরা যেন অফিস থেকে জবার সাথে যোগাযোগ করতে পারে তার জন্য জবাকে একটা স্মার্ট মোবাইল ফোন দিয়েছে। দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেছে। সফিক আর মীরা এরকম একটা কাজের মেয়ে পেয়ে ভীষন খুশি। জবা শুধু যেন কাজের মেয়ে নয়, সে এই পরিবারের একজন সদস্য। সফিক মীরা দুজনই জবাকে যথেষ্ঠ খাতির করে। আসলে ভালো মানুষের সাথে সব সময় ভালোই হয়। আমি মাঝে মাঝে সফিকদের বাড়িতে বেড়াতে যাই।
জবা শহরের জীবনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।
সে এখন পারলারে যায়। টিকটক করে। ফেসবুক চালায়। তাকে একটা ঘর দেওয়া হয়েছে। সেই ঘরে টিভি আছে। সে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। জবার বয়স ১৬/১৭ বছর। একদিন জবা ইঁদুর মারা বিষ খায়। সফিক রাত দুটায় জবাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। কোনো হাসপাতাল জবার চিকিৎসা করে না। বলে, এটা পুলিশ কেস। সফিক অনুরোধ করে আগে প্রাথমিক চিকিৎসা টা করুণ। কিন্তু ডাক্তাররা সফিকের কথা শুনে না। এরপর সফিক তাকে নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল। জবা সুস্থ হয়। তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। ভয়াবহ একরাত গেছে সফিকের জীবনে। জবাকে জিজ্ঞেস করা হয়- সে কেন বিষ খেয়েছে? সফিক মীরা দুজনই বলে- তোমাকে অনেক টাকা বেতন দেই। থাকা খাওয়া ইত্যাদি কোনো কিছুতেই তোমার অভাব নেই। তাহলে তুমি কেন এই কাজ করলে? আমাদের বিপদে কেন ফেললে? তুমি মরে গেলে আমাদের কি হতো? সেই কথা একবার ভাবলে না?
জবা বলল, সে এক ছেলেকে ভালোবাসে।
সমস্যা হলো ছেলেটার বউ আছে। কিন্তু জবা তাকে ভালোবেসে ফেলেছে। এখন জবা সেই ছেলেকে বিয়ে করতে চায়। ছেলে মানা করে দিয়েছে, তাই সে বিষ খেয়েছে। এদিকে সফিক আর মীরা পড়েছে ভীষন বিপদে। পুলিশ এসে বাড়িতে ঝামেলা করছে। অযথাই প্যাচাচ্ছে। সহজ সরল সফিক-মীরা কাজের মেয়ের জন্য বিরাট বিপদে পড়ে গেলো। বাংলাদেশের মতো দেশে পুলিশ বন্ধু নয়, যেন আজরাইল। তাঁরা সফিক মিরার জীবন জাহান্নাম বানিয়ে দিচ্ছে। শেষে সফিক-মীরা জবাকে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। মীরা বলে তোমাকে অনেক ভালোবেসেছিলাম। অবাধ সুযোগ সুবিধা দিয়েছি। অথচ তুমি আমাদের বিপদে ফেলে দিলে? কি অন্যায় করেছি আমরা যে আমাদের বিপদে ফেললে? জবা মূলত অকাল পক্ক। তার ভুলের জন্য একটা সহজ সরল পরিবারে বিরাট বিপদ গেলো।
কাজের মেয়ে রাখলেই হয় না।
বুঝে শুনে রাখতে হবে। একটা কাজের মেয়ে আপনার জীবন তছনছ করে দিতে পারে। অথচ জবা সফিকের বাসায় এসে একটা উন্নত জীবন পেয়েছিলো। অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ছিলো জবা। তার নির্বোধ আচরনের কারনে সফিক আর মীরার বেশ বেগ পেতে হয়েছে। জবা হয়তো এখন অন্য বাসায় কাজ নেবে। জবা আবার হয়তো বিষ খাবে অথবা অন্য কোনো ঘটনা ঘটাবে- সেই বাসার সদস্যদের বিপদে ফেলবে। মীরা চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। সে আর কোনোদিন কাজের লোক রাখবে না। তার যথেষ্ঠ শিক্ষা হয়েছে। প্রতিটা মুহুর্ত সাবধান থাকতে হয়। নইলে কখন কি ঘটে যায়। বিপদ আসতে কতক্ষন? এই সমাজটা ভালো না।
০৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:২২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি সঠিক কথা বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই মে, ২০২৩ সকাল ৮:৪০
কামাল১৮ বলেছেন: মানুষকে যথাযথ মুল্যায়ন করলে প্রতিদান পাওয়া যাংয়।আমরা কাজের মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করি তাই অনেক সমস্যা হয় কাজের মেয়ে নিয়ে।তাদের কে মারধর করা হয় যেটা একদম অনুচিত।
সিসি ক্যামেরা থাকলে বিষটা জানতে পারতো।এটাযে কতো উপকারী আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারি নাই।সিসি ক্যামেরার ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন।