নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
দেখুন, কারো কাছের পাহাড় ভালো লাগে।
তো কারো কাছে সমুদ্র ভালো লাগে। আবার কারো কাছে নদী ভালো লাগে, কারো কাছে জোছনা রাত। একেক জনের ভালো লাগা বা পছন্দ একেক রকম। আমার কাছে যেটা খুব সুন্দর লাগবে, হয়তো সেটাই আপনার কাছে মোটামোটি সুন্দর মনে হবে। প্রকৃতি অনেক সুন্দর। কিন্তু যখনই মানুষ প্রকৃতিতে হাত দেয়, সেটা অসুন্দর হয়ে যায়। একটা উদাহরণ দেই। বাংলাদেশের বান্দরবান। খুব সুন্দর এলাকা। বিশাল বিশাল পাহাড়। অতি মনোরম পরিবেশ। আকাশে মেঘ ভেসে যেতে দেখা যায়। মানুষ সেই সুন্দর জায়গাকে নষ্ট করে দিয়েছে। এখন সেখানে টাইলস এর উপর দাঁড়িয়ে মেঘ দেখতে হয়। পুরো নীলগিরি এলাকা বড় বেশি কৃত্রিম করে ফেলেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। মন ভরে প্রকৃতি উপভোগ করা যায় না।
পুরো সুন্দরবনটাই সুন্দর। অপার সৌন্দর্য।
আমার ভাগ্য ভালো। আমি তিনবার সুন্দরবন গিয়েছি। বড় জাহাজে করে গিয়েছি। সুন্দরবন এত সুন্দর, এত সুন্দর যে খুশিতে মরে যেতে ইচ্ছা করে। আমার এখনও মনে আছে- আমাদের জাহাজ যখন বঙ্গোপসাগরে উঠলো- চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। কোনো পাড় দেখা যায় না। কোনো ঘরবাড়ি বা গ্রাম দেখা যায় না। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। (দীর্ঘদিন আপনি সমুদ্রে থাকলে আপনার হ্যালুশিয়েসন হবে মাস্ট) যাইহোক, গাঢ় কুয়াশা। প্রচন্ড শীত। এমন শীত যে হাত পায়ের আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যায়। বঙ্গোপসাগরের ঠান্ডা বাতাস গায়ে তীরের মতো এসে লাগে। প্রচন্ড ঠান্ডায় আমার নিজের হাত পায়ের আঙ্গুল বাঁকা হয়ে এসেছে। সুন্দরবন যাওয়ার জন্য শীত কালটাই বেস্ট। দীর্ঘক্ষন সমুদ্রে পথে থাকার জন্য একধরনের ভ্রম তৈরি হয়। যা আপনাকে মৃত্যুর দিকেও নিয়ে যেতে পারে। আসল সুন্দরবন দেখার জন্য আপনাকে যেতে হবে সুন্দরবনের গভীরে।
আসল সুন্দরবন দেখতে হলে-
আপনাকে যেতে হবে দুবলার চর, হিরন পয়েন্ট। ঘন জঙ্গল। মধ্য দুপুরবেলা যদি বনে কিছু ভিতরে যান, তাহলে মনে হয় এখন রাত। কারন চারিদিকে এত এত গাছ যে আকাশ দেখা যায় না। অবশ্য বনের ভেতর আপনি একা যেতে পারবেন না। আপনারা সাথে নিরাপত্তা কর্মী থাকবে। তার সাথে একটা বন্ধুক থাকবে। নিরাপত্তা কর্মী বনবিভাগ থেকেই আপনাকে দিয়ে দেবে। নিরাপত্তা কর্মী ছাড়া বনের ভেতর যাওয়া অনেক রিস্ক। যে কোনো সময় বিপদ এসে যেতে পারে। সুন্দরবন যাওয়ার আগে বুদ্ধদেব গুহ'র বই গুলো পড়বেন। এই লেখক বন জঙ্গল নিয়ে দারুন সব লেখা লিখেছেন। বনকে ভালোবাসতে হয়। আপন ভাবতে হয়। তাহলেই আপনি সুন্দরবনকে উপভোগ করতে পারবেন। শুধু তাকালেই দেখা যায় না, মনের চোখ দিয়ে দেখতে হয়। দুষ্টলোকজন সুন্দরবনের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। হরিন ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সব গল্প আরেকদিন বলব।
সুন্দর বন গিয়ে আমার যা ভালো লেগেছে সেটা বলি।
তখন গভীর রাত। কেবিনে আমার ঘুম আসছিলো না। আমি আমার কেবিন থেকে বের হয়ে জাহাজের ছাদে যাই। প্রচন্ড ঠান্ডা। সেদিন জোছনা রাত ছিলো। চাঁদের আলো পড়েছে সমুদ্রে। সমুদ্রের পানি গুলো ঝকমক করছিলো। এত, এত সুন্দর লাগছিলো- যে ইচ্ছা করছিলো মরে যাই। এই সুন্দর আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। সেদিন হয়তো মরেই যেতাম। আমার বাবা এসে বলল, এত রাতে শীতের মধ্যে ছাদে কি করছো? যাও কেবিনে গিয়ে ঘুম দাও। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবে সুন্দরবন এসে গেছো। আরেকটা ঘটনা বলি- দুই পাশে সুন্দরবন দেখা যাচ্ছে। আমাদের জাহাজ চলছে। দুই পাশের দৃশ্য গুলো মন ভরে দেখে নিচ্ছি। মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে হরিন। অলস কুমির পাড়ে শুয়ে আছে। কিছু বানর লাফাচ্ছে। জেলেরা মাছ ধরছে ছোট ছোট নৌকাতে। সেইসব মাছের অনেক স্বাদ।
সুন্দরবনে যখন বিকেল হয়ে আসে। সে এক অপার্থিব দৃশ্য।
খুব মায়াময় লাগে। চারপাশ এত সুন্দর লাগে যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। সেই সৌন্দর্য আপনাকে নিজ চোখে দেখতে হবে। নইলে বুঝবেন না। একজন দক্ষ বনকর্মী সাথে থাকলে সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে সে আপনাকে ঘুরে ঘুরে বাঘের পায়ের ছাপ, অথবা বাঘের বিষ্ঠা, সাপ, হরিন কুমিরসহ অনেক জন্তু জানোয়ার দেখাতে পারবেন। অনেক রকম গাছ দেখাতে পারবে। দক্ষ বন কর্মী অদ্ভুত, রহস্যময় ও রোমাঞ্চকর সব গল্প জানেন। আপনি যদি খুব সাহসী হোন তাহলে একরাত সুন্দরবনে থেকে যাবেন। আপনার যে অভিজ্ঞতা হবে, তা বাকি জীবনে ভুলতে পারবেন না। কাজেই অন্যের মুখের স্বাদ না খেয়ে, নিজে যান। নিজের চোখে সব দেখে আসুন। ঠকবেন না। আমি বাঘ দেখেছি, সেই গল্প অন্য আরেকদিন বলব।
০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: গাজীপুরের শালবন এখন বদলে গেছে। এখন শেখানে গেলে আপনার ভালো লাগবে না।
২| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ রাত ১১:৩৭
কামাল১৮ বলেছেন: ছবিটা খুবই সুন্দর। কোথাকার ছবি এটা।
০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: ছবিটা গুগল থেকে নিয়েছি। সুন্দরবনের ছবি।
৩| ০৫ ই মে, ২০২৩ সকাল ১০:৩৪
চারাগাছ বলেছেন: আপনাকে কি প্রথম পাতায় নেয়া হচ্ছে না?
কতৃপক্ষ কি স্বপ্নবাজ সৌরভের পোষ্টের অপেক্ষায় আছে?
০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: কতৃপক্ষ আমার ও চাঁদগাজীর সাথে অন্যায় করছেন।
৪| ০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:০৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
সুন্দরবন বাংলাদেশের জন্য প্রকৃতির আর্শিবাদ। বাংলাদেশের মাথা মোটা বেকুব লোকজন সুন্দরবনকে ধ্বংস করার জন্য দাদা ও বাবুমশাইদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
০৫ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দরবন ক্ষতিক্ষগ্র হলে পুরো বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৫| ০৬ ই মে, ২০২৩ রাত ১২:৪৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনার লেখা পড়ে সুন্দরবন আবার দেখার ইচ্ছা করছে।
০৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:২০
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দরবন অবশ্যই যাবেন। নইলে একটা আফসোস থেকে যাবে।
৬| ০৬ ই মে, ২০২৩ রাত ১২:৪৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনি ফেবুতে পোষ্ট করেন না?
০৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: না ফেসবুকে আমি আমার লেখা দেই না।
ফেসবুক, ব্লগ এবং ইউটিউব আমার কাছে ভিন্ন জগত। একেক জগতে আমি একেক রকম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ রাত ১১:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: এমনি সুন্দরবন যাওয়া হয়নি।তবে ইস্টিমারে ঢাকা থেকে খুলনা যেতে কয়েকবার সুন্দর বনের কোল ঘেষে গেছি।
পিকনিক করতে গাজীপুর শালবাগানে গেছি।সারাদিন কাটিয়েছি জংঙ্গলে, ভালোই লাগতো।
এখন যেই শহরে আছি সেখানে অনেক ছোট বড় জংঙ্গল আছে,ঢাকায় যেটার অভাব।প্রায় শনি রবিবারে কোন না কোন বনে বেড়াতে যাই।শীতে সেটা সম্ভব হয় না।
পাহাড় শান্ত হলে সেখানে বেড়াতে যাবার ভালো যায়গা হতো।কেন যে অশান্ত করে রেখেছে পাহাড়।এটা এক সময় বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিবে।