নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

শৈশবের প্রথম প্রেম

১৪ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১২

ছবিঃ আমার তোলা।

তখন ক্লাশ টু'তে পড়ি।
আমাদের ক্লাশে একটা মেয়ে ছিলো। ভীষন সুন্দর। মেয়েটার নাম আমার এখনও মনে আছে- 'সুকন্যা'। সুকন্যাকে নিয়ে আমি একটা কবিতাও লিখেছিলাম। কবিতাটা এখনও আমার কাছে আছে। কেউ পড়তে চাইলে দিতে পারি। যাইহোক, আমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তাম। আমাদের ক্লাশ শুরু হতো মর্নিং শিফটে। ছেলেরা ডান পাশে বসতো আর মেয়েরা বাম পাশে। কিন্তু আমি সুকন্যার পাশে গিয়ে বসতাম। রিফাত নামের এক ম্যাডাম এজন্য আমাকে ক্ষেপাতেন। সুকন্যা ছিলো দেখতে একদম বারবি পুতুলের মতোণ। কি সুন্দর লাগতো দেখতে। এরকম সুন্দর মেয়ে আমি জীবনে দেখি নাই।

সুকন্যার সাথে আমার বেশ খাতির হয়ে গেলো।
আমি দেখতে সুন্দর ছিলাম। গায়ের রঙ ছিল ফর্সা। স্বাস্থ্য ভালো ছিলো। কথা বার্তায় পটু ছিলাম। স্কুল ইউনিফর্মে আমাকে একদম নায়কের মতো লাগতো। সুকন্যা তাঁর টিফিন আমাকে খাওয়াতো। টিফিন টাইমে আমি সুকন্যাকে নিয়ে স্কুলের ছাদে চলে যেতাম। যেন আমাদের কেউ বিরক্ত করতে না পারে। আমার মা সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারতো না। তাই আমাকে দোকান থেকে কেক, বিস্কুট, চিপস ইত্যাদি কিনে দিতো। কিন্তু সুকন্যা ঘরের বানানো খাবার আনতো। পিজা, স্যান্ডউইচ অথবা বার্গার। সুকন্যা টিফিন এনে খেত না। সব টিফিন আমাকে খাওয়াতো। নিশ্চয়ই এটা ভালোবাসা।

আমার ভাগ্য খারাপ।
আমি সুকন্যাকে আমার ভালোবাসার কথা জানাতে পারিনি। একদিন স্কুলে এসে দেখি সুকন্যা আসে নাই। পরের দিনও আসে নাই। আমি ভাবলাম আমার প্রেমিকার জ্বর হলো কিনা। বুকের ভেতর আমার খুব কষ্ট হতো। এই ভাবে পাঁচ দিন পার হয়ে গেলো- সুকন্যা স্কুলে আসে না। আমি সাহস করে প্রিন্সিপালের রুমে গেলাম। জিজ্ঞেস করলাম- সুকন্যা স্কুলে আসে না কেনে? প্রিন্সিপাল স্যার বললেন, সুকন্যা স্কুল ছেড়ে চলে গেছে। তার বাবা পুলিশ। তার বাবার ট্রান্সফার হয়েছে চিটাগাং। ভীষণ কষ্ট পেলাম। ইচ্ছা করলো প্রিন্সিপাল স্যারকে একটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই। তখন মোবাইল ছিলো না, ইন্টারনেট ছিলো না, ফেসবুক ছিলো না। যোগাযোগের কোনো মাধ্যম ছিলো না। হারিয়ে ফেললাম আমার কলিজাকে। কি কষ্ট! কি কষ্ট!

এরপর টানা সাতদিন আমি স্কুলে যাইনি।
খুব মনমরা হয়ে ছিলাম। কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। বারবার শুধু সুকন্যার কথা মনে পড়ে। আব্বা বলে- কি হয়েছে আমার ছেলের? মা বলে- কিরে মন খারাপ ক্যান? বাবা মাকে কি সব কথা বলা যায়? আফসোস সুকন্যাকে একটা চুমু দিতে পারিনি। জড়িয়ে ধরতে পারিনি। মনের কথা কিছুই বলতে পারিনি। মেয়েটাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখেছি, সেই কবিতাটা তাকে দেওয়া হয়নি। অথচ টিফিন টাইমে আমরা দুজন একসাথে লম্বা সময় কাটিয়েছি। তখন ইচ্ছা করলে সুকন্যার অনুমতি নিয়ে তাকে একটা চুমু দিতে পারতাম। জড়িয়ে ধরলেও হয়তো মানা করতো না। সেই সময় তাকে নিয়ে লেখা কবিতাটা দিয়ে দিতে পারতাম। সুকন্যা তোমাকে আমি আজও ভুলিনি। প্রথম প্রেম কখনও হারিয়ে যায় না।

আমি কোনোদিন সুকন্যার কথা ভুলবো না।
আমি জানি না সুকন্যা এখন দেখতে কেমন হয়েছে? সে দেশে আছে না বিদেশে চলে গেছে। সে কি বিয়ে করেছে? তার কি বাচ্চাকাচ্চা আছে? আমার কথা কি সুকন্যার মনে আছে? আমাদের দুজনের যদি কখনও দেখা হয়ে যায়, আমরা কি দুজন দুজনকে চিনতে পারবো? নাকি সুকন্যা মরে গেছে? আমি যেহেতু মরিনি, সুকন্যাও মরেনি। আমি জানি আমাদের দেখা হবেই। কবি বলেছেন- 'দেরী হোক, যায়নি সময়'। আমি আমার বউকে সুকন্যার কথা বলি নাই। বললে আমার খবর আছে। স্ত্রীলোক অযথা ক্যাচাল করে। ক্যাচাল করার সুযোগ তাকে আমি দেবো না। নো নেভার। সুকন্যা একান্তই আমার।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.