নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
ঢাকা শহরে দেখার জিনিসের অভাব নেই।
এই শহরেই আমার জন্ম। দেখতে দেখতে প্রায় ৩৫ টা বছর এই শহরে পার করে ফেললাম। যখন ঢাকার বাইরে যাই, ঢাকা ফিরে আসার জন্য এক ধরনের অস্থিরবোধ করি। অথচ এই শহর নোংরা একটা শহর। শহরের মানুষ গুলো ভালো না। জটিল এবং কুটিল। কি নেই ঢাকা শহরে? হ্যাঁ সব আছে এই শহরে। মসজিদ আছে, মন্দির আছে, গীর্জা আছে, ব্রোথেল আছে। বড় বড় অসংখ্য শপিংমল আছে। যাদুঘর আছে, চিড়িয়াখানা আছে। আবাসিক হোটেল আছে। শিশু পার্ক আছে, রমনা পার্ক আছে, লেক আছে, ভাঙ্গা ফুটপাত আছে, ফুটপাত দখল করে হকাররা দোকান বসিয়েছে। প্রতিটা এলাকায় ৮/১০ জন লোক ভ্যানগাড়িতে করে সবজি বিক্রি করে। পুলিশ এসে ওদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নিয়ে যায়। সত্য কথা বলতে এই শহর আমার ভালো লাগে না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। আমার ইচ্ছা করে আমস্টারডাম চলে যাই।
এই শহরে দেখার জিনিসের অভাব নেই।
দেখার চোখ থাকলে, অতি তুচ্ছ বিষয় মন দিয়ে দেখলে আর বেশি কিছু দেখা যায়। রেললাইনের সামনে দেখবেন কাঠাল বিক্রি হচ্ছে। লোকজন টিপেটুপে কাঠাল কিনছে। তরমুজের সিজনে বিক্রি করে তরমুজ। আমের সিজনে আম। রেললাইনের পাশে সন্ধ্যার পর মাছের বাজার বাসে। সবই চাষের মাছ। কিন্তু অনেক দাম। একটা দুই কেজি ওজনের রুই মাছের দাম নেবে প্রায় ৮শ' টাকা। সেই মাছ কাটতে নেবে ৫০ টাকা। মাছ কাটা দেখাও অনেক আনন্দের ব্যাপার। ইলিশ মাছ অনেক দাম। কিছু লোকে এসে ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে যায়। তাঁরা দামও জিজ্ঞেস করে না। বিক্রেতা পাঁচ হালি ইলিশ মাছ দিয়ে দেয়। আবার কেউ কেউ বাজারের ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বড় বড় মাছের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তেলাপিয়া বাঁ পাঙ্গাস নিয়ে যায় পরিবারের জন্য। ঢাকা শহর রাজধানী হলেও, এই শহরে গরীব ও অসহায় লোকের অভাব নেই।
ঢাকা শহরে আজকাল টিনের বাড়িঘর খুব একটা খুঁজে পাবেন না।
সব পাকা দালান হয়ে গেছে। যার এক কাঠা জায়গা আছে সেও ছয় তলা বিল্ডিং বানিয়ে ফেলেছে। রাজউকের নিয়ম আছে আড়াই কাঠার কমে এবং তাদের অনুমতি ছাড়া বাড়ি করা যাবে না। ঢাকা শহরের লোকজন নিজের ইচ্ছা মতো মিস্ত্রি দিয়ে বাড়ি বানিয়ে নিয়েছে। সরকারি কোনো তদারকি নেই। যদি সরকারি লোক এসেই পড়ে তাহলেও সমস্যা নেই। তাদের হাতে কিছু ধরিয়ে দিলেই তাঁরা খুশি। গুলিস্তানে একটা টিসিবির সরকারী বিল্ডিং আছে। পুরো ভবনে বিদ্যুৎ নেই। সেখানে এখন কোনো কাজ হয় না। সেই বিল্ডিং কিছু লোক মিলে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। চোরাই বিদ্যুৎ নিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সেভাবেই চলছে। কেউ দেখার নেই। কেউ বলার নেই। এই শহরে যেসব রাস্তায় ছিনতাই হয়, সেসব রাস্তায় টহল পুলিশ থাকে না। প্রতিদিন অসংখ্য লোকের মোবাইল থাবা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পকেটমার হচ্ছে। চুরী হচ্ছে।
ঢাকা শহরের এমন কোনো এলাকা বাদ নেই যেখানে মাদক পাওয়া যায় না।
ঢাকা শহর মানেই জ্যামের শহর। মধ্যরাতেও এই শহরে জ্যাম থাকে। প্রতিটা এলাকায় আছে কিশোর গ্যাং। এরা ছাত্রলীগের মতোই ভয়ঙ্কর। কিছু দিন পর এরা মারামারি করে কাটাকাট করে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়। অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে গুলো প্রেম করে। পার্কে, বাসে, ফাস্টফুডের দোকানে। কেউ কেউ রিকশায়। এই শহরের ছেলেমেয়েদের লজ্জা খুবই কম। রিকশায় বসেই চুমু দিচ্ছে, পার্কের বেঞ্চে বসে মেয়েটার জামার ভিতর দিয়েই হাত ঢুকিয়ে দিচ্ছে। বাইকওলারা ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেয়। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে রাখে। যে যেভাবে পারছে অন্যায় করছে, অপরাধ করছে। রাজনীতিবদরা নব্যধনী সৃষ্টি করছে। দুদক আসল দূর্নীতিবাজকদের ধরছে না। নেতারা চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলছে। প্রধানমন্ত্রী শুধু 'উন্নয়ন' 'উন্নয়ন' জিকির তুলছেন। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। তাই আজও মানুষ রাস্তায় ঘুমায়, আজও সরকারি হাসপাতালে দালাল, চুরী-ডাকাতি আর ছিনতাই হচ্ছে। এই শহরের গুলোশান এলাকাটা ভালো লাগে। মনে হয় বিদেশ চলে এসেছি।
সন্ধ্যা সাত টার পরে প্রেসক্লাবের সামনে কিছু দরিদ্র ও অসহায় মেয়েরা-
সস্তা মেকাপ মুখে মেখে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকে খরিদদার না পাওয়া পর্যন্ত। শুধু কি প্রেসক্লাবের সামনে? কাকরাইল, সংসদ ভবন, মহাখালি, ফার্মগেট, মৎস ভবন, হাইকোর্ট মাজারসহ এ শহরের অনেক এলাকায় এদের দেখা যায়। সন্ধ্যার পর থেকেই এই শহরের বার গুলো লোকজন দিয়ে ভরে যায়। লাখ লাখ টাকার মদ মানুষ খেয়ে ফেলে। মগবাজার, মহাখালি, বনানি আর পুরান ঢাকার আবাসিক হোটেল গুলো জমে উঠে নারী ও মদে। দরিদ্ররা নেশা করে সস্তার গাঁজা দিয়ে। সত্যি কথা বলতে সব কিছু মিলিয়ে এই শহরের অবস্থা ভালো না। একদম গজব অবস্থা। সকালে দুপুরে বা রাতে যখন বাসে উঠবেন বসার জন্য সিট পাবেন না। যারা অফিসে চাকরি করে তারাও ভালো নেই। প্রতিটা অফিসে আছে, অফিস পলিটিক্স। সেই আছে দালালি আর চাটুকারিতা। মসজিদের ইমাম পর্যন্ত দালালি আর চাটুকারিতা করে। এই শহরের ছেলেমেয়রা বুঁদ হয়ে আছে ফেসবুক, টিকটক আর ইউটিউবে। তাদের জ্ঞানের বড় অভাব। পুরো জাতি পিছিয়ে আছে।
এই শহরের কোথাও শান্তি নেই।
ঘর থেকে বাইরে বের হলেই অসংখ্য ভিক্ষুক আপনার সামনে এসে হাত পাতবে। রাস্তায় সিগনালে গাড়ি থামলেই ভিক্ষুক এসে হাজির হয়। বাজারে গেলেও ভিক্ষুক, বাসের ভিতরে একটু পর ভিক্ষুক উঠবে। উঠবে নানান রকম হকার, হিজড়া। এরপর আছে মসজিদের হুজুর, তাঁরা এসে মসজিদ নির্মানের জন্য টাকা চাইবে। ঢাকা শহরে মদজিদের অভাব নেই। প্রতিটা এলাকায় ৫/৬ টা করে মসজিদ। যুগ যুগ ধরে হুজুররা মসজিদ আর এতিমখানার জন্য টাকা নিচ্ছে। যখন আযানের সময় হয়, সব গুলো মসজিদে একসাথে আযান শুরু হয়। একটা মসজিদের আযানও ভালো করে শোনা যায় না। আযানের মধুর ধ্বনি তখন বিকট শব্দে পরিনত হয়। মনে হয় হুজুররা মজা নিচ্ছেন আমাদের সাথে। রাস্তায় সিগনালে গাড়ি থামলে কোনো দুষ্ট ড্রাইভার হর্ন বাজালে তার দেখাদেখি অন্য ড্রাইভাররাও হর্ন বাজায়। বাজাতেই থাকে। ঠিক সেভাবে হজুররাও মজা নেয়। এই শহরের মানুষ অসভ্য ও বর্বর।
ঢাকা শহরে দেখার জিনিসের অভাব নাই।
চিড়িয়াখানা আজ থেকে বিশ বছর আগে যেমন ছিলো আজ আরও খারাপ হয়েছে। চলার রাস্তা গুলো ভাঙ্গা এবং যথেষ্ট নোংরা। প্রতিটা পশু রুগ্ন ও ভয়াবহ অসুস্থ। বাঘ, সিংহ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারে না। বোটানিক্যাল গার্ডেন, বদলা গার্ডেন, ধানমন্ডি লেক আরা রমনা পার্ক প্রেমের স্বর্গরাজ্য। কুৎসিত সেইসব প্রেম। লজ্জাহীন। গুলিস্তান, সায়দাবাদ, গাবতলী, কমলাপুর রেলস্টেশন, আর সদরঘাট গজব এলাকা। ভয়ঙ্কর নোংরা আর নানান রকম দুষ্টলোকে ভরা। ঢাকায় দুজন মেয়র আছেন। তাঁরা কি করেন আমি জানি না। তাঁরা যদি শুধু মাত্র ঢাকার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারতো- তাহলে সমস্ত দেশের মানুষ তাদের স্যলুট দিতো। ঢাকা শহর হলো- মশার শহর। জ্যামের শহর। খারাপ লোকের শহর। নোংরা আবর্জনার শহর। চাটুকারিতা আর দালালির শহর। প্রতারণার শহর। ধান্দাবাজির শহর। পুরো বাংলাদেশ থেকে সমস্ত দুষ্টলোকেরা এ শহরে এসে শহরটাকে দুষিত করে দিয়েছে।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: আরো অনেক কিছু লেখার ছিলো আমার।
পোস্ট লম্বা হয়ে যাচ্ছে, তাই লিখিনি। আমার লেখা চলবে। আরো লিখব। এখানে যা যা লিখিনি অন্য লেখায় সে গুলো লিখে ফেলব।
২| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ট্রাফিক জ্যাম, বিচিত্র রকমের মানুষ, ময়লা, আবর্জনা, দুষিত বায়ু আর দুষিত পানি, কনক্রিট আর ইটের দালান। সবচেয়ে দুর্লভ বস্তু হোল গাছপালা।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: গাছের কোনো বিকল্প নাই।
প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। সিটি কর্পোরেশন করছেটা কি?
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:২৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- এলোমেলো কথা মালা
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা এলোমেলো হওয়ার প্রধান কারন হলো লেখাটা এক বসায় লিখিনি।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৫২
কামাল১৮ বলেছেন: সবথেকে বেশি দেখাযায় ধনী গরিবের পার্থক্য।
২১ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ রাইট।
অভাবী মানুষ আমার ভালো লাগে না। ।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:১৭
নতুন বলেছেন: beauty is in the eye of the beholder
২১ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৬| ২২ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:০২
কামাল১৮ বলেছেন: অভাবকে ভালো না লাগতে পারে,অভাবী মানুষকে ভালোবাসুন।তাদের দুঃখ কষ্ট দুর করার চিন্তা করুন।সাহায্য করতে আমি বলছি না,সাহায্য কয় জনকে করবেন।চিন্তা পথ দেখাবে।আজকে হোক কালকে হোক।
২৩ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর কথা বলেছেন।
৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫৩
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আমি ঢাকার ছেলে, ঢাকা শহরেই আমার বড় হওয়া, আমার শৈশব-কৈশোর, স্কুল-কলেজ, বন্ধু-বান্ধবী সব ওখানেই। ঐ শহরের রাস্তা-ঘাটে আমার অনেক স্মৃতি। বিদেশ-বিভূঁইয়ে হলেও মনটা পড়ে থাকে দেশে, বলতে গেলে ঢাকাতেই। নিজেদের বাড়ি বা পৈত্রিক জায়গাও ঢাকাতেই। গতবার দেশে গিয়ে কিছু ভিডিও করে নিয়ে এসেছি, কিছু ইউটিউবে দেয়া আছে ওগুলোই মাঝে-মাঝে দেখি। ইট-পাথরের জঞ্জাল, নোংরা ময়লা আর অগণিত মানুষ, সবই আমার অপছন্দ তবুও ঢাকাকে মিস করি কোন এক অজানা কারনে। ধন্যবাদ।
২৭ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার ইউটিউব চ্যানেলের লিংক আমায় দেন।
৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:২০
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: চ্যানেলের লিঙ্ক এটা, গিয়ে প্লেলিস্ট থেকে "বাংলাদেশ" সেকশনে কিছু ভিডিও পাবেন। ধন্যবাদ।
২৭ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২২
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৮
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: রাজধানীর নেতিবাচক দিকগুলো খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন, চাইলে আরও ভয়ঙ্কর নেতিবাচক দিক সমূহও তুলে আনতে পারতেন, আবার এর সাথে অনেক ইতিবাচক বৈশিষ্টও রয়েছে এই শহরের অনেক মানুষ গুলোর তাও যোগ করে দিতে পারতেন, তাহলে হয়তো লিখাটিকে একপেশে মনে হতো না।